চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৪.৮%, পূর্বাভাস বিশ্বব্যাংকের
Published: 7th, October 2025 GMT
চলতি ২০২৫–২৬ অর্থবছর বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ৮ শতাংশ হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। আজ মঙ্গলবার বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট অক্টোবর সংস্করণ প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে জিডিপি প্রবৃদ্ধির এই পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট প্রকাশ উপলক্ষে আজ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়। আগারগাঁওয়ে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের বিভাগীয় পরিচালক জ্য পেম।
বিশ্বব্যাংক বলছে, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও ব্যবসায় খরচ বেশি হওয়ায় এ দেশে বেসরকারি বিনিয়োগ বেশ কম। এখনো অর্থনীতিতে বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জ আছে বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক। চ্যালেঞ্জগুলো হলো—বিনিয়োগে ভাটা, কর্মসংস্থানে ঘাটতি, ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংক খাত, উচ্চ খেলাপি ঋণ ও দুর্বল রাজস্ব আদায়।
বিশ্বব্যাংক আরও বলছে, গত কয়েক মাস ধরে মূল্যস্ফীতি কমলেও এখনো তা অনেক বেশি। গত আগস্টে মূল্যস্ফীতি ছিল ৮ দশমিক ৩ শতাংশ। দারিদ্র্য বেড়ে যাওয়া নিয়ে বিশ্বব্যাংক বলেছে, দারিদ্র্য বেড়েছে, কর্মসংস্থান সংকুচিত হয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের বিভাগীয় পরিচালক জ্য পেম বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি সাম্প্রতিক সময়ে দৃঢ়তা দেখিয়েছে। টেকসই প্রবৃদ্ধি ও ভালো কর্মসংস্থানের জন্য বাংলাদেশকে সাহসী সংস্কার ও দ্রুত বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষ করে রাজস্ব আয় বাড়ানো, ব্যাংক খাতের দুর্বলতা দূর করা, জ্বালানি ভর্তুকি কমান, নগরায়ণ পরিকল্পনা ও বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নত করার ক্ষেত্রে জোর দিতে হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অর্থবছরের প্রথম ৩ মাসে রেমিট্যান্স এসেছে সাড়ে ৯২ হাজার কোটি টাকা
চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম তিন মাস জুলাই-সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৭৫৮ কোটি ৫৬ লাখ মার্কিন ডলার। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ৯২ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে)। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১৬ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরে একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ৬৫৪ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার বা ৭৯ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা।
রবিবার (৫ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের সেপ্টেম্বরে প্রবাসীরা দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ২৬৮ কোটি ৫৮ লাখ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ৩২ হাজার ৭৬৭ কোটি টাকা। আগস্টে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছে ২৪২ কোটি ১৮ লাখ মার্কিন ডলার বা ২৯ হাজার ৫৪৮ কোটি টাকা। আর জুলাইয়ে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে ২৪৭ কোটি ৭৮ লাখ মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ৩০ হাজার ২৩০ কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা জানান, অর্থপাচারে বর্তমান সরকার কঠোর অবস্থান নিয়েছে। এ কারণে হুন্ডিসহ বিভিন্ন অবৈধ চ্যানেলে টাকা পাঠানো কমে গেছে। ফলে বৈধ পথে রেমিট্যান্স আহরণ বেড়েছে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স ৩০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছিল। ওই অর্থবছরের জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। আগস্টে ২২২ কোটি ৪১ লাখ মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ মার্কিন ডলার, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার, নভেম্বর মাসে ২১৯ কোটি ৯৯ লাখ মার্কিন ডলার, ডিসেম্বর মাসে ২৬৩ কোটি ৮৭ লাখ মার্কিন ডলার, জানুয়ারি মাসে ২১৮ কোটি ৫২ লাখ মার্কিন ডলার এবং ফেব্রুয়ারিতে এসেছিল ২৫২ কোটি ৭৬ লাখ মার্কিন ডলার।
একই অর্থবছরের মার্চে ৩২৯ কোটি ৫৬ লাখ, এপ্রিলে ২৭৫ কোটি ২৩ লাখ ডলার, মে মাসে ২৯৭ কোটি মার্কিন ডলার এবং জুন মাসে ২৮২ কোটি ১২ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল।
ঢাকা/নাজমুল/মাসুদ