টেস্ট সিরিজে হারের ক্ষত এখনো টাটকা বাংলাদেশের মনে। সেই আক্ষেপ সঙ্গী করেই বুধবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে নামছে মেহেদী হাসান মিরাজের দল। সিরিজ শুরুর আগে লঙ্কান শিবিরে বাড়তি সতর্কতা, বিশেষ করে মুস্তাফিজুর রহমানকে ঘিরে।

সিরিজের আগে সংবাদ সম্মেলনে শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক চারিথ আসালাঙ্কা বাংলাদেশ দলকে ‘চ্যালেঞ্জিং’ বলে স্বীকার করেছেন। মনে করিয়ে দিয়েছেন, দুই দলের সর্বশেষ ওয়ানডে সিরিজে জয়ী হয়েছিল বাংলাদেশ। সেই হারের বদলা নিতেও যে তারা মুখিয়ে, সেটাও জানান দিয়েছেন।

আসালাঙ্কা বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি শক্তিশালী দল। তারা সম্প্রতি ভালো ক্রিকেট খেলছে। আমরা বাংলাদেশে সর্বশেষ সিরিজ হেরেছিলাম। এবার ঘরের মাঠে এটি আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হতে যাচ্ছে।’

বাংলাদেশ এবার পূর্ণশক্তির দল নিয়েই মাঠে নামছে। দলে ফিরেছেন তাসকিন আহমেদ। তবে বিশেষভাবে নজর দেওয়া হচ্ছে মুস্তাফিজুর রহমানের দিকে। তার বিপক্ষে আলাদা পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন লঙ্কান অধিনায়ক। তিনি বলেন, ‘মুস্তাফিজ দুর্দান্ত একজন বোলার। অতীতে সে বাংলাদেশের হয়ে অসাধারণ পারফরম্যান্স করেছে। আমরা জানি, সে কতটা বিপজ্জনক হতে পারে। তার বিরুদ্ধে আমাদের স্পষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে।’

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মুস্তাফিজের রেকর্ডও বেশ চমকপ্রদ। ১৪ ম্যাচে ২৩ উইকেট নিয়ে তিনি বাংলাদেশের পক্ষে লঙ্কানদের বিপক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি। তালিকার শীর্ষে থাকা মাশরাফি বিন মর্তুজার (২৬ উইকেট) রেকর্ড ভাঙার সুযোগ রয়েছে তার সামনে।

এদিকে, সিরিজের প্রথম দুটি ম্যাচ হবে কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে। উইকেট নিয়ে ধোঁয়াশা থাকলেও আসালাঙ্কার ধারণা, এবার ব্যাটসম্যানদের জন্য সহায়ক হতে পারে পিচ। তিনি বলেন, ‘সাধারণভাবে প্রেমাদাসা স্পিন সহায়ক হলেও এবার উইকেট ব্যাটিংবান্ধব হতে পারে। যদিও আমি নিশ্চিত নই। কাল দেখা যাবে।’

এই সিরিজ দিয়েই বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের নেতৃত্বে অভিষেক হচ্ছে মেহেদী হাসান মিরাজের। অধিনায়ক হিসেবে তার সম্পর্কে কিছু না জানলেও ক্রিকেটার হিসেবে প্রশংসা করেছেন আসালাঙ্কা, ‘আমি অধিনায়ক মিরাজকে জানি না, তবে খেলোয়াড় মিরাজকে জানি। সে দুর্দান্ত অলরাউন্ডার, ভালো বোলার, ভালো ব্যাটার।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম স ত ফ জ র রহম ন আস ল ঙ ক উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

কোটিপতি হলেও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করেন তিনি

পর্যাপ্ত অর্থ সঞ্চয় করতে পারলেই আমাদের অনেকে কায়িক পরিশ্রম ছেড়ে দেন। আরাম-আয়েশে জীবন কাটান। কিন্তু সবাই তা করেন না। এমন একজন জাপানের কোইচি মাতসুবারা। ৫৬ বছর বয়সী এই জাপানি নাগরিকের বার্ষিক আয় প্রায় ৩ কোটি ইয়েন (প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা) হওয়া সত্ত্বেও তিনি এখনো নিয়মিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করেন।

মাতসুবারা সপ্তাহে তিন দিন, প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে কাজ করেন। তিনি সরকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। এ কাজের অংশ হিসেবে তাঁকে ছোটখাটো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করতে হয়।

এ কাজ থেকে মাতসুবারা মাসে ১ লাখ ইয়েন (প্রায় ৮২ হাজার ৬৪ টাকা) আয় করেন, যা টোকিওর গড় বেতনের তুলনায় অনেক কম। তারপরও তিনি এ কাজ করেন। কারণ, তিনি এটাকে শারীরিক সক্রিয়তা ও মানসিক প্রশান্তির উপায় হিসেবে দেখেন।

মাতসুবারা ছোটবেলা থেকেই সঞ্চয়ী ছিলেন। মাধ্যমিকের পর তিনি একটি কারখানায় মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন (প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা) বেতনে কাজ শুরু করেন। খরচ বাঁচিয়ে কয়েক বছরে প্রায় ৩০ লাখ ইয়েন (২৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা) সঞ্চয় করে তিনি প্রথম স্টুডিও ফ্ল্যাট কিনেছিলেন।

পরে বাড়ি কেনার ঋণ আগেভাগে পরিশোধ করে ধীরে ধীরে আরও ফ্ল্যাট কেনেন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেন মাতসুবারা। এখন টোকিও ও এর শহরতলিতে তাঁর সাতটি ফ্ল্যাট রয়েছে, যার সবই ভাড়া দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেছেন।

ধনবান হলেও মাতসুবারা সাদাসিধে জীবন যাপন করেন। এখনো তিনি সস্তা ফ্ল্যাটে থাকেন, নিজের খাবার নিজে বানান, নতুন জামাকাপড় কেনেন না, সাধারণ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন এবং প্রধানত সাইকেলে চলাচল করেন। তাঁর জীবনদর্শন—‘প্রতিদিন কিছু না কিছু করার আশা করি, সুস্থ থাকতে চাই এবং নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে চাই।’

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে মাতসুবারাকে ‘অদৃশ্য কোটিপতি’ বলে উল্লেখ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর গল্প ছড়িয়ে পড়েছে। জাপানে ধনীদের এমন সাধারণ জীবনধারা অস্বাভাবিক নয়। দেশটিতে সাদাসিধে জীবনযাপন অনেকের মধ্যে দেখা যায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