ঝালকাঠির নলছিটিতে এক সাংবাদিককে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করার পর খালে ফেলে দিয়েছে হামলাকারীরা। গতকাল মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়নের জুরকাঠি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরিবারের অভিযোগ, সংবাদ প্রকাশের জেরে তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যে এ হামলা চালানো হয়েছে।

ভুক্তভোগী ওই ব্যক্তির নাম খান মাইনউদ্দিন (৪০)। তিনি জুরকাঠি গ্রামের বাসিন্দা এবং ‘দৈনিক বাংলাদেশ বুলেটিন’ পত্রিকার বরিশাল ব্যুরোপ্রধান ও আঞ্চলিক ‘দৈনিক দখিনের কণ্ঠ’ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত। আহত অবস্থায় তাঁকে বরিশাল শের-ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

মাইনউদ্দিনের পরিবার সূত্রে জানা যায়, গতকাল দুপুরে নলছিটির দপদপিয়া ইউনিয়নের উত্তর জুরকাঠি গ্রামে সরকারি অর্থায়নে নির্মিত একটি কালভার্ট নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেন মাইনউদ্দিন। এর জেরে গতকাল রাত ৯টার দিকে তাঁর বাড়িতে হামলা চালায় ওই এলাকার আবু হোসেন, তার ছেলে ইমরান হাওলাদার, রিয়াজ হাওলাদার, ইব্রাহিম হাওলাদার, নিশাত সিকদার, আলম হাওলাদার, সানি হাওলাদারসহ ১০ থেকে ১২ জন। এ সময় তাদের হাতে রামদা, চাপাতি, ছুরি, লোহার রড, হাতুড়িসহ বিভিন্ন দেশি অস্ত্র ছিল। একপর্যায়ে মাইনউদ্দিনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে তারা। মাইনউদ্দিন অচেতন হয়ে পড়লে তাঁকে পাশের খালে ফেলে দেয় দুর্বৃত্তরা। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।

মাইনউদ্দিনের বাবা আবদুল আজিজ খান বলেন, তাঁর ছেলেকে হত্যার উদ্দেশ্যেই কুপিয়ে আহত করা হয়। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা পলাতক থাকায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুস সালাম।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বন্দরে সন্ত্রাসী হামলায় কৃষক দলের সভাপতিসহ আহত ৩ 

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নারায়ণগঞ্জ ৫ আসনের  বিএনপি মনোনিত এমপি প্রার্থী মাসুদজ্জামান মাসুদের ফেস্টুনের উপর সতন্ত্র প্রার্থী মাকসুদ হোসেনের ফেস্টুন লাগানোকে কেন্দ্র করে বন্দরে মুছাপুর ইউনিয়ন কৃষক দলের সভাপতি কামাল হোসেন (৪৮)-এর ওপর সন্ত্রাসী হামলা, মারধর ও ছিনতাইয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে । এ ঘটনায় তিনি ১১ জনকে বিবাদী করে বন্দর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, বন্দর থানার লাঙ্গলবন্দ প্রেমতলা এলাকায় প্রায় এক মাস আগে বিএনপি মনোনীত নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী মাসুদুজ্জামান মাসুদ–এর একটি নির্বাচনী ফেস্টুন স্থাপন করা হয়। অভিযোগ অনুযায়ী গত ১৩ নভেম্বর রাতে ওই ফেস্টুনের ওপর বিবাদীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী মাকসুদ হোসেনের নির্বাচনী ব্যানার জোরপূর্বক সেঁটে দেয়।

অভিযুক্তরা হলেন— মাকসুদ হোসেন (৫৮), তার ছেলে মাহমুদুল হাসান শুভ (৩৫), মাইনউদ্দিন (৩৮), বিল্লাল (৩২), পানাউল্লাহ (৩৬), মাসুদ (৩৪), নাদিম (২৮), বিল্লাল (৩৫), নুর আলম (৩৪), রুবেল (৩৪), এবং রিয়াজুল (৩২)।

অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৪ নভেম্বর সকাল ৯টার দিকে গণসংযোগকালে ব্যানার অপসারণের বিষয় নিয়ে মাইনউদ্দিন ও বিল্লালের সঙ্গে কামাল হোসেনের কথা কাটাকাটি হয়।

এরপর একই দিন রাত ৯টার দিকে নারায়ণগঞ্জ শহরে গণসংযোগ শেষে বাড়ি ফেরার সময় বন্দর থানার বাজুরবাগ এলাকার রুমান মিয়ার ফার্মেসীর সামনে পৌঁছালে মাকসুদ হোসেন ও মাহমুদুল হাসান শুভ’র নির্দেশে সকল বিবাদী দেশীয় অস্ত্র—রামদা, চাইনিজ কুড়াল, ছুরি, রড ও লাঠি–সোঠা নিয়ে হামলা চালায়।

হামলায় কামাল হোসেনসহ তাঁর সঙ্গে থাকা মহিউদ্দিন (৩৫) এবং শাকিল (৩২) গুরুতর জখম হন।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, হামলাকারীরা হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও মারধর করে তাদের রক্তাক্ত জখম করে।

হামলার এক পর্যায়ে অভিযুক্তরা কামাল হোসেনের ৩২ হাজার টাকা, আহত মহিউদ্দিনের ৭ হাজার ৮২০ টাকা ও একটি মোবাইল ফোন, আহত শাকিলের ৪ হাজার ২৭০ টাকা ও একটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়।

স্থানীয় লোকজনের চিৎকার শুনে এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায় এবং যাওয়ার সময় প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যায় বলে অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে।

পরে আহতদের স্থানীয়দের সহায়তায় উদ্ধার করে খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

অভিযোগকারী কামাল হোসেন বলেন, “ঘটনাটি পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছে। আমাদের হত্যা করার উদ্দেশ্যেই হামলা চালানো হয়।”

এ বিষয়ে বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত হোসেন জানান, অভিযোগটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বন্দরে সন্ত্রাসী হামলায় কৃষক দলের সভাপতিসহ আহত ৩