সাত সকালেই মুষলধারে বৃষ্টিতে ভিজেছে ঢাকা। ভোর থেকেই আকাশ কিছুটা মেঘাচ্ছন্ন ছিল। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে শুরু হয় মুষলধারে বৃষ্টি। 

ভারী বৃষ্টিতেই ঢাকার ধানমন্ডি, বাংলামোটর, মগবাজার, মালিবাগ, কারওয়ান বাজার ও মতিঝিল এলাকার কিছু সড়কে পানি জমে যায়। কোথাও কোথাও রিকশা ও মোটরসাইকেল বন্ধ হয়ে পড়ে। বৃষ্টির কারণে অফিসগামী মানুষের দুর্ভোগ চরমে ওঠে। বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের দুর্ভোগ আরো বেড়ে যায়।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রবিবার (১৭ আগস্ট) রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু এলাকায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এর মধ্যে রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেটের কোথাও কোথাও ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময়ে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে।

সোমবারও রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের কিছু কিছু এলাকায় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে, তবে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে।

আগামী ১৯ আগস্ট 
রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী, ঢাকা ও খুলনা বিভাগের কিছু কিছু এলাকায় বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। দেশের কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। এ সময় দিন ও রাতের তাপমাত্রায় তেমন পরিবর্তন হবে না।
এচাড়া, ২০ আগস্ট 
রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অনেক জায়গায় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, মৌসুমি বায়ুর সক্রিয়তার কারণে এ বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বৃষ্টির এ ধারা অব্যাহত থাকতে পারে আরো কয়েকদিন।

ঢাকা/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বর শ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ক্যামেরায় নাগরিক বর্ষার কাব্য

তাঁরা তিনজন। হতে পারেন বান্ধবী। অথবা অন্য কোনো সম্পর্ক। রিকশায় করে যাচ্ছিলেন কোথাও। হঠাৎ উঠল ঝোড়ো হাওয়া। সঙ্গে ঝমঝম বৃষ্টি। একজন বাহারি রঙের একটি ছাতা মেলেছিলেন বটে, কিন্তু দমকা হাওয়ার ঝাপটায় সেই ছাতা গেল উল্টে। ফল যা হওয়ার তাই। ঝুম বৃষ্টিতে অসময়ের স্নান।

বর্ষাকালে ঢাকা নগরীতে এমন দৃশ্য অচেনা নয়। বৃষ্টির দিনে এমন বিপত্তিতে পড়েছেনও হয়তো অনেকে। এই দৃশ্যটি ক্যামেরাবন্দী করেছেন স্বনামখ্যাত আলোকচিত্রশিল্পী ও শিক্ষক আবির আবদুল্লাহ। বৃহস্পতিবার থেকে ঢাকার আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে শুরু হলো তাঁর ‘ট্রাবলিং রেইন’ নামের একক আলোকচিত্র প্রদর্শনী। সেখানেই আছে তিন তরুণীর এক রিকশায় যেতে যেতে আচমকা বৃষ্টিতে ভেজার এই দৃশ্য।

প্রায় দুই দশক ধরে আবির আবদুল্লাহ নগরজীবনে বর্ষার বিড়ম্বনা ও ঋতু–প্রকৃতির সৌন্দর্য আলোকচিত্রে তুলে আনছেন। সেখান থেকেই ৩৩টি ছবি নিয়ে এই প্রদর্শনী। প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত প্রদর্শনী খোলা থাকবে। চলবে ২৩ আগস্ট পর্যন্ত।

প্রায় দুই কোটি মানুষের বসবাস এই মহানগরীতে। নিষ্কাশনব্যবস্থা বড়ই বেহাল। ফলে প্রতিবছর বর্ষায় বিভিন্ন মহল্লায় জলাবদ্ধতা এখনো অনিবার্য। ভারী বৃষ্টি হলে বড় সড়কগুলোর অবস্থা হয় খাল-নালার মতো। সেই দৃশ্য ধারণ করেছেন আবির আবদুল্লাহ। একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে—মহাসড়ক দিয়ে একই সঙ্গে রিকশা, ভ্যানের পাশাপাশি চলছে ডিঙিনৌকা। কোনো বাড়ির ছাদ বা এমন কোনো উঁচু স্থান থেকে একই সঙ্গে জনদুর্ভোগ ও মজাদার এই দৃশ্যটি ধারণ করেছেন তিনি।

আরেকটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ইঞ্জিনে পানি প্রবেশ করে থেমে যাওয়া মোটরযান ধাক্কা দিকে ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে কয়েক কিশোর। ছবিতে শব্দ নেই। কিন্তু সেদিক তাকালেই পানিতে হাঁটার ‘ছপ্ ছপ্‌ শব্দ’, আর ‘মারো ঠেলা হেঁইও’ আওয়াজ যেন কানে আসে। সেলফি তো এখন জীবনেরই অংশ। কাজেই রাজধানীর সড়কের হাঁটুপানিতে দাঁড়িয়ে সেলফি তোলা হবে না, তা কি করে হয়! এক যুবক সাইকেলে চালিয়ে যেতে যেতে কোনো এক বৃষ্টির দিন জলমগ্ন পথে একটু থেমে সেলফি তোলার সময় তাঁকে ক্যামেরায় ধরে ফেলেছেন আবির আবদুল্লাহ।

স্কুলে বাচ্চাকে নিয়ে যেতে বৃষ্টির বিড়ম্বনায় পড়া মা, মার্কেটের ভেতরে হাঁটুপানি ভেঙে কেনাকাটা করতে থাকা নগরবাসী, জলমগ্ন পথের গর্তে চাকা পড়ে উলটে যাওয়া রিকশা, রাতের রাস্তায় হেডলাইট জ্বালিয়ে জলমগ্ন সড়কে চলতে থাকা গাড়ির সারি এমন অনেক ছবি উঠে এসেছে আবির আবদুল্লাহর ক্যামেরা।

বর্ষায় নগরজীবনে দুর্ভোগ আছে। কিন্তু বাংলার প্রকৃতিতে বর্ষা প্রাণসঞ্চারি। সাহিত্যে–শিল্পে এই ঋতু সৃজন প্রেরণাময়। বর্ষার বন্দনায় সমৃদ্ধি পেয়েছে কাব্য সংগীত। সেই নান্দনিকতাও কাব্যিক ব্যঞ্জনায় আবির আবদুল্লাহ তাঁর ছবিতে তুলে এনেছেন। আবির আবদুল্লাহ বলেছেন, বর্ষার নোংরা কাদা,পানি, নাগরিক জীবনের কষ্টকেই শুধু তিনি তুলে ধরতে চাননি, প্রকৃতি ও পরিবেশের বিরূপতার ভেতরেও মানুষের বেঁচে থাকার অনিঃশেষ মনোবলের গল্পগুলোও  ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। দর্শকেরা প্রদর্শনীতে এলে এই বর্ষাতে তাঁদের নিত্যদিনের জীবনযাত্রাকেই দেখতে পাবেন এক অন্য দৃষ্টিভঙ্গি থেকে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাজবাড়ীতে আড়াই কেজির ইলিশ ১৪ হাজার টাকায় বিক্রি
  • ক্যামেরায় নাগরিক বর্ষার কাব্য