১০ বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র নির্মাণে ব্যয় ২৩৯ কোটি টাকা
Published: 1st, July 2025 GMT
বিদ্যুৎ বিভাগের আওতায় ৩৩/১১ কেভি জিআইএস প্রযুক্তির ১০টি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র (সাবস্টেশন) নির্মাণে ব্যয় হবে ২৩৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এ সংক্রান্ত দুটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটি।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
সভা সূত্রে জানা গেছে, টার্নকি ভিত্তিতে ৫টি ৩৩/১১ কেভি উপন্দ্রের ডিজাইন, সাপ্লাই, ইন্সস্টলেশন , টেস্টিং অ্যান্ড কমিশনিং প্রভৃতির জন্য এক ধাপ দুই খাম পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ৭টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে। তার মধ্যে ৫টি প্রস্তাব বাণিজ্যিক ও কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সকল প্রক্রিয়া শেষে টিইসি খেকে সুপারিশকৃত রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান আইডিয়াল ইলেক্ট্রিকাল এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড ঢাকাম প্রকল্পটি বাস্তায়ন করবে। এতে ব্যয় হবে ১২৩ কোটি ২ লাখ ৭৮ হাজার ২৬ টাকা।
সভায় টার্নকি ভিত্তিতে ৫টি ৩৩/১১ কেভি উপন্দ্রের ডিজাইন, সাপ্লাই, ইন্সস্টলেশন, টেস্টিং অ্যান্ড কমিশনিং প্রভৃতি সম্পূর্ণ যা যা প্রয়োজন এবং ভূমি উন্নয়নসহ কাজের ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি (ডব্লিউ-১ লট-২) । এক ধাপ দুই খাম পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ৮টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে। তার মধ্যে ৫টি প্রস্তাব বাণিজ্যিক ও কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সকল প্রক্রিয়া শেষে টিইসি থেকে সুপারিশকৃত সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান আইডিয়াল ইলেক্ট্রিকাল এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড ঢাকাম প্রকল্পটি বাস্তায়ন করবে। এতে ব্যয় হবে ১১৬ কোটি ৬৭ লাখ ২২ হাজার ৫৪৭ টাকা।
ঢাকা/হাসনাত/ইভা
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রস ত ব দরপত র
এছাড়াও পড়ুন:
গাছ কাটার প্রতিবাদে জাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভসহ বিভিন্ন কর্মসূচি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) ভবনের সামনের প্রায় ৪০টি গাছ কেটে ফেলায় বিক্ষোভ মিছিল ও সংবাদ সম্মেলন করেছে ‘জাহাঙ্গীরনগর বাঁচাও আন্দোলন’। আগামী দুইদিনের মধ্যে মাস্টারপ্ল্যানের দরপত্র আহ্বানসহ চার দফা দাবি জানিয়েছেন সংগঠনটি।
সোমবার (৩০ জুন) বিকেল ৫টায় কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) ভবনের সামনে গাছ কাটার স্থানে এ সংবাদ সম্মেলন করেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।
এর আগে, বিকেল ৪টার দিকে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে মিছিল শুরু করে। মিছিলটি রেজিট্রার ভবনের সামনে দিয়ে শহীদ মিনার হয়ে সিএসই ভবনের উল্টো দিকে এসে শেষ হয়।
আরো পড়ুন:
পাবিপ্রবিতে মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান
জাবিতে নারী শিক্ষার্থী হেনস্তা ও নিরাপত্তা কর্মকর্তা আহত নিয়ে যা জানা গেল
সোমবার ভোরের দিকে সিএসই ভবন নির্মাণের জন্য ৪০টিরও বেশি কাটা গাছের মধ্যে শাল, সেগুন, জারুলসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে চার দফা দাবি উত্থাপন করা হয়। দাবিগুলো হলো— সরকারের কারণ দর্শানোর নোটিশ উপেক্ষা করে কেন গাছ কাটা হলো তার জবাব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দিতে হবে; দুইদিনের মধ্যে মাস্টারপ্ল্যানের দরপত্র আহ্বান করতে হবে; পূর্ণাঙ্গ মাস্টারপ্ল্যান না হওয়া পর্যন্ত নতুন কোনো ভবনের কাজ শুরু করা যাবে না; অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ—প্রকৃতির যে ক্ষতিসাধন হয়েছে, তা পুনরুদ্ধারে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, আওয়ামী আমলের প্রশাসন কোনো ধরনের পরিকল্পনা ছাড়াই বিভিন্ন জায়গায় রাতের আঁধারে এবং ছুটির সময়ে গাছ কেটে ভবন নির্মাণ করে শপিংলিস্ট উন্নয়নের মাধ্যমে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে একটা কংক্রিটের জঞ্জালে পরিণত করার পায়ঁতারা চালায়। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে অধিষ্ঠিত হয় মাস্টারপ্ল্যানের আন্দোলনকারী শিক্ষক।
