Samakal:
2025-05-01@02:59:31 GMT

পরিকল্পনাতেই নেই ওভারপাস

Published: 12th, April 2025 GMT

পরিকল্পনাতেই নেই ওভারপাস

ফতুল্লা স্টেডিয়াম সংলগ্ন এলাকার একটি তৈরি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন তাসলিমা খাতুন। প্রতিদিন বাসা থেকে লিঙ্ক রোড পার হয়ে তাঁকে যেতে হয় কর্মস্থলে। এই সড়কটি আগের চেয়ে চওড়া হওয়ায় যানজট কমেছে। গাড়িগুলো অনেক দ্রুত চলে। স্টেডিয়ামের সামনের রাস্তা তাঁকে পার হতে হয় দুর্ঘটনার আতঙ্ক মাথায় নিয়ে। একই অভিজ্ঞতার মুখোমুখি প্রতিদিন এই জায়গায় রাস্তা পারাপারকারী হাজারো পথচারীর। 
ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিঙ্ক রোডটি ছয় লেনে উন্নীতকরণের কাজ প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। অথচ ব্যস্ততম ফতুল্লা স্টেডিয়াম সংলগ্ন জায়গায় কোনো ওভারপাস নেই। এই স্টেডিয়ামে খেলা শুরু হলে পুরো এলাকায় তীব্র যানজটের আশঙ্কা রয়েছে। 

স্টেডিয়ামের কাছাকাছিই বাসা সংগীতশিল্পী পান্থ ফারুকের। তিনি বলেন, যেসব স্থান দিয়ে অনেক বেশি মানুষ রাস্তা পার হয় ও দু’পাশের রাস্তা লিঙ্ক রোড ক্রস করেছে, সেসব পয়েন্টে ওভারপাস দেওয়া হয়েছে। ভূইগড়, জালকুঁড়ি ও শিবু মার্কেট এলাকায় তিনটি ওভারপাস দেখেছেন। কিন্তু স্টেডিয়াম এলাকায় প্রচুর মানুষ চলাচল করেন। এখানে লিঙ্ক রোডের দু’দিক থেকে যানবাহন ক্রস করে। কিন্তু কেন এখানে ওভারপাস নির্মিত হলো না, তারা বুঝতে পারছেন না। 
নারায়ণগঞ্জ জেলা ক্রীড়া পরিষদের সাবেক কার্যকরী সদস্য মাহাবুব হোসেন বিজন বলেন, ফতুল্লা ৩ নম্বর জাতীয় স্টেডিয়ামে এখন সংস্কারকাজ চলছে। তাই খেলা বন্ধ। যখন গার্মেন্ট ছুটি হয় বা গার্মেন্টে যাওয়ার সময় হয়, তখন লিঙ্ক রোড পারাপারের সময় রাস্তার দু’পাশে যানবাহন আটকে থাকে। এখান দিয়ে মোড় নেওয়ার উপায় থাকে না। দু’পাশ থেকে মোড় নেওয়ার স্থান কয়েক কিলোমিটার দূরে। তাই শ্রমিকদের আনা-নেওয়ার জন্য ছোট যানবাহন জমে থাকে। ফলে ব্যাপক যানজট দেখা দেয়। 

