গত মৌসুমে ড্রাফট থেকে রিশাদ হোসেনকে দলে নিয়েও মাঠে নামাতে পারেনি হোবার্ট হারিকেন্স। জাতীয় দলের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর এবং বিপিএলের সূচি সংঘর্ষের কারণে খেলতে পারেননি উদীয়মান লেগস্পিনার। তবে চলতি মৌসুমে আবারও আস্থা রেখেছে বিগ ব্যাশ চ্যাম্পিয়ন হোবার্ট। এবার যেন আর কোনো বাধায় না থেমে যায় রিশাদের অস্ট্রেলিয়ান অধ্যায়।

হোবার্ট হারিকেন্সে রিশাদের অন্তর্ভুক্তিতে বড় ভূমিকা রেখেছেন দলের হেড অব স্ট্র্যাটেজি ও সাবেক অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক রিকি পন্টিং। আর পন্টিংয়ের প্রশংসা থেকেই এবার মুগ্ধতা প্রকাশ করলেন আরেক কিংবদন্তি সাবেক অধিনায়ক ও জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকার অ্যারন ফিঞ্চ।

রিশাদকে নিয়ে ফিঞ্চ বলেন, ‘এই বাংলাদেশি লেগ স্পিনার অসাধারণভাবে বল ঘোরান। রিকি পন্টিং তাকে নিয়ে যেভাবে উঁচু পর্যায়ের প্রশংসা করেছেন, তা থেকে বুঝে নিতে হবে তার সম্ভাবনা কতটা বিশাল।’

আধুনিক লেগ স্পিনারদের মধ্যে রিশাদের বোলিং ধরণকে ব্যতিক্রম বলেই মানছেন ফিঞ্চ। তার ভাষায়, ‘রিশাদ একটু আলাদা। সে হাওয়ায় বল ভাসিয়ে বোলিং করতে পছন্দ করে। চাপে পড়লে গতি কমায়, ভিন্ন কৌশলে উইকেট নেয়ার চেষ্টা করে।’

ফিঞ্চ আরও বলেন, ‘আমি রিশাদের তুলনা করব ইশ সোধির সঙ্গে। রশিদ খান যেমন জোরে বল করে স্টাম্প লক্ষ্য করে, রিশাদ তেমন নয়। তার গুগলি অসাধারণ, গতির বৈচিত্র্য আছে, হাওয়ায় ভাসিয়ে খেলোয়াড়দের বিভ্রান্ত করতে পারে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সে দারুণ বল করেছে।’

শুধু ফিঞ্চ নন, রিশাদের প্রশংসা এসেছে হোবার্টের অধিনায়ক নাথান এলিসের মুখ থেকেও। তিনি জানান, ‘রিশাদ ও রেহানকে নিয়েছি আমরা, কারণ মাঝের ওভারে উইকেট নেয়ার সামর্থ্য বাড়ানোই আমাদের লক্ষ্য। আমরা তাকে গত বছরও চেয়েছিলাম, এবার পেয়েছি। দলে পেয়ে আমরা রোমাঞ্চিত।’

রিশাদ হোসেন এবার নিজেও প্রস্তুত পুরো মৌসুম খেলতে। কারণ এই সময় বাংলাদেশ জাতীয় দলের কোনো আন্তর্জাতিক সূচি নেই। ইতিমধ্যে পুরো বিগ ব্যাশ মৌসুম খেলতে নিজের নাম নিবন্ধন করেছেন তিনি।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

কোটিপতি হলেও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করেন তিনি

পর্যাপ্ত অর্থ সঞ্চয় করতে পারলেই আমাদের অনেকে কায়িক পরিশ্রম ছেড়ে দেন। আরাম-আয়েশে জীবন কাটান। কিন্তু সবাই তা করেন না। এমন একজন জাপানের কোইচি মাতসুবারা। ৫৬ বছর বয়সী এই জাপানি নাগরিকের বার্ষিক আয় প্রায় ৩ কোটি ইয়েন (প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা) হওয়া সত্ত্বেও তিনি এখনো নিয়মিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করেন।

মাতসুবারা সপ্তাহে তিন দিন, প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে কাজ করেন। তিনি সরকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। এ কাজের অংশ হিসেবে তাঁকে ছোটখাটো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করতে হয়।

এ কাজ থেকে মাতসুবারা মাসে ১ লাখ ইয়েন (প্রায় ৮২ হাজার ৬৪ টাকা) আয় করেন, যা টোকিওর গড় বেতনের তুলনায় অনেক কম। তারপরও তিনি এ কাজ করেন। কারণ, তিনি এটাকে শারীরিক সক্রিয়তা ও মানসিক প্রশান্তির উপায় হিসেবে দেখেন।

মাতসুবারা ছোটবেলা থেকেই সঞ্চয়ী ছিলেন। মাধ্যমিকের পর তিনি একটি কারখানায় মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন (প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা) বেতনে কাজ শুরু করেন। খরচ বাঁচিয়ে কয়েক বছরে প্রায় ৩০ লাখ ইয়েন (২৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা) সঞ্চয় করে তিনি প্রথম স্টুডিও ফ্ল্যাট কিনেছিলেন।

পরে বাড়ি কেনার ঋণ আগেভাগে পরিশোধ করে ধীরে ধীরে আরও ফ্ল্যাট কেনেন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেন মাতসুবারা। এখন টোকিও ও এর শহরতলিতে তাঁর সাতটি ফ্ল্যাট রয়েছে, যার সবই ভাড়া দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেছেন।

ধনবান হলেও মাতসুবারা সাদাসিধে জীবন যাপন করেন। এখনো তিনি সস্তা ফ্ল্যাটে থাকেন, নিজের খাবার নিজে বানান, নতুন জামাকাপড় কেনেন না, সাধারণ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন এবং প্রধানত সাইকেলে চলাচল করেন। তাঁর জীবনদর্শন—‘প্রতিদিন কিছু না কিছু করার আশা করি, সুস্থ থাকতে চাই এবং নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে চাই।’

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে মাতসুবারাকে ‘অদৃশ্য কোটিপতি’ বলে উল্লেখ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর গল্প ছড়িয়ে পড়েছে। জাপানে ধনীদের এমন সাধারণ জীবনধারা অস্বাভাবিক নয়। দেশটিতে সাদাসিধে জীবনযাপন অনেকের মধ্যে দেখা যায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