আমরা আশায় ছিলাম, এই প্রশাসন অতি জরুরি ভিত্তিতে মাস্টারপ্ল্যান করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষার উপর গুরুত্ব দিবে। কিন্তু সেদিকে তারা কোনো গুরুত্ব দেননি। পরবর্তীতে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নব্য প্রশাসন মাস্টারপ্ল্যানের উদ্যোগ না নিয়ে পূর্বের প্রশাসনের ফর্মূলা অনুসারে গাছ কেটে ভবন নির্মাণের পথে হাটতে থাকে। তারা গাণিতিক ও পদার্থ বিষয়ক অনুষদ ও চারুকলা ভবনের কাজ শুরু করার পায়ঁতারা নেয়।
তারা উল্লেখ করেন, জাহাঙ্গীরনগর বাঁচাও আন্দোলন গত ৫ মে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ূ পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ বন্ধ রেখে মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের উদ্যোগ নিতে চিঠি প্রেরণ করে। সেই চিঠির প্রেক্ষিতে ইউজিসি এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে মাস্টারপ্ল্যান ব্যতিত উন্নয়ন প্রকল্প কেনো চলছে, তার কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করে এবং রাজউক সমস্ত প্রকল্পের কাজ বন্ধ করে মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের নির্দেশ দেয়।
তারা আরো বলেন, কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার পর উপাচার্য আমাদের আশ্বাস দেওয়া হয়, গত ২০ মে এর মধ্যে তারা মাস্টারপ্ল্যানের দৃশ্যমান অগ্রগতি (ডিপিপি ও দরপত্র আহ্বান) প্রদর্শন করবে- এই মর্মে গত ৯ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কার্যালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। কিন্তু এই প্রতিশ্রুতিও প্রশাসন রক্ষা করনি।
ঠিক যেভাবে তারা জাকসু নিয়ে টালবাহানা করছে, তিনবার তারিখ পরিবর্তন করেছে, একই প্রক্রিয়ায় মাস্টারপ্ল্যানের টেন্ডার নিয়েও টালবাহানা চলছে। মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নে প্রশাসনের গড়িমসির কারণে আজ অব্দি আমরা কোনো ডিপিপি ও দরপত্র হাতে পাইনি।
এসময় তারা দাবি করেন, আজ সকালে সিএসই ভবনের সামনের এই জায়গায় প্রায় ৪০টা গাছ উপড়িয়ে ফেলা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে প্রশাসন, সরকারের কারণ দর্শানোর নোটিশকে উপেক্ষা করেছে। একইসঙ্গে তারা তাদের নিজস্ব প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। অথচ উপাচার্য এবং প্রকল্প পরিচালক এসে বললেন, তারা নাকি জানেনই না যে, এখানে গাছ কাটা হয়েছে।
তাদের এই দায় এড়ানো বক্তব্য আমরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি। বিশ্ববিদ্যালয় টেরিটোরিতে দিনের বেলায় অর্ধ শতাধিক গাছ কেটে ফেলার ঘটনা প্রশাসন জানে না, এই কথা আমরা বিশ্বাস করি না। আমরা মনে করি এটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সেই পুরনো চাল যা তারা অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়েও একইভাবে খেলে যাচ্ছে।
এসময় তারা অভিযোগ করেন, এই প্রশাসনও শেখ হাসিনার উন্নয়ন দর্শন থেকে সরে আসেনি। কারণ তারা আওয়ামী আমলের প্রকল্প পরিচালক নাসিরুদ্দিন, আওয়ামী আমলে ২০১৯ সালে মাস্টারপ্ল্যানের আন্দোলনকারীদের উপর হামলার সঙ্গে যুক্ত অধ্যাপক সোহেল আহমেদসহ আওয়ামী লীগের অন্যান্য দোসরদের নিয়ে এই প্রশাসন গড়ে তুলেছে।
গাছ কাটার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান বলেন, “গাছ কাটার বিষয়ে আমি সম্পূর্ণ অজ্ঞাত ছিলাম। খবর পাওয়া মাত্র আমি কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। এছাড়া বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করার জন্য অধ্যাপক শামসুল আলমের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছি।”
ঢাকা/আহসান/মেহেদী