মাহাবুব হোসেনের ভাষ্য, যখন খেলা শুরু হবে, তখন বিপুলসংখ্যক দর্শক আসেন। তাদের সঙ্গে থাকবেন পুলিশ, র‍্যাব, আনসার সদস্য ও ফেরিওয়ালারা। এ সময় নিঃসন্দেহে যানজট তৈরি হবে। ভোগান্তি বাড়বে। দুর্ঘটনা বাড়বে। এ বিষয়টি মাথায় রেখে লিঙ্ক রোড ছয় লেনের পরিকল্পনার সময়ই এখানে ওভারপাস রাখা উচিত ছিল। 
এ বিষয়ে সমকালের কথা হয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি ফারুক আহমেদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘নিঃসন্দেহে এই পয়েন্টে ওভারপাস থাকা প্রয়োজন। কারণ, এ স্টেডিয়ামের খেলা দ্রুতই শুরু হবে। তখন অন্ততপক্ষে ১৮ হাজার দর্শক আসবেন। আজ হোক কাল হোক– এটি গুরুত্বপূর্ণ ভেন্যুতে পরিণত হবে। দর্শকদের জন্য এখানে বিপুলসংখ্যক যানবাহন আসবে। এখানে যে ওভারপাস করা হয়নি, এটি জানতাম না। আমি ভেবেছিলাম, অন্য পয়েন্টে যেহেতু হয়েছে, এখানেও সড়ক ও জনপথ বিভাগ ওভারপাস করবে।’ এ বিষয়ে ব্যবস্থা যোগাযোগ করবেন তিনি। 
ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিঙ্ক রোডের ছয় লেন প্রকল্পটিতে খরচ হচ্ছে ৪৮৯ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। ২০২২ সালের ৩০ জুনে এটি শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিন দফায় সময় বাড়িয়ে এটি ২০২৫ সালের ৩০ জুন শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ তথ্য জানিয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগ নারায়ণগঞ্জ অংশের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রহিম বলেন, ‘এবারের পরিকল্পনায় স্টেডিয়াম পয়েন্টে কোনো ওভারপাস ছিল না। যারা পরিকল্পনা করেছেন, তারা কেন এখানে ওভারপাস রাখেননি, তা বলতে পারব না। তবে এখানে ওভারপাস রাখা যৌক্তিক। আমি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।’ এখানে ওভারপাস করতে হলে নতুন প্রকল্প নিতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ছয় লেনের প্রকল্প শেষের পথে। এই প্রকল্পের আওতায় ওভারপাস করার সুযোগ নেই।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ প রকল প ছয় ল ন য নজট

এছাড়াও পড়ুন:

