বলিউড অভিনেত্রী কাজল একেবারে নতুন রূপে ফিরছেন রুপালি পর্দায়। প্রথমবারের মতো হরর ঘরানার ছবিতে অভিনয় করছেন তিনি। নাম ‘মা’। পৌরাণিক মিথ, সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার ও ভৌতিক উপাদান মিশিয়ে তৈরি এই সিনেমার ট্রেলার গায়ে কাঁটা ধরিয়ে দিয়েছে দর্শকদের। ছবির মূল গল্প আবর্তিত হয়েছে চন্দ্রপুর নামে এক কাল্পনিক গ্রামে। যুগ যুগ ধরে একটি বিশ্বাস প্রচলিত–শিশুকন্যাদের রক্তে এক অশুভ শয়তান শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। সেই গ্রামে মেয়েকে নিয়ে কাজলের আগমন এবং তারপর ঘটে যায় এক ভয়াবহ ঘটনা। হঠাৎ উধাও হয়ে যায় তাঁর কন্যা। কাজল জানতে পারেন, বিগত কয়েক মাস ধরে ওই গ্রামে একের পর এক কন্যাসন্তান নিখোঁজ হয়ে যাচ্ছে। তাঁর মেয়েও সেই অশুভ শক্তিরই শিকার। মা হিসেবে মেয়েকে রক্ষার জন্য কাজল প্রস্তুত হন ভয়ংকর এক যুদ্ধে। একজন সাধারণ মা থেকে রূপান্তরিত হন এক নির্ভীক, রুদ্ররূপী মাতৃশক্তিতে। ট্রেলারে ফুটে উঠেছে ভয়ের আবহ, অ্যাকশন, আবেগ ও পৌরাণিক নানা বিষয়। ট্রেলারের শুরুতে দেখা যায়, রাতে কুয়াশায় মোড়ানো রাস্তায় মেয়েকে নিয়ে গাড়ি চালাচ্ছেন কাজল। হঠাৎ এক মৃতদেহের সঙ্গে সংঘর্ষ, তারপরই তারা পৌঁছান এক পুরোনো প্রাসাদে, যেখানে মেয়েটিকে বারবার সাবধান করা হয় বাইরে না যাওয়ার জন্য।
সে এক অচেনা মেয়ের সঙ্গে চলে যায় পরিত্যক্ত এলাকায়; যা এক রাক্ষসের অভিশাপে ধ্বংসপ্রাপ্ত। এরপরই এক অন্ধকার শক্তি কাজলের মেয়েকে গভীর জঙ্গলের দিকে টেনে নিয়ে যায়। শুরু হয় মায়ের লড়াই। সিনেমার পোস্টারে কাজলকে দেখা গেছে দুই বিপরীত শক্তির মাঝখানে– একদিকে পিশাচসদৃশ দানব, অন্যদিকে মাতৃত্বের ভয়ানক রূপে দাঁড়িয়ে থাকা কাজল। মুখে রাগ, চোখে আগুন, শরীরে শক্তির ঝলক। সিনেমার ট্যাগলাইনই সব বলে দেয়– ‘রক্ষক, ভক্ষক এবং মা’। এক সাক্ষাৎকারে কাজল জানান, ‘এটি একটি মানসিক যুদ্ধের গল্প। যেখানে একজন মা নিজের সন্তানের জন্য নিজের সব সীমা ছাড়িয়ে যায়। শুটিংয়ের সময় সত্যিই ভয় পেয়েছি।’ ‘মা’ তাঁর ক্যারিয়ারের একটি মোড় পরিবর্তনের কাজ করবে বলেও জানান অভিনেত্রী। এরই মধ্যে প্রকাশ হওয়া ট্রেলারে টিজারের ভিজ্যুয়াল এফেক্ট, আবহসংগীত ও সিনেমাটোগ্রাফি ইতোমধ্যে প্রশংসা কুড়িয়েছে। অনেকেই মনে করছেন ঘন কুয়াশা, পরিত্যক্ত বাড়ি, পৌরাণিক কাহিনি আর আধুনিক নারীর শক্তিময় রূপ– সব মিলিয়ে ‘মা’ হতে চলেছে এক ব্যতিক্রমী হরর সিনেমা। অজয় দেবগনের প্রযোজনায় সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন বিশাল ফুরিয়া; যিনি এর আগে ‘ছোড়ি’ এবং ‘ছোড়ি ২’-এর মতো হরর সিনেমা পরিচালনা করে খ্যাতি পেয়েছেন। কাজলের পাশাপাশি ছবিতে রয়েছেন রনিত রায়, ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত, যতীন গুলাটি ও খেরিন শর্মা। আগামীকাল হিন্দি, বাংলা, তামিল ও তেলেগু ভাষায় মুক্তি পাবে ছবিটি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
