ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে সহজ জয় পেয়েছে পাকিস্তান। তাওরাবোতে শুক্রবার পাকিস্তান ৫ উইকেটে হারিয়েছে তাদেরকে।
আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২৮০ রানে গুটিয়ে যায়। জবাব দিতে নেমে ৭ বল হাতে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছায় পাকিস্তান।
সফরকারীদের জয়ের নায়ক দুই তরুণ হাসান নওয়াজ ও হুসাইন তালাত। অভিষিক্ত হাসান নওয়াজ ৫৪ বলে ৬৩ রান করে ম্যাচ সেরার পুরস্কার পান। হুসাইন তালাত খেলেছেন নিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে। তবে ২২ গজে একটুও নিজের অনভিজ্ঞতা বুঝতে দেননি। ৭০ বলে অবিচ্ছিন্ন ১০৪ রানের জুটি গড়ার পথে হুসাইন ৩৭ বলে ৪১ রান করেন। তাদের ব্যাটেই পাকিস্তানের জয় নিশ্চিত হয়।
৩৮তম ওভারে মোহাম্মদ রিজওয়ান দলীয় ১৮০ রানে আউট হওয়ার পর জুটি বাঁধেন হাসান-হুসেইন। নিজেদের ওপর চাপ না নিয়ে প্রতি আক্রমণে গিয়ে রান তোলেন তারা। আগ্রাসী ব্যাটসম্যান হাসান ৫ চার ও ৩ ছক্কা হাঁকান। হুসাইনের ব্যাট থেকে আসে ৪ চার ও ১ ছক্কা। দুজনের দারুণ দৃঢ়তায় শেষ হাসি হাসে পাকিস্তান।
এদিকে রান পেয়েছেন বাবর আজম ও রিজওয়ান। বাবর ৬৪ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৪৭ রান করেন। রিজওয়ান ৬৯ বলে ৫৩ রান করেন ৪ বাউন্ডারিতে। এছাড়া আব্দুল্লাহ শফিক ২৯, সালমান আগা ২৩ রান করেন। রান পাননি সায়েম আইয়ুব (৫)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের মধ্যে সামার জোসেফ ৬৫ রানে নেন ২ উইকেট। ১টি করে উইকেট পেয়েছেন জায়ডেন সিলস, গুদাকেশ মোতি ও রস্টন চেজ।
এর আগে ব্যাটিংয়ে তাদের হাল ধরেন ইভিন লুইস, শেই হোপ ও চেজ। তিনজনই পেয়েছেন ফিফটির স্বাদ। লুইস ৬২ বলে ৬০ রান করে ছিলেন দলের সেরা ব্যাটসম্যান। অধিনায়ক হোপ ৭৭ বলে করেন ৫৫ রান। চেজের ব্যাট থেকে ৫৪ বলে আসে ৫৩ রান। শেষ দিকে গুদাকেশ মোতি ১৮ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৩১ রান করলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২৮০ রানের পুঁজি পায়।
ফেরার ম্যাচে উজ্জ্বল ছিলেন শাহীন শাহ আফ্রিদি। ৫১ রানে ৪ উইকেট নেন বাঁহাতি পেসার। ৩ উইকেট পেয়েছেন আরেক পেসার নাসিম শাহ।
আগামীকাল একই মাঠে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়নাডে অনুষ্ঠিত হবে।
ঢাকা/ইয়াসিন
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ন কর ন হ স ইন উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
এক নারীকে বিয়ে, তুমুল সমালোচনার জবাবে যা বললেন দুই ভাই
ভারতের হিমাচল প্রদেশের শিলাই গ্রামে হাট্টি উপজাতির দুই ভাই এক নারীকে বিয়ে করেছেন। এরপরেই তাদের বিয়ের খবর দেশি-বিদেশি মিডিয়ার সংবাদ শিরোনামে পরিণত হয়। চলছে আলোচনা ও সমালোচনা। বিশেষ করে আলোচনায় এসেছে হাটি সম্প্রদায়।