কারখানার বর্জ্যে মরছে নদ

ডাইং কারখানার বর্জ্যে মরছে ব্রহ্মপুত্র নদ। প্রকাশ্যে এ দূষণ ঘটলেও দেখার কেউ নেই। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ ভুক্তভোগীদের। পরিবেশ কর্মকর্তা চাইছেন সুনির্দিষ্ট প্রমাণসহ অভিযোগ।
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার ও নরসিংদী সদর উপজেলায় অন্তত ৬০টি ডাইং কারখানা ব্রহ্মপুত্র দূষণের সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। নদের তীরে অবস্থিত এসব কারখানায় এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (ইটিপি) থাকলেও তারা বর্জ্য পরিশোধন না করেই প্রতিদিন নদে ফেলছে। এতে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এ নদের সঙ্গে সম্পর্কিত মানুষজন।
অভিযোগ রয়েছে, নদের তীরে অবস্থিত কারখানাগুলো ইটিপি রাখলেও তারা বর্জ্য পরিশোধন না করেই নদে ফেলছে। অনেক কারখানায় ইটিপি থাকলেও খরচ কমাতে বেশির ভাগ সময় তা বন্ধ রাখা হয়। এ ছাড়া বেশকিছু কারখানার ইটিপি প্রয়োজনের তুলনায় ছোট হওয়ায় সঠিকভাবে বর্জ্য পরিশোধন করা সম্ভব হয় না।
পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, নরসিংদী সদর উপজেলায় রয়েছে ছোট-বড় ৫০টি ডাইং কারখানা। আড়াইহাজারে স্পিনিং মিলসহ ডাইং কারখানা রয়েছে অন্তত ১০টি। নরসিংদীর ডাইং কারখানাগুলোর মধ্যে পাঁচদোনা এলাকার আবদুল্লাহ ডাইং ইন্ডাস্ট্রিজ, বাঘহাটা এলাকার ফাইভ অ্যান্ড ফাইভ ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং, সাজেদা ডাইং, আনোয়ার ডাইং, শতরূপা ডাইং, রুকু ডাইং, মেসার্স একতা ডাইং, কুড়েরপাড় এলাকার ব্রাদার্স টেক্সটাইল, ইভা ডাইং, ভগীরথপুর এলাকার এম এমকে ডাইং, নীলা ডাইং, এইচ এম ডাইং, মা সখিনা টেক্সটাইল, মুক্তাদিন ডাইং, পাঁচদোনা এলাকার তানিয়া ডাইং, সান ফ্লাওয়ার টেক্সটাইল প্রভৃতি।
আড়াইহাজারের কয়েকটি কারখানা হলো– ভাই ভাই স্পিনিং মিলস, ছাবেদ আলী স্পিনিং মিল, রফিকুল ডাইং, দিপু ডাইং ও হাজী হাবিবুর ডাইং।
আড়াইহাজার পৌরসভার চামুরকান্দি এলাকার বাসিন্দা মিয়াজউদ্দিন মিয়া বলেন, দখল-দূষণে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে নদটি। দেশীয় জাতের মাছের অভয়াশ্রম এ নদ থেকে মাছ হারিয়ে গেছে।
আড়াইহাজারের বালিয়াপাড়া এলাকার ইসমাইল হোসেন জানান, রফিকুল ডাইংয়ের বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে। এতে পানির রং কালচে হয়ে গেছে। একই অবস্থা অন্য কারখানাগুলোর। বর্জ্য নদে ফেলার বিষয়ে স্থানীয়রা কথা বলতে গিয়ে উল্টো কারখানা কর্তৃপক্ষের হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন। এ ব্যাপারে প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
রফিকুল ডাইংয়ের মালিক রফিকুল ইসলাম জানান, তাদের ইটিপি নেই। ডাইংয়ের পানি তারা নির্দিষ্ট পানির ট্যাংকে রাখেন, সরাসরি নদে ফেলেন না। ট্যাংকে জমানো পানি কোথায় ফেলেন জানতে চাইলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
নরসিংদী সদর উপজেলার শিলমান্দী ইউনিয়নের গনেরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মাহবুব হাসান শুভর ভাষ্য, কুড়েরপাড় এলাকার ডাইং কারখানাগুলোর রং মেশানো বর্জ্য পরিশোধন না করে ব্রহ্মপুত্রে ফেলায় নদটি এখন মৃতপ্রায়। দূষণের কারণে দুর্গন্ধে এর পারে দাঁড়ানো যায় না। স্থানীয়রা অনেকবার প্রতিবাদ করেও প্রতিকার পাননি বলে জানান তিনি।
গত ১৫ এপ্রিল শিলমান্দী ইউনিয়নের কুড়েরপাড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ইভা ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং লিমিটেড নামে একটি কারখানা থেকে বর্জ্য এসে পড়ছে নদের পানিতে। ভিডিও করতে দেখে কারখানা কর্তৃপক্ষ বর্জ্য ফেলা বন্ধ করে দেয়।
ইভা ডাইংয়ের ইটিপি ইনচার্জ রেজাউল করিম জানান, বিভিন্ন মহলের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে তারা প্রতিষ্ঠানটি চালাচ্ছেন। অনেক কারখানা সরাসরি নদে বর্জ্য ফেললেও তারা নদ দূষণ করেন না। 
একই এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ফাতেমা ডাইংসহ ব্রহ্মপুত্রের তীরে গড়ে ওঠা কারখানাগুলো থেকেও নদে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। কিন্তু এ নিয়ে এসব কারখানার কেউ কথা বলতে রাজি হননি।
নরসিংদী পরিবেশ অধিদপ্তরের উপসহকারী পরিচালক কামরুজ্জামান জানান, নদে বর্জ্য ফেলার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক তারেক বাবু জানান, ব্রহ্মপুত্রে নদে সরাসরি বর্জ্য ফেলছে ডাইংসহ যেসব কারখানা সেসবের অধিকাংশই নরসিংদী জেলার অন্তর্গত। তাই নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে নদ দূষণমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
আড়াইহাজারের ইউএনও সাজ্জাত হোসেন বলেন, কখনও কখনও কিছু কারখানা বর্জ্য পরিশোধন না করেই নদে ছেড়ে দেয়। কোন কারখানা নদ দূষণ করছে, স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশবাদী সংগঠন তা জানালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিস চালু হচ্ছে ১০ মাস পর
  • অটোরিকশার ধাক্কায় ছিটকে বাসের নিচে, দুই বন্ধু নিহত
  • আজমির ওসমান বাহিনীর অন্যতম ক্যাডার মাসুম প্রকাশ্যে. আতঙ্ক
  • মে দিবসের সমাবেশকে সফল করতে মহানগর বিএনপির মতবিনিময় সভা 
  • নারায়ণগঞ্জে বালক (অনূর্ধ্ব-১৫) ফুটবল প্রতিযোগিতা ও প্রশিক্ষণের উদ্বোধন
  • নারায়ণগঞ্জে ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে তরুণের মৃত্যু
  • নারায়ণগঞ্জের কদম রসুল সেতুর সংযোগ সড়কের প্রবেশমুখ পুনর্নির্ধারণের দাবিতে স্মারকলিপি
  • জেলা প্রশাসককে ২৪’র শহীদদের স্মারক দিল জামায়াত
  • কমিউনিষ্ট পার্টির হাফিজের বিরুদ্ধে ইসমাইলের সংবাদ সম্মেলন
  • কারখানার বর্জ্যে মরছে নদ