স্মার্টফোনে নিয়মিত গেম খেলেন অনেকেই। আর তাই মোবাইল গেমারদের কথা মাথায় রেখে ‘কোপাইলট ফর গেমিং’ নামের এআই সহকারী চালু করছে মাইক্রোসফট। এরই মধ্যে এক্সবক্স মোবাইল অ্যাপের বেটা সংস্করণে পরীক্ষামূলকভাবে  এআই সহকারীটি  যুক্ত করেছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রাথমিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, জাপান ও সিঙ্গাপুরে বসবাসকারী নির্দিষ্ট ব্যক্তিরা আইফোন ও অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমে চলা স্মার্টফোনে এআই সহকারীটি ব্যবহার করতে পারবেন।

কোপাইলট ফর গেমিং মূলত গেমারদের গেম খেলার সময় বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা করতে পারে। আর তাই এআই সহকারীটি ব্যবহার করে গেমাররা নিজেদের বিভিন্ন অর্জনের তথ্য জানার পাশাপাশি গেম খেলার ইতিহাস বিশ্লেষণ করতে পারবেন। শুধু তা–ই নয়, গেমারদের আগ্রহ বুঝে বিভিন্ন গেম খেলার সুপারিশ দেওয়ার পাশাপাশি গেমে সফলতা অর্জনের জন্য বিভিন্ন পরামর্শও দেবে এআই সহকারীটি।  

মাইক্রোসফট জানিয়েছে, কোপাইলট ফর গেমিং অ্যাপে একটি চ্যাটবটভিত্তিক ইন্টারফেস থাকবে, যেখানে ব্যবহারকারী নিজের পছন্দমতো কণ্ঠস্বরও বেছে নিতে পারবেন। এটি মোবাইল ডিভাইসে ‘সেকেন্ড স্ক্রিন’ হিসেবে কাজ করবে, যা মূল গেমিং অভিজ্ঞতায় বিঘ্ন না ঘটিয়ে অতিরিক্ত তথ্য ও সহায়তা দেবে। ভবিষ্যতে কোপাইলট ফর গেমিং আরও উন্নত হয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ এআই গেমিং কোচে পরিণত হবে।

এক্সবক্সের প্রিন্সিপাল প্রোগ্রাম ম্যানেজার টেইলর ও’ম্যালি জানিয়েছেন, এই সহকারী ব্যবহারকারীর গেমিং খেলার ধরন পর্যালোচনা করে নির্দিষ্ট গেম সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে। এ ছাড়া গেমারদের অ্যাকাউন্ট, খেলার ধরন ও অর্জনের ভিত্তিতে সুনির্দিষ্ট পরামর্শও দিতে পারে।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এআই সহক র ট ব যবহ র

এছাড়াও পড়ুন:

একাই মাসে শতাধিক ব্যাগ রক্তের ব্যবস্থা করে দেন তৈয়বুর

সুনামগঞ্জে জরুরি রক্তের প্রয়োজন হলে যাঁদের নাম প্রথমেই মনে আসে, তাঁদের একজন তৈয়বুর রহমান (২৬)। তিনি নিজে নিয়মিত রক্ত দেন, রক্ত সংগ্রহ করে দেন এবং মানুষকে স্বেচ্ছায় রক্তদানে উৎসাহিত করেন। রক্তের টানে মানুষের পাশে দাঁড়ানোতেই তাঁর আনন্দ।

একটি বেসরকারি ব্যাংকে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি রক্তদানের এই মানবিক কাজকে নিজের করে নিয়েছেন তিনি। কয়েক বছর আগে একাই মানুষের জন্য রক্ত জোগাড় করতেন। এখন তিনি ব্লাড লিংক সুনামগঞ্জ নামের স্বেচ্ছায় রক্তদাতা সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। ফলে কাজের পরিধি বেড়েছে কয়েক গুণ। মাসে একাই শতাধিক ব্যাগ রক্তের ব্যবস্থা করে দেন তিনি। সংগঠনে যুক্ত হওয়ার পর থেকে আড়াই হাজারের বেশি রোগীর জন্য রক্ত জোগাড় করে দিয়েছেন। তাঁর কাছে আছে প্রায় এক হাজার রক্তদাতার ঠিকানা, রক্তের গ্রুপ ও যোগাযোগের তালিকা। সুনামগঞ্জে স্বেচ্ছায় রক্তদাতা সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবী ও সংগঠকেরাও তাঁকে সহযোগিতা করেন।

তৈয়বুর রহমানের বাড়ি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার লক্ষ্মণশ্রী ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামে। তিনি ইসলামী ব্যাংক সুনামগঞ্জ শাখায় নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। রক্তের প্রয়োজনে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ, পরিবহন বা দৌড়ঝাঁপ—সবকিছুর ব্যয়ই মেটান নিজের স্বল্প বেতন থেকে।

রক্তদানের শুরুর স্মৃতি বলতে গিয়ে তৈয়বুর রহমান জানান, ২০২০ সালে তিনি তখন নারায়ণগঞ্জে কর্মরত ছিলেন। এক সহকর্মীর অনুরোধে এক অন্তঃসত্ত্বা নারীর জন্য রক্ত দিতে ছুটে যান চাষাড়া এলাকায়। কিন্তু ওজন কম থাকায় রক্ত দিতে পারেননি। পরে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত এক শিশুর জন্য আবার হাসপাতালে যান এবং এবার রক্ত দিতে সক্ষম হন। প্রথমে কিছুটা ভয় ভয় ছিল তাঁর। পরে এটা কেটে যায়।

সুনামগঞ্জে বদলি হয়ে ফিরে এসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে মানুষের জন্য রক্ত সংগ্রহ করতে থাকেন বলে জানান তৈয়বুর রহমান। নিজের এলাকায় রক্তের গ্রুপ পরীক্ষার আয়োজন ও সচেতনতা ক্যাম্পেইনও করেছেন। এখন পর্যন্ত তিনি ১৭ বার রক্ত দিয়েছেন। অধিকাংশই থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের জন্য। ঈদের দিনও রক্ত দিয়েছেন তিনি। জেলা সদর হাসপাতাল ও শহরের সব বেসরকারি ক্লিনিকেই তাঁর নম্বর আছে। কোনো রোগীর জরুরি রক্তের প্রয়োজন হলে সেখান থেকে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তবে তাঁর সবচেয়ে বড় ভূমিকা হলো রোগীর জন্য উপযুক্ত রক্তদাতা খুঁজে বের করা।

তৈয়বুর রহমান বলেন, রক্তদানের পর কিছু পরিবার এখনো তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখে, খবর নেয়। আবার কেউ কেউ রক্ত সংগ্রহে একটু দেরি হলে মনঃক্ষুণ্ন হন। কেউ রক্ত পেয়ে ধন্যবাদ দেওয়ারও প্রয়োজন মনে করেন না। তবু মন খারাপ করেন না তিনি। তিনি বলেন, ‘পাঁচ বছর আগে তাহিরপুর উপজেলার এক প্রসূতি বোনকে রক্ত দিয়েছিলাম। এখনো ওই পরিবার যোগাযোগ রাখে। সময়-অসময় খোঁজ নেয়। এটা ভালো লাগে, এটা অন্য রকম রক্তের সম্পর্ক। এই কাজ করে আনন্দ পাই, তৃপ্তি পাই। যত দিন পারি, এই কাজ করে যাব।’

এখন পর্যন্ত ১৭ বার রক্ত দিয়েছেন তৈয়বুর রহমান

সম্পর্কিত নিবন্ধ