শতাব্দী প্রাচীন বহুপতিত্ব বিবাহ রীতিতে বিয়ে করার পর দুই ভাই জানিয়েছেন তারা এই বিয়ে করে সুখে আছেন। ‘হাটি’ সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য রক্ষা করতে পেরে তারা যে গর্বিত হয়েছেন, তাও জানিয়েছেন।
কুনহাট গ্রামের বাসিন্দা সুনীতা চৌহান জানিয়েছেন, হাটি সম্প্রদায়ের বহুবিবাহ প্রথার ঐতিহ্য সম্পর্কে তিনি সচেতন ছিলেন। এবং কোনো ধরণের চাপ ছাড়াই তিনি দুই ভাইকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সুনীতা এমন বিবাহ প্রথাকে সম্মান করেন বলেও জানিয়েছেন।
আরো পড়ুন:
জম্মু-কাশ্মীরে গোলাগুলি, ২ ভারতীয় সেনা নিহত
তরুণীর সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে বৃদ্ধ হারালেন ১২ কোটি টাকা
তিনি আরও যোগ করেছেন যে তিনি তাদের তৈরি বন্ধনকে সম্মান করেন।
জানা গেছে, প্রদীপ নেগি সরকারি কর্মচারী এবং কপিল নেগি বিদেশে হসপিটালিটি সেক্টরে কর্মরত আছেন।
ফেসবুকে প্রকাশিত এক ভিডিওতে প্রদীপ নেগি বলেন, ‘‘এই বিবাহ প্রথা বহু প্রজন্ম ধরে চলে আসছে। হাটি সম্প্রদায়ের মধ্যে এই প্রথা চলতেই থাকবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু মানুষ গালি দিচ্ছে, তাতে আমার কিছু আসে যায় না। এই প্রথা শুধু আমাদের এলাকায় নয়, উত্তরাখণ্ডের জৌনসার-বাওয়ার অঞ্চলেও প্রচলিত। ওখানে একই নারীর সঙ্গে দুই বর মালা বদল করে বিবাহ সম্পন্ন করেন।’’
প্রদীপের ভাই কপিল নেগি জানান, ‘‘যে তাদের এই বিবাহ সম্পূর্ণ স্বেচ্ছায় হয়েছে। এতেপরিবারের পক্ষ থেকেও পূর্ণ সমর্থন ছিল।আমরা আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির পক্ষে কথা বলে যাবো। যারা আমাদের রীতি জানেন না, তারাও বিভিন্ন মতামত দিচ্ছেন। কিন্তু আমরা, আমাদের পরিবার ও সমাজ এতে সন্তুষ্ট।’’
প্রদীপ আরও বলেন, ‘‘আমাদের খ্যাতির কোনো লোভ নেই।সংবাদ শিরোনামে আসার জন্য আমরা বিয়ে করিনি। এই বিয়ের একমাত্র উদ্দেশ্য হলো একসঙ্গে থাকা এবং ভালোবাসা বজায় রাখা। মানুষকে বলছি, আমাদের সমালোচনা করবেন না—আমরা আমাদের জীবন নিয়ে সন্তুষ্ট।’’
এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শিল্লাই গ্রামের ট্রান্স-গিরি অঞ্চলে ১২ জুলাই শুরু হয়। তিন দিনব্যাপী চলে অনুষ্ঠান। নাচ, স্থানীয় লোকগীতি এবং গ্রামীণ উৎসবের রঙিন আয়োজনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।
এই বিয়ের উদ্দেশ্য হলো পূর্বপুরুষদের জমি খণ্ডিত হতে না দেওয়া। জমি খণ্ডিত হয়ে যাওয়া পাহাড়ি কৃষি সম্প্রদায়ের জন্য একটি বড় সমস্যা। এ ধরনের বিবাহে সাধারণত বড় ভাইকেই সন্তানদের আইনি পিতা হিসেবে গণ্য করা হয়। এবং জমির মালিকানাও একই মায়ের সন্তানদের কাছে থেকে যায়।
উল্লেখ্য, হিমাচল প্রদেশে, ‘ওয়াজিব-উল-আরজ’ নামে ঔপনিবেশিক যুগের এক রাজস্ব নথিতে ‘জোড়িদারা’ ব্যবস্থা লিপিবদ্ধ রয়েছে। ওই দলিলে গ্রামের সামাজিক ও অর্থনৈতিক রীতিনীতি লিপিবদ্ধ করা হয়েছে এবং বহুপতিত্ব বিবাহ প্রথাকে হাটি সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতিও দেওয়া হয়েছে।
সূত্র: এনডিটিভি ও বিবিসি
ঢাকা/লিপি