ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে ১৩ মাস ধরে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির লোকজন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ছয়জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে চারজনকে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলা নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক বাবুল মোল্লার বাড়িতে বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গেলে সমিতির কর্মচারীদের সঙ্গে মারামারির ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।

পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয় ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বোয়ালমারী পৌর সদরের ছোলনা গ্রামের বাসিন্দা জব্দুল মোল্লার ছেলে ও উপজেলা নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক মো.

বাবুল মোল্লার কাছে ১৩ মাসের বিদ্যুৎ বিল বাবদ ১৪ হাজার ৬১০ টাকা পাওনা আছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাবুল মোল্লার বাড়িতে বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে যান সমিতির বোয়ালমারী আঞ্চলিক কার্যালয়ের কর্মচারীরা। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে কথা–কাটাকাটি থেকে মারামারি শুরু হয়। এতে সমিতির মো. শাহেদ, জুয়েল হোসেন, রাসেল মিয়া, হাবিব এবং গ্রাহক বাবুল মোল্লা (৪২) ও তাঁর ভাই শাহজাহান মোল্লা (৩৬) আহত হন। তাঁদের মধ্যে চারজনকে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অন্য দুজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

গ্রাহক বাবুল মোল্লা অভিযোগ করে বলেন, সকালে তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন। চিৎকার শুনে তাঁর ঘুম ভেঙে যায়। তিনি ঘরের বাইরে গিয়ে পল্লী বিদ্যুতের লোকজনকে তাঁর ভাই শাহজাহানকে মারতে দেখেন। এ সময় তিনি ঠেকাতে গেলে তাঁকেও রেঞ্জ দিয়ে আঘাত করে জখম করা হয়। তিনি বলেন, পরে এলাকার লোকজন এগিয়ে এলে পল্লী বিদ্যুতের লোকজন পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ নিয়ে এসে তাঁদের বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।

পল্লী বিদ্যুতের বোয়ালমারী আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক মো. সাইদুর রহমান বলেন, ১৩ মাসে সাড়ে ১৪ হাজার টাকা বিল বাকি করেছেন বাবুল মোল্লা। তিনি বিলও পরিশোধ করেন না। আবার লাইনও কাটতে দেন না। বিল না দেওয়ায় তাঁদের কর্মচারীরা বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু বাবুল মোল্লার লোকজন চার কর্মচারীকে মারধর করে আহত করেন। তাঁদের মধ্যে দুজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি বলেন, এ ঘটনায় পল্লি বিদ্যুৎ সমিতির পক্ষ থেকে সরকারি কাজে বাধা ও মারধর করার অভিযোগে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

ইউএনও তানভীর হাসান চৌধুরী বলেন, ‘সময়মতো বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করা অন্যায়। আমি গিয়েছিলাম। যাতে ভবিষ্যতে এ রকম ঘটনা না ঘটে।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব দ য ৎ স য গ ব চ ছ ন ন করত ব দ য ৎ স য গ ব চ ছ ন ন কর র ল কজন য় পল ল ১৩ ম স উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

নওগাঁর দুই সীমান্ত দিয়ে আরও ১৮ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ

নওগাঁর ধামইরহাট ও সাপাহার সীমান্ত দিয়ে নারী, শিশুসহ ১৮ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে। পরে তাঁদের আটক করে সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে বিজিবি।

বিজিবি, পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা যায়, ধামইরহাট উপজেলার কালুপাড়া সীমান্ত এলাকা দিয়ে গতকাল রাতের কোনো এক সময় ১৪ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠায় বিএসএফ। পরে রাত ৩টার দিকে ২৭১/১ এস সীমান্ত পিলারের কাছে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কালুপাড়া এলাকা থেকে তাঁদের আটক করে বিজিবি। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁদের ধামইরহাট থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আটক ১৪ জনের মধ্যে ৯ জন নারী ও পাঁচজন পুরুষ। তাঁদের বাড়ি খুলনা, নড়াইল ও যশোরের বিভিন্ন এলাকায় বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে।

নওগাঁর পত্নীতলা ১৪ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এ বিষয়ে ধামইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমাম জাফর জানান, বিজিবির হস্তান্তর করা ওই ১৪ জনকে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা নিজেদের বাংলাদেশি বলে দাবি করেছেন। তাঁদের দাবি করা পরিচয় যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে তাঁদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

এদিকে গতকাল রাতের কোনো এক সময় সাপাহার উপজেলার বামনপাড়া এলাকা দিয়ে চারজনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠায় বিএসএফ। রাত সাড়ে ৩টার দিকে সীমান্তের ২৪৬/২ এস পিলারের কাছে বাংলাদেশের অভ্যন্তর থেকে ওই চারজনকে আটক করে বিজিবি। পরে তাঁদের সাপাহার থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

সাপাহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আজিজ বলেন, বিজিবির হস্তান্তর করা ওই চারজনের মধ্যে দুজন পুরুষ ও দুজন নারী। তাঁরা একই পরিবারের সদস্য। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জানিয়েছেন, তাঁদের বাড়ি নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলায়। তাঁদের দাবি করা পরিচয় যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।    

এর আগে গত ৩১ জুলাই নওগাঁর ধামইরহাট সীমান্তের আগ্রাদ্বিগুণ এলাকা দিয়ে ১০ জনকে ঠেলে পাঠায় বিএসএফ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজীপুরে সাংবাদিক হত্যায় দুই কারণ সামনে রেখে তদন্ত করছে পুলিশ
  • নওগাঁর দুই সীমান্ত দিয়ে আরও ১৮ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