দর্শকদের গালির জবাবে উত্তপ্ত পরিস্থিতি, শামীমকে আটকালেন তানজিম
Published: 22nd, May 2025 GMT
শারজায় সিরিজ হার যেন ধৈর্যের শেষ সীমায় পৌঁছে দেয় প্রবাসী দর্শকদের। স্বল্প আয়ের কষ্টের টাকা জমিয়ে মাঠে খেলা দেখতে আসা প্রবাসী বাংলাদেশিদের অনেকেই তৃতীয় টি-টোয়েন্টির পর ক্ষোভে ফেটে পড়েন। আরব আমিরাতের কাছে ৭ উইকেটে হার এবং সিরিজ হাতছাড়া হওয়ায় হতাশা চরমে পৌঁছায়।
সেই হতাশা থেকেই বুধবার ম্যাচ শেষে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের উদ্দেশে গ্যালারি থেকে শুরু হয় চিৎকার আর গালিগালাজ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, খেলোয়াড়েরা যখন মাঠ ছেড়ে ড্রেসিংরুমে ফিরছিলেন, তখন এক দর্শক তীব্র ভাষায় গালাগাল করছিলেন। অন্য ক্রিকেটাররা মাথা নিচু করে চলে গেলেও থেমে যান শামীম হোসেন পাটোয়ারী। তিনি গ্যালারির দিকে ইঙ্গিত করে সেই দর্শককে নিচে নামার আহ্বান জানান।
শামীমের এমন প্রতিক্রিয়ায় পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। গ্যালারির অনেক দর্শক একসঙ্গে ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে চিৎকার শুরু করেন। ঠিক তখনই সতীর্থ তানজিম হাসান সাকিব ফিরে এসে শামীমকে টেনে নিয়ে ড্রেসিংরুমের দিকে নিয়ে যান। সৌভাগ্যবশত, পরিস্থিতি আর বাড়তে দেয়নি কেউ। শামীমও শান্ত হয়ে ভেতরে চলে যান।
ক্রিকেটারদের এমন পরিস্থিতিতে পড়া নিঃসন্দেহে হতাশাজনক। তবে দর্শকদের হতাশারও কারণ রয়েছে। পুরো সিরিজে ব্যাট হাতে পুরোপুরি ব্যর্থ ছিলেন শামীম। তিন ম্যাচে তার সংগ্রহ মাত্র ২১ রান। প্রথম ম্যাচে ৬ রানে আউট, দ্বিতীয় ম্যাচে অপরাজিত ৬, আর শেষ ম্যাচে করেন মাত্র ৯ রান।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পর স থ ত
এছাড়াও পড়ুন:
নিরাপদ অভিবাসন ও ন্যায্য নিয়োগ সুবিধায় ঢাকায় ওইপি উদ্বোধন
ঢাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট প্ল্যাটফর্ম (ওইপি) উদ্বোধন করেছে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। নিরাপদ অভিবাসন ও ন্যায্য নিয়োগ প্রক্রিয়া অগ্রগতির ক্ষেত্রে এটি বাংলাদেশের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে প্ল্যাটফর্মটি উদ্বোধন করা হয়।
আরো পড়ুন:
সোনালী আঁশ লিমিটেডের মুনাফা বেড়েছে ১৭.৮৮ শতাংশ
শেয়ারহোল্ডারদের নগদ লভ্যাংশ দিল ওয়ালটন
বাংলাদেশ সরকারের প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এবং সুইজারল্যান্ড সরকারের যৌথ উদ্যোগে এই প্ল্যাটফর্মটি তৈরি করা হয়েছে।
জাতীয় সমন্বিত এই ডিজিটাল গেটওয়ে শ্রম অভিবাসন প্রক্রিয়ার বিভিন্ন পক্ষকে এক প্ল্যাটফর্মে যুক্ত করবে। এর মধ্যে রয়েছেন বিদেশে যেতে আগ্রহী কর্মী, রিক্রুটমেন্ট এজেন্সি, ব্যুরো অব ম্যানপাওয়ার, এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড ট্রেনিং (বিএমইটি), টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার, বিদেশি নিয়োগকর্তা, ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ এবং প্রত্যাবর্তন ও পুনর্বাসন সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ।
এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে অভিবাসন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও সেবার মান উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
