কোনো বিষয়ে কারও নিন্দা করার আগে একটু জেনে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। তিনি বলেছেন, যারা নিন্দা করেন, কুৎসা রটান, এরমধ্যে হয়তো কোনো আনন্দ খুঁজে পান। কিন্তু এটা অন্য কাউকে এমন কষ্ট দিতে পারে, যা আপনি নিজে কখনও বহন করতে চাইবেন না। এটি মনে রাখা ভালো।

বুধবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ‘নিন্দা’ শিরোনামে দেওয়া এক পোস্টে আইন উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের ফেসবুক পোস্টটি নিচে তুলে ধরা হলো:

নিন্দা

কয়েক দিন আগে মুক্তিযোদ্ধাদের সংজ্ঞায়ন–বিষয়ক ভুল সংবাদের জেরে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। এই ঝড়ের অন্যতম শিকার হয় আমার পরিবারের সদস্যরা। দু–একজন তাদের ধিক্কার দিতে থাকে, কীভাবে এই আইন করলাম আমি! তারা বলে: এটা তো মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় করেছে! কিন্তু সমালোচকেরা নাছোড়বান্দা! না, আইনটিতে তো লেখা আছে আইন মন্ত্রণালয়ের নাম।

আমি জানি, এ রকম বহু শিক্ষিত মানুষ আছে সমাজে। তাদের কাছে সবিনয়ে বলি, অন্য যেকোনো মন্ত্রণালয় যে অধ্যাদেশই করুক না কেন, তা জারি করতে হয় আইন মন্ত্রণালয়কে। আমাদের রুলস অব বিজনেস অনুসারে এটাই বিধান। পৃথিবীর প্রায় সকল দেশে এটাই হয়। বাংলাদেশে এনবিআর নিয়ে যে আইনটা (অধ্যাদেশ) হয়েছে, তা করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদিত হওয়ার পর এটা জারি করতে হয়েছে আইন মন্ত্রণালয়কে। সরকারি কর্মচারীদের শৃঙ্খলা নিয়ে যে আইন, তা–ও করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। কিন্তু এটা জারি করতে হয়েছে আইন মন্ত্রণালয়কে।

অধ্যাদেশ আকারে যত আইন অতীতে হয়েছে, সেগুলো আইন মন্ত্রণালয় জারি করেছে। ভবিষ্যতে যেসব অধ্যাদেশ হবে, সেগুলোও আইন মন্ত্রণালয়কে জারি করতে হবে। এ জন্য গেজেটের প্রথম পাতায় আইন মন্ত্রণালয়ের নামই থাকবে। কিন্তু তার মানে এটি নয় যে আইন মন্ত্রণালয় আইনগুলো করেছে বা এটি আইনগুলোর প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়।

আইন মন্ত্রণালয় নিজস্ব উদ্যোগে আইন করেছে কেবল এ মন্ত্রণালয়ের কার্যপরিধিভুক্ত বিষয়ে। যেমন দেওয়ানি কার্যবিধির সংশোধনী আইন বা উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগসংক্রান্ত আইনটি করেছে আইন মন্ত্রণালয়। কিন্তু অন্য কোনো মন্ত্রণালয়ের কার্যপরিধিভুক্ত বিষয়ে আইন প্রণয়নের কোনো ক্ষমতা আইন মন্ত্রণালয়ের নেই। আছে শুধু জারি করার দায়িত্ব। এটি স্রেফ আনুষ্ঠানিকতা।

২.

আইন তো তবু কিছুটা খটমটে বিষয়। কিন্তু সাদামাটা, সহজবোধ্য যেকোনো বিষয়েও আমাকে নিন্দা করার প্রবণতা আছে সমাজের কিছু মানুষের মধ্যে। প্রশ্ন হচ্ছে, সরকারের যেকোনো কাজের সমালোচনা যদি আমাকে করা হয়, তাহলে যেকোনো ভালো কাজের প্রশংসাও আমাকে কেন করা হয় না?

সাবেক রাষ্ট্রপতি কীভাবে বিদেশে গেলেন, এই দায় যদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে না দিয়ে আমাকে দেওয়া হয়, তাহলে দ্রব্যমূল্য যে স্থির রয়েছে, এই প্রশংসাও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে না দিয়ে আমাকে দিতে হবে। কিন্তু এর কোনোটিই আসলে করা ঠিক নয়।

আমার কাজের জন্য নিন্দা/প্রশংসা আমাকে করবেন, অন্যের কাজের জন্য অন্যকে। যেকোনো কাজের সামগ্রিক দায়দায়িত্ব আমাদের গোটা সরকারের। কিন্তু যদি নির্দিষ্টভাবে একজন উপদেষ্টাকে দায়ী করা হয়, তাহলে সেটি শুধু তাঁর মন্ত্রণালয়ের অধিভুক্ত বিষয়ে করা উচিত।

৩.

