সংস্কার নিয়ে মতামত দিল আরও দুই দল
Published: 9th, April 2025 GMT
সংস্কারের গুরুত্বপূর্ণ ১৬৬টি সুপারিশের বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে লিখিত মতামত জমা দিয়েছে গণ অধিকার পরিষদ ও বিকল্প ধারা বাংলাদেশ (একাংশ)। আজ বুধবার দুপুরে দল দুটি আলাদাভাবে জাতীয় সংসদ ভবনে কমিশনের কার্যালয়ে কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের কাছে মতামত জমা দেয়।
মতামত জমা দেওয়ার পর গণ অধিকার পরিষদ জানিয়েছে, তারা পাঁচটি সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলোর ৮৫ শতাংশের সঙ্গে একমত। বাকি ১৫ শতাংশের ক্ষেত্রে তারা আংশিক একমত বা একমত হতে পারেনি। তারা জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে জাতীয় সরকারে রূপ দিয়ে অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংবিধান সংস্কার করে তার অধীনে নির্বাচন নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে।
গণ অধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, শাকিল উজ্জামান, হাবিবুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিলু খান, প্রচার সম্পাদক শহিদুল ইসলাম প্রমুখ মতামত জমা দেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে সংস্কার প্রস্তাব সম্পর্কে মতামত জমা দেয় নুরুল আমিন ব্যাপারীর নেতৃত্বাধীন বিকল্পধারা বাংলাদেশ।
সংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য গঠনের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে কাজ শুরু করে। প্রথম পর্যায়ে গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর মধ্যে সংবিধান, জনপ্রশাসন, নির্বাচনব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ ১৬৬টি সুপারিশের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত চায় ঐকমত্য কমিশন। সুপারিশগুলোর স্প্রেডশিট আকারে ৩৮টি রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠানো হয়। ১৩ মার্চের মধ্যে দলগুলোকে মতামত দিতে বলা হয়েছিল। এখন পর্যন্ত ৩১টি দলের কাছ থেকে মতামত পেয়েছে কমিশন। মতামতের ভিত্তিতে ইতিমধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাদাভাবে আলোচনা শুরু করেছে ঐকমত্য কমিশন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ ত য় ঐকমত য
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদের খসড়া গ্রহণ করতে পারি না: এনসিপি
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ছয়টি সিদ্ধান্ত গ্রহণ পদ্ধতির কথা বললেও তা নিয়ে আলোচনা না করেই হঠাৎ করে জুলাই সনদের খসড়া প্রকাশ করেছে বলে মন্তব্য করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এটি সঠিক কাজ বলে মনে করছে না দলটি।
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন বলেছেন, ‘আমরা এটির তীব্র বিরোধিতা করছি। আলোচনার পদ্ধতি নিয়েই আলোচনা হয়নি, অথচ তারা খসড়া প্রকাশ করেছে - এটা আমরা গ্রহণ করতে পারি না।'
আজ মঙ্গলবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের ২১তম দিনের সংলাপের বিরতিতে এ কথা বলেন জাবেদ রাসিন। তিনি বলেন, 'আমরা স্পষ্টভাবে বলেছি, যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, নির্বাচনের আগেই সেগুলোর আইনগত ভিত্তি পেতে হবে এবং সেই ভিত্তিতেই পরবর্তী সংসদ নির্বাচন হতে হবে।'
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রশ্নে আলোচনায় ‘র্যাংক চয়েস’ পদ্ধতি নিয়ে কয়েক দিন ধরে আলোচনা চলছিল বলে জানান জাবেদ রাসিন। তিনি বলেন, ‘এই পদ্ধতি অনুযায়ী আজ বিচার বিভাগ থেকে আরও দুই সদস্য যুক্ত করে সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব এসেছে, যারা ভোট দেবেন।’ তিনি আরও বলেন, 'আমরা এই প্রস্তাবে একমত হয়েছি। আমাদের সঙ্গে প্রায় সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে, কেবলমাত্র বিএনপি ও কিছু সহযোগী দল ছাড়া।'
এনসিপির এই নেতা জানান, জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যেসব মৌলিক সংস্কার ছাড়া ‘ফ্যাসিবাদী কাঠামো দূর করা সম্ভব নয়’, সেগুলো যদি বাস্তবায়ন না হয়, তবে জুলাই সনদে সই করা হবে কি না তা দলের ফোরামে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আজকের আলোচনায় অংশ নিয়েছে বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী আন্দোলন, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), গণসংহতি আন্দোলনসহ ৩০টি রাজনৈতিক দল।
আলোচনায় সভাপতিত্ব করছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত আছেন সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান ও আইয়ুব মিয়া।