অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ২০২৫–২৬ অর্থবছরের বাজেটে সীমিত আয়ের মানুষের জন্য কোনো সুসংবাদ দেননি। দুই বছর ধরে মূল্যস্ফীতি দাপট দেখালেও আয়করের সীমা না বাড়ানোয় তঁাদের কপালে ভাঁজ থেকেই গেছে। ফলে সাড়ে তিন লাখ টাকার বেশি যাঁদের বার্ষিক আয়, তাঁদের আয়কর দিতে হচ্ছে। কিন্তু অর্থবছরের পয়লা দিন প্রবীণ, অবসরভোগী ও সীমিত আয়ের মানুষের জন্য নতুন দুঃসংবাদ হলো সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমে যাওয়া।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ১ জুলাই থেকে আগামী ছয় মাসের জন্য সঞ্চয়পত্রে মুনাফার হার কমানো হয়েছে। ১ জুলাই থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে। নতুন হার অনুযায়ী, সঞ্চয়পত্রের সর্বোচ্চ সুদহার হবে ১১ দশমিক ৯৮ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন সুদহার হবে ৯ দশমিক ৭২ শতাংশ।

পৃথিবীর সব কল্যাণকামী রাষ্ট্রেই প্রবীণ, অসমর্থ ও অবসরভোগী মানুষের জন্য আর্থিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকে। সেটি কোথাও নগদ অর্থ বা কম দামে পণ্য কেনার সুযোগের মাধ্যমে। বাংলাদেশে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি এতটাই ভঙ্গুর যে খুব কম মানুষ এর থেকে সুবিধা পান। বিগত সরকারের স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির কারণে সেই নিরাপত্তা কর্মসূচির সুফল যাঁদের পাওয়ার কথা, তাঁরা পাননি। সে ক্ষেত্রে মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষের একাংশ সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের লভ্যাংশের ওপর নির্ভরশীল ছিলেন এবং এখনো আছেন। ১ জুলাই থেকে সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমানোয় তাঁরা বিপদে পড়বেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এর নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া ইতিমধ্যে দেখা গেছে।

তবে সরকার কম বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সুদহার তুলনামূলকভাবে বেশি দেওয়ায় অপেক্ষাকৃত সীমিত আয়ের মানুষ কিছুটা স্বস্তি পাবেন, যদিও তা আগের মতো নয়। কম বিনিয়োগে বেশি সুদের হার এবং বেশি বিনিয়োগে কম সুদের হার—সরকারের এই নীতি সঠিক বলে মনে করি। এ ক্ষেত্রে সীমা সাড়ে ৭ লাখ থেকে বাড়িয়ে ১০ লাখ করা যেতে পারে। কেননা সাড়ে ৭ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে একজন মানুষ মাসে যে লভ্যাংশ পাবেন, তা দিয়ে সংসার চালানো সম্ভব নয় কোনোভাবেই।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ম ত আয় র ম ন ষ র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচনের খরচের ব্যাপারে চিন্তার কিছু নেই: অর্থ উপদেষ্টা

চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট সংশোধনের কাজ আগামী মাসে (ডিসেম্বর) করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ডিসেম্বরে সংশোধন শেষে জানুয়ারিতে সংশোধিত বাজেট তৈরি রাখব পরের সরকারের জন্য।

আজ সোমবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে সালেহউদ্দিন আহমেদ এ কথা বলেন।

চলতি অর্থবছরের পুরো বাজেট সংশোধনের পাশাপাশি নির্বাচনের বাজেট নিয়েও কথা বলেন সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘মনে হচ্ছে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর ওরা (নির্বাচন কমিশন) আর নতুন করে কোনো খরচ চাইবে না। নিয়মিত ও জরুরি খরচ থাকতে পারে। তার ব্যবস্থা করা যাবে। তাদের কিছু তহবিল আছে, অর্থ মন্ত্রণালয় আছে। ফলে নির্বাচনের খরচের ব্যাপারে চিন্তা করার কিছু নেই।’

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন যে গণভোট এবং সংসদ নির্বাচন এক দিনে আয়োজন করা তাদের জন্য চ্যালেঞ্জ হবে। এ বিষয়ে সরকার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করেছে কি না, জানতে চাইলে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, চ্যালেঞ্জ হলেও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট এক দিনেই হওয়া উচিত। এটা নির্বাচন কমিশনকে গ্রহণ করতে হবে।

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এ বিষয়ে আরও বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা এক দিনে নির্বাচন করার কথা বলে দিয়েছেন। সরকার থেকে আমরাও এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কারণ, দুই দিনে কাজটি করা খুব সোজা কাজ নয়। রিটার্নিং কর্মকর্তা থেকে শুরু করে ব্যাংকের জুনিয়র অফিসার, স্কুল-কলেজের শিক্ষকেরা নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করেন। দুই দিনের জন্য তাঁদের নিয়ে আসা খুবই কঠিন। ফলে নির্বাচন এক দিনে করাই ভালো। বিশ্বের অনেক দেশেই এ রকম হয়।’

এক দিনে নির্বাচন ও গণভোট আয়োজনের বাজেট সম্পর্কে জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, তারা (নির্বাচন কমিশন) তো বলেছে যে নির্বাচন ও গণভোটের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যয় বাড়বে। এটি খোলাখুলি বলেছে। তারা এখন তাদের বাজেট সংশোধন করছে।

চলতি অর্থবছরের বাজেটে নির্বাচনের জন্য যে তিন হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে, তা থেকে বাড়বে কি না, জানতে চাইলে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমি বলতে পারব না। গণভোটের ব্যাপারটা তো সামনে এল। এটা তো বাজেট দেওয়ার সময় প্রাক্কলনে ছিল না।’

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাস ও হাইকমিশনগুলোতে ভোটারদের তালিকাভুক্তি শুরু হবে। তখন দূতাবাসের খরচ যুক্ত হতে পারে। সেখানকার কর্মকর্তারা তখন অতিরিক্ত সময় (ওভার টাইম) কাজ করবেন।

এদিকে জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পাঠিয়ে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন বলে মন্তব্য করেছেন সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, এ সমস্যার সমাধান প্রশাসন দিয়ে হয় না। এ জন্য দরকার রাজনৈতিক সরকার। বিশ্বের উন্নত দেশেও জিনিসপত্রের দাম বাড়ে, যার পেছনে যৌক্তিক কারণ থাকে। কিন্তু বাংলাদেশে দেখা যায় অনেক চাল থাকার পরও হঠাৎ এক জায়গায় মিলেমিশে দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আয়কর অফিসের নোটিশ পেলে কী করবেন
  • দেশে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন চান হালকা প্রকৌশল উদ্যোক্তারা
  • প্রবাসী ভোটারদের জন্য নিবন্ধনের সময় বাড়ানোর অনুরোধ বিএনপির
  • বেতন-ভাতায় সরকারের খরচ বেড়েছে, উন্নয়নে কমেছে
  • এনআইডি সংশোধন ও ভোটার এলাকা স্থানান্তর সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত
  • কক্সবাজারে ৪০ হাজার ইয়াবা উদ্ধার, যুবক গ্রেপ্তার 
  • সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের স্ত্রীর আয়কর নথি জব্দের আদেশ
  • নির্বাচনের খরচের ব্যাপারে চিন্তার কিছু নেই: অর্থ উপদেষ্টা
  • রিটার্ন দাখিলের সময় এক মাস বাড়ল
  • আয়কর রিটার্ন জমার সময় বাড়ল এক মাস