ফেনীতে বন্যায় আশ্রয় হারানো ১১০ পরিবার পেল নতুন ঘর
Published: 30th, April 2025 GMT
গত বছর ভয়াবহ বন্যায় আশ্রয় হারানো ফেনীর ১১০টি পরিবারকে নতুন ঘর উপহার দেওয়া হয়েছে। ‘নিজ বসতভিটায় বিশেষ আবাসন নির্মাণ’ শীর্ষক পাইলট প্রকল্পের আওতায় ঘরগুলো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকালে অনলাইনে যুক্ত হয়ে এই প্রকল্পের উদ্বোধন করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড.
আরো পড়ুন: চব্বিশের বন্যা স্বাভাবিক ছিল না: প্রধান উপদেষ্টা
আরো পড়ুন:
কঙ্গোর রাজধানীতে প্রবল বৃষ্টিপাতে ৩৩ জনের প্রাণহানি
স্লুইসগেট মেরামত না হওয়ায় হুমকিতে ৩ উপজেলার বোরো ধান
অনুষ্ঠানে প্রতীকীভাবে ফেনী সদর উপজেলার ফাজিলপুর ইউনিয়নের শহীদুল ইসলামের হাতে ঘরের চাবি তুলে দেওয়া হয়। চাবি হস্তান্তর করেন জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম। এসময় উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা সেনানিবাসের জিওসি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান ছিদ্দিকী।
ফেনী জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, সদর উপজেলায় ৩৫টি, ফুলগাজী, ছাগলনাইয়া ও পরশুরামে ২০টি, দাগনভূঞায় ১০টি এবং সোনাগাজীতে ৫টি করে ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিটি ঘরের নির্মাণ ব্যয় ৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা। একই প্রকল্পে নোয়াখালী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রামেও ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে।
উপকারভোগী ফেনী সদর উপজেলার শর্শদী ইউনিয়নের জামাল উদ্দিন বলেন, “বন্যায় আমার ঘর একেবারে ভেঙে গিয়েছিল। ছেলে-মেয়েকে নিয়ে খোলা আকাশের নিচে থাকতে হয়েছিল। এই ঘর পেয়ে মনে হচ্ছে, জীবনটা আবারো শুরু হলো।”
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “এটি কোনো স্বাভাবিক বন্যা ছিল না। মানুষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ভয়াবহতা বোঝা গেছে, বন্যা শেষ হওয়ার পর। তখন মানুষ জানমাল রক্ষায় ব্যস্ত ছিল। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানো গেছে। আমরা দেখাতে পেরেছি, কীভাবে সৎভাবে এবং সম্মিলিতভাবে দুর্যোগ মোকাবিলা করা যায়।”
তিনি আরো বলেন, “ঘর নির্মাণের সময় রাস্তা, সেতু ভাঙা ছিল। কাজটা সহজ ছিল না। তারপরও সেনাবাহিনী আন্তরিকভাবে কাজ করেছে। এটি ছোট প্রকল্প হলেও বড় বার্তা দিয়েছে—সরকার জনগণের পাশে আছে এবং থাকবে।”
ফেনী জেলা প্রশাসক মো.সাইফুল ইসলাম জানান, গত বছরের বন্যায় ফেনীতে ১ হাজার ৭১৮টি ঘর সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়েছিল। প্রথম ধাপে ১১০টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে।”
ঘর হস্তান্তরের অনুষ্ঠানে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, সেনাবাহিনীর সদস্য ও ফেনীর বিভিন্ন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/সাহাব/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বন য উপজ ল র প রকল প বন য য়
এছাড়াও পড়ুন:
