ফতুল্লা স্টেডিয়াম সংলগ্ন এলাকার একটি তৈরি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন তাসলিমা খাতুন। প্রতিদিন বাসা থেকে লিঙ্ক রোড পার হয়ে তাঁকে যেতে হয় কর্মস্থলে। এই সড়কটি আগের চেয়ে চওড়া হওয়ায় যানজট কমেছে। গাড়িগুলো অনেক দ্রুত চলে। স্টেডিয়ামের সামনের রাস্তা তাঁকে পার হতে হয় দুর্ঘটনার আতঙ্ক মাথায় নিয়ে। একই অভিজ্ঞতার মুখোমুখি প্রতিদিন এই জায়গায় রাস্তা পারাপারকারী হাজারো পথচারীর।
ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিঙ্ক রোডটি ছয় লেনে উন্নীতকরণের কাজ প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। অথচ ব্যস্ততম ফতুল্লা স্টেডিয়াম সংলগ্ন জায়গায় কোনো ওভারপাস নেই। এই স্টেডিয়ামে খেলা শুরু হলে পুরো এলাকায় তীব্র যানজটের আশঙ্কা রয়েছে।
স্টেডিয়ামের কাছাকাছিই বাসা সংগীতশিল্পী পান্থ ফারুকের। তিনি বলেন, যেসব স্থান দিয়ে অনেক বেশি মানুষ রাস্তা পার হয় ও দু’পাশের রাস্তা লিঙ্ক রোড ক্রস করেছে, সেসব পয়েন্টে ওভারপাস দেওয়া হয়েছে। ভূইগড়, জালকুঁড়ি ও শিবু মার্কেট এলাকায় তিনটি ওভারপাস দেখেছেন। কিন্তু স্টেডিয়াম এলাকায় প্রচুর মানুষ চলাচল করেন। এখানে লিঙ্ক রোডের দু’দিক থেকে যানবাহন ক্রস করে। কিন্তু কেন এখানে ওভারপাস নির্মিত হলো না, তারা বুঝতে পারছেন না।
নারায়ণগঞ্জ জেলা ক্রীড়া পরিষদের সাবেক কার্যকরী সদস্য মাহাবুব হোসেন বিজন বলেন, ফতুল্লা ৩ নম্বর জাতীয় স্টেডিয়ামে এখন সংস্কারকাজ চলছে। তাই খেলা বন্ধ। যখন গার্মেন্ট ছুটি হয় বা গার্মেন্টে যাওয়ার সময় হয়, তখন লিঙ্ক রোড পারাপারের সময় রাস্তার দু’পাশে যানবাহন আটকে থাকে। এখান দিয়ে মোড় নেওয়ার উপায় থাকে না। দু’পাশ থেকে মোড় নেওয়ার স্থান কয়েক কিলোমিটার দূরে। তাই শ্রমিকদের আনা-নেওয়ার জন্য ছোট যানবাহন জমে থাকে। ফলে ব্যাপক যানজট দেখা দেয়।
মাহাবুব হোসেনের ভাষ্য, যখন খেলা শুরু হবে, তখন বিপুলসংখ্যক দর্শক আসেন। তাদের সঙ্গে থাকবেন পুলিশ, র্যাব, আনসার সদস্য ও ফেরিওয়ালারা। এ সময় নিঃসন্দেহে যানজট তৈরি হবে। ভোগান্তি বাড়বে। দুর্ঘটনা বাড়বে। এ বিষয়টি মাথায় রেখে লিঙ্ক রোড ছয় লেনের পরিকল্পনার সময়ই এখানে ওভারপাস রাখা উচিত ছিল।
এ বিষয়ে সমকালের কথা হয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি ফারুক আহমেদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘নিঃসন্দেহে এই পয়েন্টে ওভারপাস থাকা প্রয়োজন। কারণ, এ স্টেডিয়ামের খেলা দ্রুতই শুরু হবে। তখন অন্ততপক্ষে ১৮ হাজার দর্শক আসবেন। আজ হোক কাল হোক– এটি গুরুত্বপূর্ণ ভেন্যুতে পরিণত হবে। দর্শকদের জন্য এখানে বিপুলসংখ্যক যানবাহন আসবে। এখানে যে ওভারপাস করা হয়নি, এটি জানতাম না। আমি ভেবেছিলাম, অন্য পয়েন্টে যেহেতু হয়েছে, এখানেও সড়ক ও জনপথ বিভাগ ওভারপাস করবে।’ এ বিষয়ে ব্যবস্থা যোগাযোগ করবেন তিনি।
ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিঙ্ক রোডের ছয় লেন প্রকল্পটিতে খরচ হচ্ছে ৪৮৯ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। ২০২২ সালের ৩০ জুনে এটি শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিন দফায় সময় বাড়িয়ে এটি ২০২৫ সালের ৩০ জুন শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ তথ্য জানিয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগ নারায়ণগঞ্জ অংশের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রহিম বলেন, ‘এবারের পরিকল্পনায় স্টেডিয়াম পয়েন্টে কোনো ওভারপাস ছিল না। যারা পরিকল্পনা করেছেন, তারা কেন এখানে ওভারপাস রাখেননি, তা বলতে পারব না। তবে এখানে ওভারপাস রাখা যৌক্তিক। আমি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।’ এখানে ওভারপাস করতে হলে নতুন প্রকল্প নিতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ছয় লেনের প্রকল্প শেষের পথে। এই প্রকল্পের আওতায় ওভারপাস করার সুযোগ নেই।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ প রকল প ছয় ল ন য নজট
এছাড়াও পড়ুন:
আড়াইহাজারে শীর্ষ মাদক কারবারি সন্ত্রাসী সোহেল সহযোগীসহ গ্রেপ্তার
আড়াইহাজার উপজেলার শীর্ষ মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসী সোহেল মেম্বার ওরফে ফেন্সি সোহেল ও তার সহযোগী ফজলুল হক ওরফে ফজুকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১।
শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানার দাউদকান্দি ব্রিজের টোল-প্লাজা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত সোহেল মেম্বার ওরফে ফেন্সি সোহেল (৩৮) আড়াইহাজারের বালিয়াপাড়া এলাকার মোঃ মকবুল হোসেনের পুত্র। অপরদিকে ফজলুল হক ওরফে ফজু (৩০) একই এলাকার আউয়ালের পুত্র।
গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা সূকৌশলে দীর্ঘদিন যাবৎ মাদক ক্রয়-বিক্রয়সহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত ছিল মর্মে স্বীকার করে। গ্রেপ্তারকৃত আসামী সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল এর বিরুদ্ধে নারয়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী ও মাদক, অপহরণ, চুরি, হত্যা চেষ্টাসহ ১৪-১৫টি মামলা রয়েছে।
এছাড়া গ্রেপ্তারকৃত আসামি ফজলুল হক ফজু এর বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী, অপহরণ, ছিনতাইসহ ৪-৫টি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদ্বয়কে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে র্যাব-১১ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বালিয়াপাড়ার মকবুল হোসেনের ছেলে সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল বিগত ইউপি নির্বাচনে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সে আরও বেপোরোয়া হয়ে উঠে।
পরবর্তীতে সে অবৈধ মাদক সেবন ও ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে জড়িয়ে পরে। পরবর্তিতে এক সময় সে এলাকায় শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিতি পায়। তখন থেকে সবাই ফেন্সি সোহেল হিসাবে ডাকে। দীর্ঘদিন ধরে মাদক বিক্রির সঙ্গে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে আসছে। তার পুরো পরিবার মাদকের সঙ্গে জড়িত। প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
ফজলুল হক ফজু এই শীর্ষ সন্ত্রাসী-মাদক ব্যবসায়ী সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল এর একান্ত সহযোগী। তাদের ভয়ে এলাকাবাসী ভীত-সন্ত্রস্ত। যারাই তাদের এই সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও মাদক ব্যবসার বিরোধিতা করে তাদেরকেই সোহেল ও তার সহযোগীরা নির্মমভাবে নির্যাতন করে।