অসুস্থ ব্যক্তির জন্য দোয়া কীভাবে করব
ইসলামে অসুস্থতা একটি পরীক্ষা হিসেবে বিবেচিত হয়, যা মুমিনের ধৈর্য ও আল্লাহর উপর ভরসাকে শক্তিশালী করে। অসুস্থ ব্যক্তির জন্য দোয়া করা একটি ফজিলতপূর্ণ আমল, যা রোগীর জন্য শান্তি ও সুস্থতা নিয়ে আসে এবং দোয়াকারীর জন্য আল্লাহর রহমত অর্জনের মাধ্যম।
মহানবী (সা.) অসুস্থ ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ দোয়া ও আমল শিখিয়েছেন, যা হাদিসে বর্ণিত আছে।
রোগীকে দেখতে গিয়ে তার জন্য দোয়া করা এবং মনোবল বাড়ানো সুন্নাহ। রোগীকে ধৈর্য ধরতে এবং আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া আদায় করতে উৎসাহিত করা উচিত।অসুস্থ ব্যক্তির জন্য দোয়াইসলামে অসুস্থ ব্যক্তির জন্য দোয়া করার ব্যাপারে নবীজি (সা.) কয়েকটি নির্দিষ্ট দোয়া শিখিয়েছেন। এই দোয়াগুলো রোগী নিজে পড়তে পারেন বা অন্য কেউ রোগীর জন্য পড়তে পারেন। নিচে কয়েকটি প্রধান দোয়া উল্লেখ করা হলো:
১. নবীজি (সা.)-এর শেখানো দোয়া
আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) অসুস্থ ব্যক্তির জন্য এই দোয়া পড়তেন:
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা রাব্বান নাস, আযহিবিল বাস, ইশফি আনতাশ শাফি, লা শিফায়া ইল্লা শিফাউক, শিফাআন লা ইউগাদিরু সাকামা।
অর্থ: হে আল্লাহ! মানুষের প্রভু, রোগ দূর করো, সুস্থতা দাও, তুমিই সুস্থতা দানকারী। তোমার সুস্থতা ছাড়া কোনো সুস্থতা নেই, এমন সুস্থতা দাও যা কোনো রোগ রাখে না। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫৭৪৩)
পড়ার নিয়ম:
রোগীর ডান হাত দিয়ে তার কপাল বা শরীরের ব্যথার স্থানে হাত রেখে এই দোয়া পড়া।
তিনবার বা সাতবার পড়া উত্তম।
রোগী নিজে পড়তে পারেন বা অন্য কেউ রোগীর জন্য পড়তে পারেন।
আরও পড়ুননববিবাহিতদের জন্য তিনটি দোয়া২১ জুলাই ২০২৫২. সুরা ফাতিহা পড়া
সুরা ফাতিহা রোগ নিরাময়ের জন্য অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। হাদিসে আছে, সুরা ফাতিহা শিফা বা নিরাময়ের জন্য পড়া যায়। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, একজন সাহাবি সুরা ফাতিহা পড়ে একজন রোগীকে সুস্থ করে দিয়েছিলেন, এবং নবীজি (সা.) এটি অনুমোদন করেছেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫৭৩৬)
যখন তুমি কোনো মুসলিম ভাইয়ের জন্য তার অনুপস্থিতিতে দোয়া করো, ফেরেশতারা বলে, ‘আমিন, তোমার জন্যও তা–ই হোক।সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২,৭৩২পড়ার নিয়ম:
সুরা ফাতিহা সাতবার পড়ে রোগীর শরীরে ফুঁ দেওয়া।
রোগীর কপালে বা ব্যথার স্থানে হাত রেখে পড়া উত্তম।
৩. সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস
এই তিনটি সুরা (সুরা ইখলাস: ১১২, সুরা ফালাক: ১১৩, সুরা নাস: ১১৪) অসুস্থতা থেকে সুস্থতা ও সুরক্ষার জন্য পড়া হয়। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) অসুস্থ হলে এই তিনটি সুরা পড়তেন এবং শরীরে ফুঁ দিতেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস নং: ৫,০১৭)
তিনটি সুরা তিনবার করে পড়া।
পড়ার পর হাতে ফুঁ দিয়ে রোগীর শরীরে মুছে দেওয়া।
৪. সাধারণ দোয়া
অসুস্থ ব্যক্তির জন্য নিজের ভাষায়ও দোয়া করা যায়। উদাহরণ: ‘হে আল্লাহ! আমার/তার রোগ দূর করো, সুস্থতা দান করো, তুমি সব ক্ষমতার মালিক।’ নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘দোয়া ইবাদতের মূল।’ (সুনান তিরমিজি, হাদিস: ৩,৩৭১)
নিজের ভাষায় দোয়া করার সময় আন্তরিকতা ও আল্লাহর ওপর ভরসা রাখা জরুরি।
আরও পড়ুনসন্তানকে বদ দোয়া করবেন না২১ এপ্রিল ২০২৫অসুস্থ ব্যক্তির জন্য আমলনবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যায়, তার জন্য ফেরেশতারা দোয়া করেন: তুমি পবিত্র হও, তোমার পথ পবিত্র হোক এবং তুমি জান্নাতে প্রবেশ করো।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২,৫৬৮)
রোগীকে দেখতে গিয়ে তার জন্য দোয়া করা এবং মনোবল বাড়ানো সুন্নাহ। রোগীকে ধৈর্য ধরতে এবং আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া আদায় করতে উৎসাহিত করা উচিত। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যে মুমিন ধৈর্যের সঙ্গে অসুস্থতা সহ্য করে, আল্লাহ তার গুনাহ মাফ করেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫,৬৫২)
অসুস্থ ব্যক্তির জন্য দোয়া আল্লাহর কাছে কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, কারণ রোগী দুর্বল অবস্থায় থাকে এবং তার দোয়া আল্লাহর কাছে বিশেষ মর্যাদা পায়।অসুস্থ ব্যক্তির জন্য দোয়া করার ফজিলত অপরিসীম। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যখন তুমি কোনো মুসলিম ভাইয়ের জন্য তার অনুপস্থিতিতে দোয়া করো, ফেরেশতারা বলে, ‘আমিন, তোমার জন্যও তা–ই হোক।’’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২,৭৩২)
এছাড়া, অসুস্থ ব্যক্তির জন্য দোয়া আল্লাহর কাছে কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, কারণ রোগী দুর্বল অবস্থায় থাকে এবং তার দোয়া আল্লাহর কাছে বিশেষ মর্যাদা পায়।
দোয়ার পাশাপাশি চিকিৎসা গ্রহণ করা, কারণ নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘প্রতিটি রোগের জন্য চিকিৎসা রয়েছে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫,৬৭৮)
দোয়া করার সময় শিরক বা অপ্রমাণিত পদ্ধতি এড়ানো দরকার। শুধু কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত দোয়া ব্যবহার করব আমরা।
আরও পড়ুনদোয়া কীভাবে করতে হয়২০ এপ্রিল ২০২৫