বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, “চা বাগানগুলোকে আধুনিক প্রযুক্তি দ্বারা সাজিয়ে শ্রমিক মালিকের মধ‍্যকার বৈষম্য দূর করতে হবে। শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ইসলামে রয়েছে সর্বোচ্চ বিধান। শ্রমিকের জীবনমান উন্নয়নের জন‍্য তাদের শিক্ষিত করে কাজে লাগাতে হবে। জামায়াতের নেতাকর্মীরা সর্বাত্মক সহযোগিতা নিয়ে আপনাদের পাশে দাঁড়াবে।”

তিনি আরো বলেন, “চা শ্রমিকদের শিক্ষিত করে আধুনিক বাগান ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত করার চিন্তা আমাদের রয়েছে। ধর্মের ভিত্তিতে আমরা কাউকে বিবেচনা করি না। আমরা একটি বন্ধুপ্রতিম সমাজ গড়তে চাই।”

রবিবার (২৫ মে) মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার দখিনা দাওয়া পার্টি সেন্টারে চা শ্রমিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। উপজেলা জামায়াতের আমির সহকারী অধ্যাপক আব্দুল মুন্তাজিম সভায় সভাপতিত্ব করেন।

আরো পড়ুন:

সংস্কার-নির্বাচনের রোডম্যাপ চাইলেন জামায়াত আমির

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জামায়াতের সাক্ষাৎ শনিবার

ডা.

শফিকুর রহমান বলেন, “চা শ্রমিকদের দায়িত্বও সরকারকে অন্যান্য নাগরিকদের মতো সমানভাবে নিতে হবে। তারা এখনো মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। আমরা যদি জনগণের ভোটে দায়িত্ব পাই, তাহলে তাদের সম্মানের সঙ্গে বসবাস নিশ্চিত করব। তাদের সন্তানদের প্রতিভার বিকাশে পাশে থাকব।”

তিনি বলেন, “বন্দর ও করিডোর কাউকে দেওয়া হবে না। নির্বাচন উপযুক্ত সময়ে অনুষ্ঠিত হবে। আগামী  সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে কল‍্যাণকর রাষ্ট্র গঠন করা হবে। যে সংসদে বসে সব ধর্ম-বর্ণ ও মতের মানুষের অধিকারের কথা চিন্তা করা হবে।” 

এদিকে, উপজেলার কুলাউড়া মাল্টিপারপাস হল রুমে ওয়ার্ড দায়িত্বশীল সম্মেলনে জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে সব ধরনের প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

তিনি বলেন, “শনিবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, এমন একটি নির্বাচন হবে যেখানে ইতিহাস তৈরি হবে। প্রত্যেকটি মানুষ হাসিমুখে ভোট দিয়ে বের হবে। কেউ গিয়ে দেখবে না যে, একজনের ভোট আরেকজন দিয়ে এসেছে।”

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, সিলেট মহানগরীর আমির মো. ফখরুল ইসলাম, জেলা জামায়াতের আমির প্রকৌশলী এম. সায়েদ আলী, সেক্রেটারি অধ্যক্ষ ইয়ামীর আলী, উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমির খন্দকার আব্দুস সোবহান ও প্রভাষক হামিদ খান, বর্তমান সেক্রেটারি বেলাল আহমদ চৌধুরী এবং জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মো. নিজাম উদ্দিন।

ঢাকা/আজিজ/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র আম র ইসল ম উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

চার সীমান্ত দিয়ে আরও ১৫৩ জনকে পুশইন বিএসএফের

সিলেটের বিয়ানীবাজার, মৌলভীবাজারের বড়লেখা ও মেহেরপুরের মুজিবনগরসহ চার সীমান্ত এলাকা দিয়ে আরও ১৭২ জনকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠেলে দিয়েছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। এর মধ্যে বিয়ানীবাজার ও বড়লেখার তিন সীমান্ত দিয়ে পুশইন করা হয়েছে নারী-শিশুসহ ১৫৩ জনকে। মেহেরপুর সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ১৯ জনকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। তাদের সবাইকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় বিজিবি আটক করে হস্তান্তর করেছে পুলিশের কাছে। গত ৪ মে থেকে রোববার পর্যন্ত বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে মোট ৬৪৬ জনকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠেলে দিল বিএসএফ। 

