সাতকানিয়ায় ইটের ভাটার দৌরাত্ম্য থামান
Published: 27th, May 2025 GMT
কৃষিবৈচিত্র্যের এ দেশের সর্বনাশ করে ছাড়ছে ইটের ভাটা। আর এটি স্বীকৃত যে কোনো আইন না মেনেই চলছে দেশের বেশির ভাগ ইটের ভাটা। ইট বানানোর মাটির জন্য নষ্ট হচ্ছে কৃষিজমি, সেই ইট পোড়ানোর জন্য উজাড় হচ্ছে বনভূমি। এভাবে এ দেশের কৃষি ও পরিবেশের ভয়াবহ ক্ষতি করে যাচ্ছে ইটের ভাটাগুলো। চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার বিশাল এলাকায় একসময় বছরে দুবার ফসল চাষ হতো। ইটের ভাটার জন্য মাটি নিতে নিতে সেসব জমি এখন গর্ত ও জলাশয়ে পরিণত হয়েছে। বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, উপজেলাটির উত্তর ঢেমশা, তৈমুহনী, মরফলা ও রসুলাবাদ এলাকায় কৃষিজমিগুলো একসময় আমন ও বোরো ধানে পরিপূর্ণ থাকত। কিন্তু ইটের ভাটার মালিক ও মাটি ব্যবসায়ীদের খপ্পরে পড়ে সেই কৃষি–ঐতিহ্য হারাতে বসেছে এখন। এসব এলাকায় ৪০টির বেশি ইটভাটা আছে। ২০-২৫ বছর ধরে এসব এলাকার দুই ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করে আসছেন স্থানীয় মাটি ব্যবসায়ীরা।
কৃষি কর্মকর্তাদের মতে, জমির উপরিভাগের ১ ফুট মাটিতেই অধিকাংশ জৈব পদার্থ থাকে, যা ফসল উৎপাদনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই মাটি একবার সরিয়ে নেওয়া হলে পুনরায় উর্বরতা শক্তি ফিরে পেতে প্রায় দুই দশক লেগে যায়। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে, সাতকানিয়ার এসব এলাকার কৃষিজমিগুলোর কী ক্ষতি হয়ে গেছে ইতিমধ্যে।
অভিযোগ উঠেছে, এলাকাগুলো থেকে মাটি ব্যবসায়ীরা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে স্থানীয় কৃষকের জমি থেকে জোরপূর্বক মাটি নিয়ে যাচ্ছেন। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে জমির মালিকের অনুমতি ছাড়াই কোটি টাকার মাটি তুলে নেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালানোর কথা বলা হলেও রাতের আঁধারে ঠিকই চলছে অবাধে মাটি কাটা। তার মানে প্রশাসন কৃষিজমির মাটি কাটা কোনোভাবেই বন্ধ করতে পারছে না। নীতিমালা না মানা ইটভাটাগুলোতেও কেন অভিযান চালানো হবে না?
জরুরি ভিত্তিতে প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর ও কৃষি বিভাগকে এখানে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে। তবে সবার আগে ভাটামালিক ও মাটি ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতেই হবে। কারা এ অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত, তা স্থানীয়ভাবে অজানা নয়। এরপরও অপরাধীদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কেন ব্যবস্থা নিতে পারছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। তা ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে এ অপকর্ম কীভাবে চলতে দিল প্রশাসন? আমরা এখানে আর কোনো গড়িমসি ও দায়িত্বহীনতা দেখতে চাই না।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইট র ভ ট র জন য ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপির নাম ভাঙিয়ে অপকর্মে জড়িতদের ছাড় নয়: রিজভী
বিএনপির নাম ব্যবহার করে অপকর্মে জড়িতদের কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে গণমাধ্যমকে সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেছেন, “সমাজ ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে বিএনপির কোনো নেতাকর্মী জড়িত নয়। যদি কেউ বিএনপির নাম ব্যবহার করে এসব অপকর্মে করে তাদের কোন ছাড় নয়। পাশাপাশি গণমাধ্যমকে সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করতে হবে। একটি অসত্য সংবাদ রাষ্ট্র ও সমাজের মাঝে অনেক বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে।”
শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন রিজভী।
কোনো কিছু ঘটলেই বিএনপির ওপর দায় চাপানো যেন কারো কারো অভ্যাসে পরিনণত হয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, “সমাজবিরোধী কাজে যেই জড়িত হবে তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে। সরকার কেনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বরং সরকারের মাঝে ঢিলেঢালা ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে।”
তিনি বলেন, “রাউজানে কিছু সন্ত্রাসী অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হয়েছে। অথচ, কয়েকটি গণমাধ্যমে বলা হলো এই অস্ত্রধারীরা বিএনপির লোক! কোনো প্রমাণ ছাড়া এগুলো লেখা দুঃখজনক। এই রাউজানে নানান অভিযোগে অনেক সিনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধেও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
বিএনপি ১৫ বছরের অত্যাচার-অবিচার থেকে মুক্তির জন্য সংগ্রাম করেছে। জুলাই-আগস্টে এ আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ নিয়েছে। মানুষ হয়ত কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস নিচ্ছে। কিন্তু এখনও আত আতঙ্কমুক্ত নয় বলেও জানান রিজভী।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দৃশ্যমান উন্নতি দেখা যাচ্ছে না মন্তব্য করে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, “নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যে কৃত্রিমভাবে সংকট সৃষ্টি করছে যারা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। বিশ্ববাজারে যখন গমের দাম কমেছে তখন বাংলাদেশে এর দাম বেড়েছে। জনগণকে নিরাপদ রাখার দায়িত্ব সরকারের। রাষ্ট্র এতে ব্যর্থ হলে যেকোন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সৃষ্টি হতে পারে সামাজিক অস্থিরতা।”
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/ইভা