এক অধ্যাপকের কাছেই অসহায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
Published: 18th, September 2025 GMT
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগে চেয়ারম্যান নিয়োগ নিয়ে সাম্প্রতিক অচলাবস্থা গোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। এর জন্য দায়ি করা হচ্ছে বিভাগের বিএনপিপন্থি অধ্যাপক ড. মো. নাসির উদ্দিনকে।
বিভাগটির চেয়ারম্যানের পদ নিয়ে বিএনপিপন্থি শিক্ষক অধ্যাপক ড.
আরো পড়ুন:
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন অভিযোগে শিক্ষকসহ ৩৯ জনকে শোকজ
গাইবান্ধায় নদীতে ভাসমান স্কুলশিক্ষিকার লাশ উদ্ধার
বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিভাগটিতে অধ্যাপক থাকতে একজনের আইনি হুমকির কাছে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় কেন এতটা অসহায়?
জানা গেছে, গত ২ সেপ্টেম্বর সিএসই বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. উজ্জ্বল কুমার আচার্যের দায়িত্বের মেয়াদ শেষ হয়। এরপর ১১ দিন পার হয়ে গেলেও নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ দিতে পারেনি প্রশাসন। এতে বিভাগে কার্যত প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম থমকে যায়। শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার তারিখ, থিসিস তত্ত্বাবধান ও রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত কাজে দিশেহারা হয়ে পড়েন। বিভাগে দায়িত্বশীল কেউ না থাকায় সমস্যা একের পর এক বেড়ে যায়।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০০৫ এর ধারা ২৪-এ বিভাগীয় চেয়ারম্যান নিয়োগ সংক্রান্ত স্পষ্ট ও বাধ্যতামূলক বিধান রয়েছে। উপ-ধারা (২) অনুযায়ী- বিভাগীয় অধ্যাপকদের মধ্য থেকে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পালাক্রমে ৩ বছর মেয়াদে উপাচার্য কর্তৃক বিভাগীয় চেয়ারম্যান নিযুক্ত হবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র অধ্যাপকরা বলছেন, আইনে উল্লিখিত ‘পালাক্রমে’ শব্দটি দ্বারা বুঝানো হয়েছে, অধ্যাপকগণ একজনের পর আরেকজন, ধারাবাহিকভাবে জ্যেষ্ঠতার ক্রমানুসারে এমনভাবে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন, যাতে সবাই পর্যায়ক্রমে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনের সুযোগ পান। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ বাংলাদেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে চেয়ারম্যান অথবা বিভাগীয় প্রধান নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রায় একই আইন বিদ্যমান। তবে কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী অধ্যাপক পদবী পর্যন্ত চেয়ারম্যান অথবা বিভাগীয় প্রধান হওয়ার জন্য যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হন।
তারা বলেন, আইনানুযায়ী দায়িত্বরত চেয়ারম্যানের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ওই বিভাগের চেয়ারম্যানের ‘পালা’ এখনো পাননি এমন যোগ্য শিক্ষকদের মধ্যে জ্যেষ্ঠ শিক্ষকই উপাচার্য কর্তৃক চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত হন। যদি সব যোগ্য শিক্ষক চেয়ারম্যান হিসেবে তাদের পালা শেষ করার পরে আর কেউ অবশিষ্ট না থাকে, তখন বিভাগের জ্যেষ্ঠতম শিক্ষক তার দ্বিতীয় পালায় দায়িত্বপ্রাপ্ত হতে পারেন।
তারা আরো বলেন, পদোন্নতি বা নতুন নিয়োগের মাধ্যমে যদি এক বা একাধিক যোগ্য শিক্ষক বিভাগে যোগদান করেন, যারা এখনো তার/ তাদের পালা শেষ করেননি, তাহলে তাদের মধ্যে জ্যেষ্ঠতম শিক্ষকই পরবর্তী চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত হবেন। তবে প্রথম পালা শেষ করেনি এমন যোগ্য শিক্ষক না থাকলে পূর্ববর্তী দায়িত্বপালনকারীগণ পর্যায়ক্রমে দ্বিতীয় পালায় নিযুক্ত হতে পারেন।
