বিদ্যালয়ের সভাপতির পদ হারালেন জাল সনদধারী, মাদক মামলার সেই আসামি
Published: 6th, August 2025 GMT
পদ হারালেন জাল সনদ দিয়ে চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর উত্তর গোমদণ্ডী উচ্চবিদ্যালয়ের সভাপতি হওয়া মোহাম্মদ আলী। আজ বুধবার বিকেলে তাঁর সভাপতির পদ বাতিল করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম বোর্ড চেয়ারম্যান ইলিয়াছ উদ্দিন আহাম্মদ। এর আগে সনদ যাচাইয়ের দুই সদস্যের যাচাই কমিটি করে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড।
সনদ জাল করার পাশাপাশি মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে মাদক পাচারে জড়িত থাকারও অভিযোগ ওঠে। আদালত সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ২৮ অক্টোবর বোয়ালখালীতে এক হাজার লিটার চোলাই মদ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর নামে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়। তদন্ত শেষে মোহাম্মদ আলীসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা হয়। এ মামলায় ২০২২ সালের ২২ জুলাই মোহাম্মদ আলীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তিনি জামিনে বের হয়ে আসেন। বর্তমানে মাদক মামলাটি বিচারাধীন।
আরও পড়ুনমাদক মামলার আসামি, দিয়েছেন ‘জাল’ সনদ, তবু তিনি স্কুল কমিটির সভাপতি৩১ জুলাই ২০২৫এ নিয়ে গত ৩১ জুলাই প্রথম আলোর অনলাইনে ‘মাদক মামলার আসামি, দিয়েছেন “জাল” সনদ, তবু তিনি স্কুল কমিটির সভাপতি’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। মাদক মামলার আসামিকে বিদ্যালয় কমিটির সভাপতি নিয়োগ দেওয়ার সমালোচনা করেন শিক্ষাবিদ ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, সভাপতি নিয়োগের সময় মোহাম্মদ আলী তাঁর স্নাতকের সনদে উল্লেখ করেছেন, ২০০৩ সালে তিনি সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির ‘ইসলামিক হিস্ট্রি অ্যান্ড কালচার’ বিভাগ থেকে স্নাতক শেষ করেছেন। সনদ জালের অভিযোগের পর সেটি সাউদার্ন ইউনিভার্সিটিতে পাঠায় বোর্ড। সাউদার্ন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, সনদটি জাল। এই নামে কোনো বিভাগ তাদের নেই। যেটি আছে, সেটির নাম ইসলামিক স্টাডিজ। ওই বিভাগ চালু হয়েছে ২০১০ সালে।
আরও পড়ুনজাল সনদে মাদক মামলার আসামি স্কুল সভাপতি, শিক্ষা বোর্ডের তদন্ত কমিটি গঠন০৪ আগস্ট ২০২৫মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড চট্টগ্রামের চেয়ারম্যান ইলিয়াছ উদ্দিন আহাম্মদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা দুই সদস্যের যাচাই কমিটি করেছিলাম। কমিটি প্রতিবেদন দিয়েছে। সেখানে সনদটি জাল বলে প্রতিবেদন দিয়েছে সাউদার্ন। নিয়ম অনুযায়ী উত্তর গোমদণ্ডী উচ্চ বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটির সভাপতি পদ থেকে মোহাম্মদ আলীকে বাদ দেওয়া হয়েছে।’
গত বছরের ১৮ নভেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপসচিব সাইয়েদ এ জেড মোরশেদ আলীর সই করা এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, অ্যাডহক কমিটির সভাপতির শিক্ষাগত যোগ্যতা কলেজের ক্ষেত্রে স্নাতকোত্তর ও স্কুলের ক্ষেত্রে স্নাতক পাস। জাল সনদ ব্যবহার করে মোহাম্মদ আলী সভাপতি হন এ বছরের ২৪ মার্চ। ছয় মাসের জন্য চার সদস্যের এ কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ ল সনদ
এছাড়াও পড়ুন:
জাতীয় কমিশনের হাতে সুজনের জাতীয় সনদ
দীর্ঘ সংলাপ, জরিপ ও জনমত যাচাই শেষে প্রণীত জাতীয় সনদের একটি চূড়ান্ত খসড়া হস্তান্তর করেছে নাগরিক সংগঠন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)।
সোমবার (৪ আগস্ট) জাতীয় সংসদ ভবনে অবস্থিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যালয়ে এই সনদ হস্তান্তর করা হয়েছে।
কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের হাতে সনদটি তুলে দেন সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার।
এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন, কমিশনের সদস্য বিশিষ্ট উন্নয়ন চিন্তাবিদ ড. বদিউল আলম মজুমদার এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
অধ্যাপক রীয়াজ বলেন, “জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এমন একটি সনদ প্রণয়নের উদ্যোগ অত্যন্ত সময়োপযোগী। এটি আগামী জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ এর নীতিগত কাঠামো তৈরিতে সহায়ক হবে।”
সুজন জানায়, ২০১৩ সাল থেকেই তারা একটি মৌলিক জাতীয় সনদ তৈরির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ন্যূনতম ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা এবং জনমত গঠনের লক্ষ্যে তখন থেকেই নানা সচেতনতামূলক কর্মসূচি চালিয়ে আসছে সংগঠনটি।
এরই ধারাবাহিকতায়, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে আটটি বিভাগীয় শহরে নাগরিক সমাজ ও রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে কর্মশালা এবং জাতীয় পর্যায়ে একটি বড় পরিসরের নাগরিক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
তারা জানায়, সুজন কর্তৃক প্রণীত সনদটি শুধুই সংস্থা-নির্ভর কোনো দলিল নয়। সারাদেশে ১৫টি সংলাপ এবং ৪০টি প্রশ্ন ভিত্তিক একটি জনমত জরিপে ১ হাজার ৩৭৩ জন নাগরিক অংশগ্রহণ করেন।
জরিপে পাওয়া মতামতের ভিত্তিতে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে একটি সংস্কার কমিশন গঠনের সুপারিশসহ বেশ কয়েকটি প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
সুজন নেতারা জানিয়েছেন, এই জাতীয় সনদ এখন কেবল ঐকমত্য কমিশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এটি অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে পেশ করা হবে, যাতে রাজনৈতিক সংস্কার এবং শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবেশ নিশ্চিত করা যায়।
সনদ হস্তান্তরকালে উপস্থিত ছিলেন, সুজন ঢাকা মহানগর কমিটির সম্পাদক এবং বিভাগীয় সমন্বয় কমিটির সদস্য সচিব জুবাইরুল হক নাহিদ, ঢাকা জেলা কমিটির সম্পাদক মাহবুল আলম, কেন্দ্রীয় সহযোগী সমন্বয়কারী জিল্লুর রহমান, নারী ও শিশু বিষয়ক সম্পাদক মুশতারী বেগম প্রমুখ।
ঢাকা/এএএম/মেহেদী