একই সঙ্গে এটি দালালচক্রের ভূমিকা কমাতে এবং কর্মীদের জন্য অভিবাসন ব্যয় হ্রাসে সহায়তা করবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম, বাংলাদেশে সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন মি. ডেইপাক এলমার এবং আইএলও বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মি. ম্যাক্স টুনন।
এছাড়া বিভিন্ন দূতাবাস, উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠান, জাতিসংঘ সংস্থা, রিক্রুটমেন্ট এজেন্সি, নিয়োগদাতা সংস্থার সংগঠন, শ্রমিক সংগঠন এবং অন্যান্য সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নিয়ামত উল্লাহ ভূঁইয়া।
উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, “নিরাপদ, স্বচ্ছ এবং কার্যকর অভিবাসনের জন্য এই উদ্যোগটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। প্রবাসীরা দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি। দেশের জন্য তাদের অবদান উল্লেখযোগ্য। তাদের এই যাত্রা নিরাপদ, সুরক্ষিত এবং সম্মানজনক করার দায়িত্ব আমাদের। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমরা এই প্ল্যাটফর্মে আরো নতুন ফিচার যুক্ত করতে পারব, যা শ্রমিক, নিয়োগকর্তা ও সরকার, সব পক্ষের জন্যই কাজে আসবে।”
পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম বলেন, “ন্যায্য ও স্বচ্ছ নিয়োগব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে গন্তব্য দেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক শ্রম চুক্তি আরও শক্তিশালী করা সম্ভব হবে।”
তিনি উল্লেখ করেন, “ওইপি গন্তব্য দেশগুলোর কাছে বাংলাদেশের অভিবাসন ব্যবস্থার প্রতি আস্থা বৃদ্ধি করবে, যা দীর্ঘমেয়াদে আরো বেশি সুযোগ সৃষ্টি করবে।”
আইএলও বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মি. ম্যাক্স টুনন বলেন, “ওইপি মূলত ন্যায্য নিয়োগ নীতিমালাকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার একটি কার্যকর পদক্ষেপ। এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে তথ্য ও সেবাকে কেন্দ্রীভূত করায় রিক্রুটমেন্ট এজেন্সি আরো ভালোভাবে তদারকি করা সম্ভব হবে, কর্মীরা নির্ভরযোগ্য তথ্য পাবে এবং সামগ্রিকভাবে অভিবাসন প্রক্রিয়া আরো নিরাপদ, সুশৃঙ্খল ও নিয়মতান্ত্রিক হবে।”
বাংলাদেশে সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন মি. ডেইপাক এলমার বলেন, “শুধু প্রযুক্তি দিয়েই অভিবাসন শাসন ব্যবস্থার সমস্যাগুলো সমাধান হবে না। এই প্ল্যাটফর্মের প্রকৃত সাফল্য নির্ভর করবে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান, রিক্রুটিং এজেন্সি, নিয়োগকর্তা এবং অভিবাসী নিজে কতটা দায়বদ্ধতা ও আন্তরিকতার সঙ্গে এটিতে যুক্ত হয় এবং ব্যবহার করে তার ওপর। সব অংশীজনের প্রতিশ্রুতি, দায়িত্ববোধ ও জবাবদিহিতাই শেষ পর্যন্ত এর কার্যকারিতা নির্ধারণ করবে।”
সমাপনী বক্তব্যে সিনিয়র সচিব ড. নিয়ামত উল্লাহ ভূঁইয়া বলেন, “ওইপি উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে একটি প্রকল্পের সমাপ্তি নয়, বরং শ্রম অভিবাসন ব্যবস্থাপনাকে নতুন মাত্রায় উন্নীত করার একটি নতুন পর্যায়ের সূচনা হলো। আমরা প্ল্যাটফর্মটির ফিচার আরো সমৃদ্ধ করব, প্রাতিষ্ঠানিক সমন্বয় আরো সুদৃঢ় করব এবং অংশীজনদের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাব, যাতে অভিবাসী কর্মীরা মর্যাদা, নিরাপত্তা ও আস্থার সঙ্গে তাদের বিদেশযাত্রা পরিকল্পনা করতে পারে।”
ঢাকা/এনটি/এসবি