১২৮ বছর পর ক্রিকেট ফিরছে অলিম্পিকে: ৬টি করে দল পুরুষ ও নারী বিভাগে
Published: 10th, April 2025 GMT
২০২৮ সালের ‘লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিক গেমসে’ পুরুষ ও নারী উভয় বিভাগেই টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে অংশ নেবে ছয়টি করে দল। অলিম্পিকে নতুন যে পাঁচটি খেলার সংযোজন হয়েছে, তার মধ্যে ক্রিকেট অন্যতম। প্রতিটি দল ১৫ সদস্যের স্কোয়াড নিয়ে অংশ নেবে। অলিম্পিক কমিটির প্রকাশিত অফিসিয়াল সূচি অনুযায়ী, পুরুষ ও নারী উভয় বিভাগের জন্যই বরাদ্দ থাকবে ৯০ জন করে খেলোয়াড়ের কোটা। তবে এখনো ঠিক হয়নি কোন নিয়মে দলগুলো অলিম্পিকে জায়গা পাবে কিংবা বাছাই প্রক্রিয়া কেমন হবে।
যেহেতু যুক্তরাষ্ট্র এবারের আয়োজক দেশ, তারা সরাসরি অংশগ্রহণের সুযোগ পেতে পারে। সেক্ষেত্রে বাকি দলগুলোর জন্য সুযোগ কমে যাবে। আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে কারা খেলবে সেটিও এখনো স্পষ্ট নয়। কারণ, অলিম্পিকে ক্যারিবীয় দ্বীপগুলো আলাদা আলাদা দেশ হিসেবে অংশ নেয়। যেমনটা তারা কমনওয়েলথ গেমসেও করে। ২০২২ সালের বার্মিংহাম কমনওয়েলথ গেমসে নারী টি-টোয়েন্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলেছিল বার্বাডোস। তারা ছিল তখনকার আঞ্চলিক টুর্নামেন্ট ‘টোয়েন্টি-টোয়েন্টি ব্লেজ’-এর চ্যাম্পিয়ন।
ক্রিকেটের অলিম্পিকে ফেরা হলো বহু বছর পর। সর্বশেষ ১৯০০ সালে প্যারিস অলিম্পিকে ক্রিকেট ছিল। এরপর দীর্ঘদিন বাদে ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে মুম্বাইয়ে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে ক্রিকেটকে আবার অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
আরো পড়ুন:
টানা চার জয়ে শীর্ষে গুজরাট
অফফর্মে থাকা ম্যাক্সওয়েল এবার শাস্তির মুখে
আগেই জানা গিয়েছিল, ‘এলএ অলিম্পিকে’ দলগত খেলাগুলোতে ছয়টি করে দল খেলবে — পুরুষ ও নারী উভয় বিভাগেই। এবার সেই বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) তাদের প্রস্তাবে বলেছিল, নির্ধারিত একটি সময় পর্যন্ত টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ের ভিত্তিতে দল বাছাই করা যেতে পারে। যদিও এখনো আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে ২০২৫ সালের মধ্যেই তা চূড়ান্ত হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের মতো দল, যারা এখনো আইসিসির পূর্ণ সদস্য নয়, তাদের অংশগ্রহণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে আইওসি’র ক্রীড়া পরিচালক কিট ম্যাককনেল বলেছিলেন, ‘‘সাধারণত আয়োজক দেশগুলো দলগত খেলায় একটি দল দেয়। এরপর বাকি দলগুলো নির্ধারিত হয় বিশ্ব শক্তি ও আঞ্চলিক প্রতিনিধিত্বের ভারসাম্য বিবেচনায়। কোটা অনুযায়ী এ ভারসাম্য বজায় রাখাই আমাদের লক্ষ্য।’’
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সুদ পরিশোধে ব্যয় বাড়ছে
সুদ পরিশোধে সরকারের ব্যয় বাড়ছে। এ ব্যয় বহন করতে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে। বাজেটে সরকারের সুদ পরিশোধ সংক্রান্ত পূর্বাভাসে দেখা যাচ্ছে, আগামী বছরগুলোতে সুদ ব্যয় ক্রমাগত বৃদ্ধি পাবে।
পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের প্রায় ১৫ ভাগ অর্থই সুদ খাতে খরচ করতে হচ্ছে এখন। এ পরিস্থিতিতে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতেই ব্যয় করতে হবে চার লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। পাঁচ অর্থবছরের ব্যবধানে সুদ ব্যয় বাড়ছে ৩৩ শতাংশ। এর মধ্যে শতাংশের হিসাবে বৈদেশিক ঋণের সুদ ব্যয় সবচেয়ে বেশি বাড়বে।
অর্থ বিভাগের করা ‘মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি-২০২৫-২০২৬ থেকে ২০২৭-২০২৮’ এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হয়েছিল এক লাখ ১৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ খাতে সুদ ব্যয় ছিল ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় গেছে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা।
চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে (যা চলতি জুনের ৩০ তারিখে শেষ হয়ে যাবে) মূল বাজেটে সুদ খাতে ব্যয় বরাদ্দ ছিল এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বছর শেষে এই সীমায় সুদ ব্যয় ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। ফলে সংশোধিত বাজেটে এ খাতে ব্যয় বাড়িয়ে ধরা হয়েছে এক লাখ ২১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এ হিসাবের মধ্যে ছিল অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ ব্যয় ৯৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং বিদেশী ঋণের ২২ হাজার কোটি টাকা।
একইভাবে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়েরও একটি প্রক্ষেপণ করেছে অর্থ বিভাগ। এই হিসেবে দেখা যায় আগামী ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হবে এক লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা (অভ্যন্তরীণ এক লাখ কোটি টাকা , বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় ২২ হাজার কোটি টাকা)। একইভাবে এর পরের অর্থবছর ২০২৬-২০২৭ অর্থবছরে একলাখ ৩৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা(অভ্যন্তরীণ এক লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের ২৪ হাজার ২০০ কোটি টাকা) এবং ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়ের প্রক্ষেপণ করা হয়েছে ১ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, মোট সুদ ব্যয়ের সিংহভাগই অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ। অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে এক লাখ ২৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা গিয়ে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু মোট বাজেটের অনুপাতে অভ্যন্তরীণ সুদ পরিশোধের হার ২০২৩ -২০২৪ অর্থবছরে ১৬ দশমিক ২৯ শতাংশ থেকে কমে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ১২ দশমিক ৭৫ শতাংশে হ্রাস পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ মোট সুদ ব্যয়ের তুলনায় কম, তবে এটি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ফলে এটি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ২৭ হাজার ১০০ কোটি টাকায় উন্নীত হতে পারে। মোট বাজেটের অনুপাতে বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ এ সময়কালে ২ দশমিক ৪৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ২ দশমিক ৭৬ শতাংশে উন্নীত হতে পারে।
বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধের কার্যকর ব্যবস্থাপনা শুধু আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্যই নয়, বরং এটি সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রক্ষা, টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা, আন্তর্জাতিক ঋণমান বজায় রাখা এবং ভবিষ্যতের উন্নয়ন সম্ভাবনা সুরক্ষিত রাখার জন্য অপরিহার্য।