বিয়ানীবাজারের নয়াগ্রাম সীমান্তে রোববার ভোরে ৩২ জনকে সীমান্তের ৫৩৮ একর অমীমাংসিত ভূমির একটি বিলে ছেড়ে দেয় বিএসএফ। তাদের মধ্যে রয়েছেন ৯ জন পুরুষ, ৯ জন নারী ও ১৪ জন শিশু। ভোরে বিজিবির টহল দল ও স্থানীয়রা তাদের দেখতে পেয়ে আটক করে নয়াগ্রাম প্রগতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়ে আসেন। সেখানে তাদের পরিচয় শনাক্ত করার পর বিয়ানীবাজার থানায় হস্তান্তর করা হয়। 

বিজিবি-৫২ ব্যাটালিয়নের বিয়ানীবাজার সদরদপ্তর সূত্র জানায়, একই ভোরে উপজেলার বড়লেখার লাতু বিওপি এলাকায় ৭৯ জন এবং পাল্লাথল বিওপি এলাকায় আরও ৪২ জনকে পুশইন করে বিএসএফ। এর মধ্যে লাতু সীমান্তে আটক ৭৯ জনের মধ্যে পুরুষ ২৫ জন, নারী ১৯ জন এবং শিশু ২০ জন এবং পাল্লাথল সীমান্তে আটক ৪২ জনের মধ্যে রয়েছেন পুরুষ ২৪ জন, নারী ১৬ জন ও শিশু ১৭ জন। তাদের বড়লেখা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। বিজিবি-৫২ ব্যাটালিয়ন বিয়ানীবাজারের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী হাসান বলেন, আটক ১৫৩ জনের সবাই বাংলাদেশি। তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এটি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাদের কাঁটাতারের পাশঘেঁষা শূন্য রেখার একটি বিলে ছেড়ে দেয় বিএসএফ। আটক বেশির ভাগের বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলায়।

একই দিন মেহেরপুরের মুজিবনগর সীমান্ত দিয়ে নারী-শিশুসহ ১৯ জনকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠেলে দিয়েছে বিএসএফ। ভোরে উপজেলার সোনাপুর মাঝপাড়া সীমান্ত দিয়ে তাদের পুশইন করা হয়। এই ১৯ জন সীমান্ত পার হয়ে উপজেলার কেদারগঞ্জ বাজারে অবস্থান করার খবর পেয়ে মুজিবনগর থানা পুলিশ তাদের আটক করে হেফাজতে নেয়। খবর পেয়ে মুজিবনগর বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা সেখানে যান। আটকদের মধ্যে পুরুষ ৯ জন, শিশু ৫ জন ও নারী ৫ জন। তারা সবাই বাংলাদেশি বলে জিজ্ঞাসাবাদে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

আটকরা হলেন– কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারী থানার কাঠগিরি গ্রামের আব্দুল জলিলের মেয়ে মোমেনা খাতুন, মোজাম্মেল হক, মোস্তাক আহমেদ ও কাবিল; কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী থানার জয় মঙ্গল, মাথা গ্রামের জালালউদ্দিনের ছেলে মইনুল ইসলাম, স্ত্রী কাঞ্চন ও ছেলে কারণ, রবিউল এবং মেয়ে মরিয়ম; লালমনিরহাট সদর থানার চুঙ্গগাড়া গ্রামের মৃত গণেশ চন্দ্র পালের ছেলে নিতাই চন্দ্র পাল, তাঁর স্ত্রী গীতা রানী পাল, মেয়ে পার্বতী পাল, পূজা রানী পাল ও আরতী পাল; কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী থানার কুঠিচন্দ্রখানা গ্রামের মো. খলিলের ছেলে আমিনুল ইসলাম, তাঁর স্ত্রী পারুল, দুই মেয়ে আমেনা ও আরফিনা। আটকরা জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, তারা বিভিন্ন সময় কাজের সন্ধানে অবৈধভাবে ভারতে গিয়েছিলেন। 

মুজিবনগর থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করায় বিজিবি আটকদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। তাদের রোববার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালত প্রাপ্তবয়স্কদের জেলা হাজতে পাঠাতে এবং শিশুদের সার্বিক বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সমাজসেবা অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