কৃষিবৈচিত্র্যের এ দেশের সর্বনাশ করে ছাড়ছে ইটের ভাটা। আর এটি স্বীকৃত যে কোনো আইন না মেনেই চলছে দেশের বেশির ভাগ ইটের ভাটা। ইট বানানোর মাটির জন্য নষ্ট হচ্ছে কৃষিজমি, সেই ইট পোড়ানোর জন্য উজাড় হচ্ছে বনভূমি। এভাবে এ দেশের কৃষি ও পরিবেশের ভয়াবহ ক্ষতি করে যাচ্ছে ইটের ভাটাগুলো। চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার বিশাল এলাকায় একসময় বছরে দুবার ফসল চাষ হতো। ইটের ভাটার জন্য মাটি নিতে নিতে সেসব জমি এখন গর্ত ও জলাশয়ে পরিণত হয়েছে। বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, উপজেলাটির উত্তর ঢেমশা, তৈমুহনী, মরফলা ও রসুলাবাদ এলাকায় কৃষিজমিগুলো একসময় আমন ও বোরো ধানে পরিপূর্ণ থাকত। কিন্তু ইটের ভাটার মালিক ও মাটি ব্যবসায়ীদের খপ্পরে পড়ে সেই কৃষি–ঐতিহ্য হারাতে বসেছে এখন। এসব এলাকায় ৪০টির বেশি ইটভাটা আছে। ২০-২৫ বছর ধরে এসব এলাকার দুই ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করে আসছেন স্থানীয় মাটি ব্যবসায়ীরা।

কৃষি কর্মকর্তাদের মতে, জমির উপরিভাগের ১ ফুট মাটিতেই অধিকাংশ জৈব পদার্থ থাকে, যা ফসল উৎপাদনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই মাটি একবার সরিয়ে নেওয়া হলে পুনরায় উর্বরতা শক্তি ফিরে পেতে প্রায় দুই দশক লেগে যায়। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে, সাতকানিয়ার এসব এলাকার কৃষিজমিগুলোর কী ক্ষতি হয়ে গেছে ইতিমধ্যে।

অভিযোগ উঠেছে, এলাকাগুলো থেকে মাটি ব্যবসায়ীরা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে স্থানীয় কৃষকের জমি থেকে জোরপূর্বক মাটি নিয়ে যাচ্ছেন। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে জমির মালিকের অনুমতি ছাড়াই কোটি টাকার মাটি তুলে নেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালানোর কথা বলা হলেও রাতের আঁধারে ঠিকই চলছে অবাধে মাটি কাটা। তার মানে প্রশাসন কৃষিজমির মাটি কাটা কোনোভাবেই বন্ধ করতে পারছে না। নীতিমালা না মানা ইটভাটাগুলোতেও কেন অভিযান চালানো হবে না?

জরুরি ভিত্তিতে প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর ও কৃষি বিভাগকে এখানে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে। তবে সবার আগে ভাটামালিক ও মাটি ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতেই হবে। কারা এ অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত, তা স্থানীয়ভাবে অজানা নয়। এরপরও অপরাধীদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কেন ব্যবস্থা নিতে পারছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। তা ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে এ অপকর্ম কীভাবে চলতে দিল প্রশাসন? আমরা এখানে আর কোনো গড়িমসি ও দায়িত্বহীনতা দেখতে চাই না।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইট র ভ ট র জন য ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশ ক্রিকেটের সমস্যা কী, সমাধান কোথায়: শুনুন তামিমের মুখে

এই মুহূর্তে বাংলাদেশ ক্রিকেটে সবচেয়ে বড় সমস্যা কী? কোন বিষয়টি সবার আগে সমাধান করা উচিত?

দুটি প্রশ্নের উত্তরে অনেকেই অনেক কথাই বলবেন। বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত কারও বিষয়টি ভালো জানার কথা। যেমন তামিম ইকবাল। প্রথম আলোর প্রধান ক্রীড়া সম্পাদক উৎপল শুভ্র তামিমের সামনে দুটি প্রশ্ন রেখেছিলেন। তামিমের উত্তর, ‘আমার কাছে মনে হয় যে আমাদের ফ্যাসিলিটিজ (অনুশীলনের পর্যাপ্ত সুযোগ–সুবিধা) নাই।’

প্রথম আলোর কার্যালয়ে উৎপল শুভ্রকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে আড্ডার মেজাজে তামিম বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে অনেক কথাই বলেছেন। নিজের ক্যারিয়ার, ভবিষ্যৎ লক্ষ্য—এসব নিয়েও বেশ খোলামেলা কথা বলেন সাবেক এই ওপেনার।

আলাপচারিতার একপর্যায়েই বাংলাদেশ ক্রিকেটে এ মুহূর্তের সমস্যার প্রসঙ্গ উঠেছিল। অনুশীলনের পর্যাপ্ত সুযোগ–সুবিধার অভাবকে সামনে টেনে এনে তামিম বলেছেন, ‘একটা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দলের যে ফ্যাসিলিটিজ দরকার হয় কিংবা বাংলাদেশের মতো দেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলার একটি (ক্রিকেট), যে ফ্যাসিলিটিজ থাকা উচিত, তার আশপাশেও নেই। পৃথিবীর তৃতীয়, চতুর্থ ধনী বোর্ডের যে ফ্যাসিলিটিজ থাকা উচিত, আমরা এর আশপাশেও নেই।’

তামিম বিষয়টি ভালোভাবে ব্যাখ্যা করলেন, ‘ক্রিকেট দলের প্রতি ভক্তদের যে প্রত্যাশা, সেটা পূরণের জন্য যে ফ্যাসিলিটিজ দরকার, আমরা তার আশপাশেও নেই। আপনি মাঝারি মানের ক্রিকেটার হতে পারেন কিংবা মাঝারি মানের ব্যাটসম্যান হতে পারেন, সঠিক অনুশীলনের মাধ্যমে কিন্তু আপনি মাঝারি মান থেকে দুই ধাপ ওপরে উঠতে পারবেন।’

মুশফিকুর রহিম

সম্পর্কিত নিবন্ধ