দিনাজপুরের বিরামপুরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী থেকে পদত্যাগ করে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিতে যোগ দেওয়ার পাঁচ বছর পর আবার জামায়াতে যোগ দিলেন জামায়াতের সাবেক নেতা মেহেদী হাসান চৌধুরীর নেতৃত্বে ৪০ জন নেতা–কর্মী।

এ সময় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের বিরামপুর উপজেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আরাফাত আল আবীরও জামায়াতে যোগ দেন।

আজ বৃহস্পতিবার রাত আটটায় বিরামপুর শহরের ধানহাটি মোড়ে দলীয় কার্যালয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বিরামপুর উপজেলার শাখার আয়োজনে এক যোগদান অনুষ্ঠানে তাঁরা জামায়াতে যোগ দেন।

জামায়াতের বিরামপুর উপজেলা শাখার আমির হাফিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে যোগদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির শুরা সদস্য ও জেলা শাখার আমির আনিসুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মজলিশে শুরা সদস্য ও দিনাজপুর জেলা শাখার সাবেক আমির আনোয়ারুল ইসলাম, জেলা সেক্রেটারি মুহাদ্দিস এনামুল হক, সহকারী সেক্রেটারি সাইদুল ইসলাম, বিরামপুর পৌর শাখার আমির মামুনুর রশীদ ও সেক্রেটারি শাহীনুর ইসলাম।  

মেহেদী হাসান চৌধুরী ২০২০ সালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অঙ্গসংগঠন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের বিরামপুর উপজেলা শাখার সভাপতি ছিলেন। ওই বছর তিনি এবি পার্টিতে যোগ দেন। সর্বশেষ তিনি এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদকীয় সদস্য ও দিনাজপুর জেলা শাখার সেক্রেটারি ছিলেন। গত বুধবার তিনি এবি পার্টি থেকে পদত্যাগ করেন।

যোগদান অনুষ্ঠানে মেহেদী হাসান চৌধুরী বলেন, ‘২০২০ সালের স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের দুঃশাসনকালে আমি জামায়াতের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। সে সময় আমি আওয়ামী লীগ সরকার ও তাদের পুলিশ বাহিনীর দ্বারা অনেক মামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছিলাম। কিন্তু সে সময় জামায়াতে ইসলামীর কিছু নেতার সঙ্গে আমার মনোমালিন্য হয়। তাঁরা আমাকে মূল্যায়ন করেননি। তখন আমি এবি পার্টিতে যোগ দিই। সে সময় আমি যে চেতনা নিয়ে এবি পার্টিতে যোগ দিই, পরে সেই আমি এবি পার্টিতে সেই চেতনা দেখতে পাইনি, যা আমাকে আহত করেছে। বর্তমানে জামায়াতে ইসলামীর কার্যক্রম ও আদর্শ আমাকে মুগ্ধ করেছে। এ জন্য আজ আমি এবি পার্টির ৪০ জন নেতা–কর্মীকে নিয়ে আবারও জামায়াতে যোগদান করলাম।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসল ম র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

তিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৫ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ

সম্পূরক বৃত্তি ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণাসহ তিন দফা দাবিতে অনশনে বসা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থীর মধ্যে দুজন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।

গতকাল মঙ্গলবার বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেন তাঁরা।

এর আগে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) পক্ষ থেকে অনশন কর্মসূচি শুরুর কথা জানানো হয়।

তিন দফা দাবির অন্যটি হলো ক্যাফেটেরিয়ায় ভর্তুকি প্রদান ও স্বাস্থ্যকর খাবার নিশ্চিত করা এবং কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা চালু।

আজ বুধবার দুপুরে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে তিন দফা দাবিতে অনশন চালিয়ে যেতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনসহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের অনশনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে তাঁদের খোঁজখবর নিতে দেখা যায়।

অনশনে বসা পাঁচ শিক্ষার্থী হলেন উদ্ভিদবিজ্ঞানের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ফয়সাল মুরাদ ও ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ফেরদৌস শেখ, ইতিহাস বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শাহীন মিয়া এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের অপু মুন্সী।

অনশনকারীদের মধ্যে ফয়সাল মুরাদ ও এ কে এম রাকিব অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁদের পেটে ব্যথা, রক্তচাপ কমে যাওয়াসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে।

অনশনকারী অপু মুন্সী বলেন, পারিবারিক কারণে তাঁকে গ্রামে চলে যেতে হয়েছে। তাই গতকাল রাতে তিনি অবস্থান করতে পারেননি।

আজ অনশনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা।

এদিকে অনশনকারীদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল করবেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ কারণে শিক্ষার্থীদের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে উপস্থিত হতে আহ্বান জানানো হয়েছে।

অনশনে অংশ নেওয়া শাহীন মিয়া বলেন, প্রশাসন আগের মতোই বাহানা করে যাচ্ছে। হচ্ছে, হবে এ বক্তব্য থেকে বের হতে পারেনি প্রশাসন। আর কোনো টালবাহানা তাঁরা শুনবেন না। তাঁদের দাবি অবশ্যই মানতে হবে। তা না হলে প্রশাসনকে দায়িত্ব ছেড়ে দিতে হবে।

আরেক অনশনকারী ফয়সাল মুরাদ বলেন, প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে অনশন চলছে, কিন্তু প্রশাসন এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। ইতিমধ্যে তিনিসহ আরও একজন অনশনকারী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

অনশনকারী এ কে এম রাকিব প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা অবস্থানসহ বেশ কিছু কর্মসূচি পালন করেছি, কিন্তু তাতে প্রশাসন কর্ণপাত করেনি। তাই অনশনে যেতে বাধ‍্য হয়েছি। এ ছাড়া আমাদের উপায় ছিল না। এই নখদন্তহীন প্রশাসন হয়তো আমাদের দাবি মেনে নেবে, নয়তো তাদের নিজেদের রাস্তা মাপতে হবে।’

আরও পড়ুনসম্পূরক বৃত্তি ও জকসু নির্বাচনের রূপরেখাসহ তিন দাবিতে অনশনে ৫ শিক্ষার্থী১৯ ঘণ্টা আগে

যতক্ষণ তিন দফা দাবি আদায় না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত অনশন চলবে জানিয়ে এ কে এম রাকিব আরও বলেন, যতক্ষণ শরীরে শেষ রক্তবিন্দু আছে ততক্ষণ তাঁরা অনশন চালিয়ে যাবেন। ক্লাস-পরীক্ষা শেষ করে অনেকেই এসে সংহতি প্রকাশ করছেন। সকাল থেকে এ সংখ্যা বাড়ছে।

এদিকে গতকাল রাতে অনশনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে উপস্থিত হন। এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক রেজাউল করিম ডিসেম্বরের মধ্যে জকসু নির্বাচন আয়োজনের এবং জানুয়ারি মাস থেকে সম্পূরক বৃত্তি দেওয়ার আশ্বাস দেন।

তবে সুস্পষ্ট রূপরেখা ছাড়া ও প্রশাসন থেকে লিখিত না পাওয়া পর্যন্ত অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে উপাচার্যকে জানিয়েছেন অনশনকারী শিক্ষার্থীরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • তিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৫ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ
  • সম্পূরক বৃত্তি ও জকসু নির্বাচনের রূপরেখাসহ তিন দাবিতে অনশনে ৫ শিক্ষার্থী