বিএনপির সেমিনারে বক্তারা: জ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা গণতন্ত্রের সঙ্গে আন্তসম্পর্কিত
Published: 5th, October 2025 GMT
দেশে গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনভিত্তিক ও জ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা দরকার। কেননা তা গণতন্ত্রের সঙ্গে আন্তসম্পর্কিত।
আজ রোববার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে আয়োজিত এক সেমিনারে এসব কথা বলেন বক্তারা। ‘দ্য পাথফরোয়ার্ড ফর বাংলাদেশ: ডেমোক্রেসি অ্যাজ দ্য ফাউন্ডেশন অব আ ইউনিফাইড অ্যান্ড নলেজ বেজড এডুকেশন সিস্টেম’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজক বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। সেমিনারে দলটির নেতাদের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষাবিদ ও বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকেরা উপস্থিত ছিলেন।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীম। বৈশ্বিক র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পেছনের দিকে থাকার সমালোচনা করেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার তাগাদা দেন। তিনি বলেন, এমন প্রেক্ষাপটে দেশে প্রয়োজনভিত্তিক ও জ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা দরকার। কেননা তা গণতন্ত্রের সঙ্গে আন্তসম্পর্কিত। একীভূত শিক্ষাব্যবস্থা একটি গণতান্ত্রিক সরকারের ওপর নির্ভর করে।
দেশের শিক্ষা খাতে অতীতে বিএনপির নেওয়া নানা উদ্যোগের কথা উল্লেখ করেন নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, ক্ষমতায় গেলে শিক্ষা খাতের বিষয়টি দেখতে হবে। তাই পেশাগত ও কারিগরি প্রশিক্ষণ এখন জরুরি। সে জন্য শিক্ষার্থী-তরুণদের প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফায় থাকা শিক্ষা বিষয়ের মূল বক্তব্য সেমিনারে তুলে ধরেন ডেমোক্রেসি ডায়াস বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মামুন। তিনি বলেন, বিএনপি শিক্ষার বাজেট ১ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়াতে চায়। বাংলাদেশের এখনকার বাজেটে এই হার দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বনিম্ন। আর বৈশ্বিক ক্ষেত্রেও তা নিচের দিকে। সে জন্য বিএনপির ঘোষণাটি গুরুত্বপূর্ণ।
নিজের কিছু পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন আবদুল্লাহ আল মামুন। তিনি বলেন, বিএনপি বলেছে, তারা প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষাকে ভবিষ্যৎমুখী করবে। শিক্ষাব্যবস্থার মানোন্নয়ন ও আন্তর্জাতিকীকরণ করবে। সে ক্ষেত্রে স্থানীয় অভিজ্ঞতা ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার সমন্বয় থাকবে। দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলবে, যা জনমিতিক বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। বৃত্তিমূলক, ডিজিটাল, তথ্যপ্রযুক্তি ও ইংরেজি দক্ষতানির্ভর শিক্ষা প্রণয়ন করবে। এগুলো গুণগত মানের শিক্ষা নিশ্চিতে সহায়ক হবে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ এস এম মো.
মানসম্মত ও গুণগত শিক্ষার জন্য নীতিগত প্রতিশ্রুতি থাকতে হবে বলে মন্তব্য করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহউপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মামুন আহমেদ। তিনি বলেন, যে নীতি তৈরি করা হয়, তা শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রায়ই হতাশা তৈরি করে। হতাশা যেন তৈরি না হয়, সে জন্য সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের পররাষ্ট্রবিষয়ক পরামর্শক কমিটির সদস্য ইসরাফিল খসরু সেমিনার সঞ্চালনা করেন। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক নাহরিন আই খান; ব্র্যাকের শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন ও অভিবাসন কর্মসূচির পরিচালক সাফি রহমান খান, ইন্টারফেইথ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের সহসাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ ইউসুফ, আন্তর্জাতিক ক্বিরাত সংস্থা বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক সাদ সাইফুল্লাহ মাদানী। উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের পররাষ্ট্রবিষয়ক পরামর্শক কমিটির সদস্য অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, তাবিথ আউয়াল, ইশরাক হোসেন, ফারজানা শারমীন পুতুল।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ ক ষ ব যবস থ গণত ন ত র ক ব এনপ র
এছাড়াও পড়ুন:
জকসু: জুলাই আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ অনিকের সম্মানে পদ খালি রাখল ছাত্রশক্তি
প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনে ‘ঐক্যবদ্ধ জবিয়ান’ নামে প্যানেল ঘোষণা করেছে জাতীয় ছাত্রশক্তি। তবে বিশেষ সম্মান প্রদর্শনের অংশ হিসেবে ‘মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র’ সম্পাদক পদটি খালি রেখেছে সংগঠনটি।
গত বছরের জুলাই আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হওয়া অনিক কুমার দাসের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সংগঠনটি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে।
আরো পড়ুন:
জকসু: প্যানেল ঘোষণাতেই আচরণবিধি লঙ্ঘন শিবির-ছাত্রশক্তির
জকসু নির্বাচন: নবীনদের ‘তরুণ শিক্ষার্থী ঐক্য’ প্যানেল ঘোষণা
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ রফিক ভবনের সামনে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদ হাসান প্যানেল ঘোষণা করলে এ তথ্য জানা যায়।
গত বছরের ১৬ জুলাই ঢাকার সিএমএম আদালত এলাকায় আন্দোলন চলাকালে চারজন গুলিবিদ্ধ হন। মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা অনিক তাদেরই একজন।
জবি শাখা ছাত্রশক্তির আহ্বায়ক ফয়সাল মুরাদ বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যে চারজন প্রথম গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন, অনিক তাদের মধ্যে একজন। তার ত্যাগ পুরো দেশ দেখেছে। সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা আওয়ামী লীগ সমর্থক—এই প্রচলিত ধারণাটিও অনিক ভেঙে দিয়েছে নিজের বুক পেতে গুলি খেয়ে।”
তিনি বলেন, “অনিকের সেই অবদান ও ত্যাগের প্রতি সম্মান জানিয়ে আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশক্তি ‘মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র’ সম্পাদক পদে কোনো প্রার্থী দেইনি।”
অনিক কুমার দাস বর্তমানে ছাত্রদল সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেল থেকে ‘মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র’ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠার পর এবারই প্রথম জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জকসু নির্বাচন। আগামী ২২ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণ হবে। ইতোমধ্যে মনোনয়নপত্র বিতরণ প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে।
ঢাকা/লিমন/মেহেদী