দুই মাসের মধ্যে হেফাজতের নেতা–কর্মীদের মামলা প্রত্যাহারের দাবি মামুনুল হকের
Published: 3rd, May 2025 GMT
নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে থাকা সব মামলা প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। সংগঠনটির যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, ‘আমরা পরিষ্কার করে বলছি, আগামী দুই মাসের মধ্যে হেফাজতে ইসলামের নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে থাকা সব মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। সব নেতা–কর্মীকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।’
চার দফা দাবি আদায়ে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আজ শনিবার অনুষ্ঠিত হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসমাবেশে মামুনুল হক এই মন্তব্য করেন।
ভোর থেকেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জড়ো হন। সকাল ৯টার দিকে মহাসমাবেশ শুরু হয়। বেলা সোয়া একটা পর্যন্ত সমাবেশ চলে।
মামুনুল হক আরও বলেন, ‘নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন পবিত্র কোরআন ও ইসলামকে কটাক্ষ করেছে। তারা মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের শাস্তি বাস্তবায়ন দেখতে চাই।’
হেফাজতে ইসলামের দায়িত্বশীল নেতারা জানান, আজকের মহাসমাবেশের মুখ্য দাবি মূলত চারটি। এর মধ্যে প্রধান দাবি হচ্ছে অনতিবিলম্বে হেফাজত নেতাদের নামে থাকা সব মামলা প্রত্যাহার। সংগঠনটির হিসাবমতে, সারা দেশে হেফাজত নেতাদের নামে প্রায় ৩০০টি মামলা রয়েছে। এ ছাড়া ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হত্যাকাণ্ড, ২০২১ সালের মার্চে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা সফর ঘিরে হত্যাকাণ্ড, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার। এরপর যথাক্রমে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিল, সংবিধানের প্রস্তাবনায় আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস পুনর্বহাল করা, ফিলিস্তিন ও ভারতে মুসলিম গণহত্যা ও নিপীড়ন বন্ধের দাবিগুলো রয়েছে।
আরও পড়ুনমহাসমাবেশ শেষে নতুন দুটি কর্মসূচি দিল হেফাজতে ইসলাম৪৬ মিনিট আগেমানবিক করিডরের নামে যদি বাংলাদেশের স্বাধীনতা লুণ্ঠনের পাঁয়তারা করা হয়, তাহলে দেশপ্রেমিক জনতা ছাড় দেবে না, বলেন মামুনুল হক।
সমাবেশে হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির মাওলানা মাহমুদুল হক ১২ দফাসংবলিত ঘোষণাপত্র পাঠ করেন। এতে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিল ও আলেমদের সমন্বয়ে নতুন কমিশন গঠন, বিভিন্ন শব্দের আড়ালে ধর্মবিরোধী গোষ্ঠীর স্বীকৃতি বন্ধ, জুলাই, শাপলা ও সব গণহত্যার বিচারে গতি আনতে ট্রাইব্যুনালের সক্ষমতা বাড়ানো, আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিতসহ সরকারের কাছে বিভিন্ন দাবি পেশ করা হয়।
ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আজ শনিবার হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসমাবেশ হয়েছে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম ম ন ল হক ইসল ম র
এছাড়াও পড়ুন:
রাবিতে কমপ্লিট শাটডাউনে ইবির জিয়া পরিষদের সংহতি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপ-উপাচার্যকে লাঞ্ছিতের প্রতিবাদে বিবৃতি দিয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন জিয়া পরিষদ। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের স্থায়ী বহিষ্কারসহ শাস্তি দাবি ও শিক্ষকদের চলমান কমপ্লিট শাটডাউনসহ সব আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছে সংগঠনটি।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) সংগঠনটির সভাপতি অধ্যাপক ড. ফারুকুজ্জামান খান ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে এ তথ্য জানা যায়।
আরো পড়ুন:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে ওপেনার স্মিথ, পেয়েছেন ওয়ানডের নেতৃত্ব
করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিলেন পলক
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরের দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) দাফতরিক কাজ শেষে বাসায় যাওয়ার সময় ছাত্র নামধারী কিছু দুষ্কৃতকারীর হাতে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হন। আক্রমণ থেকে বাঁচতে জুবেরি ভবনে গেলে সেখানেও তাকে ঘিরে দুষ্কৃতকারীরা নানা ধরনের কটূক্তি ও ধস্তাধস্তি করতে থাকে। একপর্যায়ে তারা উপ-উপাচার্যের গলা চেপে ধরে ও ধাক্কা মেরে সিঁড়িতে ফেলে নির্যাতন করতে থাকে।
তাকে রক্ষা করতে গিয়ে অনেক শিক্ষক-কর্মকর্তা আহত হন। বিভিন্ন স্যোশাল মিডিয়ায় একজন ডেপুটি রেজিস্ট্রারের দাঁড়ি ধরে টানাটানি করতেও দেখা যায়। বিশেষ করে রাকসুর নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. এনামুল হক সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তাকে হাসপাতালে নিতে হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, জুবেরি ভবন একটি আবাসিক ও ক্লাব ভবন। এখানে অনেক পরিবার বাস করে, যার মধ্যে নারী ও শিশুরাও আছে। জুবেরি ভবনের অবস্থানরত শিক্ষকদের কক্ষে বিদ্যুৎ সংযোগ ও খাবার পানির ব্যবস্থাও অমানবিকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। ভবনের পরিবারগুলো এখনো আতঙ্কিত ও নিরাপত্তাহীনতায় আছে। আমরা মনে করি— এ ধরনের নারকীয় ঘটনা শুধু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠকেই কলঙ্কিতই করেনি; বরং শিক্ষা, শিক্ষকতা এবং মানুষ গড়ার মহান কাজটিকেই কলুষিত ও লাঞ্ছিত করেছে।
এই কুচক্রী মহল বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়ে দেশটিকে আবারো গহিন অন্ধকারে নিয়ে যেতে চায়।
আমরা এই ঘটনাকেন্দ্রিক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চলমান কমপ্লিট শাটডাউনসহ সকল আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছি এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের পাশাপাশি প্রচলিত আইনের আওতায় গ্রেপ্তার করে যথাযথ বিচার নিশ্চিত করার জোর দাবি জানাচ্ছি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) উপ-উপাচার্যসহ শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষক-কর্মকর্তারা।
ঢাকা/তানিম/মেহেদী