যারা নিন্দা করেন, কুৎসা রটান, এর মধ্যে হয়তো কোনো আনন্দ খুঁজে পান। কিন্তু এটা অন্য কাউকে এমন কষ্ট দিতে পারে, যা আপনি নিজে কখনো বহন করতে চাইবেন না। এটি মনে রাখা ভালো।

আমি জানি ‘অপরের মুখ ম্লান করে দেওয়া ছাড়া প্রিয় সাধ নেই’—এমন মানুষ আছেন সমাজে। যারা এমন নন, তাদের কাছে অনুরোধ, কারও নিন্দা করার আগে একটু জেনে নিন।

আল্লাহ আছেন, আমাদের সবাইকে একদিন জবাব দিতে হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আইন উপদ ষ ট ফ সব ক প স ট উপদ ষ ট সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

আহমেদাবাদের সেই মেডিকেল হোস্টেলের ৫ শিক্ষার্থী নিহত

ভারতের আহমেদাবাদে এয়ার ইনডিয়ার উড়োজাহাজ যে ভবনে বিধ্বস্ত হয়েছে সেটি মূলত বিজে মেডিকেল কলেজ ছাত্রদের হোস্টেল। দুর্ঘটনার পর হোস্টেল ভবনটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উড়োজাহাজের ধ্বংসাবশেষ ও চাকা ভবনের যে অংশে আটকে আছে, সেখানে মেডিকেল ছাত্রদের ক্যান্টিন। সেখানে সারি সারি টেবিলে খাবারসহ প্লেটও রয়েছে। তবে উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের পর টেবিলগুলোতে ধুলাবালির আস্তরণ জমে আছে। হোস্টেলটির অন্তত ৫ জন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। 

এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাঁচজন মেডিকেল শিক্ষার্থীর মধ্যে চারজন স্নাতক পর্যায়ের এবং একজন স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থী। 

আহমেদাবাদ পুলিশ বলছে, স্থানীয় মেডিকেল পেশাজীবীরা হোস্টেলটিতে থাকেন। ফায়ার ফাইটার ও উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থলে উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছেন।

বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজটি বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় দুপুরে আহমেদাবাদের সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লন্ডনের উদ্দেশ্যে উড়াল দেওয়ার পরই দুর্ঘটনায় পড়ে। উড়োজাহাজটিতে ২৪২ জন আরোহী ছিলেন।

বিবিসি বলছে, লন্ডনের গ্যাটউইক বিমানবন্দরগামী ওই উড়োজাহাজে যে ২৪২ জন আরোহী ছিল, তার মধ্যে দুইজন পাইলট ও ১০ জন ক্রুও ছিলেন।

যাত্রীদের মধ্যে ৫৩ জন ব্রিটিশ নাগরিক, একজন কানাডার ও ৭ জন পর্তুগালের নাগরিক রয়েছে বলে জানিয়েছে এয়ার ইনডিয়া। বাকিরা সবাই ভারতীয় নাগরিক।

আহমেদাবাদ বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের তথ্যের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানিয়েছে, রানওয়ে ২৩ থেকে বেলা দেড়টার কিছু সময় পর উড়োজাহাজটি বিমানবন্দর ছাড়ে। এরপরই সেটি ‘মে ডে’ সঙ্কেত দেয়, এরপর আর উড়োজাহাজের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

দুর্ঘটনার পর আহমেদাবাদ বিমানবন্দরের কার্যক্রম ‘পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত’ বন্ধ রাখা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘ক্যাশবাক্সে যা আছে বের কর, নইলে গুলি করে মাইরা ফালব’
  • বান্দরবানে দুইদিনে মিলল দুই পর্যটকের লাশ, এখনো নিখোঁজ ১
  • উড়োজাহাজের সেলফিতে শেষ হাসি: চিকিৎসক দম্পতি ও তাঁদের তিন সন্তানের করুণ বিদায়
  • নিখোঁজের এক দিন পর নদ থেকে একজনের লাশ উদ্ধার
  • ইসলামে স্বপ্নের গুরুত্ব
  • নির্বাসিত, তবুও অপরাজিত
  • বেঁচে গেছেন এক যাত্রী, হাসপাতালে ভর্তি
  • বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য ইউনূস-তারেক বৈঠক খুবই গুরুত্বপূর্ণ
  • আহমেদাবাদের সেই মেডিকেল হোস্টেলের ৫ শিক্ষার্থী নিহত