বকেয়া বিদ্যুৎ বিল নিয়ে বাগ্বিতণ্ডা থেকে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষ, টেঁটাবিদ্ধসহ আহত ২৩
Published: 23rd, June 2025 GMT
মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় বকেয়া বিদ্যুৎ বিল নিয়ে বাগ্বিতণ্ডার জের ধরে দুই গ্রামের বাসিন্দাদারে মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন টেঁটাবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন ২৩ জন। আজ সোমবার দুপুরে উপজেলার বালুচর ইউনিয়নের বালুচর বাজারে মোল্লাকান্দি ও খাসমহল গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বালুচর বাজারে মোল্লাকান্দি গ্রামের সুরুজ মিয়ার ছেলে শাহীন ব্যাপারীর একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা গ্যারেজ রয়েছে। গ্যারেজটির ছয় মাসের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে। সোমবার বেলা একটার দিকে সিরাজদিখান পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা বকেয়া বিলের তাগাদা দিতে যান। ওই কর্মকর্তার সঙ্গে খাসমহল গ্রামের আনোয়ার সরদারের ছেলে সুলতান সরদারও গ্যারেজে যান। সে সময় ওই কর্মকর্তার সঙ্গে শাহীন ব্যাপারীর বাগ্বিতণ্ডা হয়। সুলতান সরদার বিদ্যুৎ কর্মকর্তার পক্ষ নিয়ে শাহীন ব্যাপারীর সঙ্গে ঝগড়ায় জড়ান। সে সময় সুলতান সরদারকে শাহীন মারধর করেন বলে অভিযোগ।
সুলতান সরদার বিষয়টি তাঁর গ্রামের (খাসমহল) লোকজনকে জানান। ওই গ্রামের লোকজন টেঁটা ও লাঠিসোঁটা নিয়ে মোল্লাকান্দি গ্রামে আসেন। মোল্লাকান্দির লোকজনও বিষয়টি জানতে পেরে টেঁটা, লাঠি, ইটপাটকেল নিয়ে জড়ো হন। সে সময় দুই গ্রামের মানুষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত আটজন টেঁটাবিদ্ধ হন। ইটের আঘাত ও লাঠিপেটায় আহত হন আরও বেশ কয়েকজন। এ ছাড়া ভাঙচুর করা হয়েছে বালুচর বাজারের সাত-আটটি দোকান। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও সিরাজদিখান থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে দুই পক্ষ পালিয়ে যায়। গুরুত্বর আহত ব্যক্তিদের গোপনে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠনো হয়। অন্যদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
খাসমহল এলাকার বাসিন্দা ও বালুচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আওলাদ হোসেন বলেন, বিদ্যুৎ বিল চাওয়াকে কেন্দ্র করে খাসমহল গ্রামের একজনকে মারধর করেন মোল্লাকান্দি গ্রামের লোকজন। এ ঘটনার প্রতিবাদ করতে গেলে মোল্লাকান্দির লোকজন তাঁদের লোকজনের ওপর হামলা করেন। এতে খাসমহল গ্রামের সাত-আটজন টেঁটাবিদ্ধ হয়েছেন। দুজন গুরুতর অবস্থায় ঢাকায় আছেন।
মোল্লাকান্দি গ্রামের পক্ষের আমির হোসেন বলেন, ‘বিদ্যুৎ বিল নিয়ে ঝগড়ার কথা শুনেছিলাম। পরে আমরা এসেছিলাম ঝগড়াঝাঁটি মীমাংসা করতে। সে সময় খাসমহল গ্রামের কয়েক শ মানুষ আমাদের ওপর টেঁটা, লাঠিসোঁটা নিয়ে অতর্কিত হামলা করে। এতে আমিসহ আমাদের অন্তত ১৫ জন টেঁটাবিদ্ধ হয়েছেন। আমাদের যাঁরা টেঁটাবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন, তাঁরা গোপনে চিকিৎসা নিচ্ছেন। গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপনে রয়েছেন।’
বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে উল্লেখ করে সিরাজদিখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহেদ আল মামুন বলেন, ‘অনেকে আহত হয়েছে শুনেছি। তবে কারও নাম–পরিচয় জানা যায়নি। এ ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর মকর ত র ল কজন হয় ছ ন ব ল চর স ঘর ষ
এছাড়াও পড়ুন:
মানি লন্ডারিং মামলায় খালাস পেলেন জি কে শামীম
মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের মামলায় ১০ বছরের কারাদণ্ড থেকে খালাস পেয়েছেন ঠিকাদার গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীম।
বিচারপতি এ এস এম আবদুল মোবিন ও বিচারপতি মো. যাবিদ হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এ রায় দেন।
মামলায় বিচারিক আদালতের দেওয়া দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে শামীম ও অপর সাতজনের করা আপিল, জেল আপিল ও বিবিধ আবেদনের শুনানি শেষে এ রায় দেওয়া হয়।
এই মামলায় খালাস পাওয়ায় শামীম কারামুক্তি পেতে পারেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবী।
আইনজীবীরা বলেছেন, একই মামলায় চার বছরের কারাদণ্ড থেকে খালাস পেয়েছেন শামীমের সাত দেহরক্ষী।
সাত দেহরক্ষী হলেন মুরাদ হোসেন, শহিদুল ইসলাম শরীফ, জাহিদুল ইসলাম, কামাল হোসেন, আমিনুল ইসলাম, সামসাদ হোসেন ও দেলোয়ার হোসেন।
আদালতে শামীমের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. রুহুল কুদ্দুস, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মো. আকতার রসুল মুরাদ ও মোছাদ্দেক বিল্লাহ। অপর আপিলকারীদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী পারভেজ হোসেন, মো. জুবায়ের হোসেন সজীব প্রমুখ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. হেমায়েত উল্লাহ।
পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. হেমায়েত উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, জি কে শামীম ও সাতজন খালাস পেয়েছেন। বিচারিক আদালতের সাজার রায় বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে।
মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের মামলায় ২০২৩ সালের ১৭ জুলাই রায় দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০। রায়ে শামীমকে ১০ বছর এবং অপর ৭ জনকে ৪ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এর আগে ২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর রাজধানীর গুলশানে নিজ কার্যালয় থেকে সাত দেহরক্ষীসহ শামীম গ্রেপ্তার হন। শামীমের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়। মানি লন্ডারিংয়ের মামলাটি হয় রাজধানীর গুলশান থানায়। এ মামলায় ২০২০ সালের ৮ আগস্ট শামীমসহ আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। একই বছরের ১০ নভেম্বর আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।