দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবলে যেন নতুন সূর্যোদয়! একদিকে ইউরোপীয় কোচিং ধারার প্রতিনিধি কার্লো আনচেলত্তি, অন্যদিকে চিকিৎসাবিদ্যা ও ব্যবসা জগৎ পেরিয়ে ফুটবলে আসা সামির দাউদ। ব্রাজিল ফুটবলের ইতিহাসে এই প্রথমবার একসঙ্গে দায়িত্ব নিলেন এমন ভিন্নধর্মী দুই নেতা। যারা মাঠের বাইরে থেকেও খেলাটিকে পাল্টে দিতে পারেন ভিতর থেকে।

স্থানীয় সময় রোববার (২৫ মে) ব্রাজিলিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন এর নির্বাচনে চূড়ান্ত জয় নিশ্চিত করেন সামির দাউদ। ১৪৩ ভোটের মধ্যে ১০১ ভোটে জয়লাভ, ব্রাজিলের শীর্ষ ক্লাবগুলোর সরাসরি সমর্থন; সব মিলিয়ে তার জয় ছিল অপেক্ষাকৃত সহজ ও একচেটিয়া। চিকিৎসক থেকে ব্যবসায়ী, আর সেখান থেকে ক্রীড়া সংগঠক; তার এই যাত্রা যেন অনেকটাই অপ্রচলিত কিন্তু বিস্ময়কর।

এরই মধ্যে সোমবার (২৬ মে) রাতে রিও ডি জেনেইরোতে অবতরণ করেন ডন ‘কার্লো আনচেলত্তি। সঙ্গে ছিলেন সিবিএফের পরিচালক রদ্রিগো কায়তানো। রিয়াল মাদ্রিদে সময় শেষ করে এবার তার নতুন চ্যালেঞ্জ, পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের কোচিং করানো।

আরো পড়ুন:

আনচেলত্তির স্বপ্নদল: ঘোষণার আগেই ১২ তারকার নাম ফাঁস

ব্রাজিলের ফুটবল প্রধানকে অপসারণ, পুরো বোর্ড বরখাস্ত

সামির দাউদ আনুষ্ঠানিকভাবে আনচেলত্তিকে স্বাগত জানিয়ে জানান, ‘‘এটি আমাদের জন্য একটি নতুন যুগের শুরু। আমরা ব্রাজিলিয়ান ফুটবলে নতুন ধারণা ও গঠনমূলক পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই।’’

এদিকে আনচেলত্তির সামনে আরেকটি চ্যালেঞ্জ, ব্রাজিল জাতীয় দলের প্রথম স্কোয়াড ঘোষণা করা। গুঞ্জন অনুযায়ী, বাংলাদেশ সময় সোমবার রাত ১২টায় তিনি দল প্রকাশ করতে পারেন। কারণ, সামনে আছে দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচ। ৬ জুন ইকুয়েডরের বিপক্ষে খেলার পর ১১ জুন প্যারাগুয়ের বিপক্ষে খেলবে ব্রাজিল।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্রাজিল যেভাবে বড় টুর্নামেন্টে ধারাবাহিকতা হারিয়েছে, তাতে বোঝাই যাচ্ছে এই যুগল নেতৃত্ব শুধু নতুন নয়, একধরনের রিসেট বাটনও।

একজন ইউরোপের সফলতম কোচদের একজন, অন্যজন নেতৃত্বে আনছেন কর্পোরেট শৃঙ্খলা ও মেডিক্যাল প্রিসিশন। ফুটবল যখন শুধু মাঠের খেলা থাকে না, তখন এ ধরনের নেতাই হয়ে ওঠেন গেমচেঞ্জার।

এই জুটির ভবিষ্যৎ ফলাফল এখন সময়ই বলবে। তবে এটুকু নিশ্চিত, ব্রাজিল ফুটবলে ভিন্নমাত্রার এক অধ্যায় শুরু হয়ে গেছে।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল ফ টবল

এছাড়াও পড়ুন:

ইউক্রেন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার ‘বাকযুদ্ধ’

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধ দ্রুত অবসানের আশা ক্রমশ ম্লান হতে যাওয়ায় ‘বাকযুদ্ধে’ জড়িয়ে পড়েছে ওয়াশিংটন ও মস্কো। খবর আল জাজিরার।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কিয়েভের সঙ্গে ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি আলোচনায় অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে ‘আগুন নিয়ে খেলছেন’ বলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মন্তব্য করার পর, মস্কোর একজন জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা ট্রাম্পকে তিরস্কার করেছেন এবং আরেকটি বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

মঙ্গলবার (২৭ মে) রাতে ট্রাম্পের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়ার শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা দিমিত্রি মেদভেদেভ বলেছেন, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধই একমাত্র ‘সত্যিকার খারাপ জিনিস।’ ট্রাম্প এর আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় পুতিনের উদ্দেশ্যে একটি সতর্কবার্তায় বলেছিলেন যে, তার হস্তক্ষেপ ছাড়া ‘রাশিয়ার সঙ্গে ইতিমধ্যেই অনেক খারাপ ঘটনা ঘটতো’। 

আরো পড়ুন:

পুতিন ‘আগুন’ নিয়ে খেলছেন: ট্রাম্প

পুতিন পাগল হয়ে গেছেন: ট্রাম্প

মঙ্গলবার (২৭ মে) ট্রাম্প তার মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ একটি পোস্টে বলেন, “ভ্লাদিমির পুতিন যা বুঝতে পারেন না তা হলো, আমি না থাকলে রাশিয়ার সঙ্গে ইতিমধ্যেই অনেক খারাপ ঘটনা ঘটে যেত এবং আমি বলতে চাইছি সত্যিই খারাপ কিছু। তিনি আগুন নিয়ে খেলছেন।” 

ট্রাম্পের এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ একটি পোস্টে মেদভেদেভ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “আমি কেবল একটি সত্যিকার খারাপ জিনিস সম্পর্কে জানি- তা হলো তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ। আমি আশা করি ট্রাম্প এটি বুঝতে পেরেছেন!”

