১৩ মাসের বিল বকেয়া, বোয়ালমারীতে বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গিয়ে দুই পক্ষের মারামারি
Published: 25th, June 2025 GMT
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে ১৩ মাস ধরে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির লোকজন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ছয়জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে চারজনকে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলা নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক বাবুল মোল্লার বাড়িতে বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গেলে সমিতির কর্মচারীদের সঙ্গে মারামারির ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।
পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয় ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বোয়ালমারী পৌর সদরের ছোলনা গ্রামের বাসিন্দা জব্দুল মোল্লার ছেলে ও উপজেলা নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক মো.
গ্রাহক বাবুল মোল্লা অভিযোগ করে বলেন, সকালে তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন। চিৎকার শুনে তাঁর ঘুম ভেঙে যায়। তিনি ঘরের বাইরে গিয়ে পল্লী বিদ্যুতের লোকজনকে তাঁর ভাই শাহজাহানকে মারতে দেখেন। এ সময় তিনি ঠেকাতে গেলে তাঁকেও রেঞ্জ দিয়ে আঘাত করে জখম করা হয়। তিনি বলেন, পরে এলাকার লোকজন এগিয়ে এলে পল্লী বিদ্যুতের লোকজন পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ নিয়ে এসে তাঁদের বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।
পল্লী বিদ্যুতের বোয়ালমারী আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক মো. সাইদুর রহমান বলেন, ১৩ মাসে সাড়ে ১৪ হাজার টাকা বিল বাকি করেছেন বাবুল মোল্লা। তিনি বিলও পরিশোধ করেন না। আবার লাইনও কাটতে দেন না। বিল না দেওয়ায় তাঁদের কর্মচারীরা বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু বাবুল মোল্লার লোকজন চার কর্মচারীকে মারধর করে আহত করেন। তাঁদের মধ্যে দুজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি বলেন, এ ঘটনায় পল্লি বিদ্যুৎ সমিতির পক্ষ থেকে সরকারি কাজে বাধা ও মারধর করার অভিযোগে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
ইউএনও তানভীর হাসান চৌধুরী বলেন, ‘সময়মতো বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করা অন্যায়। আমি গিয়েছিলাম। যাতে ভবিষ্যতে এ রকম ঘটনা না ঘটে।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব দ য ৎ স য গ ব চ ছ ন ন করত ব দ য ৎ স য গ ব চ ছ ন ন কর র ল কজন য় পল ল ১৩ ম স উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
মামুন হত্যা মামলায় চার আসামি পাঁচ দিনের রিমান্ডে, অস্ত্র মামলায় ইউসুফের দায় স্বীকার
রাজধানীর পুরান ঢাকায় আদালত এলাকায় ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ তারিক সাঈদ মামুন হত্যার ঘটনায় অস্ত্র আইনে গ্রেপ্তার পাঁচ আসামির মধ্যে চারজনকে আজ রোববার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। পরে এ মামলায় তাঁদের আদালতের মাধ্যমে পাঁচ দিন করে রিমান্ডে নেওয়া হয়।
আজ রোববার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাসিবুজ্জামান এ আদেশ দেন।
অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন মো. ফারুক হোসেন ফয়সাল (৩৮), রবিন আহম্মেদ ওরফে পিয়াস (২৫), মো. রুবেল (৩৪), শামীম আহম্মেদ (২২) ও মো. ইউসুফ জীবন (৪২)। তাঁদের মধ্যে ইউসুফ আজ দায় স্বীকার করে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল রানার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি।
এ হত্যাকাণ্ডের পর মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজারে আসামি ইউসুফ জীবনের বাসার ওয়ার্ডরোবের নিচ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রের গুলির উদ্ধার করা হয়। ১২ নভেম্বর মোহাম্মদপুর থানায় অস্ত্র আইনে মামলা করেন পুলিশ। পরে সেদিনই এই মামলায় গ্রেপ্তার পাঁচজনের চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ফটকের ঠিক বিপরীতে অবস্থিত ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালের সামনে ১০ নভেম্বর সকালে গুলি করে হত্যা করা হয় তারিক সাইফ মামুনকে। তিনি মামলার হাজিরা দিয়ে বের হচ্ছিলেন তখন। নিকটস্থ সিসিটিভি ক্যামেরার এক ফুটেজে দেখা যায়, মামুন দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করছেন। তখন দুই ব্যক্তি খুব কাছ থেকে তাঁকে গুলি করছেন।
এ ঘটনায় আজ গতকাল শনিবার ১৫ নভেম্বর সূত্রাপুর থানায় হত্যা মামলা করেন নিহত মামুনের স্ত্রী বিলকিস আক্তার। তবে মামলায় তিনি কারও নাম উল্লেখ না করে অজ্ঞাতনামা ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগের উপপরিদর্শক আবু বকর জানান, আজ মামুন হত্যা মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক মো. সাজ্জাদ হোসেন। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
শুনানিতে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলেন, আগের অস্ত্র মামলার চার দিনের রিমান্ডে সব তথ্য বেরিয়েছে। পুলিশও মিডিয়াকে সব জানিয়েছে। হত্যার ঘটনা কেন হয়েছে? কে কী করেছে। সে ক্ষেত্রে আর রিমান্ডে যৌক্তিকতা নেই। বিচারক বলেন, ওটা তো অন্য মামলায়। আসামিপক্ষের আইনজীবীর প্রশ্নের জবাবে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, তাঁদের সঙ্গে আর কে কে আছেন, সেটা জানা দরকার। শুধু ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা নয়, এখানে আরও বেশি টাকার লেনদেন হয়েছে।
আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, মিডিয়াতে এসেছে, রনি জড়িত। এ ছাড়া হত্যা মামলায় আসামি সব অজ্ঞাতনামা। বিচারক তখন তদন্ত কর্মকর্তার কাছে এ মামলায় এজাহারনামীয় আসামি কে কে, তা জানতে চান। জবাবে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, এজাহারে অজ্ঞাতনামা আসামি। বাদী চেয়েছেন, তদন্তের মাধ্যমে আসামি বের হোক। সে জন্য অজ্ঞাতনামা দিয়েছেন। বাদী ন্যায়বিচার চান।
তখন আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, এ আসামিদের প্রতি বাদীর (হত্যা মামলা) কোনো সন্দেহ নেই। তাঁরা গ্রেপ্তার হয়েছেন পাঁচ দিন আগে। তিনি মামলা করেছেন গতকাল শনিবার। কাউকে তিনি সন্দেহ করেননি। তখন তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, এঁরাই গুলি করছেন। মামলাটি তদন্তের পর্যায়ে রয়েছে। তদন্ত হলে সব বেরিয়ে আসবে। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে বিচারক ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।