১৫ বছর পর ভোটে নওগাঁ জেলা বিএনপির নতুন নেতৃত্ব, সভাপতি আবু বক্কর, সম্পাদক মামুনুর
Published: 12th, August 2025 GMT
১৫ বছর পর নওগাঁ জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন হয়েছে। এতে কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে সভাপতি পদে আবু বক্কর সিদ্দিক ও সাধারণ সম্পাদক পদে মামুনুর রহমান নির্বাচিত হয়েছেন। গতকাল সোমবার গভীর রাতে এ ফলাফল ঘোষণা করেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও রাজশাহী বিভাগীয় বিএনপির সমন্বয়কারী আবদুস সালাম।
এর আগে গতকাল বিকেলে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বক্তব্য শেষে ভোট গ্রহণের উদ্বোধন করেন। নওগাঁ কনভেনশন সেন্টারে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বিকেল সাড়ে পাঁচটা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলে। এতে ১ হাজার ৩৬২ জন ভোটার অংশ নেন।
ফলাফল অনুযায়ী জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আবু বক্কর সিদ্দিক ৬৪৭ ভোট পেয়ে সভাপতি নির্বাচিত হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসমবায়বিষয়ক সম্পাদক নজমুল হক পেয়েছেন ৪০০ ভোট। সভাপতি পদে মোট আটজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সাধারণ সম্পাদক পদে ৬৯২ ভোট পেয়ে জেলা বিএনপির সদ্য বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মামুনুর রহমান নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জেলা বিএনপির সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সদস্যসচিব বায়েজিদ হোসেন পেয়েছেন ৬৭১ ভোট। সাধারণ সম্পাদক পদে চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
এ ছাড়া সাংগঠনিক সম্পাদকের তিনটি পদের জন্য নয়জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে নূর-ই আলম ৮৪১ ভোট, শফিউল আজম ৬৩০ ভোট ও খায়রুল ইসলাম ৫৭৩ ভোট পেয়ে সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন।
এ সম্মেলনে নওগাঁ বিএনপির ১১টি উপজেলা কমিটি ও ৩টি পৌর কমিটির ১ হাজার ৪১৪ জন কাউন্সিলরের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হন নতুন নেতৃত্ব।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ ২০১০ সালে কাউন্সিলের মাধ্যমে জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে সাবেক সংসদ সদস্য শামসুজ্জোহা খান ও জাহিদুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করে জেলা কমিটি গঠিত হয়। ২০১৫ সালে এ কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার পর আর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়নি। এত দিন জেলা বিএনপির কার্যক্রম আহ্বায়ক কমিটির মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছিল।
গতকাল বেলা একটার দিকে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম। এতে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল মাহমুদ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (রাজশাহী) সৈয়দ শাহীন শওকত, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুর রহমান খান, ওবায়দুর রহমান প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন ব এনপ র ব এনপ র স র রহম ন কম ট র
এছাড়াও পড়ুন:
উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ থাকে, তাহলে নিয়ে আসেন না কেন: দুদক চেয়ারম্যান
দুর্নীতির বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন। তিনি বলেন, ‘উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ থাকে, সেই অভিযোগ যদি সুনির্দিষ্ট হয়, তাহলে আপনারা (সাংবাদিক) নিয়ে আসেন না কেন।’
আজ মঙ্গলবার সকালে রংপুরে দুদকের সমন্বিত জেলা ও বিভাগীয় কার্যালয়ের ভবন নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ আবদুল মোমেন এসব কথা বলেন।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের যে বিধিবদ্ধ আইন, তাতেও ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। একটা ব্যাপার আমাদের নিশ্চিত করতে হবে, আমরা যে অভিযোগ করব, তা যেন সুনির্দিষ্ট হয়। আমরা যদি বলে থাকি, তিনি কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন, কোথা থেকে করেছেন, কীভাবে করেছেন, এই অংশগুলো যদি প্রমাণ করতে না পারি, তাহলে শেষ পর্যন্ত সেই অভিযোগ টিকবে না। এমনকি উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ থাকে, সেই অভিযোগ যদি সুনির্দিষ্ট হয়, তাহলে আপনারা (সাংবাদিক) নিয়ে আসেন না কেন।’
সম্প্রতি রাজধানীতে এক সেমিনারে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এ বি এম আবদুস সাত্তার অভিযোগ করেন, অন্তর্বর্তী সরকারের আটজন উপদেষ্টার ‘সীমাহীন দুর্নীতি’র প্রমাণ নিজের কাছে রয়েছে। এই উপদেষ্টাদের সঙ্গে যোগাযোগ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ হয় না, বদলিও হয় না। তবে তিনি উপদেষ্টাদের নাম বলেননি।
তবে এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এক বিবৃতিতে সরকার তাঁর (সাবেক সচিব) কাছে সব প্রমাণ যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে আহ্বান জানিয়েছে।
এ বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেন, ‘বিষয়টি পত্রিকায় এসেছে। সেটি আমাদের চোখে পড়েছে। এই সরকার সম্পর্কে ধারণা পাওয়া দরকার, এটা রাজনৈতিক সরকার নয়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই সরকারের নেতৃত্বে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি একেবারেই দুর্নীতির বিপক্ষে একজন মানুষ। এটা যদি তাঁর উপদেষ্টা পরিষদের কেউ হন, সে ক্ষেত্রেও তিনি বিন্দুমাত্র ছাড় দিতে রাজি নন।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুদকের মামলার বিষয়ে প্রশ্ন করেন একজন সাংবাদিক। এ সম্পর্কে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আমাদের এখানে কয়েকটি মামলা চলমান। আরও কয়েকটি বিষয় তদন্তাধীন। তদন্ত করে শেষ পর্যন্ত যদি প্রমাণিত হয়, আমরা মামলা-মোকদ্দমায় চলে যাব।’
সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোতে দুদকের অভিযান প্রসঙ্গে মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অভিযান করছি। বিশেষ করে সেবা প্রদানকারী যেসব প্রতিষ্ঠানে সেবা প্রদানকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকে সেবা গ্রহিতাদের। আমরা অভিযান করছি, যাতে এই অভিযোগগুলো না হয়। ‘
পরে দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে দুর্নীতি প্রতিরোধ ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সরকারি কর্মকর্তাদের ও কর্মচারীদের ভূমিকা শীর্ষক মতবিনিময় সভায় যোগ দেন।
রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার শহিদুল হকের সভাপতিত্বে সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল। উপস্থিত আছেন দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন, পুলিশের রংপুরের রেঞ্জের ডিআইজি আমিনুল ইসলাম, পুলিশ কমিশনার মজিদ আলী, পুলিশ সুপার আবু সাইম প্রমুখ।