গাজাবাসীদের ভিসা স্থগিত করল যুক্তরাষ্ট্র
Published: 17th, August 2025 GMT
গাজার বাসিন্দাদের জন্য সব ধরনের ভিজিটর ভিসা স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শনিবার (১৬ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এ তথ্য জানিয়েছে। খবর আল-জাজিরার।
এক্সবার্তায় মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘যে পদ্ধতি ও প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বর্তমানে চিকিৎসা ও মানবিক বিবেচনায় অল্পসংখ্যক অস্থায়ী মার্কিন ভিসা প্রদান করা হচ্ছে, তা আমরা পূর্ণ পর্যালোচনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পর্যালোচনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত গাজার ফিলিস্তিনিদের ভিসা প্রদান করা স্থগিত থাকবে।’
কয়েক দিন আগে মার্কিন অলাভজনক সংস্থা ‘হিল’-এর সহায়তায় চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে আসা হয় গাজায় ইসরায়েলি অভিযানে গুরুতর আহত ৩ ফিলিস্তিনি শিশু এবং তার পরিবারের সদস্যদের। শুক্রবার (১৬ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই তথ্য উল্লেখ করে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন মার্কিন কট্টর ডানপন্থি রাজনৈতিক কর্মী ও ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র লরা লুমের।
আরো পড়ুন:
চীনকে শাস্তি দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই: ট্রাম্প
ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক ফলপ্রসূ দাবি, অর্জন নিয়ে প্রশ্ন
লুমের এক্সে পোস্ট করা সেই বার্তায় বলেন, “কীভাবে ইসলামিক অভিবাসনপ্রত্যাশীদের প্রবেশ করতে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রশাসনের পররাষ্ট্রনীতিতে অগ্রাধিকার পাচ্ছে?”
পোস্টটি দেওয়ার পর সেটির কমেন্ট সেকশনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাজনৈতিক দল রিপাবলিকান পার্টির অনেক নেতা-কর্মী-সমর্থক লরা লুমেরকে সমর্থন এবং ট্রাম্প প্রশাসনের সমালোচনা করে মন্তব্য করা শুরু করেন। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই গাজার ফিলিস্তিনিদের ভিসা প্রদান স্থগিতের বিষয়টি নিশ্চিত করে এক্সবার্তা দেয় মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মাসিক পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের ভ্রমণ নথিধারীদের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ৩ হাজার ৮০০টিরও বেশি বি১/বি২ ভিজিটর ভিসা ইস্যু করেছে। এর মাধ্যমে তারা চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যেতে পারে। এই সংখ্যার মধ্যে গত মে মাসেই ৬৪০টি ভিসা ইস্যু করা হয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের আকস্মিক ভিসা স্থগিতের সিদ্ধান্তের ফলে জরুরি চিকিৎসা বা মানবিক প্রয়োজনে যুক্তরাষ্ট্রে যেতে ইচ্ছুক গাজার বাসিন্দারা সরাসরি প্রভাবিত হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে উল্লসিত প্রতিক্রিয়া দেন লুমার। তিনি পোস্ট করে বলেন, “ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে এত দ্রুত ফল পাওয়া দারুণ ব্যাপার। আশা করি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায় সমস্ত গাজাবাসীকে যুক্ত করা হবে। অন্যান্য দেশেও চিকিৎসক রয়েছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের হাসপাতাল নয়!”
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র ইসর য় ল ম র ক ন পরর ষ ট র য ক তর ষ ট র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া
রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বর-সংলগ্ন মিরপুর সড়কে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
আজ সোমবার বিকেলে সাড়ে তিনটার দিকে এই চিত্র দেখা যায়। এই ঘটনায় উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
দুপুরের দিকে দুটি এক্সকাভেটর নিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভাঙতে গিয়েছিলেন বিক্ষোভকারীরা। পরে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় সেনাবাহিনী ও পুলিশ। এরপর বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে দফায় দফায় ৩২ নম্বর সড়কে যাওয়ার চেষ্টা করে আসছেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর সদস্যসংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি ঘটনাস্থলে আছেন র্যাব ও বিজিবির সদস্যরা। তাঁরা শক্ত অবস্থানে আছেন।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আজ দুপুরের দিকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের সামনের মিরপুর সড়কে দুটি এক্সকাভেটর দেখা যায়।
পরে বিক্ষোভকারীরা ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে এক্সকাভেটর ঢোকানোর চেষ্টা করেন। তাঁদের বাধা দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী লাঠিপেটা করে।
কিছুটা ছত্রভঙ্গ হয়ে বিক্ষোভকারীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ করে ইটপাটকেল ছোড়ে। এ সময় পুলিশের অন্তত এক সদস্য আহত হন।
আরও পড়ুনএক্সকাভেটর নিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে যাওয়া বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ৪ ঘণ্টা আগেপরে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড মেরে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গের চেষ্টা করে। এ সময় দফায় দফায় সাউন্ড গ্রেনেডের বিকট শব্দ শোনা যায়। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
বেলা পৌনে ২টার দিকে দুই ভাগে ভাগ হয়ে বিক্ষোভকারীরা আবার ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে তাঁদের আবার ছত্রভঙ্গ করে দেয় সেনাবাহিনী ও পুলিশ।
বিক্ষোভকারীদের ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে যাওয়ার জন্য দফায় দফায় চেষ্টা এবং তাঁদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুরো এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। নিউমার্কেট থেকে মিরপুরমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
আরও পড়ুনরায়কে কেন্দ্র করে ঢাকায় নিরাপত্তা জোরদার, ১৫ হাজার পুলিশ মোতায়েন৫ ঘণ্টা আগেবিক্ষোভকারীরা পুরোপুরি সরে না যাওয়ায়, বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে দফায় দফায় ৩২ নম্বর সড়কে আসার চেষ্টা করায় এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসংখ্যা বাড়ানো হয়। এখন এলাকায় সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন রয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ধানমন্ডি অঞ্চলের অতিরিক্ত উপকমিশনার জিসানুল হক দুপুরে প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘আমরা কোনোমতে কাউকে আইন হাতে তুলে নিতে দেব না।’
গত ফেব্রুয়ারিতে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িটির অর্ধেকের বেশি অংশ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ৩২ নম্বরের বাড়িটি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুনআড়াই ঘণ্টা ধরে পড়া হলো রায়, এরপর এল মৃত্যুদণ্ডের আদেশ২ ঘণ্টা আগে