বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেছেন, সংবিধান সংশোধন-সংক্রান্ত মৌলিক প্রস্তাবের বিষয়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এক জায়গায়, ঐকমত্যে আসার চেষ্টা করবে তাঁর দল।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে জাতীয় সংসদের এলডি হলে বিএনপির সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা চলছে। এর মাঝখানে বৈঠক থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সালাহ উদ্দিন আহমদ।

সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিএনপির দফাওয়ারি আলোচনা হচ্ছে। কমিশন স্প্রেডশিটে ‘হ্যাঁ-না’ সংক্ষিপ্ত জবাব দেওয়ার জন্য যে কাগজ দিয়েছিল, তাতে অনেকটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে, ‘মিসলিড’ করা হয়েছে।

সংবিধান সংস্কার কমিশনের বিস্তারিত প্রতিবেদনে ১৩১টি প্রস্তাব থাকলেও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের স্প্রেডশিটে ৭০টি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানান সালাহ উদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, সংবিধানের প্রস্তাবনা থেকে শুরু করে প্রজাতন্ত্র, রাষ্ট্রের মূলনীতিসহ সব বিষয়ে দফায় দফায় আলোচনা করবেন তাঁরা। সংবিধান সংশোধন-সংক্রান্ত মৌলিক প্রস্তাবের বিষয়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে চেষ্টা করবেন এক জায়গায় আসার জন্য।

সালাহ উদ্দিন আহমদ জানান, বিএনপি সংবিধান সংস্কার কমিশনের ২৫টি প্রস্তাবের সঙ্গে একমত। ২৫টির মতো বিষয়ে আংশিকভাবে একমত। বাকি বিষয়গুলোতে একমত হতে পারেনি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘আমরা যেসব বিষয়ে বিস্তারিত মতামত দিয়েছি, সে বিষয়ে কমিশনকে যৌক্তিকভাবে বোঝাব এবং তাদের প্রস্তাবের বিষয়েও আমরা যৌক্তিকভাবে জানতে চাচ্ছি। যেটা যৌক্তিক, সেটা জাতির কল্যাণের দিকে লক্ষ রেখে আমরা সেটা অবশ্যই বিবেচনা করব।’

সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, সংবিধান সংস্কার দিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। তারপর বিচার বিভাগ, নির্বাচনব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা হবে। আজ আলোচনা শেষ না হলে পরেও আলোচনা হবে। তাঁরা বোঝাতে চান, বিএনপি সংস্কারের বিষয়ে কতটা ‘সিরিয়াস’।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র ঐকমত য

এছাড়াও পড়ুন:

‘সংবিধান আদেশ’ জারির সুপারিশ করতে পারে কমিশন: আলী রীয়াজ

বিশেষজ্ঞদের থেকে পাওয়া মতামত অনুযায়ী জুলাই সনদের সংবিধান–সংশ্লিষ্ট সুপারিশগুলো কার্যকর করতে সরকারের কাছে একটি ‘সংবিধান আদেশ’ জারি করার সুপারিশ উপস্থাপন করতে পারে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। বুধবার জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের তৃতীয় দিনের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেছেন কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এই ব্রিফিংয়ে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সম্ভাব্য উপায় হিসেবে কমিশন সরকারের কাছে যেসব সুপারিশ পেশ করবে, তার মধ্যে এটি হতে পারে অন্যতম। তিনি আরও বলেন, ‘জুলাই জাতীয় সনদ, ২০২৫’-এর সংবিধান সংশ্লিষ্ট সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে বিশেষজ্ঞদের পক্ষ থেকে একটি সমন্বিত পরামর্শ বা অভিমত পাওয়া গেছে। তাঁদের আগে প্রস্তাবিত দুটি বিকল্প, ‘গণভোট’ ও ‘সংবিধান আদেশ’-এ পর্যায়ে সমন্বিত করে তাঁরা একটি চূড়ান্ত অভিমত দিয়েছেন। এতে তাঁরা বলেছেন, জুলাই ঘোষণাপত্রের ২২ দফা অনুসরণ করে একটি ‘সংবিধান আদেশ’ জারির মাধ্যমে জুলাই সনদের সংবিধান–সংশ্লিষ্ট সুপারিশগুলো কার্যকর করা যায় এবং উক্ত ‘সংবিধান আদেশ’ একটি গণভোটের মাধ্যমে জনগণের চূড়ান্ত অনুমোদন লাভ করতে পারে।

অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, প্রস্তাবিত গণভোট আয়োজনের বিষয়টি বর্ণিত সংবিধান আদেশে উল্লিখিত থাকবে এবং গণভোট আয়োজিত হবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে।

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শটি রাজনৈতিক দলগুলোকে অবহিত করা হয়েছে জানিয়ে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, পাশাপাশি সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ ব্যবহার করে সুপ্রিম কোর্টের কাছে পরামর্শ চাওয়ার বিষয়েও মতামত দিয়েছে বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল। তবে ভিন্নমতও রয়েছে। তিনি বলেন, ‘এর পাশাপাশি আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে একধরনের অনানুষ্ঠানিক অনুরোধ পেয়েছি যে তাঁরা তাঁদের নিজেদের মধ্যে আলাপ–আলোচনা করে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় আসার চেষ্টা করছেন। আমরা রাজনৈতিক দলগুলোকে কিছুটা সময় দিতে চাই, যেটা তারা অনুরোধ করেছে, পারস্পরিক আলোচনার মধ্য দিয়ে যেন বিকল্পগুলো কমিয়ে আনতে পারে। এ বিবেচনায় আমরা আজকের আলোচনা মুলতবি করেছি।’

আলোচনার মধ্য দিয়ে সরকারকে একাধিক বিকল্প সুপারিশ করতে চান জানিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি বলেন, ‘এখন রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে ছয়টি ও বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে একটি মোট সাতটি সুপারিশ আছে, যেটা আমরা কমিয়ে আনতে চাচ্ছি। আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে বিকল্প ব্যবস্থা যদি কমিয়ে আনা যায়, তবে সেটা বাস্তবায়ন করতে সরকারের জন্য সহজতর হবে।’

সেই বিবেচনা থেকে বুধবারের আলোচনা মুলতবি করা হয়েছে জানিয়ে আলী রীয়াজ বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আমাদের অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ অব্যাহত থাকবে। আমরা আশা করছি, আগামী মাসের  শুরুতেই আমরা আবার মিলিত হব।’

কমিশনের প্রধান ও প্রধান উপদেষ্টা এ উল্লিখিত সময়ে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বৈঠকের জন্য নিউইয়র্ক যাচ্ছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা এ আলোচনাটা অব্যাহত রেখে এমন চূড়ান্ত অবস্থায় পৌঁছাতে চাই, যেন যখন তিনি ফিরে আসবেন, তখন আমরা যেন তাঁর কাছে সুপারিশগুলো নিয়ে আলোচনা করতে পারি। যদি আমরা সবাই একমত হতে পারি বা কমিশন এ সুপারিশগুলো যখন উপস্থাপন করার অবস্থায় উপনীত হবে, তখন আমরা তা উপস্থাপন করব।’

ব্রিফিংকালে কমিশনের সদস্যদের মধ্যে বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ইফতেখারুজ্জামান, বদিউল আলম মজুমদার, মো. আইয়ুব মিয়া এবং ঐকমত্য গঠনপ্রক্রিয়ায় যুক্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে এদিনের আলোচনায় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, এবি পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাংবিধানিক আদেশ ও গণভোটের সুপারিশ, একমত নয় দলগুলো
  • ‘সংবিধান আদেশ’ জারির সুপারিশ করতে পারে কমিশন: আলী রীয়াজ
  • খাজা শরফুদ্দীন চিশতির মাজারে হাত দিলে পরিণাম হবে ভয়াবহ: আহলে সুন্
  • জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
  • যারা জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলকে নিষিদ্ধ চায়, তারা আদালতে অভিযোগ দিতে পারে: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • প্রাথমিকে গানের শিক্ষক বাদ দিয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে
  • মাঠের জবাব মাঠে দেওয়া হবে: সালাহউদ্দিন 
  • পনেরো বছরে থেমে গেল শিশুশিল্পীর জীবন
  • পাকিস্তানে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে ৫ সেনা নিহত
  • আলোচনা অব্যাহত থাকা অবস্থায় কর্মসূচি দেওয়া স্ববিরোধিতা মনে করছে বিএনপি