হেডিংলিতে এজবাস্টন ফিরিয়ে ‘বাজবলের’ জয়গান
Published: 24th, June 2025 GMT
আম্পায়ার ক্রিস গ্যাফানি সংকেত দিলেন, ম্যাচের আর এক ঘণ্টা বাকি। মানে, হেডিংলি টেস্টের শেষ এক ঘণ্টায় সর্বোচ্চ আরও ১৫ ওভারের খেলা হবে। গ্যাফানির সেই সংকেত দেখে হাসছিলেন শুবমান গিল। নিশ্চয় বেদনার হাসি।
ভারতের টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে এ ম্যাচ দিয়েই অভিষেক হওয়া গিল ততক্ষণে বুঝে গেছেন, এক ঘণ্টা আসলে অনেক দেরি; ইংল্যান্ড জিততে চলেছে কয়েক মিনিটের মধ্যেই। গিল ও তাঁর দলের শারীরিক ভাষাই তখন বলে দিচ্ছিল, ভারত হাল ছেড়ে দিয়েছে। ব্যাপারটা বোঝা গেছে আরও আগেই। তা না হলে বোলিং আক্রমণের প্রধান অস্ত্র যশপ্রীত বুমরাকে কেন সর্বশেষ ১৭ ওভারেও বোলিংয়ে আনা হলো না?
প্রতিপক্ষ যখন হাল ছেড়েই দিয়েছে, তখন জেমি স্মিথেরও আর তর সইল না। প্রয়োজন ছিল ১৬ রান। জাদেজার ওভারে একটি ডাবল, একটি চার আর দুটি ছক্কায় ইংল্যান্ডের উইকেটকিপার–ব্যাটসম্যান নিলেন ১৮ রান।
গ্যালারিতে তখন উচ্ছ্বাস–হর্ষধ্বনি। হেডিংলিতে তখন যে তিন বছর আগের এজবাস্টন ফিরে এসেছে! ভারতের দেওয়া ৩৭১ রানের লক্ষ্য শেষ দিনে ৫ উইকেট আর ১৪ ওভার বাকি রেখে টপকে গেছে ইংলিশরা, নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে যা তাদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়।
সর্বোচ্চ ৩৭৮ রান তাড়া করে জয়টা ভারতের বিপক্ষেই, ২০২২ সালের জুলাইয়ে ‘বাজবল’ জমানার শুরুর দিকে। তিন বছরের ব্যবধানে নিজেদের মাটিতে ভারতের বিপক্ষে আরেকটি টেস্ট খেলতে নেমে আবারও সেই ‘বাজবলের’ জয়গান।
সংক্ষিপ্ত স্কোরভারত: ৪৭১ ও ৩৬৪।
ইংল্যান্ড: ৪৬৫ ও ৮২ ওভারে ৩৭৩/৫ (ডাকেট ১৪৯, ক্রলি ৬৫, রুট ৫৩*, স্মিথ ৪৪*, স্টোকস ৩৩; শার্দূল ২/৫১, প্রসিধ ২/৯২, জাদেজা ১/১০৪)।
ফল: ইংল্যান্ড ৫ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: বেন ডাকেট।
সিরিজ: ৫ ম্যাচের সিরিজে ইংল্যান্ড ১–০ ব্যবধানে এগিয়ে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কোটিপতি হলেও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করেন তিনি
পর্যাপ্ত অর্থ সঞ্চয় করতে পারলেই আমাদের অনেকে কায়িক পরিশ্রম ছেড়ে দেন। আরাম-আয়েশে জীবন কাটান। কিন্তু সবাই তা করেন না। এমন একজন জাপানের কোইচি মাতসুবারা। ৫৬ বছর বয়সী এই জাপানি নাগরিকের বার্ষিক আয় প্রায় ৩ কোটি ইয়েন (প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা) হওয়া সত্ত্বেও তিনি এখনো নিয়মিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করেন।
মাতসুবারা সপ্তাহে তিন দিন, প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে কাজ করেন। তিনি সরকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। এ কাজের অংশ হিসেবে তাঁকে ছোটখাটো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করতে হয়।
এ কাজ থেকে মাতসুবারা মাসে ১ লাখ ইয়েন (প্রায় ৮২ হাজার ৬৪ টাকা) আয় করেন, যা টোকিওর গড় বেতনের তুলনায় অনেক কম। তারপরও তিনি এ কাজ করেন। কারণ, তিনি এটাকে শারীরিক সক্রিয়তা ও মানসিক প্রশান্তির উপায় হিসেবে দেখেন।
মাতসুবারা ছোটবেলা থেকেই সঞ্চয়ী ছিলেন। মাধ্যমিকের পর তিনি একটি কারখানায় মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন (প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা) বেতনে কাজ শুরু করেন। খরচ বাঁচিয়ে কয়েক বছরে প্রায় ৩০ লাখ ইয়েন (২৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা) সঞ্চয় করে তিনি প্রথম স্টুডিও ফ্ল্যাট কিনেছিলেন।
পরে বাড়ি কেনার ঋণ আগেভাগে পরিশোধ করে ধীরে ধীরে আরও ফ্ল্যাট কেনেন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেন মাতসুবারা। এখন টোকিও ও এর শহরতলিতে তাঁর সাতটি ফ্ল্যাট রয়েছে, যার সবই ভাড়া দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেছেন।
ধনবান হলেও মাতসুবারা সাদাসিধে জীবন যাপন করেন। এখনো তিনি সস্তা ফ্ল্যাটে থাকেন, নিজের খাবার নিজে বানান, নতুন জামাকাপড় কেনেন না, সাধারণ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন এবং প্রধানত সাইকেলে চলাচল করেন। তাঁর জীবনদর্শন—‘প্রতিদিন কিছু না কিছু করার আশা করি, সুস্থ থাকতে চাই এবং নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে চাই।’
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে মাতসুবারাকে ‘অদৃশ্য কোটিপতি’ বলে উল্লেখ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর গল্প ছড়িয়ে পড়েছে। জাপানে ধনীদের এমন সাধারণ জীবনধারা অস্বাভাবিক নয়। দেশটিতে সাদাসিধে জীবনযাপন অনেকের মধ্যে দেখা যায়।