সড়কে চাঁদা তোলা থামাতে গিয়ে মার খেলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার
Published: 4th, October 2025 GMT
নরসিংদীতে যানবাহন থেকে চাঁদা তোলার সময় আটক দুই ব্যক্তিকে ছিনিয়ে নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের ওপর হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে নরসিংদী পৌর এলাকার আরশীনগর রেলক্রসিং–সংলগ্ন মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
হামলায় আহত নরসিংদী সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাজধানীর রাজারবাগে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, বেলা ১১টার দিকে আরশীনগর মোড়ে সিএনজিচালিত ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহন থেকে চাঁদা আদায়ের সময় দুজনকে আটক করে পুলিশ। আটক দুজনকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিতে হামলা চালান একদল লোক। এ সময় ঘটনাস্থলে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেনের ওপর হামলা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সকালে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন আটজন পুলিশ সদস্য নিয়ে শহরের বীরপুর এলাকায় একটি লাশ উদ্ধারের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ঘটনাস্থল থেকে ফেরার পথে বেলা ১১টার দিকে আরশীনগর মোড়ে অটোরিকশা ও সিএনজি থেকে চাঁদা তোলা হচ্ছে দেখতে পেয়ে সেখানে থামেন আনোয়ার হোসেন। এ সময় দুজনকে হাতেনাতে আটক করা হলে তাঁরা পুলিশের ওপর হামলা চালান। পুলিশ কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেনের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের পর আটক দুজনকে ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যান হামলাকারীরা। এ সময় আরও কয়েকজন পুলিশ সদস্য কিলঘুষিতে আহত হন। স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আহত অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে উদ্ধার করে প্রথমে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাঁকে রাজধানীর রাজারবাগে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নরসিংদী সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ফরিদা গুলশানারা কবির বলেন, ‘সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন আমাদের হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। তাঁর ঘাড়ে ও পায়ে রক্ত জমে গেছে। আমরা কয়েকটি পরীক্ষা দিয়েছি। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তির জন্য বলা হয়েছে।’
পুলিশ কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘৩০–৩৫ জন লোক অতর্কিতভাবে আমার ওপর হামলা চালায়। একপর্যায়ে তারা আমাকে কিলঘুষি মারতে থাকে। এরপর তারা আমাকে লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নরসিংদী পৌরসভার সিএনজি ও অটোস্ট্যান্ডের ইজারাদার আলমগীর হোসেন বলেন, ‘পৌরসভা থেকে ২৫ লাখ টাকায় ইজারা নিয়েছি আমি, কিন্তু অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রায়ই ইজারার টাকা তুলতে বাধা দেন। এর আগেও তিনি আমাদের দুজনকে আটক করে মামলা দিয়ে জেলে পাঠান। আমরা বৈধভাবে ইজারা নিয়ে যদি কাজ করতে না পারি, তাহলে সরকারকে দেওয়া ২৫ লাখ টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হোক। পৌরসভার নিয়ম ও বৈধ ইজারার শর্ত মেনে সড়ক থেকে টাকা তোলার সময় পুলিশ বাধা দেওয়ায় ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটেছে শুনেছি। পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা মিথ্যা, ভিত্তিহীন।’
প্রসঙ্গত, ইজারাদার আলমগীর হোসেন জেলা যুবদলের সভাপতি মহসীন হোসাইনের (বিদ্যুৎ) বড় ভাই।
ইজারাদার সড়ক থেকে চাঁদা তুলতে পারেন কি না, জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক ও নরসিংদী পৌরসভার প্রশাসক মো.
হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে নরসিংদীর পুলিশ সুপার মো. মেনহাজুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, হামলার ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ময়মনসিংহ রেলস্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনে আগুন, ধাওয়া দেওয়ায় পালাল দুর্বৃত্তরা
ময়মনসিংহ রেলস্টেশনের ওয়াশপিটে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রেনের বগিতে পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আজ বুধবার ভোর সোয়া চারটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে আগুন ছড়িয়ে পড়ার আগেই তা নিয়ন্ত্রণে আনেন রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এ ঘটনার পর দুর্বৃত্তদের ধাওয়া দিলে তারা স্টেশন এলাকা থেকে পালিয়ে যায়। এতে একটি বগির কয়েকটি আসন পুড়ে গেছে।
এ বিষয়ে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী ময়মনসিংহ কার্যালয়ের পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম বলেন, স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের বাইরের অংশে জারিয়া লোকাল ট্রেনের কোচগুলো ধোয়ামোছা করার জন্য ওয়াশপিটে দাঁড় করানো ছিল। সেখানে অনেক অন্ধকার থাকে। এ সুযোগে নাশকতার উদ্দেশ্যে ভোরে একদল দুর্বৃত্ত পেট্রল দিয়ে ট্রেনে আগুন দেয়।
সিরাজুল ইসলাম জানান, আগুন দেখে আরএনবির তিন সদস্য দ্রুত আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। তাঁরা কাছাকাছি দাঁড়িয়ে থাকা এক দুর্বৃত্তকে ধাওয়া দেন। তবে অন্ধকার থাকায় তাকে ধরা সম্ভব হয়নি। পরে আরএনবি সদস্যরা নিজেদের জ্যাকেট খুলে তা পানিতে ভিজিয়ে আগুনের ওপর ঢেকে দেন এবং দ্রুত পানি ছিটিয়ে আগুন নেভান। এতে বড় ধরনের ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে। ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশনের নিরাপত্তাব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে।
ময়মনসিংহ রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আকতার হোসেন বলেন, পেট্রল ঢেলে ট্রেনের বগিতে আগুন দেওয়া হয়েছিল। পোড়া বোতল উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্তকরণ ও আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।