মেদভেদেভ বর্তমানে রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান এবং পুতিনের একজন গুরুত্বপূর্ণ মিত্র। মেদভেদেভ ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং তিনি তার কঠোর মন্তব্যের জন্য পরিচিত।

ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধে তিনি বারবার সতর্ক করে বলেছেন যে, মস্কো তার পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে।

২০২৪ সালের মার্চ মাসে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে পুতিন পারমাণবিক সংঘর্ষের সম্ভাবনাও তুলে ধরেন। সেসময় তিনি পশ্চিমা দেশগুলোকে রাশিয়ার পারমাণবিক ক্ষমতা সতর্ক করে দেন যে, কেউ যদি ইউক্রেনের সমর্থনে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে এটি ঘটতে পারে।

এর আগে গত রবিবার (২৫ মে) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক পোস্টে বলেছিলেন, যুদ্ধবিরতির জোড়ালো আহ্বান ও শান্তিচুক্তির জন্য ওয়াশিংটনের মধ্যস্থতার মধ্যেও ইউক্রেনে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়ে পুতিন ‘একেবারে পাগল’ হয়ে গেছেন।

ট্রাম্প তার রবিবারের পোস্টে বলেন, “রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আমার সবসময়ই খুব ভালো সম্পর্ক ছিল, কিন্তু তার সঙ্গে কিছু ঘটেছে। তিনি পুরোপুরি পাগল হয়ে গেছেন! তিনি অপ্রয়োজনে অনেক মানুষকে হত্যা করছেন- শুধু সৈনিক নয়, বেসামরিক নাগরিকও। কোনো কারণ ছাড়াই ইউক্রেনের শহরগুলোতে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ছোড়া হচ্ছে।” 

তবে, রবিবার ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ ট্রাম্পের সমালোচনাকে ‘আবেগজনিত অতিরিক্ত চাপ’ বলে উড়িয়ে দেন।

এদিকে, গতকাল মঙ্গলবার কিয়েভ আবারো যুদ্ধক্ষেত্রে ধাক্কা খেয়েছে। রাশিয়ান বাহিনী ইউক্রেনের উত্তর-পূর্ব সুমি অঞ্চলের চারটি গ্রাম দখল করে নিয়েছে।

সুমির গভর্নর ওলেহ হ্রাইহোরভ ফেসবুকে লিখেছেন, নোভেনকে, বাসিভকা, ভেসেলিভকা এবং ঝুরাভকা গ্রাম রাশিয়া দখল করেছে, যদিও বাসিন্দাদের অনেক আগেই সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।

সোমবার রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, তারা নিকটবর্তী বিলোভোদি গ্রামটিও দখল করেছে, যা তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে চলমান যুদ্ধে ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডে আরো অগ্রসর হওয়ার ইঙ্গিত দেয়।

ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা কয়েক সপ্তাহ ধরে বলে আসছিলেন যে, রাশিয়ান সৈন্যরা সুমি অঞ্চলে প্রবেশের চেষ্টা করছে, যার প্রধান শহরটি রাশিয়ার সীমান্ত থেকে ৩০ কিলোমিটার (১৯ মাইল) এরও কম দূরে অবস্থিত।

ইউক্রেনীয় বাহিনী গত বছর রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে প্রবেশের জন্য সুমি অঞ্চলকে লঞ্চপ্যাড হিসেবে ব্যবহার করেছিল। গত মাসে কুরস্কে রাশিয়ান বাহিনী কর্তৃক বিতাড়িত হওয়ার আগে ইউক্রেনীয় বাহিনী সেখানে বিশাল এলাকা দখল করেছিল।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মস্কো থেকে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতকে ‘স্ট্যান্ড রিলিজ’
  • বাংলাদেশ ব্যাংকে ‘আয়নাবাজি’
  • বাংলাদেশ ব্যাংকে আয়নাবাজি
  • ভুয়া নিয়োগে একযুগ ধরে বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি
  •  বলয় নাটকের জোড়া মঞ্চায়ন
  • আমি কখনোই এনসিপিকে সমর্থন করব না: সায়ান
  • রসিকের অপসারিত জনপ্রতিনিধিদের পুনর্বহালে ৭ দিনের আল্টিমেটাম 
  • ফিলিস্তিনে অবৈধ ইহুদি বসতির ‘গডমাদার’, গাজায় বসতি নিয়ে কী তাঁর ভাবনা
  • রাজবাড়ীতে হাটের আধিপত্য নিয়ে হামলায় আহত একজনের মৃত্যু, গ্রেপ্তার ৪
  • ইউক্রেন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার ‘বাকযুদ্ধ’