এক নীতির বাংলাদেশ হবে, বিদেশি কোনো প্রভু থাকবে না: সালাহউদ্দিন আহমদ
Published: 6th, August 2025 GMT
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, এই বাংলাদেশ হবে এক নীতির বাংলাদেশ। সবার আগে বাংলাদেশ। বিদেশি কোনো প্রভু থাকবে না, বন্ধু থাকবে। এই বাংলাদেশ তাবেদারমুক্ত থাকবে।
আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হওয়া বিজয় র্যালি-পূর্ব সমাবেশে এ কথা বলেন সালাহউদ্দিন আহমদ। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তিতে রাজধানী ঢাকায় এই ‘বিজয় র্যালি’ করেছে বিএনপি। এতে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
স্বাধীন সার্বভৌম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে এই বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করার আশাবাদ ব্যক্ত করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘এই ঐক্য হবে ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য। ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য হবে আমাদের শক্তি। এই শক্তিকে সমুন্নত রেখে এই জাতিকে শীর্ষ উচ্চতায় নিয়ে যাব। সমৃদ্ধির শিখরে নিয়ে যাব। আমাদের শক্তি হবে আমাদের ঐক্য।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, গণতান্ত্রিক শক্তির মধ্যে তাঁরা কোনো বিভেদ চান না। যারা বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করছে, তারা বাংলাদেশের পক্ষের শক্তি না। যারা নির্বাচনের বিপক্ষে কথা বলছে, তারা বাংলাদেশের পক্ষের শক্তি না। যারা ঐক্য ভঙ্গের চেষ্টা করছে, তারা বাংলাদেশের পক্ষের শক্তি না। বাংলাদেশের পক্ষের শক্তিকে সঙ্গে নিয়ে, গণতন্ত্রের সব পক্ষকে সঙ্গে নিয়ে সংস্কারের সঙ্গে সবাই মিলে এগিয়ে যেতে হবে। এই রাষ্ট্রকে পৃথিবীর বুকে সমৃদ্ধি ও শক্তিশালী রাষ্ট্রে পরিণত করা হবে।
শোভাযাত্রা-পূর্ব সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, যখনই দেশে গণতন্ত্র হত্যার চেষ্টা হয়েছে, তখনই জনগণ তা প্রতিহত করেছে। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র হত্যার পক্ষে ছিল বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই জ্যেষ্ঠ সদস্য বলেন, ‘অতি দ্রুত আগামী জাতীয় নির্বাচনের দিন তারিখ ঘোষণা করবে বলে আশা করছি।’ তবে নির্বাচন ঠেকাতে বিরোধী শক্তি ষড়যন্ত্র করছে বলেও মনে করেন তিনি। নির্বাচন নিয়ে যেন কেউ ষড়যন্ত্র না করতে পারে, সে জন্য সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।
জুলাই ঘোষণাপত্রে জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার নাম না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন মির্জা আব্বাস। সমাবেশে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার নাম না থাকার বিষয়টি তাঁকে পীড়া দিয়েছে। এরপরও জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করার কারণে স্বাগত জানান তিনি।
সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গত বছরের জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে সেনাবাহিনীর সহযোগিতার জন্য তাঁদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, বিএনপি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করেছে, মাথা নত করেনি।
র্যালি-পূর্ব সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সঞ্চালনায় ছিলেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। এতে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক।
আরও পড়ুননির্বাচন নিয়ে দোদুল্যমানতা কেটে গেছে: সালাহউদ্দিন আহমদ১৯ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ল হউদ দ ন আহমদ গণতন ত র ব এনপ র
এছাড়াও পড়ুন:
চকরিয়ায় জামায়াতের গণমিছিল, বিএনপির ঘাঁটিতে ‘শক্তি প্রদর্শন’
কক্সবাজারের চকরিয়া পৌর শহরে স্মরণকালের বড় গণমিছিল করেছে জামায়াতে ইসলামী। আজ সোমবার বিকেলে অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচি ‘জুলাই গণ-আন্দোলনের’ এক বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত হলেও এটিকে বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত কক্সবাজার-১ (চকরিয়া–পেকুয়া) আসনে জামায়াতের ‘শক্তি প্রদর্শন’ হিসেবে দেখছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
মিছিলের অগ্রভাগে ছিলেন কক্সবাজার-১ আসনে জামায়াতের প্রার্থী ও কক্সবাজার শহর জামায়াতের আমির আবদুল্লাহ আল ফারুক। তিনি হাত নেড়ে উপস্থিত জনতার উদ্দেশে অভিবাদন জানান।
এ আসনে বিএনপি থেকে নির্বাচন করে আসছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি দুবার এবং তাঁর স্ত্রী হাসিনা আহমেদ একবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
আজ বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে চকরিয়া বাস টার্মিনাল থেকে মিছিল শুরু হয়ে চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়কের চিরিঙ্গা সোসাইটি এলাকা প্রদক্ষিণ করে জনতা শপিং সেন্টার মাঠে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়। প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তায় জনস্রোতের কারণে মহাসড়কে যানজট তৈরি হয়। স্থানীয় জামায়াত নেতারা দাবি করেন, এতে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ অংশ নেন।
সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন চকরিয়া উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আবুল বশর। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কক্সবাজার জেলা জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ মাওলানা নুর আহমদ আনোয়ারী।
সমাবেশে নুর আহমদ আনোয়ারী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশে একশ্রেণির মানুষ চাঁদাবাজি শুরু করেছে। এর দায় কোনো নির্দিষ্ট দলের ওপর চাপাতে চাই না। তবে জনগণ আগামী নির্বাচনে এসব চাঁদাবাজদের প্রত্যাখ্যান করবে।’
নুর আহমদ বলেন, দেশে এখন একটি অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্বে রয়েছে, অথচ প্রশাসন বিভিন্ন দলকে বৈষম্যমূলক সুবিধা দিচ্ছে। প্রশাসনকে নিরপেক্ষ থাকার আহ্বান জানান তিনি।
জেলা আমির আনোয়ারী বলেন, ‘আমরা কারও রক্তচক্ষুকে ভয় করি না। বৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।’ এ সময় তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে আবদুল্লাহ আল ফারুককে কক্সবাজার-১ আসনে জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন। জনতা হাততালি দিয়ে ফারুকের প্রতি সমর্থন জানান।
আবদুল্লাহ আল ফারুক বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনের মূল দাবি ছিল ন্যায়ভিত্তিক ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গঠন। তবে তা আজও বাস্তবায়ন হয়নি।’ তিনি আরও বলেন, ইসলামি আদর্শ ছাড়া দুর্নীতিমুক্ত ও ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র সম্ভব নয়। আওয়ামী সরকার বিদায়ের পর দেশে এখনো ফ্যাসিবাদী আচরণ, দুর্নীতি ও বৈষম্য চলমান।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জেলা জামায়াতের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য আক্তার আহমদ, জেলা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মীর মোহাম্মদ আবু তালহা, চকরিয়া পৌর জামায়াতের আমির আরিফুল কবির, মাতামুহুরি সাংগঠনিক উপজেলার আমির মাওলানা ফরিদুল আলম ও চকরিয়া উন্নয়ন ফোরামের চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান চৌধুরী।