বাবার ‘বিক্রি করা’ সন্তান ফিরল মায়ের কোলে
Published: 12th, May 2025 GMT
আট বছর আগে শিরিনা আক্তারের বিয়ে হয় কেন্দুয়ার ফতেপুর গ্রামের সোহেল রানার সঙ্গে। সংসারে আছে দুই মেয়ে। দাম্পত্য কলহে বিচ্ছেদ হয় তাদের। সোহেল অন্যত্র বিয়ে করেন। শিরিনার অভিযোগ, সাত-আট দিন আগে তাঁর সাবেক স্বামী ফতেপুর এসে এক বছরের শিশুসন্তান নিয়ে পালিয়ে গেছেন।
শিরিনা বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারেন, সোহেল শিশুটিকে অন্যত্র ‘বিক্রি করেছেন’। উপায় না পেয়ে কয়েকজনের পরামর্শে ৭ মে শিশু সহায়তা সুরক্ষার ১০৯৮ নম্বরে ফোন করেন। এরপর কেন্দুয়ার ইউএনও এবং সমাজসেবা কর্মকর্তাকে জানালে তারা উদ্যোগী হন। তাদের প্রচেষ্টায় শিশুটি ফিরেছে মায়ের কোলে।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ইউনুস রহমান জানান, শিরিনা ১০৯৮ নম্বরে কল দিলে তিনি সমাজসেবা বিভাগের শিশু সুরক্ষা সমাজকর্মী সুব্রত সরকারকে নিয়ে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে চলে যান কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে। সেখানে সোহেলকে জিজ্ঞাসাবাদের পর শিশুটিকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।
সমাজসেবা কর্মকর্তা বলেন, শিরিনা তাঁর সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে সন্তানকে অন্যত্র বিক্রি করার অভিযোগ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে অভিযান চালিয়ে এক বছরের খাদিজাকে উদ্ধার করে ৮ মে মায়ের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। যদিও সোহেল সন্তান বিক্রির কথা অস্বীকার করেছেন।
সোহেল রানা ইউনুস রহমানকে বলেন, ‘আমার সন্তান আমি নিয়ে এসেছি। বিক্রি করব কেন?’ এ বিষয়ে কথা বলতে সোহেল রানার সঙ্গে মোবাইল ফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
সুব্রত সরকার সোমবার শিরিনা ও তাঁর সন্তান খাদিজাকে সহায়তা করতে সমাজসেবা কর্মকর্তার কাছে মৌখিক আবেদন জানান। তিনি বলেন, খাদিজা সুস্থ এবং তার মায়ের কাছেই আছে। তাকে পুনর্বাসনের জন্য সহায়তা করা হলে সুন্দর জীবন গড়ে উঠবে। তিনি শিরিনাকে একটি আবেদন দেওয়ার জন্য পরামর্শ দেন।
শিরিনা আক্তার বলেন, ‘আমার দুধের সন্তানকে ফিরে পেয়েছি। আমি সরকারের কাছে দুই মেয়ের ভরণ-পোষণের জন্য সহযোগিতা চাই।’
এ বিষয়ে কেন্দুয়া থানার পেমই তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ তোফাজ্জল হোসেন বলেন, সমাজসেবা কর্মকর্তা সেদিন তাদের সঙ্গে নিয়েই এক বছরের শিশু সন্তানটি তার মায়ের কাছে বুঝিয়ে দিয়েছেন। সন্তান পেয়ে মা খুশি। তাঁর কোনো অভিযোগ নেই।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বাগেরহাটে সংসদীয় আসন কমানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ
বাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসনের একটি কমিয়ে জেলায় তিনটি সংসদীয় আসন করার প্রস্তাবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (২ আগস্ট) দুপুরে বাগেরহাট শহরের দশানী ট্রাফিক মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের করা হয়। মিছিলটি খুলনা-বাগেরহাট মহাসড়ক দিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। সেখানে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এ টি এম আকরাম হোসেন তালিমের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়।
প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দেন, বিএনপির গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ সালাম, বাগেরহাট জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা রেজাউল করিম, সেক্রেটারি মাওলানা ইউনুস আহমেদ, খেলাফত মজলিসের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা রমিজ উদ্দিন, জেলা ইমাম সমিতির সাধারাণ সম্পাদক মোহাম্মদ উল্লাহ আরেফী, জেলা যুব দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লা, খেলাফত মজলিসের সভাপতি আমিরুল ইসলাম সিদ্দিকী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সভাপতি এস এম সাদ্দাম ও এনসিপির আহ্বায়ক মোর্শেদ আনোয়ার সোহেল প্রমুখ।
আরো পড়ুন:
আসন খসড়া বাতিলের দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মহাসড়কে বিক্ষোভ
স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
বক্তারা বলেন, ‘‘যদি না বুঝে করে থাকেন তাহলে আমরা দাবি জানালাম, আপনারা আমাদের দাবি মেনে নিয়ে বাগেরহাটের তিন আসনের প্রস্তাব বাতিল করে চারটি আসন পুনর্বহাল করবেন। তবে এটা নিয়ে যদি গড়িমসি করেন, আপনাদের মনগড়া প্রস্তাব জনগণের উপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন, তাহলে জনগণ তা মেনে নেবে না।’’
বক্তারা আরো বলেন, ‘‘জন্মলগ্ন থেকে বাগেরহাটে চারটি আসন। একটি আসন কমিয়ে তিনটি আসন করাটা খুবই অযৌক্তিক। এই প্রস্তাব দেয়ার আগে জেলার রাজনীতিবিদ ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেনি। আজকে শান্তিপূর্ণ মিছিল করেছি। আগামীকালও আমরা মিছিল করব। জেলা প্রশাসক ও নির্বাচন কর্মকর্তা বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হবে। এরপরও যদি নির্বাচন কমিশন তাদের প্রস্তাব থেকে ফিরে না আসে, তাহলে আরো কঠোর আন্দোলন করা হবে।’’
প্রয়োজনে সারা দেশ থেকে বাগেরহাট বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার হুঁশিয়ারি দেন নেতারা।
দ্বাদশ সংসদের ২৬১ আসনের সীমানা বহাল রেখে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ৩৯টি আসনে ছোটখাটো পরিবর্তন করে নতুন সীমানার খসড়া প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। পরিবর্তনের মধ্যে গাজীপুরে একটি আসন বাড়ানো হয়েছে এবং বাগেরহাটে একটি আসন কমানো হয়েছে। তবে আগামী ১০ অগাস্টের মধ্যে এ প্রস্তাবের বিষয়ে দাবি-আপত্তি জানানোর সুযোগ রয়েছে।
ঢাকা/শহিদুল/বকুল