মাকড়সা থেকে তৈরি হচ্ছে বিষের প্রতিকার
Published: 13th, June 2025 GMT
অস্ট্রেলিয়ার অনেক অধিবাসী বিপজ্জনক প্রাণী হিসেবে মাকড়সাকে ভয় পান। মাকড়সার মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা জীবন বাঁচানোর ওষুধ তৈরি করছেন। অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় অ্যান্টিভেনম প্রোগ্রামের মাধ্যমে ওষুধ তৈরি করা হচ্ছে। পুরুষ মাকড়সা থেকে শক্তিশালী বিষ সংগ্রহ করে বিষপ্রতিরোধী ওষুধ তৈরি করা হচ্ছে।
অস্ট্রেলিয়ান রেপটাইল পার্কে বিজ্ঞানীরা প্রতিদিন গড়ে ৮০টি সিডনি ফানেল–ওয়েব মাকড়সা থেকে বিষ সংগ্রহ করেন। বিজ্ঞানী এমা টেনি বলেন, সিডনির ফানেল-ওয়েব মাকড়সা সম্ভবত পৃথিবীর সবচেয়ে বিপজ্জনক মাকড়সা। অস্ট্রেলিয়া এমন সব প্রাণঘাতী প্রাণীর জন্য পরিচিত। অস্ট্রেলিয়ান রেপটাইল পার্ক থেকে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ তৈরির জন্য মাকড়সার বিষ সংগ্রহ করা হচ্ছে।
সিডনিতে ফানেল-ওয়েব মাকড়সার কামড়ে দ্রুত মানুষের মৃত্যু ঘটে। সর্বনিম্ন মাত্র ১৩ মিনিটের মধ্যে এই মাকড়সার কামড়ে মানুষের মৃত্যু হতে পারে। যদিও এই মাকড়সার কামড়ে মৃত্যুর গড় সময় প্রায় ৭৬ মিনিট। দ্রুত প্রাথমিক চিকিৎসার মাধ্যমে অনেকেই বেঁচে যান। কামড়ের হাত থেকে বাঁচতে অস্ট্রেলিয়ায় অ্যান্টিভেনম প্রোগ্রাম চালু করা হয় ১৯৮১ সালে। এই কার্যক্রমে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ রয়েছে। সাধারণ মানুষের কাছ থেকে মাকড়সা বা তাদের ডিমের থলি সংগ্রহ করা হয়। প্রতি সপ্তাহে বিজ্ঞানীরা একটি ভ্যানে চড়ে সিডনিজুড়ে ভ্রমণ করে মাকড়সা সংগ্রহ করেন।
বিজ্ঞানীরা মনে করেন, সিডনি ফানেল-ওয়েব মাকড়সা দুটি কারণে ভয়ানক। এদের বিষ অবিশ্বাস্যভাবে শক্তিশালী এবং এদের বাস ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায়। পুরুষ মাকড়সা স্ত্রী মাকড়সার চেয়ে ছয় থেকে সাত গুণ বেশি বিষাক্ত। এরা অ্যান্টিভেনম উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রতি দুই সপ্তাহে বিষ সংগ্রহ করা হয়। প্রায় ২০০টি মাকড়সার বিষ থেকে এক শিশি অ্যান্টিভেনম তৈরি করা হচ্ছে।
সিডনি ফানেল-ওয়েব মাকড়সার জন্য খরগোশ রাখা হয়েছে পার্কে। খরগোশ প্রাকৃতিকভাবে বিষাক্ত পদার্থ প্রতিরোধী। এই প্রাণীর শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরির জন্য ধীরে ধীরে বিষের মাত্রা বৃদ্ধি করেন বিজ্ঞানীরা। এ প্রক্রিয়ায় প্রায় এক বছর সময় লাগে। অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে গেলে প্রাণীর রক্ত থেকে প্লাজমা বের করা হয়। তখন অ্যান্টিবডিকে আলাদা করে বোতলজাত করা হয়।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
ইরান ১০০টির কম ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে, অল্প কিছু আঘাত হেনেছে: ইসরায়েল
তেহরানে শুক্রবার পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে ইসরায়েলি হামলার জবাবে রাতে ব্যালিস্টিক মিসাইল হামলা চালিয়েছে ইরান। ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ ৩’ নামের এ অভিযানে ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা করা হয়। এতে অন্তত তিনজন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এপি। এ বিষয়ে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, ইরান আজ রাতে ইসরায়েলের দিকে ১০০টির কম ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। তবে তার মধ্যে অল্প কিছু ইসরায়েলে আঘাত হেনেছে।
সিএনএনের খবরে বলা হয়, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র এফি ডেফরিন এক ভিডিও বার্তায় বলেন, কিছু আঘাত হয়েছে, তবে বেশিরভাগই প্রতিরক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে প্রতিহত করা হয়েছে। তিনি সতর্ক করে বলেন, রাতে আরও হামলা হতে পারে, তাই সাধারণ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রের কাছাকাছি থাকতে অনুরোধ করা হচ্ছে।
ইসরায়েলের জরুরি সেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম (এমডিএ) জানিয়েছে, ইরানের পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে অন্তত দুইজন নিহত হয়েছে। ইসরায়েলের সমুদ্র উপকূলবর্তী সমতল এলাকায় অন্তত ২১ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মাঝে একজন ছিলেন ৬০ বছর বয়সী একজন নারী, যাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তবে, তখন তার শরীরে কোনও প্রাণচিহ্ন পাওয়া যায়নি। এছাড়া ৪৫ বছর বয়সী এক পুরুষকেও উদ্ধার করা হয়, পরে যাকে মৃত ঘোষণা করা হয়, জানিয়েছে এমডিএ।
তেল আবিবে রকেট হামলায় নারী নিহত: ইসরায়েলের জরুরি সেবা কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, ইসরায়েলের তেল আবিব শহরের দক্ষিণে রিশোন লেজিয়োন এলাকায় বাড়িঘরের কাছে ইরানের রকেট হামলায় অন্তত একজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৪০ জনের বেশি। ঘটনাস্থলে বিপুলসংখ্যক প্যারামেডিক সদস্যকে পাঠানো হয়েছে। তাঁরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখেন সেখানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ও কয়েকজন ব্যক্তি ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়েছেন।
আয়ালন অঞ্চলের জরুরি সেবা বিভাগের উপপরিচালক রামি মুশার বলেন, ‘এটি একটি কঠিন ও জটিল পরিস্থিতি। ভবনগুলোর ভেতর আর কোনো হতাহত আছে কিনা তা নিশ্চিত হতে আমরা এখনো কাজ করে যাচ্ছি।
নিউইয়র্ক টাইমসও ইসরায়েলি পুলিশের একজন মুখপাত্রের বরাত দিয়ে এই খবর জানিয়েছে। ওই পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শুক্রবার রাতে তেল আবিবের কাছে একটি শহরে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ঘটনাস্থলেই ওই নারীকে মৃত ঘোষণা করা হয়।