আমি ভীষণ রোমাঞ্চিত। কারণ, আজ আমরা একটা ছোট্ট ঘোষণা করতে যাচ্ছি। কার্নেগি মেলন ও স্কুলহাউস ডট ওয়ার্ল্ডের মধ্যে একটি অংশীদারি সম্পর্কের যাত্রা শুরু হচ্ছে। জানিয়ে রাখি, স্কুলহাউস ডট ওয়ার্ল্ড হলো খান একাডেমির একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান, যেখানে বাছাইকৃত ও প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে জুমে লাইভ টিউশনি দেওয়া হয়।

কার্নেগি মেলনের সঙ্গে মিলে আমরা একটা প্রোগ্রাম চালু করছি। হ্যাঁ, করতালি দিন! এই প্রোগ্রামটি লিওনার্ড গেলফ্যান্ড সেন্টার ফর সার্ভিস লার্নিং অ্যান্ড আউটরিচের মাধ্যমে চলবে। এর মাধ্যমে কার্নেগি মেলনের শিক্ষার্থীরা বিশ্বজুড়ে হাইস্কুল শিক্ষার্থীদের গণিত পড়াতে পারবে এবং এ জন্য কলেজ ক্রেডিট পাবে।

শুধু তা-ই নয়। স্কুলহাউস ডট ওয়ার্ল্ডের পোর্টফোলিওকে স্বীকৃতি দেবে কার্নেগি মেলন। ফলে যাঁরা টিউশনি নেবেন, তাঁরা সনদ ও স্বীকৃতি পাবেন, যা পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিপ্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বিবেচ্য হবে।

এভাবেই পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তের কেউ, হয়তো আফগানিস্তানের একটি মেয়ে, প্রথাগত সনদ অর্জনের সুযোগ যার নেই, কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের কোনো শহরের শিক্ষার্থী যিনি খান একাডেমিতে নিজে নিজে ক্যালকুলাস শিখছেন—সবাই তাঁদের জ্ঞান প্রমাণ করতে পারবেন। কার্নেগি মেলনের মতো নামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিও হতে পারবেন।

আরও পড়ুনচ্যাটজিপিটি ছাড়া আরও যেসব এআই টুল আপনার জীবন সহজ করবে১৩ ঘণ্টা আগেঅর্থ বনাম সুখ

তোমার জীবনের মানে ও আনন্দ তুমি নিজে খুঁজে বের করো। কোনো সমাজ, বিজ্ঞাপন, বন্ধু বা পরিবার যেন সেটা ঠিক করে না দেয়। আমরা সবাই প্রভাবিত হই। যতটা ভাবি, তার চেয়েও বেশি। তাই প্রতিবছর কোটি কোটি ডলার খরচ হয় আমাদের বোঝাতে যে—‘সঠিক’ পানীয়টা খেলেই জীবন বর্তে যাবে। ‘ঠিকঠাক’ পোশাকটা পরলেই জনপ্রিয়তা মিলবে। কিংবা ‘দামি’ গাড়িতে চড়লেই সাফল্য পাবে। কারা ধনী, কারা সবচেয়ে প্রভাবশালী—এসবই খবরে উঠে আসে। সাময়িকীগুলো শুধু তারকাদের সৌন্দর্য, ধনসম্পদ, খ্যাতির ওপর জোর দেয়। আমাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমজুড়ে থাকে বন্ধুবান্ধবের পদোন্নতি, ঘোরাঘুরির ছবি আর সুখী জীবনের গল্প।

যেন এসবই আমাদের মনে সাফল্যের একটা ‘মানে’ গেঁথে দেয়। যেন এসব অর্জন করলেই আমরা সুখী হব। কিছু কিছু বিষয় স্বাভাবিক, এবং সীমিত পরিমাণে যুক্তিসংগতও। কারণ সিজিপিএ, ডিগ্রি, কত টাকা, কেমন বাড়ি, কত ফলোয়ার—এসব পরিমাপ করা সহজ। কিন্তু একটা পর্যায়ের পর শুধু টাকা বা খ্যাতি তোমার সুখ বাড়াবে না।

সুখী মানুষ কেমন

জীবনটা কতটা অর্থপূর্ণ হলো, জীবনে কতখানি তৃপ্তি পেলাম, সেটাই তো গুরুত্বপূর্ণ হওয়া উচিত। অথচ এ দুটাই পরিমাপ করা যায় না। পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী ৫০০ মানুষের তালিকা তো ফোর্বস করে না। করলে দেখতে, তালিকার বেশির ভাগ মানুষকেই আমরা চিনি না।

নিশ্চয়ই বন্ধুবান্ধব ও পরিবার তাঁদের ঘিরে রাখে। তাঁরা সুস্বাস্থ্যের অধিকারী, বাইরের জগতে সক্রিয়। তাঁদের জীবনের উদ্দেশ্য আছে, সৃজনশীলতা প্রকাশের সুযোগ আছে। তাঁরা হয়তো প্রচুর হাসেন। মহাবিশ্বের রহস্য দেখে বিস্ময় অনুভব করেন। তাঁরা হয়তো সবকিছুর ব্যাপারেই ইতিবাচক। তাঁদের বেশির ভাগের হয়তো একধরনের মৌলিক অর্থনৈতিক নিরাপত্তা আছে, তবে আমার ধারণা, তাদের অনেকেরই বস্তুগত সম্পদের পরিমাণ আমাদের চেয়ে কম।

