সাজেকে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্রী রুবিনার গাইবান্ধার বাড়িতে মাতম
Published: 18th, September 2025 GMT
‘মেয়েটাকে নিয়ে আমাদের অনেক স্বপ্ন ছিল। সে লেখাপড়া শেষ করে চাকরি করবে, মানুষের মতো মানুষ হবে। কিন্তু সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল। বেড়াতে গিয়ে মেয়েটা চলে গেল। আমরা এখন কাকে নিয়ে বাচব?’
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাড়ির আঙিনায় বসে কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন রাঙামাটির সাজেকে চান্দের গাড়ি দুর্ঘটনায় নিহত খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী মোছা.
গাইবান্ধা জেলা শহর থেকে প্রায় ২৮ কিলোমিটার দূরে পলাশবাড়ী উপজেলার বরিশাল ইউনিয়নে দুবলাগাড়ি গ্রাম। রুবিনার মৃত্যুতে গ্রামজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। রুবিনার ছোট বোন সিদরাতুল মুনতাহা আহাজারি করছিলেন। পাশে অশ্রুসিক্ত আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীরা। রুবিনার বাবা আবদুর রহমান দাফনের কাজে ব্যস্ত থাকায় তাঁর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে খাগড়াছড়ি থেকে রুবিনার মরদেহ বহনকারী হেলিকপ্টারটি গাইবান্ধায় পৌঁছায়। বিকেল ৫টা ২৫ মিনিটে হেলিকপ্টারটি গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার হাঁসবাড়ি দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয় মাঠে অবতরণ করে। সেখানে রুবিনার মরদেহ দেখতে মানুষ ভিড় জমায়। পরে হেলিকপ্টার থেকে মরদেহ নামিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁর গ্রামের বাড়ি পলাশবাড়ী উপজেলার বরিশাল ইউনিয়নের দুবলাগাড়ি গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। বাদ এশা ওই গ্রামে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়।
আরও পড়ুনসাজেকে গাড়ি খাদে পড়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী নিহত, আহত ১১১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গকসু নির্বাচন: যত্রতত্র প্রচারে বিরক্ত শিক্ষার্থীরা
গণ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (গকসু) নির্বাচন ঘিরে দীর্ঘ ৭ বছরের উচ্ছ্বাসে ভাটা এনেছে যত্রতত্র প্রচার। সাধারণ নিয়মের পরোয়া না করেই প্রচার চালাচ্ছেন প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা।
জান যায়, লাইব্রেরিতে জোরে কথা বলা নিষিদ্ধ থাকলেও সেখানে প্রচার চালিয়েছেন এক ভিপি পদপ্রার্থী। আরেক ভিপি পদপ্রার্থী আইন বিভাগে ক্লাস চলা অবস্থায় গিয়ে নির্বাচনী প্রচার করেন।
আরো পড়ুন:
চাকসু নিয়ে স্বরাষ্ট্র ও শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে চবি প্রশাসনের মতবিনিময়
চাকসু নির্বাচন: ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের প্যানেল ঘোষণা
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে এসব ভিডিও। এতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, ক্লাসে বসে পড়াশোনা করব, অথচ হঠাৎ প্রার্থী ঢুকে প্রচারণা শুরু করবেন—এটা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।
নিয়মিত লাইব্রেরি ব্যবহারকারী কিছু শিক্ষার্থী জানান, লাইব্রেরিতে পড়ার সময় প্রার্থীসহ ৬-৭ জন এসে প্রচার চালান এবং ডেকে লিফলেট বিতরণ করেন, যা পড়া-শোনার বিঘ্ন ঘটায়। পড়াশোনার জায়গাতেই যদি প্রচার হয়, তাহলে আমরা কোথায় পড়ব?
এ বিষয়ে সহকারী লাইব্রেরিয়ান জ্যোতি বলেন, “লাইব্রেরিতে প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। অভিযোগ এসেছে কিছু প্রার্থী-সমর্থক সাধারণ শিক্ষার্থীর মত এসে প্রচার চালিয়েছেন। ফলে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে নজরদারি বাড়িয়ে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করা হয়েছে।”
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক ভিডিওতে দেখা যায়, আইন বিভাগে ক্লাস চলাকালে শিক্ষকের উপস্থিতিতে প্রচারণা চালাচ্ছেন এক ভিপি প্রার্থী।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক মো. লিমন হোসেন বলেন, যেহেতু এইটা পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচন, সেহেতু সবারই সহযোগিতা দরকার। তাই আমি অনুমতিক্রমে প্রার্থীদেরকে তাদের প্রচারণা চালানোর সুযোগ দিয়েছি। তবে এই সুযোগ আমি কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তির জন্য দেইনি, সবার জন্যই দিয়েছি। তবে শুধু প্রার্থীকে ২ মিনিটের সুযোগ দিয়েছি।”
সার্বিক বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের মুখপাত্র সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. ফুয়াদ হোসেন বলেন, “লাইব্রেরির পরিবেশ বজায় রাখা লাইব্রেরি কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক একাডেমিক কার্যক্রম যেন কোনোভাবেই বিঘ্নিত না হয়।”
ঢাকা/সানজিদা/মেহেদী