শিক্ষার গতিপথ ও উন্নয়ন নিয়ে ঢাবিতে সেমিনার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ‘বাংলাদেশে জুলাই অভ্যুত্থান ও শিক্ষার গতিপথ: প্রত্যাশা অর্জন ও আগামী দিন’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৩টায় শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) এলিভেট টকের উদ্যোগে শহীদ ড. সাদাত আলী সম্মেলন কক্ষে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনিনুর রশিদের সঞ্চালনায় সেমিনারে বক্তব্যে দেন, ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মো: আবদুস সালাম, ড. মো. আহসান হাবীব, ড. মো. শাহরিয়ার হায়দার, ড. সায়রা হোসেন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (ডুজা) সম্পাদক মাহাদী হাসান।
আরো পড়ুন:
জবি দ্বিতীয় ক্যাফেটেরিয়া দ্রুত চালুর দাবি
জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা
এ সময় অধ্যাপক ড. মো. আবদুস সালাম বলেন, “জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অনেকগুলো স্বপ্নের বীজ বপন করেছিল। তারমধ্যে অন্যতম একটি ছিল, শিক্ষার মানোন্নয়ন। কিন্তু দুঃখের বিষয় বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সেই শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করতে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা আশা রেখেছিলাম নতুন একটা শিক্ষানীতি প্রণয়ন হবে। কিন্তু তারা সেখানে এখন পর্যন্ত হাত দেয়নি।”
শিক্ষার বাজেট নিয়ে তিনি বলেন, “সর্বশেষ যে বাজেট হয়েছিল, সেখানে শিক্ষার বাজেট বৃদ্ধি করা হয়নি। এত স্বল্প বাজেট দিয়ে শিক্ষার মান কখনো বৃদ্ধি করা সম্ভব না। এমনকি শিক্ষকদের মর্যাদার বিষয়ে অনেকদিন থেকে আমরা সংগ্রাম করছি। শিক্ষকদের পরিপূর্ণ মর্যাদা ছাড়া শিক্ষার মান উন্নয়ন কল্পনা করা যায় না।”
শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে পরিবর্তন নিয়ে অধ্যাপক ড. মো. আহসান হাবীব বলেন, “শিক্ষককে আমরা কিভাবে দেখব? আমরা দেখেছি কোভিডের পরে শিক্ষার্থীরা ক্লাসরুমে সঠিক আচরণ করছে না। কিভাবে কথা বলতে হয় বা কি আচার-আচরণ করতে হয়, তা তারা ভুলে গেছে। আমরা হয়ত জেনারেশন গ্যাপে আছি বা হয়তো তারা অনেক অ্যাডভান্স হয়ে গেছে। তবে ২৪ এর অভ্যুত্থানে আমরা তাদের এক হয়ে লড়াই করতে দেখেছি।”
তিনি বলেন, “আমাদের কারিকুলামে ও বই লেখায় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের সুযোগ থাকতে হবে। শিক্ষার্থীরা কি চায়, কেনো চায়- তা তাদের তুলে ধরার সুযোগ করে দিতে হবে। কোনো ধরনের পলিটিক্যাল বাঁধা ছাড়া সব জায়গায় স্টুডেন্ট ভয়েস রেইজ করার সুযোগ করে দিতে হবে।”
ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মো: শাহরিয়ার হায়দার বলেন, “শিক্ষার্থী এবং আমাদের মধ্যে ভালো বন্ধন তৈরি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পরীক্ষার রেজাল্টের সময় সি প্লাস বা বি গ্রেড পেলে সে আমাকে অন্য চোখে দেখছে। শিক্ষার্থীদের কাছে আমরা জানতে চাই না, তারা আসলে কি চায়? এজন্য আমাদের এজন্য ক্লাইমেট সার্ভে করা দরকার। তাহলে আমরা তাদের চাওয়া পাওয়া সম্পর্কে জানতে পারব। এমনকি শিক্ষার্থীরা এখনো জানে না কিভাবে অন্য লিঙ্গের বন্ধুদের সঙ্গে আচরণ করতে হবে। এ বিষয়ে মাইক্রো কোর্স চালু করা দরকার।”
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী