টানা দুই মৌসুমে রিশাদ হোসেনকে দলে নিয়েছে বিগ ব্যাশের দল হোবার্ট হারিকেন্স। বাংলাদেশি এই লেগস্পিনারকে নিয়ে দারুণ আশাবাদী অস্ট্রেলিয়ান ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। তাদের হাই পারফরম্যান্স ইউনিটের জেনারেল ম্যানেজার স্যালিয়ান ব্রিগস জানালেন, রিশাদকে দলে নেয়ার পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছেন রিকি পন্টিং। বিশ্বকাপে রিশাদের পারফরম্যান্সে মুগ্ধ হয়েছিলেন এই কিংবদন্তি ক্রিকেটার।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ৭ ম্যাচে ১৪ উইকেট নিয়ে রিশাদ ছিলেন আসরের ষষ্ঠ সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি। ৭.

৭৬ ইকোনমিতে বল করে তিনি প্রমাণ করেছেন নিজের দক্ষতা। উইকেট টেকিং অ্যাবিলিটি, গুগলি, ভ্যারিয়েশন, বাউন্স সব মিলিয়ে রিশাদ এখন একটি ‘কমপ্লিট প্যাকেজ’। শুধু বোলিং নয়, লোয়ার অর্ডারে ব্যাট হাতেও অবদান রাখতে পারেন তিনি।

এ বিষয়েই স্যালিয়ান ব্রিগস বলেন, ‘রিশাদ আগ্রাসী লেগস্পিনার। আমরা এমন কাউকে খুঁজছিলাম, যে শুধু ডিফেন্সিভ বোলিং করবে না। ব্যাটিংও জানে, ৮ নম্বরে নামলে লাইনআপ আরও ভারসাম্যপূর্ণ হবে। তার প্রতি একাধিক দলের আগ্রহ ছিল। রিকি পন্টিং আমাদের কনসালট্যান্ট, তিনি রিশাদকে চেনেন, বিশ্বকাপে পারফরম্যান্স দেখেছেন।’

যদিও পাকিস্তানের বিপক্ষে সাম্প্রতিক সিরিজে তেমন উজ্জ্বল ছিলেন না রিশাদ। ৩ ম্যাচে মাত্র ২ উইকেট, দু’টি ম্যাচে ৫০’র বেশি রান হজম করেছেন। পিএসএলে লাহোর কালান্দার্সের হয়ে ৭ ম্যাচে ১৩ উইকেট নিলেও শেষ দিকে ছিলেন কিছুটা খরচে। তবু ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে তার চাহিদা কমেনি।

২০২৪ সালে প্রথমবার রিশাদকে দলে নেয় হোবার্ট হারিকেন্স। তবে বিপিএলের সূচির সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় খেলতে পারেননি। এবার দ্বিতীয়বারের মতো তাকে নিয়েছে দলটি। এইবার আর সুযোগ হাতছাড়া করতে চান না তরুণ টাইগার রিস্ট স্পিনার।

গত বছর গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি কানাডা থেকেও ডাক পেয়েছিলেন রিশাদ, তবে এনওসি জটিলতায় অংশ নিতে পারেননি। পিএসএল দিয়ে বিদেশি লিগে অভিষেকের পর এবার বিগ ব্যাশ তার জন্য আরও বড় মঞ্চ। হোবার্টের আস্থা আর পন্টিংয়ের পছন্দ, সব মিলিয়ে রিশাদকে ঘিরে প্রত্যাশা তুঙ্গে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

কোটিপতি হলেও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করেন তিনি

পর্যাপ্ত অর্থ সঞ্চয় করতে পারলেই আমাদের অনেকে কায়িক পরিশ্রম ছেড়ে দেন। আরাম-আয়েশে জীবন কাটান। কিন্তু সবাই তা করেন না। এমন একজন জাপানের কোইচি মাতসুবারা। ৫৬ বছর বয়সী এই জাপানি নাগরিকের বার্ষিক আয় প্রায় ৩ কোটি ইয়েন (প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা) হওয়া সত্ত্বেও তিনি এখনো নিয়মিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করেন।

মাতসুবারা সপ্তাহে তিন দিন, প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে কাজ করেন। তিনি সরকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। এ কাজের অংশ হিসেবে তাঁকে ছোটখাটো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করতে হয়।

এ কাজ থেকে মাতসুবারা মাসে ১ লাখ ইয়েন (প্রায় ৮২ হাজার ৬৪ টাকা) আয় করেন, যা টোকিওর গড় বেতনের তুলনায় অনেক কম। তারপরও তিনি এ কাজ করেন। কারণ, তিনি এটাকে শারীরিক সক্রিয়তা ও মানসিক প্রশান্তির উপায় হিসেবে দেখেন।

মাতসুবারা ছোটবেলা থেকেই সঞ্চয়ী ছিলেন। মাধ্যমিকের পর তিনি একটি কারখানায় মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন (প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা) বেতনে কাজ শুরু করেন। খরচ বাঁচিয়ে কয়েক বছরে প্রায় ৩০ লাখ ইয়েন (২৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা) সঞ্চয় করে তিনি প্রথম স্টুডিও ফ্ল্যাট কিনেছিলেন।

পরে বাড়ি কেনার ঋণ আগেভাগে পরিশোধ করে ধীরে ধীরে আরও ফ্ল্যাট কেনেন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেন মাতসুবারা। এখন টোকিও ও এর শহরতলিতে তাঁর সাতটি ফ্ল্যাট রয়েছে, যার সবই ভাড়া দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেছেন।

ধনবান হলেও মাতসুবারা সাদাসিধে জীবন যাপন করেন। এখনো তিনি সস্তা ফ্ল্যাটে থাকেন, নিজের খাবার নিজে বানান, নতুন জামাকাপড় কেনেন না, সাধারণ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন এবং প্রধানত সাইকেলে চলাচল করেন। তাঁর জীবনদর্শন—‘প্রতিদিন কিছু না কিছু করার আশা করি, সুস্থ থাকতে চাই এবং নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে চাই।’

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে মাতসুবারাকে ‘অদৃশ্য কোটিপতি’ বলে উল্লেখ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর গল্প ছড়িয়ে পড়েছে। জাপানে ধনীদের এমন সাধারণ জীবনধারা অস্বাভাবিক নয়। দেশটিতে সাদাসিধে জীবনযাপন অনেকের মধ্যে দেখা যায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