শারজায় সিরিজ হার যেন ধৈর্যের শেষ সীমায় পৌঁছে দেয় প্রবাসী দর্শকদের। স্বল্প আয়ের কষ্টের টাকা জমিয়ে মাঠে খেলা দেখতে আসা প্রবাসী বাংলাদেশিদের অনেকেই তৃতীয় টি-টোয়েন্টির পর ক্ষোভে ফেটে পড়েন। আরব আমিরাতের কাছে ৭ উইকেটে হার এবং সিরিজ হাতছাড়া হওয়ায় হতাশা চরমে পৌঁছায়।

সেই হতাশা থেকেই বুধবার ম্যাচ শেষে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের উদ্দেশে গ্যালারি থেকে শুরু হয় চিৎকার আর গালিগালাজ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, খেলোয়াড়েরা যখন মাঠ ছেড়ে ড্রেসিংরুমে ফিরছিলেন, তখন এক দর্শক তীব্র ভাষায় গালাগাল করছিলেন। অন্য ক্রিকেটাররা মাথা নিচু করে চলে গেলেও থেমে যান শামীম হোসেন পাটোয়ারী। তিনি গ্যালারির দিকে ইঙ্গিত করে সেই দর্শককে নিচে নামার আহ্বান জানান।

শামীমের এমন প্রতিক্রিয়ায় পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। গ্যালারির অনেক দর্শক একসঙ্গে ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে চিৎকার শুরু করেন। ঠিক তখনই সতীর্থ তানজিম হাসান সাকিব ফিরে এসে শামীমকে টেনে নিয়ে ড্রেসিংরুমের দিকে নিয়ে যান। সৌভাগ্যবশত, পরিস্থিতি আর বাড়তে দেয়নি কেউ। শামীমও শান্ত হয়ে ভেতরে চলে যান।

ক্রিকেটারদের এমন পরিস্থিতিতে পড়া নিঃসন্দেহে হতাশাজনক। তবে দর্শকদের হতাশারও কারণ রয়েছে। পুরো সিরিজে ব্যাট হাতে পুরোপুরি ব্যর্থ ছিলেন শামীম। তিন ম্যাচে তার সংগ্রহ মাত্র ২১ রান। প্রথম ম্যাচে ৬ রানে আউট, দ্বিতীয় ম্যাচে অপরাজিত ৬, আর শেষ ম্যাচে করেন মাত্র ৯ রান।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর স থ ত

এছাড়াও পড়ুন:

দুর্ঘটনায় মা হারানো শিশুটির কান্না থামছে না

‘রাতে হঠাৎ ঘুমঘুম চোখে কান্না শুরু করে। একবার কান্না শুরু হলে তা আর থামতেই চায় না। তখন মাঝরাতে তাকে বাইরে নিয়ে হাঁটাহাঁটি করতে হয়। যতক্ষণ পর্যন্ত না ঘুমায়, ততক্ষণ নিজের সঙ্গে রাখতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে কোনোরকমে মাকে ভুলিয়ে রাখার চেষ্টা করি। তবে কান্না থামাতে পারছি না।’

কথাগুলো বলছিলেন এক বছরের শিশু সাফওয়ান ইসলামের বাবা মো. ইমন ইসলাম। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সীতাকুণ্ড পৌর সদরের মৌলভীপাড়া এলাকায় রেললাইনে বিকল হয়ে পড়া একটি সিএনজি অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয় একটি ট্রেন। এ সময় শিশু সাফওয়ানের মা সানজিদা সুলতানা (২৫) ও নানি মাহমুদা বেগমের (৪৫) মৃত্যু হয়। এর পর থেকে সাফওয়ানকে সারাক্ষণ নিজের কাছে রাখছেন তার বাবা ইমন।

ইমনের বাড়ি সীতাকুণ্ড উপজেলার কুমিরা ইউনিয়নের ঘাটগড় এলাকায়। তিনি একটি রড তৈরির কারখানায় ট্রান্সপোর্ট সুপারভাইজার হিসেবে কর্মরত। যে জায়গাটিতে দুর্ঘটনা হয়েছিল তা ইমনের শ্বশুরবাড়ি থেকে মাত্র চার শ গজ দূরে। পুলিশ জানায়, রেলক্রসিংটি অবৈধ। ঘটনার দিন সেখানে কোনো গেটম্যানও ছিল না।

আমরা কত আনন্দ করে ছেলের জন্মদিন পালন করেছি।  অথচ এক মাস না যেতেই আমার ছেলেটি তার মাকে হারাল। গোছানো সংসারটা যেন তছনছ হয়ে গেল।শিশু মো. ইমন ইসলামের বাবা।

গতকাল শনিবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, ইমনের বাড়িতে স্বজনদের ভিড়। এক পাশে ছেলে সাফওয়ানকে কোলে নিয়ে বসে আছেন তিনি। অনেকেই ছেলের এ অবস্থা দেখে ইমনকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন। ধৈর্য ধরার পরামর্শ দিচ্ছেন। সাফওয়ান চোখ মেলে আশপাশে তাকিয়ে দেখছে। আর কিছুক্ষণ পরপরই কান্না করছে।

ইমন প্রথম আলোকে বলেন, মা মারা যাওয়ার দিন বাড়িতে অনেক লোকের ভিড় থাকায় সাফওয়ান তেমন কান্না করেনি। তবে রাত হতেই মাকে না পেয়ে কান্না শুরু করে। এর পর থেকে প্রতি রাতেই কান্না করে। দিনের বেলায় বাড়িতে মানুষের ভিড় থাকায় তেমন কান্না করে না। তবে যখন বুকের দুধ খাওয়ার সময় হয়, তখন আর কান্না থামিয়ে রাখা যায় না।

ট্রেনের ধাক্কায় অটোরিকশাটি দুমড়ে মুচড়ে যায়। গত বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টায় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড পৌর সদরের মৌলভী পাড়া এলাকায়

সম্পর্কিত নিবন্ধ