Samakal:
2025-06-16@03:38:45 GMT

মেয়েকে কোলে নিয়েই কাঁদেন বাবা

Published: 15th, April 2025 GMT

মেয়েকে কোলে নিয়েই কাঁদেন বাবা

শ্রীপুর পৌরসভার মাধখলা গ্রামের মুদি দোকানি হাফেজ আজহারুল ইসলাম। ভালোই চলে তার বেচাবিক্রি। হাফেজ আজহারুল ইসলাম বিয়ে করেন পার্শ্ববর্তী কেওয়া মধ্যপাড়া গ্রামের হাজী ইব্রাহীমের মেয়ে আফসানাকে। সংসার জীবনেও কুরআন-হাদিসের নিয়ম মেনে চলার চেষ্টা করেন আজহার। স্ত্রীর কষ্ট হয় কিংবা তাঁর সঙ্গে এমন আচরণ করেন না; যা বারণ করেছে ইসলাম। কিছুটা মান-অভিমান থাকলেও ভালোই চলতে থাকে নির্মোহ আজহার-আফসানার সংসার।

তবে ২ বছর ৪ মাস আগে বিয়ের পিঁড়িতে বসা আজহার যখন বুঝতে পারলেন, তাদের ঘরে আসতে যাচ্ছে নতুন মেহমান, তখন আরেকটু নড়েচড়ে বসেন। নিতে থাকেন স্ত্রী আফসানার বিশেষ যত্ন। ভারী কাজ নিজেই করতে থাকেন আজহার।

ধর্মীয় গোঁড়ামিকে বৃদ্ধাঙুলি দেখিয়ে স্ত্রীকে নিয়মিত চেকআপে রাখেন ডাক্তারের। স্ত্রীর কাঁধে হাত রেখে জোগাতে থাকেন সাহস। এরই মধ্যে হঠাৎ ব্যথা ওঠে আফসানার। যদিও ডাক্তার বলেছিলেন, ১৪ এপ্রিলের আগে-পরে তাদের ঘর আলো করে আসতে পারে অতিথি। কিন্তু হঠাৎ এমন ঘটনার মুখোমুখি হতে হবে ভাবতে পারেনি আজহার। তবে মানসিকভাবে কিছুটা প্রস্তুত থাকায় সোমবার শেষ রাতে প্রসব বেদনায় ছটফট করতে থাকা আফসানাকে দ্রুত নিয়ে যান হাসপাতালে। বাড়ি থেকে ৬-৭ কিলোমিটার দূরে মাওনা চৌরাস্তা মাদার্স কেয়ার অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পরের সময়টা যেন ঘোরের মধ্যেই কাটতে থাকে তাঁর।

হাসপাতালে নেওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ডা.

জহিরুন্নেসা রেণু হাজির হন আফসানার বেডে। দ্রুত প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে নরমাল ডেলিভারির প্রস্তুতি নিতে থাকেন। ওদিকে আজহার পড়তে থাকেন পবিত্র কুরআনের আয়াত।

রাত গড়িয়ে ভোরের আলো ফুটতে থাকে। ভোরের পিনপিনে বাতাস জানালা গলিয়ে এসে লাগে আজহারের গায়ে। নড়েচড়ে ওঠেন তিনি। সময় থমকে আছে যেন! পশ্চিম আকাশে সূর্য তখনও উঁকি দেয়নি। এরই মধ্যে আজহারের কানে পৃথিবীর সবচেয়ে পবিত্র কান্নার শব্দ আসে। তাঁর বুক থেকে যেন হাজার মণ ওজনের পাথর নেমে যায়। ডা. জহিরুন্নেসা রেণু গোলাপি রঙের একটি টাওয়েলে মুড়িয়ে একটা সুন্দরতম বাচ্চা এনে তুলে দেন হাফেজ আজহারের কোলে! মেয়েকে কোলে নিয়েই অঝোরে কাঁদতে থাকেন সদ্য জন্ম নেওয়া সন্তানের বাবা। কাঁদতে কাঁদতেই ডান হাতে কান রেখে আল্লাহু আকবার ধ্বনিতে কাঁপিয়ে তোলেন পরিবেশ। মেয়ের কানে যায় বাবার আজান। পাশেই আঁচলে মাথা ঢাকেন দাদি খোদেজা বেগম ও নানি শেফালী আক্তার। আজান শেষ হতেই পূর্ব আকাশে উঁকি দিল বাংলা বছরের প্রথম সূর্য। সেই সঙ্গে আজহার-আফসানার জীবনও আলোকিত করতে এলো প্রথম সন্তান। ‘আকিকা দিয়ে আমার সন্তানের নাম রাখা হবে। মেয়েটিকে মাদ্রাসায় পড়াশোনা করাব। আলেমা বা হাফেজা বানাব। আমার এ সন্তানের জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।’ আজহারুল ইসলাম যখন এসব বলছিলেন, তখনও তাঁর চোখের কোণে অশ্রু। এই আনন্দ অশ্রু যেন স্বর্গ থেকেই নেমে এসেছে তাঁর চোখের কোণে!