বলছি না যে তোমাদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা থাকা উচিত নয়। বরং আগের যেকোনো প্রজন্মের চেয়ে তোমার স্বপ্ন আরও বড় হওয়া উচিত। তবে সম্পদ, ক্ষমতা আর প্রভাব—এই তিনটি বিষয় তোমাকে ভালো করে বুঝতে হবে। এগুলো লক্ষ্যে পৌঁছানোর একটা মাধ্যম। লক্ষ্য নয়। এগুলোই যেন তোমার কাছে বড় হয়ে না ওঠে। এগুলো কিন্তু তোমার সুখ নির্ধারণ করে দেবে না।

জীবনের টানাপোড়েনগুলোর সঙ্গে মানিয়ে নিয়েই ধীরে ধীরে এগিয়ে যাও। বাস্তবতা ও উচ্চাকাঙ্ক্ষার মধ্যে, আনন্দ ও কষ্টের মধ্যেও যে টানাপোড়েন থাকে—আমরা সাধারণত সেগুলো এড়িয়ে চলতে চাই। কিন্তু সেগুলো গ্রহণ করাই বরং স্বাস্থ্যকর। সব অভিযানেরই দুটি পথ থাকে। একটি নিরাপদ, অন্যটি ঝুঁকিপূর্ণ। প্রতিটি যাত্রায় থাকে অস্বস্তি, চাপ আর অনিশ্চয়তার মুহূর্ত। যদি তুমি ধৈর্য ধরো, দেখবে এসব টানাপোড়েন ধীরে ধীরে মিটে যাবে। শুধু সামনে এগোনোর চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে সচেতনভাবে। অস্বস্তি থেকে পালিয়ে যেয়ো না, বরং তার মধ্য দিয়েই সামনে এগিয়ে চলো।

সুযোগের দরজাগুলো একসময় খুলেই যাবে। ভাগ্য, কঠোর পরিশ্রম আর নিয়মিত চেষ্টার মাধ্যমে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এতটাই এগিয়ে যাবে, যতটা তুমি কল্পনাও করোনি। ভাবা আর কাজে নেমে পড়া—এটা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সামনে এগোনোর সবচেয়ে উত্তম উপায়। সিদ্ধান্তহীনতা বা ভয় যেন তোমাকে আটকে না ফেলে। সমস্যার মুখোমুখি হও। এড়িয়ে যাওয়াটাই সবচেয়ে বাজে ফল এনে দেবে। পেশাগত জীবনের শুরুর দিকে মাথা নিচু রাখো, দক্ষতা অর্জন করো। অন্যের কাজে লাগো। টাকা জমানো শুরু করো আর নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করো। (সংক্ষেপিত)

ইংরেজি থেকে অনূদিত

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ বন র আম দ র র একট সবচ য়

এছাড়াও পড়ুন:

মাদারীপুরের সাবেক দুই ডিসিসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান

শিবচরে পদ্মা সেতু রেললাইন সংযোগ প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মাদারীপুরের সাবেক দুই জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন ও মো. ওয়াহিদুল ইসলামসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মাদারীপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়। 

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই)  দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় এ সংক্রান্ত নোটিশ মাদারীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, সাবেক দুই জেলা প্রশাসকসহ অভিযুক্তদের কাছে পাঠিয়েছে ।

দুদক সূত্র জানায়, পদ্মা রেললাইন সংযোগ প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক দুই জেলা প্রশাসকসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধানপূর্বক প্রতিবেদন জন্য দুদক মাদারীপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আখতারুজ্জামানকে দলনেতা ও উপ-সহকারী পরিচালক মো. সাইদুর রহমান অপুকে সদস্য করে একটি অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়েছে। 

আরো পড়ুন:

খুকৃবির সাবেক উপাচার্যসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

কুবির নতুন ক্যাম্পাসের জমি ক্রয়ে দুর্নীতির অভিযোগ, তথ্য চেয়েছে দুদক

অনুসন্ধান সংশ্লিষ্ট তথ্যাদি দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ১৯ ধারা এবং দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা, ২০০৭ এর বিধি ৮ অনুযায়ী ব্যবস্থাগ্রহণ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। 

দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে যাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন তথ্য এবং চাহিদাপত্র চেয়ে নোটিশ প্রদান করা হয়েছে তারা হলেন- মাদারীপুর সাবেক জেলা প্রশাসক মো. ওহিদুল ইসলাম, সাবেক জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন, সাবেক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সৈয়দ ফারুক আহম্মদ, সাবেক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ঝোটন চন্দ্র, মাদারীপুরের সাবেক ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা মো. সাইফুদ্দিন গিয়াস।

‎মোহাম্মদ সুমন শিবলী, প্রমথ রঞ্জন ঘটক, ‎আল মামুন, মো. নাজমুল হক সুমন, মাদারীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ‎কানুনগো (ভারপ্রাপ্ত) মো. নাসির উদ্দিন, মো. আবুল হোসেন, রেজাউল হক এবং মাদারীপুর কালেক্টরেট রেকর্ড রুম শাখার রেকর্ড কিপার মানিক চন্দ্র মন্ডল।

দুর্নীতি দমন কমিশন মাদারীপুরের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ও অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা আখতারুজ্জামান বলেন, “মাদারীপুরের সাবেক জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুল ইসলাম ও ড. রহিমা খাতুনসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে তথ্য ও বিভিন্ন চাহিদাপত্র চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন মাদারীপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত নোটিশ অভিযুক্তদের কাছে পাঠানো হয়েছে।”

ঢাকা/বেলাল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