এদিকে, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগে বিগত দিনে অধ্যাপক হিসেবে ছিলেন মাত্র দুজনই। তারা হলেন ড. উজ্জ্বল কুমার আচার্য ও ড. মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন। অন্য অধ্যাপক না থাকায় এতদিন তারা রোটেশন অনুযায়ী চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। এর মধ্যে ড. উজ্জ্বল কুমার আচার্য তিন মেয়াদে এবং ড. মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেছেন।
বর্তমানে এ বিভাগে নতুন করে চারজন শিক্ষক যথাক্রমে ড. মো. আবু লায়েক, ড. মো. জুলফিকার মাহমুদ, ড. সেলিনা শারমীন ও ড. মো. মনোয়ারুল ইসলাম অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠিত পালাক্রম চর্চা অনুযায়ী, সর্বশেষ চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. উজ্জ্বল কুমার আচার্য দায়িত্ব শেষ হওয়ার পর নতুন অধ্যাপকদের মধ্য থেকে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে ড. মো. আবু লায়েকের বিভাগের চেয়ারম্যান হওয়ার কথা।
কিন্তু আগের চেয়ারম্যানের মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্বেই চেয়ারম্যানের পদ দাবি করে বসেন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন। এ নিয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে চাপও প্রয়োগ করতে থাকেন। তার নানা চাপে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও অসহায় হয়ে পড়েছে। এতে আগের চেয়ারম্যানের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার কয়েকদিন পরও বিভাগটিতে চেয়ারম্যান নিয়োগ দিতে পারেনি প্রশাসন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড পরিমল বালাকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হলে দায়িত্ব নেওয়ার আগেই পরিমল বালাকে আইনি নোটিশ পাঠান অধ্যাপক নাসির উদ্দিন। এতে বিব্রত হয়ে তিনিও চেয়ারম্যনের দায়িত্ব নিতে অপারগতা পোষণ করেন।
পরে গত ১৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০৫-এর ১১(১০) ধারা অনুযায়ী উপাচার্যের বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করে জবি কোষাধ্যক্ষ ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমীনকে সিএসই বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেন।
এই ধারা অনুযায়ী, বিশেষ পরিস্থিতিতে উপাচার্য যেকোনো ব্যক্তিকে চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দিতে পারেন—এমনকি যদি তা প্রচলিত রেওয়াজ বা রোটেশন নিয়মের বাইরে গিয়েও হয়।
এ ধারা কার্যত ‘আপৎকালীন আইন’ হিসেবে বিবেচিত হলেও এটাকে অধ্যাপক নাসির উদ্দিন ‘কালো আইন’ বলে আখ্যা দিচ্ছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র অধ্যাপকরা বলছেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য বিভাগগুলোতে অধ্যাপক নিয়োগ ও চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি সাধারণ রীতি অনুসরণ করা হয়; নতুন কেউ অধ্যাপক হলে তাকেই দায়িত্ব দেওয়া হয়। যেমন, সমাজকর্ম, সমাজবিজ্ঞান, অর্থনীতি, হিসাববিজ্ঞানসহ একাধিক বিভাগে এমন দৃষ্টান্ত রয়েছে। এমনকি বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম নিজেও একই রীতি অনুসরণ করে দায়িত্ব পালন করেছেন ও দায়িত্ব হস্তান্তর করেছেন।
তারা বলেন, সিএসই বিভাগেও আগে এই রীতি মানা হয়েছে। বিভাগের প্রাক্তন চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. উজ্জ্বল কুমার আচার্য তিনবার এবং অধ্যাপক নাসির উদ্দিন দুইবার দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু নতুন তিনজন অধ্যাপক পদোন্নতি পাওয়ার পরও তাদের কাউকে না করে নাসির উদ্দিনের পুনরায় দায়িত্ব দাবি অযৌক্তিক ও স্বার্থান্ধ।
