কাজে আসছে না ১৬ কোটির বেনাপোল বাস টার্মিনাল
Published: 27th, April 2025 GMT
আট বছর আগে ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত যশোরের বেনাপোল পৌর বাস টার্মিনালটি কোন কাজে আসছে না। সেখানে যাত্রীবাহী কোন বাস না থাকায় টার্মিনালটি খাঁখাঁ করছে।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকার ২০১৭ সালে বাস টার্মিনালটি নির্মাণের পর দুইবার উদ্বোধন করা হলেও এখান থেকে কোনো বাস ছাড়া হয় না। কোনো বাস দাঁড়ায়ও না। যে কারণে কাজে আসছে না মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নির্মিত এই টার্মিনাল।
বেনাপোল চেকপোস্ট থেকে কাগজপুকুর পর্যন্ত এলাকায় ভয়াবহ যানজট লেগেই থাকে। মূলত যানজট মুক্ত রাখতেই টার্মিনালটি নির্মাণ করে বেনাপোল পৌরসভা। কিন্তু বাসমালিক ও শ্রমিকসহ স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির স্বার্থের কারণে সফল হচ্ছে না। ফলে যাত্রী ও সাধারণ নাগরিকের সীমাহীন ভোগান্তি রয়েই গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশের প্রধান স্থলবন্দর ও ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট যশোরের বেনাপোলে অবস্থিত। এই ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে দিনে হাজার হাজার মানুষ বাংলাদেশ-ভারত যাতায়াত করে। প্রধান সড়কের শেষ প্রান্তে নোম্যান্সল্যান্ড-সংলগ্ন স্থানে ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট হওয়ায় যাত্রী ও পরিবহনের চাপে সেখানে এবং যশোর রোডের প্রায় তিন কিলোমিটারজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় বেনাপোল পৌরসভা শহরের প্রবেশমুখে কাগজপুকুর এলাকায় মহাসড়কের ধারে নতুন টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রায় ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত নতুন টার্মিনালটি ২০১৭ সালে উদ্বোধন করেন তখনকার সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। কিন্তু সেই থেকে এখন পর্যন্ত টার্মিনালটি ব্যবহারই করা হয়নি।
মালিক-শ্রমিকরা তাদের যানবাহন আগের মতোই নোম্যান্সল্যান্ডের কাছাকাছি চেকপোস্ট বাস টার্মিনাল পর্যন্ত নিয়ে যাচ্ছেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বেনাপোল পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডা.
অভিযোগ রয়েছে, নতুন টার্মিনালটি যেন ব্যবহৃত না হয়, তার পেছন থেকে যারা কলকাঠি নাড়েন, তাদের শীর্ষে আছেন বেনাপোল ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতির সভাপতি মো. আতিকুজ্জামান সনি।
তিনি বলেন, “পৃথিবীর কোনো দেশে সীমান্ত চেকপোস্ট থেকে তিন-চার কিলোমিটার দূরে টার্মিনাল নেই। এত দূরে টার্মিনাল নির্মাণ করা অবাস্তব চিন্তা। সে কারণে টার্মিনালটি ব্যবহৃত হচ্ছে না।”
শার্শা উপজেলা বিএনপির নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক নূরুজ্জামান লিটনও এত দূরে টার্মিনাল নির্মাণের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, “এ বিষয়ে পানি অনেক দূর গড়িয়েছে। বিষয়টি এখন আছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের হাতে।”
শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বেনাপোল পৌরসভার প্রশাসক ডা. কাজী নাজিব হাসান বলেন, “গত ৭ নভেম্বর জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা নতুন বাসটার্মিনালটি চালু করেছি। সেখানে নামাজের স্থান, ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার, আনসারদের থাকার ব্যবস্থাসহ আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও বাসমালিকরা এই টার্মিনাল ব্যবহার না করে নোম্যান্সল্যান্ডের কাছে বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ পরিচালিত টার্মিনালে বাস নিয়ে যাচ্ছেন। অথচ ওই টার্মিনালটি শুধু আন্তঃদেশীয় বাস প্রবেশের জন্য নির্ধারিত।”
ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট থেকে তিন-চার কিলোমিটার দূরে বাসটার্মিনাল হতে পারে কি না- এমন প্রশ্নে ডা. কাজী নাজিব বলেন, “শাটল বাস চালানোর মতো অপশন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাসমালিকরা সেই অপশন না নিয়ে ধর্মঘট করেন। এখন বন্দর কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছার ওপর নতুন টার্মিনাল সচল হওয়া-না হওয়া নির্ভর করছে।”
বেনাপোল বন্দরের পরিচালক মো. শামীম হোসেন বলেন, “মাত্র দুই মাস হলো আমি এখানে যোগ দিয়েছি। ফলে অনেক কিছুই এখনো বুঝতে পারছি না। তবে দেখছি, বন্দরের পুরোনো টার্মিনালই ব্যবহৃত হচ্ছে। এখন যেহেতু আন্তঃদেশীয় যাত্রীর চাপ কম, তাই তেমন সমস্যা হচ্ছে না। কিন্তু যাত্রীর চাপ বাড়লে নতুন টার্মিনাল ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ বিষয়ে যশোর জেলা প্রশাসনের রেজুলেশনও আমি দেখেছি।”
যশোরের জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলাম বলেন, “বিষয়টি এখন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে। মন্ত্রণালয় যেভাবে সিদ্ধান্ত দেবে, সেভাবেই কার্যকর করা হবে।”
ঢাকা/রিটন/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর নত ন ট র ম ন ল ব ন প ল প রসভ ব যবহ
এছাড়াও পড়ুন:
বিকাশ-এ লেনদেনের তথ্য-শেয়ার এখন আরও সহজ ও নিরাপদ
বিকাশ অ্যাপে লেনদেন করে তার তথ্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে পাঠানো এখন আরও সহজ, নিরাপদ এবং সুরক্ষিত। বিল দেওয়া, পেমেন্ট, বিশেষ করে কাউকে টাকা পাঠানোর পর স্ক্রিনশট শেয়ার করার বিষয়টি চর্চিত এবং প্রায় অবধারিত। গ্রাহকের এই প্রয়োজনকে সহজ করতে বিকাশ অ্যাপে যুক্ত হয়েছে এক-ক্লিকেই শেয়ার অপশন।
বিকাশ অ্যাপ থেকে সেন্ডমানি করার সাথে সাথেই স্ক্রিনে শেয়ার অপশন দেখতে পান গ্রাহক। যে অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা পাঠানো হয়েছে এবং যে অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছে, ট্রানজেকশন আইডি, টাকার পরিমাণ, সময়-তারিখ এবং রেফারেন্স -এই তথ্যগুলো শেয়ার স্ক্রিনে দেওয়া থাকে। গ্রাহক এক ট্যাপেই হোয়াটসঅ্যাপ, ম্যাসেঞ্জার, ই-মেইলসহ যেকোনো পছন্দের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে তথ্য শেয়ার করে দিতে পারেন।
এই পদ্ধতিতে তথ্য শেয়ারের সময় গ্রাহকের সবশেষ ব্যালেন্স স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়, ফলে গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট-ব্যালেন্সের তথ্য থাকে সুরক্ষিত।
কোনো গ্রাহক এই শেয়ার অপশন না ব্যবহার করে স্ক্রিনশট দিয়ে তথ্য শেয়ার করতে চাইলেও বর্তমান ব্যালেন্সকে এক ট্যাপেই হাইড করা সম্ভব। বর্তমান ব্যালেন্সের ঠিক পাশেই থাকা ‘আই’ (চোখ) -আইকনে ক্লিক করে বর্তমান ব্যালেন্স হাইড করে রাখতে পারেন।
অনেক গ্রাহক আছেন যারা ম্যাসেজ পাঠানো বা শেয়ারের চেয়ে কল করতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। সেসব গ্রাহকদের কথা বিবেচনায় রেখে টাকা পাঠানোর সাথে সাথে পরের স্ক্রিনেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে সরাসরি কল করার অপশনও যুক্ত করা হয়েছে। এতে আর ঐ ব্যক্তিকে কন্টাক্ট লিস্টে গিয়ে কল করতে হয় না। ফলে তার সময় বাঁচে। গ্রাহক পেয়ে যান বাড়তি স্বাচ্ছন্দ্য।
অনেক গ্রাহক আছেন লেনদেন করার পর কেবল ট্রানজেকশন আইডিটি কপি করে কাউকে পাঠান বা কোনো ফরম পূরণ করতেও ব্যবহার করেন। তেমন গ্রাহকদের জন্য এই স্ক্রিনেই কেবল ট্রানজেকশন আইডি কপি করার সুযোগ রয়েছে। ট্রানজেকশন আইডির পাশেই ‘কপি’ চিহ্নিত আইকন ট্যাপ করলেই নম্বরটি ক্লিপবোর্ডে কপি হয়ে যায়। পরে গ্রাহক তার প্রয়োজন অনুসারে যেকোনো উইন্ডোতে পেস্ট করে তথ্যটি কাজে লাগাতে পারেন।
একইভাবে, পেমেন্ট, বিল পে সহ অন্যান্য তথ্য সহজেই শেয়ার করতে পারছেন গ্রাহক। বর্তমান সময়ে এসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা। গ্রাহকের সুবিধার কথা বিবেচনায় তাই এমন ছোট ছোট গুরুত্বপূর্ণ সেবার সংযোজনে গ্রাহকের লেনদেনের তথ্য নিয়ন্ত্রিতভাবে কাজে লাগানোর সাথে সাথে তার সুরক্ষাকে নিশ্চিত করা হচ্ছে।
ঢাকা/টিপু