বরিশাল সিটি করপোরেশন থেকে চাকরিচ্যুত কর্মচারীদের চাকরিতে পুনর্বহাল ও বকেয়া বেতন–ভাতার দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন চাকরিচ্যুত ১৬০ কর্মচারী। আজ মঙ্গলবার দুপুরে নগরের ফজলুল হক অ্যাভিনিউয়ে নগর ভবন–সংলগ্ন সড়ক ও গির্জা মহল্লা সড়ক এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে অবরোধ করে তাঁরা বিক্ষোভ করেন। এতে নগরের অভ্যন্তরীণ সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

বিক্ষোভকারীরা বলেন, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কাজ করে আসছিলেন। অনেকেই পৌরসভা আমল থেকে শহর পরিচ্ছন্নতার কাজে যুক্ত। তাঁদের অভিযোগ, কোনো ধরনের সার্ভিস বেনিফিট, গ্র্যাচুইটি বা চাকরিচ্যুতির নোটিশ ছাড়াই হঠাৎ গত জানুয়ারিতে তাঁদের চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হয়। শ্রম আইন অনুযায়ী, কোনো কর্মী ছয় মাসের বেশি সময় কাজ করলে বা চুক্তি না থাকলেও তাঁকে স্থায়ী কর্মী হিসেবে গণ্য করা উচিত বলে তাঁরা মনে করেন।

বিক্ষোভের সময় চাকরিচ্যুত কর্মচারীরা বিনা নোটিশে চাকরি থেকে বাদ দেওয়া ও দুই মাসের বকেয়া বেতন না দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। দ্রুত তাঁদের দাবি আদায় না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন। কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করেন বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) বরিশাল জেলা শাখার সমন্বয়ক মনীষা চক্রবর্তী ও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতারা। মনীষা চক্রবর্তী বলেন, শ্রমিকদের প্রতি এই অমানবিক আচরণ বরদাশত করা যায় না। শ্রমিকেরা যদি বছরের পর বছর সিটি করপোরেশনের কাজ করেন, তাহলে তাঁদের সঙ্গে এমন ব্যবহার অমানবিক ও বেআইনি।

সমাবেশে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকনেতা হোসেন ঢালী বলেন, শ্রমিকদের মধ্যে যাঁরা কর্মক্ষম, তাঁদেরও চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়েছে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। শ্রমিকদের দুই মাসের বেতন–ভাতা বকেয়া। তাঁরা দ্রুত এসব সমস্যার সমাধান চান।

চাকরিচ্যুত শ্রমিক সেলিম হাওলাদার বলেন, ‘আমাদের দুই মাসের বেতন বকেয়া থাকলেও পরিশোধ করা হচ্ছে না। আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার আলোচনা চালিয়েও কোনো ফল পাইনি।’

জানতে চাইলে বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল বারি বলেন, চাকরি হারানো শ্রমিকদের সঙ্গে আলাপ–আলোচনায় চূড়ান্ত হয়েছিল যে তাঁরা ৩০ শতাংশ শ্রমিকের জন্য তাঁদের পোষ্যদের থেকে নাম দেবেন। সেই অনুযায়ী ৪৮ জনের নাম দেওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত তাঁরা কোনো তালিকা দেননি। এ বিষয়ে নতুন করে আর কিছুই বলার সুযোগ নেই। তবে চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের বকেয়া বেতন–ভাতা দ্রুত পরিশোধ করা হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চ কর চ য ত বর শ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ছয় গোলের থ্রিলারে জমজমাট ড্র বার্সেলোনা-ইন্টারের

চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল মানেই উত্তেজনার পারদ চড়া—আর বার্সেলোনা ও ইন্টার মিলান মিলে সেটিকে নিয়ে গেল অন্য উচ্চতায়। কাতালানদের ঘরের মাঠ অলিম্পিক স্টেডিয়ামে বুধবার রাতে দর্শকরা উপভোগ করলেন এক দুর্দান্ত গোলবন্যার ম্যাচ। ম্যাচ শেষে ফল—৩-৩ গোলে ড্র।

মৌসুমের রেকর্ড ৫০ হাজার ৩১৪ দর্শকের সামনে ইউরোপীয় ফুটবলের এই মহারণে উভয় দলই তুলে ধরেছে আক্রমণাত্মক ফুটবল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালের ইতিহাসে ১৯৯৯ সালের পর এটিই প্রথম ম্যাচ যেখানে ছয়টি গোল হয়েছে এবং শেষ হয়েছে ড্রয়ে।

ম্যাচ শুরু হতে না হতেই চমকে দেয় ইন্টার মিলান। ম্যাচের মাত্র প্রথম মিনিটেই ডেনজেল ডামফ্রিজের ব্যাকহিল গোল দলকে এগিয়ে দেন মার্কাস থুরাম। এরপর ২১ মিনিটে আবারও দিমারকোর কর্নার থেকে ফ্রান্সেসকো আকেরবির সহায়তায় শ্বাসরুদ্ধকর অ্যাক্রোব্যাটিকে ব্যবধান বাড়ান ডামফ্রিজ।

তবে ঘুরে দাঁড়াতে দেরি করেনি বার্সা। দুই মিনিট পরই ইয়ামাল ডান দিক থেকে একক নৈপুণ্যে দুর্দান্ত গোল করে ব্যবধান কমান। প্রথমার্ধ শেষের আগে পেদ্রির ফ্লিকে রাফিনিয়ার নিয়ন্ত্রণ এবং তাতে ফেরান তোরেসের শটে গোল করে ২-২ সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা।

দ্বিতীয়ার্ধে লাউতারো মার্টিনেজের ইনজুরির পর মাঠে নামেন মেহেদি তারেমি। ৬০ মিনিটে কর্নার থেকে হেড করে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন ডামফ্রিজ। কিন্তু দ্রুতই গোল শোধ করে বার্সা—ছোট কর্নার থেকে রাফিনিয়ার শট লাগে পোস্টে, সেখান থেকে গোলরক্ষক সোমারের পিঠে লেগে ঢুকে পড়ে জালে—ফলাফল ৩-৩। ৭৫ মিনিটে হেনরিখ মিখিতারিয়ান গোল করে ইন্টারকে আবারও এগিয়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু ভিএআরের চোখে পড়ে সামান্য অফসাইড, বাতিল হয় সেই গোল।

এখন সবকিছু নির্ভর করছে দ্বিতীয় লেগের ম্যাচের ওপর, যা হবে ৬ মে, মঙ্গলবার, ইন্টারের ঘরের মাঠ জিউসেপ্পে মিয়াজ্জায়। ওই ম্যাচেই জানা যাবে ফাইনালে কারা প্যারিস সেইন্ট জার্মেই ও আর্সেনালের মধ্যকার বিজয়ীর মুখোমুখি হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