ছটফটে আর খেলার মাঠে দৌড়ে বেড়ানো ছেলেটা হঠাৎ জেনেছিল, সে আর হাঁটতে পারবে না। তখন ২০০৮ সাল। নবম শ্রেণিতে পড়ে সে। শুরু হলো চিকিৎসা আর দৌড়ঝাঁপ। কিন্তু ঠেকানো গেল না।

২০১১ সাল থেকে আর কখনোই নিজের পায়ে হাঁটতে পারলেন না নূর নাহিয়ান।কিশোর বয়সে এ বিপর্যয়ে জীবন সম্পর্কে বিশ্বাসটা ভেঙে গিয়েছিল নাহিয়ানের। সেই সময়ের কথা মনে করে নাহিয়ান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ভাঙতে ভাঙতে নিঃশেষ হয়েছিলাম। সেখান থেকে আবার শুরু করেছি।’ এখন নাহিয়ান হুইলচেয়ারে চলাফেরা করেন।

হুইলচেয়ার মানেই যে জীবন থামিয়ে দেওয়া নয়, বরং এগিয়ে চলাও হতে পারে, সেটাই প্রমাণ করেছেন তিনি। নাহিয়ানের সেই পথচলা নানা দিকে বিস্তৃত।এখন পর্যন্ত ৩০টি বইয়ের প্রচ্ছদকরেছেন তিনি। তাঁর লেখা পাঁচটি বই প্রকাশিত হয়েছে। খেলতে ভালোবাসেন। ন্যাশনাল প্যারালিম্পিক কমিটির স্বেচ্ছাসেবক হয়েছেন। দেশে কয়েকবার হুইলচেয়ার ক্রিকেট টুর্নামেন্ট আয়োজনের সঙ্গে তিনি যুক্ত। বাংলাদেশ হুইলচেয়ার স্পোর্টস ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি তিনি।

নাহিয়ান পরিবারের সঙ্গে থাকেন রাজধানীর ওয়ারীতে। অফিস নিকুঞ্জে। প্রতিদিন সিএনজিচালিত অটোরিকশায় অফিসে যান। আসা–যাওয়ার পথে হুইলচেয়ারটিও তাঁর সঙ্গী হয়। তিনি সিএনজিতে উঠে পায়ের কাছে সেটা ভাঁজ করে রাখেন। পরে অফিসে পৌঁছে নিজেই সেটা নামিয়ে নেন। তাতে চেপে অফিসে ঢোকেন। বাসায় ফেরার প্রক্রিয়াটা একই।

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উন্নয়ন অধ্যয়নে স্নাতকোত্তর পাস করেছেন নাহিয়ান। কাজ করছেন বেসরকারিস্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে।

হুইলচেয়ারে বসা নূর নাহিয়ান। পেছনে দাঁড়ানো ভাষাসৈনিক আহমদ রফিক। ছবিটা ২০১৩ সালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তোলা.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হ ইলচ য় র

এছাড়াও পড়ুন:

মেসির উদাহরণ টেনে লারার প্রশ্ন, তারা কি সত্যিই ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলতে চায়

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট পতনের দিকে—এই আলোচনা নতুন না। তবে বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় এসেছে ৪ অক্টোবর আহমেদাবাদে প্রথম টেস্টে ভারতের কাছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইনিংস ১৪০ রানে হারের পর। ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক রোস্টন চেজ হারের পর ‘অবকাঠামোগত সমস্যা’ এবং ধারাবাহিকভাবে ‘আর্থিক সমস্যা’র কথা বলেছিলেন।

এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি এবং সাবেক অধিনায়ক ব্রায়ান লারাও মেনে নিলেন, ক্যারিবিয়ান ক্রিকেট ক্রমশ নিম্নমুখী হওয়ার পেছনে রয়েছে অর্থ ও প্রযুক্তির অভাব। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জার্সির প্রতি আরেকটু ভালোবাসা ঢেলে আরও ভালোভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার আহ্বানও জানিয়েছেন লারা। পাশাপাশি একটি প্রশ্নও তুলেছেন কিংবদন্তি, ‘তারা (খেলোয়াড়) কি সত্যিই ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলতে চায়?’

কিংস্টনে গত জুলাইয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ২৭ রানে অলআউট হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর আগস্টে ক্লাইভ লয়েড, লারা, ডেসমন্ড হেইন্স, শিবনারায়ণ চন্দরপলদের মতো ক্যারিবিয়ান গ্রেটদের নিয়ে একটি কমিটি করে ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ (সিডব্লুআই)। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটকে টেনে তুলতে বিভিন্ন পরিকল্পনা ও সেসব বাস্তবায়নের রূপরেখাও তৈরি করে সেই কমিটি। লারা ও চেজ দুজনেই এই কমিটির অংশ।

মুম্বাইয়ে গত মঙ্গলবার সিয়াট ক্রিকেট রেটিং অ্যাওয়ার্ডসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের পতন নিয়ে কথা বলেন লারা। টেস্টে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংস খেলার রেকর্ডধারী কিংবদন্তির মুখেই শুনুন সেসব কথা, ‘কোনো কিছু করতে চাইলে সেটা করার সামর্থ্য থাকতে হবে। এটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কিন্তু একই সময়ে আমি রোস্টন চেজ ও বাকিদের বলতে চাই, তারা কি হৃদয়ে সত্যিই ক্রিকেট লালন করে? তারা কি সত্যিই ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলতে চায়? এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তাতে পথ খুঁজে নেওয়া যায়।’

আহমেদাবাদে ভারতের কাছে প্রথম টেস্ট বাজেভাবে হারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