পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী ৫০০ মানুষের তালিকা তো ফোর্বস করে না
Published: 1st, June 2025 GMT
আমি ভীষণ রোমাঞ্চিত। কারণ, আজ আমরা একটা ছোট্ট ঘোষণা করতে যাচ্ছি। কার্নেগি মেলন ও স্কুলহাউস ডট ওয়ার্ল্ডের মধ্যে একটি অংশীদারি সম্পর্কের যাত্রা শুরু হচ্ছে। জানিয়ে রাখি, স্কুলহাউস ডট ওয়ার্ল্ড হলো খান একাডেমির একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান, যেখানে বাছাইকৃত ও প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে জুমে লাইভ টিউশনি দেওয়া হয়।
কার্নেগি মেলনের সঙ্গে মিলে আমরা একটা প্রোগ্রাম চালু করছি। হ্যাঁ, করতালি দিন! এই প্রোগ্রামটি লিওনার্ড গেলফ্যান্ড সেন্টার ফর সার্ভিস লার্নিং অ্যান্ড আউটরিচের মাধ্যমে চলবে। এর মাধ্যমে কার্নেগি মেলনের শিক্ষার্থীরা বিশ্বজুড়ে হাইস্কুল শিক্ষার্থীদের গণিত পড়াতে পারবে এবং এ জন্য কলেজ ক্রেডিট পাবে।
শুধু তা-ই নয়। স্কুলহাউস ডট ওয়ার্ল্ডের পোর্টফোলিওকে স্বীকৃতি দেবে কার্নেগি মেলন। ফলে যাঁরা টিউশনি নেবেন, তাঁরা সনদ ও স্বীকৃতি পাবেন, যা পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিপ্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বিবেচ্য হবে।
এভাবেই পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তের কেউ, হয়তো আফগানিস্তানের একটি মেয়ে, প্রথাগত সনদ অর্জনের সুযোগ যার নেই, কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের কোনো শহরের শিক্ষার্থী যিনি খান একাডেমিতে নিজে নিজে ক্যালকুলাস শিখছেন—সবাই তাঁদের জ্ঞান প্রমাণ করতে পারবেন। কার্নেগি মেলনের মতো নামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিও হতে পারবেন।
আরও পড়ুনচ্যাটজিপিটি ছাড়া আরও যেসব এআই টুল আপনার জীবন সহজ করবে১৩ ঘণ্টা আগেঅর্থ বনাম সুখতোমার জীবনের মানে ও আনন্দ তুমি নিজে খুঁজে বের করো। কোনো সমাজ, বিজ্ঞাপন, বন্ধু বা পরিবার যেন সেটা ঠিক করে না দেয়। আমরা সবাই প্রভাবিত হই। যতটা ভাবি, তার চেয়েও বেশি। তাই প্রতিবছর কোটি কোটি ডলার খরচ হয় আমাদের বোঝাতে যে—‘সঠিক’ পানীয়টা খেলেই জীবন বর্তে যাবে। ‘ঠিকঠাক’ পোশাকটা পরলেই জনপ্রিয়তা মিলবে। কিংবা ‘দামি’ গাড়িতে চড়লেই সাফল্য পাবে। কারা ধনী, কারা সবচেয়ে প্রভাবশালী—এসবই খবরে উঠে আসে। সাময়িকীগুলো শুধু তারকাদের সৌন্দর্য, ধনসম্পদ, খ্যাতির ওপর জোর দেয়। আমাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমজুড়ে থাকে বন্ধুবান্ধবের পদোন্নতি, ঘোরাঘুরির ছবি আর সুখী জীবনের গল্প।
যেন এসবই আমাদের মনে সাফল্যের একটা ‘মানে’ গেঁথে দেয়। যেন এসব অর্জন করলেই আমরা সুখী হব। কিছু কিছু বিষয় স্বাভাবিক, এবং সীমিত পরিমাণে যুক্তিসংগতও। কারণ সিজিপিএ, ডিগ্রি, কত টাকা, কেমন বাড়ি, কত ফলোয়ার—এসব পরিমাপ করা সহজ। কিন্তু একটা পর্যায়ের পর শুধু টাকা বা খ্যাতি তোমার সুখ বাড়াবে না।
সুখী মানুষ কেমনজীবনটা কতটা অর্থপূর্ণ হলো, জীবনে কতখানি তৃপ্তি পেলাম, সেটাই তো গুরুত্বপূর্ণ হওয়া উচিত। অথচ এ দুটাই পরিমাপ করা যায় না। পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী ৫০০ মানুষের তালিকা তো ফোর্বস করে না। করলে দেখতে, তালিকার বেশির ভাগ মানুষকেই আমরা চিনি না।
নিশ্চয়ই বন্ধুবান্ধব ও পরিবার তাঁদের ঘিরে রাখে। তাঁরা সুস্বাস্থ্যের অধিকারী, বাইরের জগতে সক্রিয়। তাঁদের জীবনের উদ্দেশ্য আছে, সৃজনশীলতা প্রকাশের সুযোগ আছে। তাঁরা হয়তো প্রচুর হাসেন। মহাবিশ্বের রহস্য দেখে বিস্ময় অনুভব করেন। তাঁরা হয়তো সবকিছুর ব্যাপারেই ইতিবাচক। তাঁদের বেশির ভাগের হয়তো একধরনের মৌলিক অর্থনৈতিক নিরাপত্তা আছে, তবে আমার ধারণা, তাদের অনেকেরই বস্তুগত সম্পদের পরিমাণ আমাদের চেয়ে কম।