জবি শিক্ষার্থীরা বলছেন, পুরো সংকটের পেছনে রয়েছে রাজনীতি ও ব্যক্তিগত অবস্থান। অধ্যাপক নাসির উদ্দিন বিএনপিপন্থি সাদা দলের সংগঠনিক সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি সেলের পরিচালক। তার রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক প্রভাব কাজে লাগিয়েই তিনি চেয়ারম্যান পদে ফের আসতে চান।
তাদের মতে, প্রশাসন তার এই চাপ মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েছে বলেই শেষ পর্যন্ত একটি বিতর্কিত আইন ব্যবহার করতে হয়েছে। এতে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরপেক্ষতা ও নিয়মনীতি ভেঙে পড়েছে।
এ বিষয়ে অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের সিনিয়র অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শওকত জাহাঙ্গীর বলেন, “সিএসই বিভাগে আমি শুনেছি রোটেশন অনুযায়ী পরবর্তীজন দায়িত্ব পান। একজন একবার দায়িত্ব পালন করলে, পরেরবার দ্বিতীয়জন দায়িত্ব পান। এরপর দ্বন্দ্ব না বাড়িয়ে উপাচার্য চাইলে তৃতীয়জন অধ্যাপক আবু লায়েককে দায়িত্ব দিতে পারতেন। এতে কোনো সমস্যাই হত না।”
তিনি বলেন, “আমার মনে হয় বিষয়টি অযথাই বেশি করা হয়েছে। একজন অধ্যাপক ইতোমধ্যে দুইবার দায়িত্ব পালন করেছেন, এখন অন্যজনকে দায়িত্ব দেওয়াই স্বাভাবিক ছিল। অধ্যাপক পরিমলকে তো চেয়ারম্যান দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল ডিন হিসেবে। সেক্ষেত্রে তাকে নোটিশ দেওয়া যথাযথ হয়নি।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক নাসির উদ্দিন বলেন, “আইনের ১১(১০) ধারায় উপাচার্যের বিশেষ ক্ষমতা আছে। ইচ্ছা করলে যাকে খুশি নিয়োগ দিতে পারেন। এটা এক ধরনের কালো আইনের মতো। যেমন বিশেষ আইনে কাউকে ওয়ারেন্ট ছাড়াই গ্রেপ্তার করা যায়, এভাবেই নতুন চেয়ারম্যানকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।”
অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, “বিভাগে এখন নতুন তিনজন অধ্যাপক আছেন ঠিকই। কিন্তু জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পালাক্রমে চেয়ারম্যান হওয়ার অধিকার আমারই রয়েছে।”
অন্যদিকে কোষাধ্যক্ষ সাবিনা শরমীন বলেন, “দুই অধ্যাপকের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হওয়ায় আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। উপাচার্য মহোদয়ই বলতে পারবেন, কেন অন্য চারজন অধ্যাপককে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।”
তবে উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম বলেন, “আইনটা নিয়ে বিভ্রান্তি আছে। আগের প্রশাসনও এর আগে নানা রকম ব্যাখ্যায় নিয়োগ দিয়েছে। আমি চাই বিষয়টি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সুনির্দিষ্টভাবে সমাধান হোক। কারণ আইনি ব্যত্যয় হলে বিশ্ববিদ্যালয় বড় সমস্যায় পড়বে। ইতোমধ্যে এক অধ্যাপক উকিল নোটিশ পাঠিয়ে আমাদের বিব্রত করেছেন।”
ঢাকা/লিমন/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স এসই ব ভ গ ন কর ছ ন উপ চ র য ম হ ম মদ অন য য় ন অন য হওয় র বলছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশের খসড়া প্রস্তুত, সচিব কমিটি উপদেষ্টা পরিষদে পাঠাবে
পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যে অধ্যাদেশের খসড়াটি সচিব কমিটির মাধ্যমে উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদনের জন্য যাবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে।
আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুলের নেতৃত্বে উপদেষ্টাদের সমন্বয়ে একটি কমিটি প্রস্তাবিত পুলিশ কমিশনের কাঠামো ও কার্যক্রমের খসড়া তৈরি করেছে।
