ফেনীতে সাউথইস্ট ব্যাংকের একটি শাখা থেকে গ্রাহকদের সঞ্চিত টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মো. জিয়াউল হক (৩৬) নামের এক ব্যাংক কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ রোববার সকালে তাঁকে ফেনী শহর থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

মো. জিয়াউল হক জেলার ছাগলনাইয়া উপজেলার পাঠাননগর ইউনিয়নের পশ্চিম পাঠাননগড় গ্রামের সালমান হাজি বাড়ির আবদুল হকের ছেলে। তিনি সাউথইস্ট ব্যাংকের সিলোনিয়া বাজার শাখায় জুনিয়র অফিসার পদে কর্মরত আছেন।

পুলিশ জানায়, সাউথইস্ট ব্যাংকের দাগনভূঞা সিলোনিয়া বাজার শাখায় জুনিয়র অফিসার মো.

জিয়াউল হক ব্যাংকের গ্রাহকদের কয়েক কোটি টাকা তাঁদের অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে নেন। বিষয়টি জানাজানি হলে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকেরা ব্যাংকে এসে অভিযোগ করেন। ৪ মে ওই ব্যাংক কর্মকর্তা আত্মগোপন করেন। পরে ওই শাখার ব্যবস্থাপক মো. কামরুজ্জামান ৬ মে দাগনভূঞা থানায় জিয়াউল হককে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর পুলিশ আজ সকালে তাঁকে গ্রেপ্তার করে। এ নিয়ে ‘ফেনীতে সাউথইস্ট ব্যাংক থেকে আমানতকারীদের টাকা লোপাটের অভিযোগ’ শিরোনামে ৬ মে প্রথম আলো অনলাইনে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

দাগনভূঞা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ওয়াহিদ পারভেজ জানান, গ্রেপ্তার আসামি এখনো পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন। প্রয়োজনীয় কার্যক্রম শেষে তাঁকে আদালতে পাঠানো হবে।

এর আগে গ্রাহকদের অভিযোগের ভিত্তিতে সাউথইস্ট ব্যাংকের সিলোনিয়া বাজার শাখায় জিয়াউল হকের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। তদন্ত শুরুর আগেই তিনি গা ঢাকা দেন বলে ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে।

সাউথইস্ট ব্যাংকের সিলোনিয়া বাজার শাখার ব্যবস্থাপক মো. কামরুজ্জামান বলেন, গ্রাহকদের আমানতের অর্থ ব্যাংক হিসাব থেকে তুলে নেওয়ার বিষয়টি জানার পর ব্যাংকের অডিট বিভাগের কর্মকর্তারা এই শাখায় এসে তথ্য সংগ্রহ করেছেন। এখনো অডিটের প্রতিবেদন আসেনি। কতজন গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে কী পরিমাণ অর্থ সরানো হয়েছে তা প্রতিবেদন পাওয়ার আগে বিস্তারিত জানানো সম্ভব হচ্ছে না।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স উথইস ট ব য গ র হকদ র কর মকর ত গ র হক

এছাড়াও পড়ুন:

ধামাকা শপিংয়ের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামের ৬২ কোটি টাকার সম্পত্তি ক্রোক করেছে সিআইডি

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘ধামাকা শপিং’–এর বিরুদ্ধে গ্রাহকের প্রায় ১১৬ কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে প্রায় ৬২ কোটি টাকার সম্পদ ক্রোক করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। বৃহস্পতিবার আদালতের নির্দেশে এসব সম্পত্তি ক্রোক করা হয়।

সিআইডি জানায়, ধামাকা শপিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এস এম ডি জসীম উদ্দিন চিশতীর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টে গ্রাহকদের অর্থ হস্তান্তর করা হয়। এমনকি মাইক্রোটেড ফুড অ্যান্ড বেভারেজের অ্যাকাউন্টেও এই অর্থ স্থানান্তর করা হয়, যা মানি লন্ডারিংয়ের আওতায় পড়ে। এ বিষয়ে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর আওতায় বনানী মডেল থানায় ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর একটি মামলা  করা হয়। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা বর্তমানে সবাই দেশের বাইরে অবস্থান করছেন এবং অর্থের একটি বড় অংশ বিদেশে পাচার হয়েছে বলে তদন্তে উঠে এসেছে।

সিআইডির তথ্য অনুযায়ী, ক্রোক করা সম্পদের মধ্যে রয়েছে রাজধানীর বনানী মডেল টাউনে ৫ কাঠা জমির ওপর নির্মিত একটি বহুতল ভবন, যার মূল্য প্রায় ৫০ কোটি টাকা। পাশাপাশি গাজীপুরের কাশিমপুর পূর্ব বাগাবাড়ী এলাকায় মাইক্রো ট্রেড ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের নামে থাকা ৪১ শতাংশ জমিও (মূল্য প্রায় ১২ কোটি টাকা) ক্রোক করা হয়েছে। ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত ১৬ জুন এই সম্পদ ক্রোকের আদেশ দেন।

তদন্তে আরও উঠে এসেছে, ধামাকা শপিং নামে অনলাইন প্ল্যাটফর্মটি বৈধ কোনো নিবন্ধন ছাড়াই ইনভ্যারিয়েন্ট টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেডের ছত্রচ্ছায়ায় পরিচালিত হচ্ছিল। স্বল্প মূল্যে পণ্য সরবরাহের লোভ দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানটি হাজার হাজার গ্রাহক ও বিক্রেতার কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে। তাদের নিজস্ব কোনো ব্যাংক হিসাব না থাকলেও ইনভ্যারিয়েন্ট টেলিকমের সাউথইস্ট ব্যাংক, সিটি ব্যাংক ও ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে তারা লেনদেন করত। সাউথইস্ট ব্যাংকের একটি হিসাব বিশ্লেষণে দেখা যায়, সেখানে ৫৮৮ কোটি ৯১ লাখ টাকার লেনদেন হলেও ২০২১ সালের ২৭ জুন মাত্র ৯৩ হাজার ৭৩১ টাকা স্থিতি ছিল, যা আর্থিক জালিয়াতির সুস্পষ্ট প্রমাণ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ধামাকা শপিংয়ের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামের ৬২ কোটি টাকার সম্পত্তি ক্রোক করেছে সিআইডি