বলছি না যে তোমাদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা থাকা উচিত নয়। বরং আগের যেকোনো প্রজন্মের চেয়ে তোমার স্বপ্ন আরও বড় হওয়া উচিত। তবে সম্পদ, ক্ষমতা আর প্রভাব—এই তিনটি বিষয় তোমাকে ভালো করে বুঝতে হবে। এগুলো লক্ষ্যে পৌঁছানোর একটা মাধ্যম। লক্ষ্য নয়। এগুলোই যেন তোমার কাছে বড় হয়ে না ওঠে। এগুলো কিন্তু তোমার সুখ নির্ধারণ করে দেবে না।
জীবনের টানাপোড়েনগুলোর সঙ্গে মানিয়ে নিয়েই ধীরে ধীরে এগিয়ে যাও। বাস্তবতা ও উচ্চাকাঙ্ক্ষার মধ্যে, আনন্দ ও কষ্টের মধ্যেও যে টানাপোড়েন থাকে—আমরা সাধারণত সেগুলো এড়িয়ে চলতে চাই। কিন্তু সেগুলো গ্রহণ করাই বরং স্বাস্থ্যকর। সব অভিযানেরই দুটি পথ থাকে। একটি নিরাপদ, অন্যটি ঝুঁকিপূর্ণ। প্রতিটি যাত্রায় থাকে অস্বস্তি, চাপ আর অনিশ্চয়তার মুহূর্ত। যদি তুমি ধৈর্য ধরো, দেখবে এসব টানাপোড়েন ধীরে ধীরে মিটে যাবে। শুধু সামনে এগোনোর চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে সচেতনভাবে। অস্বস্তি থেকে পালিয়ে যেয়ো না, বরং তার মধ্য দিয়েই সামনে এগিয়ে চলো।
সুযোগের দরজাগুলো একসময় খুলেই যাবে। ভাগ্য, কঠোর পরিশ্রম আর নিয়মিত চেষ্টার মাধ্যমে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এতটাই এগিয়ে যাবে, যতটা তুমি কল্পনাও করোনি। ভাবা আর কাজে নেমে পড়া—এটা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সামনে এগোনোর সবচেয়ে উত্তম উপায়। সিদ্ধান্তহীনতা বা ভয় যেন তোমাকে আটকে না ফেলে। সমস্যার মুখোমুখি হও। এড়িয়ে যাওয়াটাই সবচেয়ে বাজে ফল এনে দেবে। পেশাগত জীবনের শুরুর দিকে মাথা নিচু রাখো, দক্ষতা অর্জন করো। অন্যের কাজে লাগো। টাকা জমানো শুরু করো আর নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করো। (সংক্ষেপিত)
ইংরেজি থেকে অনূদিত
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ বন র আম দ র র একট সবচ য়
এছাড়াও পড়ুন:
আফগানিস্তানে মধ্যরাতে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাত
আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় হিন্দুকুশ অঞ্চলে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। যুক্তরাষ্ট্র ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) এ তথ্য জানিয়েছে। দুই মাস আগেই দেশটিতে এক ভূমিকম্পে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।
ইউএসজিএস জানায়, রোববার দিবাগত রাতে আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ অঞ্চলে মাজার-ই-শরিফ শহরের কাছে খোলম এলাকায় ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। স্থানীয় সময় রাত ১২টা ৫৯ মিনিটে আঘাত হানা এই ভূমিকম্পের গভীরতা প্রথমে ১০ কিলোমিটার বলা হয়। পরে তা সংশোধন করে গভীরতা ২৮ কিলোমিটার বলে জানায় সংস্থাটি।
আফগানিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে।
উল্লেখ্য, গত ৩১ আগস্ট আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছিল। দেশটির পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানা রিখটার স্কেলে ৬ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে ২ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারান।
আরও পড়ুনআফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ২২০৫, খোলা আকাশের নিচে মানুষ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫আফগানিস্তানে প্রায়শই ভূমিকম্প আঘাত হানে। বিশেষ করে হিন্দুকুশ পর্বতমালা বরাবর, যেখানে ইউরেশীয় এবং ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটগুলো মিলিত হয়েছে।
ব্রিটিশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার ভূমিকম্পবিদ ব্রায়ান ব্যাপটির দেওয়া তথ্য মতে, ১৯০০ সাল থেকে উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানে রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার বেশি ১২টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
আরও পড়ুন৩৫ বছরে আফগানিস্তানে ভয়াবহ যত ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