বরিশাল সিটি করপোরেশনের চাকরিচ্যুত কর্মচারীদের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
Published: 22nd, April 2025 GMT
বরিশাল সিটি করপোরেশন থেকে চাকরিচ্যুত কর্মচারীদের চাকরিতে পুনর্বহাল ও বকেয়া বেতন–ভাতার দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন চাকরিচ্যুত ১৬০ কর্মচারী। আজ মঙ্গলবার দুপুরে নগরের ফজলুল হক অ্যাভিনিউয়ে নগর ভবন–সংলগ্ন সড়ক ও গির্জা মহল্লা সড়ক এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে অবরোধ করে তাঁরা বিক্ষোভ করেন। এতে নগরের অভ্যন্তরীণ সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
বিক্ষোভকারীরা বলেন, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কাজ করে আসছিলেন। অনেকেই পৌরসভা আমল থেকে শহর পরিচ্ছন্নতার কাজে যুক্ত। তাঁদের অভিযোগ, কোনো ধরনের সার্ভিস বেনিফিট, গ্র্যাচুইটি বা চাকরিচ্যুতির নোটিশ ছাড়াই হঠাৎ গত জানুয়ারিতে তাঁদের চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হয়। শ্রম আইন অনুযায়ী, কোনো কর্মী ছয় মাসের বেশি সময় কাজ করলে বা চুক্তি না থাকলেও তাঁকে স্থায়ী কর্মী হিসেবে গণ্য করা উচিত বলে তাঁরা মনে করেন।
বিক্ষোভের সময় চাকরিচ্যুত কর্মচারীরা বিনা নোটিশে চাকরি থেকে বাদ দেওয়া ও দুই মাসের বকেয়া বেতন না দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। দ্রুত তাঁদের দাবি আদায় না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন। কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করেন বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) বরিশাল জেলা শাখার সমন্বয়ক মনীষা চক্রবর্তী ও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতারা। মনীষা চক্রবর্তী বলেন, শ্রমিকদের প্রতি এই অমানবিক আচরণ বরদাশত করা যায় না। শ্রমিকেরা যদি বছরের পর বছর সিটি করপোরেশনের কাজ করেন, তাহলে তাঁদের সঙ্গে এমন ব্যবহার অমানবিক ও বেআইনি।
সমাবেশে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকনেতা হোসেন ঢালী বলেন, শ্রমিকদের মধ্যে যাঁরা কর্মক্ষম, তাঁদেরও চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়েছে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। শ্রমিকদের দুই মাসের বেতন–ভাতা বকেয়া। তাঁরা দ্রুত এসব সমস্যার সমাধান চান।
চাকরিচ্যুত শ্রমিক সেলিম হাওলাদার বলেন, ‘আমাদের দুই মাসের বেতন বকেয়া থাকলেও পরিশোধ করা হচ্ছে না। আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার আলোচনা চালিয়েও কোনো ফল পাইনি।’
জানতে চাইলে বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল বারি বলেন, চাকরি হারানো শ্রমিকদের সঙ্গে আলাপ–আলোচনায় চূড়ান্ত হয়েছিল যে তাঁরা ৩০ শতাংশ শ্রমিকের জন্য তাঁদের পোষ্যদের থেকে নাম দেবেন। সেই অনুযায়ী ৪৮ জনের নাম দেওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত তাঁরা কোনো তালিকা দেননি। এ বিষয়ে নতুন করে আর কিছুই বলার সুযোগ নেই। তবে চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের বকেয়া বেতন–ভাতা দ্রুত পরিশোধ করা হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চ কর চ য ত বর শ ল
এছাড়াও পড়ুন:
গুলশানে চাঁদা নিতে গিয়ে ধরা পড়া রাজ্জাকের আরেক বাসা থেকে নগদ প্রায় ৩ লাখ টাকা উদ্ধার
সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে চাঁদা নেওয়ার ঘটনায় গ্রেপ্তার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতা আবদুর রাজ্জাক বিন সোলাইমান ওরফে রিয়াদের আরেকটি ভাড়া বাসা থেকে নগদ ২ লাখ ৯৮ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে গুলশান থানা-পুলিশ।
আজ বৃহস্পতিবার ভোরে অভিযান চালিয়ে এই টাকা উদ্ধার করা হয়। দুপুরের দিকে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
ওসি হাফিজুর রহমান বলেন, ‘আবদুর রাজ্জাক ওরফে রিয়াদের আরেকটি ভাড়া বাসার সন্ধান পেয়েছি আমরা। এই বাসাটি বাড্ডায়। শাম্মী আহমেদের বাসা থেকে রাজ্জাকেরা যে ১০ লাখ টাকা চাঁদা নিয়েছিল, তার মধ্যে নগদ ২ লাখ ৯৮ হাজার টাকা আজ ভোরে বাড্ডার বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি টাকা উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।’
গুলশান থানা সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত ঢাকায় রাজ্জাকের দুটি বাসার সন্ধান পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একটি পশ্চিম রাজাবাজার এলাকায়, আরেকটি বাড্ডার বৈকাল এলাকায়। দুটির মধ্যে বাড্ডার বাসায় তিনি নিয়মিত থাকতেন। আর রাজাবাজারের বাসায় মাঝেমধ্যে যেতেন। বাড্ডাটি মেস বাসা। এই বাসার একটি কক্ষে একাই থাকতেন রাজ্জাক। জিজ্ঞাসাবাদে দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আজ ভোরে বাড্ডার বাসা থেকে নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সূত্র জানা যায়, শাম্মী আহমেদের বাসা থেকে ১০ লাখ টাকা চাঁদা নেওয়ার পর রাজ্জাকসহ কয়েকজন তা ভাগ-বাঁটোয়ারা করে নেন। নিজের ভাগের টাকা তিনি বাড্ডার বাসায় রাখেন।
এর আগে রাজ্জাকের নাখালপাড়ার ভাড়া বাসা থেকে ২ কোটি ২৫ লাখ টাকার চারটি চেক উদ্ধার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। গতকাল বুধবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই চেক উদ্ধারের বিষয়টি জানানো হয়।
পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, এই সোয়া দুই কোটি টাকার চেক নেওয়া হয়েছে রংপুর-৬ আসনে (পীরগঞ্জ) আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ‘ট্রেড জোন’ থেকে। ট্রেড জোনের পোশাক কারখানাসহ নানা ব্যবসা রয়েছে।
ট্রেড জোনের ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, সোয়া দুই কোটি নয়, মোট ৫ কোটি টাকার ১১টি চেক নিয়েছিলেন আবদুর রাজ্জাকসহ ছয়জন। তবে একটি চেকের বিপরীতেও তাঁরা টাকা উত্তোলন করতে পারেননি। কারণ, সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাবগুলোতে ট্রেড জোন কর্তৃপক্ষ টাকা রাখেনি। তিনি বলেন, টাকা উত্তোলন করতে না পেরে রাজ্জাকসহ অন্যরা ট্রেড জোনের মালিককে হুমকি দিচ্ছিলেন।
শাম্মী আহমেদের স্বামী সিদ্দিক আবু জাফরের কাছ থেকে প্রথম দফায় ১০ লাখ টাকা নেওয়ার পর দ্বিতীয়বার টাকা নিতে গিয়ে ১৭ জুলাই হাতেনাতে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন আবদুর রাজ্জাকসহ পাঁচজন। বাকি চারজন হলেন ইব্রাহিম হোসেন ওরফে মুন্না, সাকাদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব ও অপ্রাপ্তবয়স্ক একজন। প্রাপ্তবয়স্ক চার আসামির রিমান্ড চলছে। ঘটনাটিতে মামলা করেছেন সিদ্দিক আবু জাফর।