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আফস ন র ইসল ম আজহ র

এছাড়াও পড়ুন:

প্রেম ছিল না তবু কেন মধুবালাকে বিয়ে করেছিলেন কিশোর কুমার

দিলীপ কুমারের সঙ্গে বিচ্ছেদের কিছুদিন পরই কিশোর কুমারকে বিয়ে করেন অভিনেত্রী মধুবালা। তবে তখন তিনি ছিলেন অসুস্থ। কিশোর কুমার জানিয়েছিলেন, ভালোবাসা থেকে নয়, বরং কথা রাখতেই তিনি এ বিয়ে করেছিলেন।
মধুবালা ও দিলীপ কুমারের প্রেম নিয়ে একসময় মুখর ছিল মুম্বাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। কিন্তু অভিনেত্রীর বাবার বাধার কারণে সে সম্পর্কে ফাটল ধরে এবং দুজনের বিচ্ছেদ ঘটে। কিছুদিন পরেই কিশোর কুমারকে বিয়ে করেন মধুবালা। তাঁদের এই বিয়ে অনেককে চমকে দিয়েছিল। কারণ, তাঁদের প্রেমের কথা তখনো গোপন ছিল। তবে মধুবালার শরীর তখন ভালো যাচ্ছিল না। বলা হয়, দীর্ঘ রোগভোগের সময় কিশোর কুমার তাঁকে মায়ের বাড়িতে রেখেই চলে যান।

দ্য ইলাস্ট্রেটেড উইকলি অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কিশোর কুমার বলেছিলেন, ‘বিয়ের আগেই জানতাম, ও খুব অসুস্থ। কিন্তু কথা তো দিয়েছিলাম। তাই সে কথা রেখেই ওকে ঘরে এনেছিলাম স্ত্রী হিসেবে। জানতাম, ওর জন্মগত হৃদ্‌রোগ আছে। তবু ৯ বছর ধরে সেবা করেছি। চোখের সামনেই ওকে মরতে দেখেছি। কেউ বুঝবে না এর যন্ত্রণা, না ভুগলে। ও অসম্ভব সুন্দরী ছিল। আর কত যন্ত্রণায় মারা গেছে, সেটা চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না। হতাশায় চিৎকার করত, কান্নাকাটি করত। এত প্রাণোচ্ছল মানুষ নয়টা বছর বিছানায় শুয়ে থাকবে—এ কল্পনাই করা যায় না। ডাক্তার বলেছিল, ওকে হাসিখুশি রাখতে হবে। আমি তা–ই করেছি—ওর শেষনিশ্বাস পর্যন্ত। কখনো হেসেছি, কখনো কেঁদেছি ওর সঙ্গে।’

তবে কিশোর কুমারের এই বক্তব্য নিয়ে সংশয় তৈরি হয়। কারণ, পরে ফিল্মফেয়ার সাময়িকীতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে একেবারে ভিন্ন কথা বলেন তিনি। সেই সাক্ষাৎকারে কিশোর কুমার বলেন, ‘মধুবালার সঙ্গে আমি প্রেমে পড়িনি কখনো। বরং ওর প্রেমিক ছিল আমার বন্ধু দিলীপ কুমার। আমি তো শুধু ওদের বার্তা পৌঁছে দিতাম। বিয়ের প্রস্তাবটা দিয়েছিল মধুবালাই। এমনকি, যখন আমার প্রথম স্ত্রী রুমা তখনো আমার সঙ্গে ছিল, তখনো মধু বলত, “ওকে কখনো ছেড়ো না, না হলে আমি তোমার হয়ে যাব।”’

আরও পড়ুনকিশোর কুমার কি সত্যিই ঘরে কঙ্কাল আর মাথার খুলি নিয়ে ঘুমাতেন২৭ মে ২০২৫

মধুবালার পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, চিকিৎসকেরা তখন বলেছিলেন, অভিনেত্রীর পক্ষে শারীরিক সম্পর্ক কিংবা সন্তানধারণ কোনো কিছুই সম্ভব নয়। সেই বাস্তবতা হয়তো প্রভাব ফেলেছিল কিশোরের সিদ্ধান্তে। এক ঘনিষ্ঠজন বলেন, ‘আমরা বলছি না কিশোরদা ভুল করেছিলেন। ডাক্তার তো স্পষ্ট বলেছিল—শারীরিক সম্পর্ক বা সন্তান কোনোটাই সম্ভব নয়। তবে একজন নারীর তো মানসিক সঙ্গীও দরকার হয়।’
ওই ঘনিষ্ঠজন আরও জানান, কিশোর কুমার তিন মাসে একবার আসতেন মাত্র। বলতেন, ‘আমি এলে তুমি কাঁদবে, আর এতে তোমার হৃদ্‌যন্ত্রের ক্ষতি হবে। তুমি বিষণ্ন হয়ে পড়বে।’ সে সময় মধু অনেক ছোট ছিলেন, ঈর্ষাও ছিল স্বাভাবিক। হয়তো এ দূরত্বই ধীরে ধীরে তাঁকে শেষ করে দিয়েছিল।
১৯৬৯ সালে মাত্র ৩৬ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান বলিউড অভিনেত্রী মধুবালা

সম্পর্কিত নিবন্ধ