গাজীপুরের শ্রীপুরে নাটকের শুটিংয়ের কথা বলে রিসোর্টে নিয়ে গিয়ে এক নারী নাট্যকর্মীকে (২৪) দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই নারী গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে শ্রীপুর থানায় মামলা করেছেন।

২১ সেপ্টেম্বর রাতে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উত্তর পেলাইদ গ্রামের একটি রিসোর্টে এ ঘটনা ঘটে বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়। মামলায় মো.

নাছির (৩৫) ও মো. বাবর (৩২) নামের দুজনের নাম উল্লেখ ও একজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ভুক্তভোগী ওই নারী মডেল হিসেবে কাজ করেন। তাঁকে জানানো হয়, নাছির নাটকের পরিচালক এবং বাবর তাঁর সহযোগী। নাটকের শুটিংয়ের কথা বলে ২১ সেপ্টেম্বর রাতে ঢাকার মিরপুর থেকে তাঁকে শ্রীপুরের একটি রিসোর্টে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রাত দুইটার দিকে ভুক্তভোগীকে একটি কক্ষে আটকে রেখে নাছির, বাবর ও অজ্ঞাতপরিচয় একজন পালাক্রমে ধর্ষণ করেন। পরদিন বিকেলে মারধর করে তাঁকে রিসোর্ট থেকে বের করে দেওয়া হয়। আসামিরা তাঁর আইফোন কেড়ে নেন, যার মূল্য ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে রিসোর্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কয়েকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কেউ ফোন ধরেননি।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, ভুক্তভোগী ওই নারীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা নেওয়া হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। ভুক্তভোগীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রক্রিয়াও চলছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন টক র

এছাড়াও পড়ুন:

খাগড়াছড়িতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ‘মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগের’ অভিযোগের তদন্তসহ ৯ দফা দাবি

খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনার দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত এবং অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করাসহ ৯ দফা দাবি জানিয়েছেন ৪১ বিশিষ্ট নাগরিক।

আজ মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তাঁরা এ দাবি জানান।

ওই বিবৃতিতে মারমা এক কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ-সহিংসতা ও গুলিবর্ষণে ৩ জন নিহত ও ৩০ জন আদিবাসী আহত হয়েছেন বলে জানান বিশিষ্ট নাগরিকেরা। এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগের অভিযোগের বিষয়ে স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনেরও দাবি জানান তাঁরা।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, কোনো বাহিনী আইনের শাসন ও মানবাধিকারের ঊর্ধ্বে নয়। মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগের ঘটনায় কেউ জড়িত থাকলে তাঁকে অবশ্যই জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। দায়মুক্তির সংস্কৃতি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।

নাগরিক সমাজের ৯ দফা দাবিগুলো হলো:

১. খাগড়াছড়িতে মারমা কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগের দ্রুত, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত করে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ভুক্তভোগী কিশোরী এবং তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে সহায়তা দিতে হবে।

২. সংঘর্ষে প্রাণহানির ঘটনায় সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগ এবং মদদের অভিযোগের বিষয়ে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করতে হবে।

৩. সহিংসতায় জড়িত ব্যক্তিরা যে বাহিনীর সদস্যই হোক না কেন, তাঁদের সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

৪. নিহত ও আহতদের পরিবারকে সুরক্ষা, যথার্থ ক্ষতিপূরণ, চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।

৫. পাহাড়ে দীর্ঘদিনের সামরিকীকরণ নীতি পর্যালোচনা করে শান্তিপূর্ণ, রাজনৈতিক সমাধানের পথে এগোতে হবে।

৬. পাহাড়ে বসবাসরত সব নাগরিকের জীবনের অধিকার, নিরাপত্তা ও সম্প্রীতিনির্ভর সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।

৭. পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর ওপর যেন কাঠামোগত নিপীড়ন চালানো না হয় এবং এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তারা যেন আরও হয়রানি, গ্রেপ্তার ও আইনি নিপীড়নের শিকার না হয়—রাষ্ট্রকে তা নিশ্চিত করতে হবে।

৮. পাহাড়ে অবাধ তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে, যাতে ভুক্তভোগীদের কণ্ঠস্বর দমন না হয় এবং জনগণ সত্য জানতে পারে।

৯. নারীদের ওপর সংঘটিত নির্যাতন ও নিপীড়নের ঘটনাগুলোর প্রতিকার ও জবাবদিহি নিশ্চিতে স্বাধীন তদন্ত করতে হবে।

আরও পড়ুনখাগড়াছড়িতে সহিংসতায় প্রাণহানির কারণ ও দায়ীদের চিহ্নিত করার দাবি আসকের২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সামিনা লুৎফা, আসিফ শাহান, মোশাহিদা সুলতানা, রুশাদ ফরিদী, তাসনীম মাহবুব, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সারা হোসেন, মানজুর আল মতিন, কাজী জাহেদ ইকবাল, সাংবাদিক সায়দিয়া গুলরুখ, সংগীতশিল্পী বীথি ঘোষ, লেখক ফিরোজ আহমেদসহ ৪১ বিশিষ্ট নাগরিক এ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন।

আরও পড়ুনখাগড়াছড়িতে সহিংসতার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি এইচআরএফবির২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খাগড়াছড়িতে মারমা কিশোরীকে ধর্ষণ ও প্রতিবাদকারীদের ওপর হামলার বিচার দাবিতে মানববন্ধন
  • খাগড়াছড়িতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ‘মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগের’ অভিযোগের তদন্তসহ ৯ দফা দাবি