থানা থেকে ছাত্রদল নেতাকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় ওসিসহ ৪ পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার
Published: 10th, April 2025 GMT
নাটোরের লালপুরে গ্রেপ্তার জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুবেল উদ্দিনকে থানা ভবন থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় লালপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজমুল হকসহ ৪ পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
বুধবার (৯ এপ্রিল) দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে লালপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজমুল হক, দায়িত্বরত একজন উপ-পরিদর্শক ও দুই কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করা হয়। পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আমজাদ হোসাইন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাগাতিপাড়ায় এক বিএনপি নেতার বাড়িতে গুলিবর্ষণের ঘটনায় মঙ্গলবার রুবেল উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে লালপুর থানা পুলিশ। একই দিন বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ছাত্রদল ও যুবদলের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী থানায় গিয়ে রুবেলকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য চাপ দেয়। এসময় পুলিশ অসম্মতি জানালে নেতাকর্মীরা হট্টগোল করে আসামিকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
আরো পড়ুন:
গোপালগঞ্জে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় বৃদ্ধা নিহত
যশোরে গৃহবধূকে হত্যা, স্বামী-সতিন পলাতক
এ ঘটনায় মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে ছিনিয়ে নেওয়া আসামিসহ জড়িতদের গ্রেপ্তারে যৌথবাহিনী অভিযান শুরু করে। পরে পাবনার ঈশ্বরদী থেকে রুবেল উদ্দিন ও আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে রুবেলের দুই বোন রুপা খাতুন ও ফারজানা ইয়াসমিন এবং ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি মাসুদ রানাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে, আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় মঙ্গলবার রাতেই ৩৮ জনের নাম উল্লেখসহ ১৫৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ।
পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আমজাদ হোসাইন বলেন, ‘‘ছিনিয়ে নেওয়া আসামিসহ এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে দায়িত্বে অবহেলার কারণে লালপুর থানার ওসিসহ ৪ পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। বর্তমানে লালপুর থানায় ওসি (তদন্ত) দায়িত্ব পালন করবেন।’’
ঢাকা/আরিফুল/রাজীব
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
গুলশানে চাঁদা নিতে গিয়ে ধরা পড়া রাজ্জাকের আরেক বাসা থেকে নগদ প্রায় ৩ লাখ টাকা উদ্ধার
সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে চাঁদা নেওয়ার ঘটনায় গ্রেপ্তার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতা আবদুর রাজ্জাক বিন সোলাইমান ওরফে রিয়াদের আরেকটি ভাড়া বাসা থেকে নগদ ২ লাখ ৯৮ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে গুলশান থানা-পুলিশ।
আজ বৃহস্পতিবার ভোরে অভিযান চালিয়ে এই টাকা উদ্ধার করা হয়। দুপুরের দিকে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
ওসি হাফিজুর রহমান বলেন, ‘আবদুর রাজ্জাক ওরফে রিয়াদের আরেকটি ভাড়া বাসার সন্ধান পেয়েছি আমরা। এই বাসাটি বাড্ডায়। শাম্মী আহমেদের বাসা থেকে রাজ্জাকেরা যে ১০ লাখ টাকা চাঁদা নিয়েছিল, তার মধ্যে নগদ ২ লাখ ৯৮ হাজার টাকা আজ ভোরে বাড্ডার বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি টাকা উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।’
গুলশান থানা সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত ঢাকায় রাজ্জাকের দুটি বাসার সন্ধান পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একটি পশ্চিম রাজাবাজার এলাকায়, আরেকটি বাড্ডার বৈকাল এলাকায়। দুটির মধ্যে বাড্ডার বাসায় তিনি নিয়মিত থাকতেন। আর রাজাবাজারের বাসায় মাঝেমধ্যে যেতেন। বাড্ডাটি মেস বাসা। এই বাসার একটি কক্ষে একাই থাকতেন রাজ্জাক। জিজ্ঞাসাবাদে দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আজ ভোরে বাড্ডার বাসা থেকে নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সূত্র জানা যায়, শাম্মী আহমেদের বাসা থেকে ১০ লাখ টাকা চাঁদা নেওয়ার পর রাজ্জাকসহ কয়েকজন তা ভাগ-বাঁটোয়ারা করে নেন। নিজের ভাগের টাকা তিনি বাড্ডার বাসায় রাখেন।
এর আগে রাজ্জাকের নাখালপাড়ার ভাড়া বাসা থেকে ২ কোটি ২৫ লাখ টাকার চারটি চেক উদ্ধার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। গতকাল বুধবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই চেক উদ্ধারের বিষয়টি জানানো হয়।
পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, এই সোয়া দুই কোটি টাকার চেক নেওয়া হয়েছে রংপুর-৬ আসনে (পীরগঞ্জ) আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ‘ট্রেড জোন’ থেকে। ট্রেড জোনের পোশাক কারখানাসহ নানা ব্যবসা রয়েছে।
ট্রেড জোনের ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, সোয়া দুই কোটি নয়, মোট ৫ কোটি টাকার ১১টি চেক নিয়েছিলেন আবদুর রাজ্জাকসহ ছয়জন। তবে একটি চেকের বিপরীতেও তাঁরা টাকা উত্তোলন করতে পারেননি। কারণ, সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাবগুলোতে ট্রেড জোন কর্তৃপক্ষ টাকা রাখেনি। তিনি বলেন, টাকা উত্তোলন করতে না পেরে রাজ্জাকসহ অন্যরা ট্রেড জোনের মালিককে হুমকি দিচ্ছিলেন।
শাম্মী আহমেদের স্বামী সিদ্দিক আবু জাফরের কাছ থেকে প্রথম দফায় ১০ লাখ টাকা নেওয়ার পর দ্বিতীয়বার টাকা নিতে গিয়ে ১৭ জুলাই হাতেনাতে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন আবদুর রাজ্জাকসহ পাঁচজন। বাকি চারজন হলেন ইব্রাহিম হোসেন ওরফে মুন্না, সাকাদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব ও অপ্রাপ্তবয়স্ক একজন। প্রাপ্তবয়স্ক চার আসামির রিমান্ড চলছে। ঘটনাটিতে মামলা করেছেন সিদ্দিক আবু জাফর।