ফ্রিডল ফ্লোটিলার সব নৌযান একসঙ্গে গাজার পথে এগোচ্ছে: ফেসবুকে শহিদুল আলম
Published: 4th, October 2025 GMT
গাজা অভিমুখে থাকা কনশানস নৌযানটির সামনে থাকা বহরের অন্য আটটি নৌযানকে ছুঁয়ে ফেলেছে। কনশানস নৌযানের গতি বেশি হওয়ায় এমনটা সম্ভব হয়েছে। এখন কনশানসের গতি কমিয়ে ফেলা হয়েছে এবং সব নৌযান একসঙ্গে গাজা অভিমুখে এগিয়ে যাচ্ছে।
দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও আলোকচিত্রী শহিদুল আলম আজ শনিবার দুপুরে ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে এসব কথা জানিয়েছেন। তিনি কনশানস নৌযানটিতে আছেন।
কনশানস হলো আন্তর্জাতিক উদ্যোগ ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি) এবং থাউজেন্ড ম্যাডলিনস টু গাজা (টিএমটিজি) নৌবহরের একটি জাহাজ। এফএফসি হলো ইসরায়েলের অবরোধ ভাঙতে ও গাজায় ত্রাণ পৌঁছাতে বৈশ্বিক প্রচেষ্টা ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার’ যৌথ আয়োজক জোটগুলোর একটি। তবে তাদের বহরে কোনো খাদ্যসহায়তা নেই।
ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে শহিদুল আলম লিখেছেন, ‘থাউজেন্ড ম্যাডলিনস একটি অবিস্মরণীয় ধারণা। জাতিগত নিধন ঠেকাতে বিশ্বনেতাদের পুরোপুরি নিষ্ক্রিয়তা এবং কপট ভূমিকার কারণে বিশ্বের জনগণ নিজেরাই পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। হাজারো জাহাজের ধারণাটি প্রতীকী। তবে নিঃসন্দেহে এভাবে একত্রিত হওয়া সমুদ্রযানের সবচেয়ে বড় বহর এটি।’
শহিদুল আলম কনশানস নামের যে নৌযানটিতে অবস্থান করছেন, সেটিকে তিনি ওই বহরের সবচেয়ে বড় নৌযান বলে উল্লেখ করেছেন। বলেছেন, এটি সবার শেষে (৩০ সেপ্টেম্বর) ইতালি থেকে রওনা করেছিল। আর কনশানসের আগে ওই আটটি নৌযান রওনা করেছিল। এ ছাড়া ফ্রিডম কোয়ালিশনের আরও দুটি নৌকাও আগে ছিল। তবে ওই দুটি নৌকার অবস্থান এখনো নিশ্চিত নয়। কনশানস সবার শেষে রওনা করলেও এটির গতি বেশি হওয়ায় আগে রওনা করা আটটি নৌযানকে ছুঁয়ে ফেলেছে। এখন কনশানসের গতি কমানো হয়েছে এবং সব নৌযান একযোগে এগিয়ে যাচ্ছে।
গাজার অবরোধ ভেঙে দেওয়ার দৃঢ় সংকল্প ব্যক্ত করে শহিদুল আলম লিখেছেন, ‘আমরা কনশানসের মানুষেরা অবরোধ ভাঙতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তারা যদি আমাদের আটকায়, তখন অন্যরা এগিয়ে আসবে। দমন–পীড়নকারী কখনোই জনগণের শক্তির বিরুদ্ধে টিকতে পারেনি। ইসরায়েলও ব্যর্থ হবে। মুক্ত হবে ফিলিস্তিন।’
ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ‘কনশানস’ নামের জাহাজটিতে ২৫টি দেশের সাংবাদিক ও স্বাস্থ্যকর্মী আছেন। এফএফসির সর্বশেষ এই মিশন গত বুধবার যাত্রা শুরু করে। ইসরায়েলের অবৈধ অবরোধ ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গাজা অভিমুখে রওনা হয়েছে আন্তর্জাতিক সাংবাদিক ও চিকিৎসকবাহী এই জাহাজ।
দুই বছর ধরে ইসরায়েল বিদেশি সাংবাদিকদের গাজায় প্রবেশে বাধা দিয়ে আসছে। এ সময়ে ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনি সাংবাদিকদের লক্ষ্যবস্তু করে আসছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ২৭০ জনের বেশি সাংবাদিক নিহত হয়েছেন, অনেকে আটক ও কারাগারে বন্দী আছেন।
আরও পড়ুনগাজা অভিমুখে যাচ্ছে আরও ১১ জাহাজ, দেখুন লাইভ ট্র্যাকারে২২ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পাবনায় ঈদগাহের নাম নিয়ে দু’ গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ২০
পাবনার চাটমোহর উপজেলায় ঈদগাহের নামকরণ করা নিয়ে দুই গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। ঘরবাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে।
শুক্রবার (০৩ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের আটলংকা গ্রামে সংঘর্ষ হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আরো পড়ুন:
হবিগঞ্জে দু’পক্ষের সংঘর্ষ, ৫০ জন আহত
ট্রেন ছাড়তে দেরি হওয়ায় ভাঙ্গুড়ায় যাত্রীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ
চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তিকৃত আহতরা হলেন, উপজেলার বন্যাগাড়ী গ্রামের আজিম উদ্দিন, সুরমান আলী, আরমান আলী, আবুল হোসেন, রাশেদ হোসেন, আফজাল প্রামাণিক, সেলিম হোসেন ও সাব্বির হোসেন। আহত কয়েকজনকে আটঘরিয়া ও পাবনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে তাদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুরুল আলম বলেন, ‘‘সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। মূলত ঈদগাহ মাঠের নামকরণ করা নিয়ে সংঘর্ষ হয়। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। থানায় কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় ঈদগাহের নামকরণ করা নিয়ে আটলংকা ও বন্যাগাড়ী গ্রামের লোকজনের মধ্যে বিরোধ চলছে। বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েকবার থানায় ও স্থানীয়ভাবে মীমাংসার জন্য দুই গ্রামের গণ্যমাণ্য ব্যক্তিরা বসেন। কিন্তু তা ব্যর্থ হয়। এরপর থেকে দুই গ্রামের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা চলছে।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে নামফলক লাগানো নিয়ে দুই গ্রামের লোকজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে উভয়পক্ষ লাঠিসোঁটা ও দেশীয় নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ঘরবাড়ি ভাঙচুর করা হয়। ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়।
খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুসা নাসের চৌধুরী, থানার ওসি মনজুরুল আলমসহ পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর উভয় পক্ষের আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আটলংকা বাজারের পাশে অবস্থিত ঈদগাহ মাঠটি দীর্ঘ কয়েক যুগ ধরে বন্যাগাড়ী ও আটলংকা গ্রামের মানুষ একসঙ্গে ব্যবহার করে আসছেন। ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর আটলংকা গ্রামের মানুষ ঈদগাহ মাঠটি নিজেদের দাবি করে এবং নামকরণ তাদের গ্রামের নামে ‘আটলংকা ঈদগাহ মাঠ’ করার চেষ্টা করে। এতে বন্যাগাড়ী গ্রামের মানুষ তা মানতে অস্বীকৃতি জানায়।
বন্যাগাড়ী গ্রামের মানুষের দাবি, যেহেতু ঈদগাহ মাঠটি পূর্বপুরুষ থেকে একসঙ্গে ব্যবহার হয়ে আসছে, তাই নাম দিতে হলে দুই গ্রামের নামে ‘আটলংকা-বন্যাগাড়ী ঈদগাহ মাঠ’ করতে হবে।
ঢাকা/শাহীন/বকুল