সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুরের সর্ববৃহৎ নলুয়া হাওরের মাছুখালী ফসল রক্ষা বাঁধের সংস্কার কাজে বাঁশের আড় ও মাটির বস্তার পরিবর্তে জিওব্যাগ ব্যবহার করা হয়েছে। টেকসই না হলে বাঁধ ভেঙে আবারও ফসলডুবি হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করছেন হাওরে বোরো ধান আবাদ করা কৃষক।
কৃষকরা জানান, পুরো হাওরের মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ মাছুখালীর বাঁধ। কারণ নদীর মোহনায় বাঁধটি রয়েছে। নদীতে পানি আসার সঙ্গে চাপ বাড়বে বাঁধে। জিওব্যাগ দিয়ে ঝুঁকি এড়ানো কঠিন হবে। বাঁধটি বাঁশের আড় ও মাটির বস্তা দিয়ে টেকসই করে গড়ে তোলা প্রয়োজন। অন্যথায় শঙ্কা থেকেই যাবে। ২০১৭ সালে হাওরের ফসল পাকার আগেই অকালবন্যায় এ বাঁধ ভেঙে ফসল ডুবির ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ ২০২২ সালে নদীতে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাঁধে একাধিকবার ফাটল দেখা দেয়। স্থানীয় কৃষকরা স্বেচ্ছাশ্রমে দিনরাত কাজ করে বাঁধটি রক্ষা করেন।
সরেজমিন দেখা যায়, জগন্নাথপুর ও দিরাই উপজেলার সীমান্ত দিয়ে বয়ে যাওয়া কামারখালী নদীর পার ঘেঁষা নলুয়া হাওরের মাছুখালী বেড়িবাঁধের ৬ নম্বর প্রকল্প সংস্কার কাজ করা হচ্ছে। এ বাঁধে এবার বাঁশের আড় ও মাটির বস্তার বদলে জিওব্যাগ দেওয়া হয়েছে। এতে বাঁধটি টেকসই হওয়া নিয়ে স্থানীয় কৃষকের মধ্যে দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে।
উপজেলার দাসনোওয়াগাঁও গ্রামের কৃষক গুনেন্দ্র দাস বলেন, হাওরে এখন আধা কাঁচা ধানের শীষ দুলছে। আশা করি, এ সপ্তাহেই ধান পেকে যাবে। মাছুখালী বাঁধে এবার বাঁশের আড় ও মাটির বস্তা না দেওয়ায় শঙ্কিত আমরা। কারণ নদীতে পানি আসার সঙ্গে সঙ্গে বাঁধে চাপ পড়বে। বাঁধ টেকসই না করা হলে হাওরের ফসলডুবির শঙ্কা রয়েছে।
স্থানীয় কয়েকজন কৃষক জানান, এ উপজেলার কৃষক বোরো ফসলের ওপর নির্ভরশীল। বোরো ফসল ঘরে তুলতে তাদের নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও প্রতিকূল পরিবেশের সঙ্গে যুদ্ধ করতে হয়। অনেক সময় অকালবন্যায় ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে কৃষকের চোখের সামনে কষ্টার্জিত ফসল তলিয়ে যায়।
মাছুখালী বাঁধ সংস্কার প্রকল্পের সভাপতি শাহাদাত মিয়া বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী তারা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই বাঁধ মেরামতের কাজ শেষ করেছেন। বর্তমানে প্রতিদিন বাঁধ দেখাশোনার কাজ করছেন তারা। এ প্রকল্পের ০.

৯২২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ মেরামতের জন্য ২৮ লাখ ৪৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। 
হাওর বাঁচাও আন্দোলন জগন্নাথপুর উপজেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ কাদির বলেন, নলুয়া হাওরের ধান দিয়ে সারাদেশের মানুষের তিন দিনের খাবার জোগাড় হয়। তাই এ ফসল রক্ষায় কোনো ধরনের গাফিলতি মেনে নেওয়া হবে না। তিনি জানান, মাছুখালী বাঁধটি ঝুঁকিপূর্ণ। ভাঙন ঝুঁকি এড়াতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। 
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী সবুজ কুমার শীল বলেন, হাওরের ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধগুলো সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রয়েছে। মাছুখালী বাঁধে বাঁশ ও বস্তার বরাদ্দ না থাকায় এবার কাজ হয়নি। প্রয়োজন হলে জরুরি ভিত্তিতে বাঁশ ও বস্তার ব্যবস্থা করা হবে।
জগন্নাথপুর ইউএনও বরকত উল্লাহ বলেন, পাউবোর নির্দেশনা অনুযায়ী বাঁধে জিওব্যাগ ব্যবহার করা হয়েছে। তবুও প্রশাসন বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছে। হাওরের ফসল রক্ষায় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ফসল র উপজ ল ট কসই

এছাড়াও পড়ুন:

তিন সাংবাদিকের চাকুরিচ্যুতির ঘটনায় ডিআরইউ’র উদ্বেগ

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সদস্য সাংবাদিক রফিকুল বাসার, মুহাম্মদ ফজলে রাব্বি ও মিজানুর রহমানসহ কয়েকজন সংবাদকর্মীর চাকরিচ্যুতির ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে ডিআরইউ।

বুধবার (৩০ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষে সভাপতি আবু সালেহ আকন ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল সংবাদকর্মীদের চাকুরিচ্যুতির ঘটনায় এ উদ্বেগ জানান।

উল্লেখ্য, চ্যানেল আই’র সাংবাদিক রফিকুল বাসার, এটিএন বাংলার মুহাম্মদ ফজলে রাব্বি ও দীপ্ত টিভির সাংবাদিক মিজানুর রহমানকে মঙ্গলবার কোনো রকম পূর্ব নোটিশ ছাড়াই চাকরিচ্যুত করে কর্তৃপক্ষ।

ডিআরইউ নেতৃবৃন্দ তিন সাংবাদিককে চাকরিচ্যুতির কারণ ব্যাখ্যা করার দাবি জানিয়েছেন।

এএএম//

সম্পর্কিত নিবন্ধ