পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদুল আজহার ছুটি কাটিয়ে কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছেন রাজধানীবাসী। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, গুলিস্তান, কমলাপুর ও সদরঘাট ঘুরে দেখা গেছে গ্রাম ছেড়ে আসা মানুষের ভিড়। করোনার নতুন উপধরনের উপদ্রব দেখা দিলেও কাউকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ১১ দফা নির্দেশনা মানতে দেখা যায়নি।
গত ৭ জুন দেশে ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে। সরকারি চাকরিজীবীরা এবারের ঈদে ১০ দিন ছুটি পেয়েছেন, যা শেষ হবে আগামী শনিবার। ফলে আরও দুই দিন রাজধানীমুখী মানুষের চাপ অব্যাহত থাকবে।
যাত্রাবাড়ী ও সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, ফেনী, কুমিল্লা, চাঁদপুর, বরিশাল, খুলনা, পটুয়াখালীসহ বিভিন্ন জেলা থেকে বাসগুলো প্রায় পূর্ণ যাত্রী নিয়ে আসছে। যাত্রীরা নেমে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, রাইডশেয়ারিং গাড়ি অথবা বাসে গন্তব্যে যাচ্ছেন।
বাসচালক ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাস্তায় যানজট না থাকায় সময় কম লেগেছে। ক্লান্তি ছিল তুলনামূলক কম।
সায়েদাবাদ টার্মিনালেও একই চিত্র দেখা গেছে। বাসস্ট্যান্ডজুড়ে যাত্রীদের আসা-যাওয়া থাকলেও তারা স্বস্তিতে গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছেন। মাহমুদুল হাসান নামে এক যাত্রী জানান, আগের বছরগুলোর তুলনায় এবার ঈদের পর ফেরার অভিজ্ঞতা অনেকটা স্বস্তিদায়ক।
পরিবহন মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ বাস মালিক সমিতির সদস্য তোফায়েল হোসেন বলেন, ঈদের পর সাধারণত তৃতীয় বা চতুর্থ দিন থেকে ঢাকায় ফিরতি যাত্রীর চাপ বাড়ে। এবার লম্বা ছুটি হওয়ায় একটু পরে মানুষ ফিরছে। প্রতিটি রুটে অতিরিক্ত বাস নামানো হয়েছে। তবে যাত্রীর চাপ এত বেশি যে সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
যাত্রাবাড়ী মোড়ে ট্রাফিক পুলিশের একজন সদস্য বলেন, ঈদের ছুটির পর রাজধানী এখনও তুলনামূলক ফাঁকা। ঢাকায় ফেরা যাত্রীদের চাপ থাকলেও রাস্তার অবস্থা ভালো থাকায় কোথাও বড় ধরনের জট বা বিশৃঙ্খলা হয়নি।
কমলাপুর রেলস্টেশনে দেখা যায়, রাজশাহী, খুলনা, রংপুর, সিলেট, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ট্রেনে ঢাকায় ফিরছেন যাত্রীরা। স্টেশনজুড়ে দেখা গেছে যাত্রীদের ভিড়।
যাত্রী তন্ময় শিকদার বলেন, ঈদের লম্বা ছুটি কাটালাম পরিবারের সঙ্গে। এবার কাজে যোগ দেওয়ার পালা। পরিবার রেখে কাজে ফেরা বরাবরের মতো কষ্টের। কিন্তু জীবনের বাস্তবতা তো মানতে হবে। আসার পথে তেমন কোনো সমস্যা হয়নি। ট্রেন যথাসময়ে ছেড়েছে।
কমলাপুর স্টেশন মাস্টার মাজহারুল ইসলাম জানান, ফিরতি পথে ট্রেনের কোনো সংকট নেই। গত মঙ্গলবার দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ২৫টি ট্রেন ঢাকায় প্রবেশ করেছে।
সদরঘাটেও দেখা গেছে একই চিত্র। দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে লঞ্চে ঢাকায় ফিরছেন মানুষ। বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মী রাহাত খান বলেন, এই কয়েকদিন গ্রামের বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে ছিলাম। এখন আবার ফিরলাম কর্মস্থলে। যানজট এড়াতে আগে আগে ফিরলাম। ঈদের আনন্দ শেষ, এখন জীবনযুদ্ধ শুরু।
করোনার স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না কেউ
দেশে করোনাভাইরাসের নতুন একটি উপধরনে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা বাড়ায় গত বুধবার ১১ দফা নির্দেশনা দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তবে বাস, ট্রেন এবং লঞ্চ টার্মিনালে এসব নির্দেশনা মানতে দেখা যায়নি। বেশির ভাগ যাত্রীর মুখে ছিল না মাস্ক। ভিড়ের কারণে তারা শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশনা মানতে পারেননি।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত
নাবি মুম্বাই। নয়া মুম্বাই। নতুন সেই মুম্বাইয়ে কাল নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পেল মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত।
দীপ্তি শর্মার করা ৪৬তম ওভারের তৃতীয় বলে নাদিন ডি ক্লার্কের তোলা ক্যাচটি এক্সট্রা কাভারে ভারত অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌরের হাতে জমা হতেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের আনন্দে মাতল পুরো ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকা ২৪৬ রানে অলআউট, ভারত ৫২ রানে জয়ী।
ভারতের জয়ের উৎসব অবশ্য শুরু হয়ে গিয়েছিল পাঁচ ওভার আগেই। লরা ভলভার্টকে ফিরিয়ে পথের কাঁটা উপড়ে ফেলেই উদ্যাপন শুরু করেছিল ভারতীয়রা। অসাধারণ এক সেঞ্চুরি করে দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক চোখ রাঙাছিলেন ভারতের উৎসব ভন্ডুল করার। কিন্তু সেঞ্চুরি করার পরপরই ক্যাচ তুললেন ভলভার্ট। আর সেই ক্যাচ নিতে গিয়ে আমানজোত কৌর ভারতের প্রায় শত কোটি মানুষের হৃৎস্পন্দন প্রায় থামিয়ে দিয়েছিলেন। একবার নয়, দুবার নয়, তৃতীয়বারের চেষ্টাতেই ক্যাচ নিতে পারেন আমানজোত। এবারও বোলার সেই অফ স্পিনার দীপ্তি শর্মা।
৯৮ বলে ১০১ রান করে ভলভার্ট যখন ফিরলেন দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ৪১.১ ওভারে ২২০/৭। এরপর শুধু আনুষ্ঠানিকতাই ছেড়েছে ভারত। দীপ্তি আরও ২টি উইকেট নিয়ে পেয়ে গেছেন ৫ উইকেট। আর ভারত হয়ে গেছে চ্যাম্পিয়ন। এর আগে ব্যাট হাতেও ৫৮ বলে ৫৮ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন দীপ্তি।
ব্যাট হাতে ৮৭ রান করা শেফালি বর্মা বল হাতে নিয়েছেন ২ উইকেট