খসড়ায় প্রস্তাব করা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এই কমিশনের চেয়ারপারসন হবেন। সদস্য থাকবেন একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ; গ্রেড-২ পদমর্যাদার নিচে নন এমন একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা; অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার নিচে নন এমন একজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা; পুলিশ একাডেমির একজন অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ; আইন, অপরাধবিজ্ঞান বিষয়ের একজন কর্মরত বা অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক; ১৫ বছর অভিজ্ঞতা রয়েছে এমন একজন মানবাধিকারকর্মী।
আরও পড়ুনপুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে স্বাধীন কমিশন অপরিহার্য৮ ঘণ্টা আগেকমিশনের চেয়ারপারসন আপিল বিভাগের বিচারপতি এবং সদস্যরা হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতির সমপদমর্যাদার হবেন।কমিশনের চেয়ারপারসন আপিল বিভাগের বিচারপতি এবং সদস্যরা হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতির সমপদমর্যাদার হবেন। সদস্যরা যোগদানের দিন থেকে চার বছর নিজ নিজ পদে থাকবেন। মেয়াদ শেষে কোনো সদস্য আবার নিয়োগের যোগ্য হবেন না।
অধ্যাদেশের খসড়ায় বলা হয়েছে, পুলিশ কমিশনের নির্দেশ বা সুপারিশ প্রতিপালনে বাধ্যবাধকতার বিষয়ে বলা হয়েছে—এই কমিশন যেকোনো কর্তৃপক্ষ বা সত্তাকে কোনো নির্দেশ দিলে উক্ত কর্তৃপক্ষ বা সত্তা অনধিক তিন মাসের মধ্যে তা বাস্তবায়ন করে কমিশনকে অবহিত করতে হবে। তবে কমিশনের নির্দেশ বা সুপারিশ বাস্তবায়নে কোনো অসুবিধা হলে সে ক্ষেত্রে নির্দেশ বা সুপারিশ পাওয়ার অনধিক তিন মাসের মধ্যে কমিশনকে অবহিত করতে হবে। কমিশন বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে যে নির্দেশ বা সুপারিশ পাঠাবে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সেই নির্দেশ বা সুপারিশ কমিশন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করে কমিশনকে জানাতে হবে।
আরও পড়ুনকোনো দল নয়, পুলিশের আনুগত্য থাকবে আইন ও দেশের প্রতি৯ ঘণ্টা আগেপুলিশ কমিশন গঠনের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্যের পর জুলাই জাতীয় সনদেও এটি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।এই কমিশনের সদস্য পদে নিয়োগের সুপারিশ প্রদানের জন্য সাত সদস্যের সমন্বয়ে একটি বাছাই কমিটি গঠন করা হবে। খসড়া অধ্যাদেশে প্রধান বিচারপতির মনোনীত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারপারসন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির মনোনীত একজন সরকারদলীয় এবং একজন বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যকে বাছাই কমিটিতে রাখার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ন্যূনতম পাঁচ সদস্যের উপস্থিতিতে বাছাই কমিটির কোরাম হওয়া ও বাছাই কমিটির বাছাই প্রক্রিয়া শুরুর ৩০ দিনের মধ্যে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার কথা বলা হয়েছে খসড়া প্রস্তাবে।
আরও পড়ুন‘আওয়ামী পুলিশ, বিএনপি পুলিশ’ তকমা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ কঠিন: সাবেক আইজিপি নুরুল হুদা১৭ ঘণ্টা আগেপুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ খসড়ায় কমিশন প্রতিষ্ঠা, কার্যালয়, সদস্যদের নিয়োগ, মেয়াদ, কমিশনের সদস্য হওয়ার জন্য কারা অযোগ্য, সদস্যদের পদত্যাগ, অপসারণ, পুলিশি কার্যক্রমে দক্ষতা বৃদ্ধি, শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি, নাগরিকের অভিযোগ অনুসন্ধান-নিষ্পত্তি, পুলিশ সদস্যদের সংক্ষোভ নিরসন, পুলিশপ্রধান নিয়োগ, আইন-বিধি, নীতিমালা প্রণয়ন ও গবেষণা বিষয়েও প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
পুলিশ কমিশন গঠনের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্যের পর জুলাই জাতীয় সনদেও এটি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
আরও পড়ুনমাঝেমধ্যে শুনতে হয়, ‘উনি কি আমাদের লোক’: আইজিপি১৭ ঘণ্টা আগে