চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে গাড়িতে অবস্থানরত বিএনপি কর্মী ও হামিম অ্যাগ্রো ফার্মের মালিক আবদুল হাকিমকে (৫২) গুলি করে হত্যার ঘটনায় তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে রাউজানে। 

এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) রাতে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক ও চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে স্থানীরা। তিনটি মোটরসাইকেলে ছয় জন মুখোশধারী এই হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। 

তাদের চিহ্নিত ও গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাটহাজারী সার্কেল) কাজী মো.

তারেক আজিজ।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইউসুফ তালুকদার জানান, আবদুল হাকিম একজন সৎ ব্যবসায়ী। বিএনপির দলীয় কোন পদ-পদবি তার ছিল না, তবে তিনি বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। প্রতিটি মিছিল-মিটিংয়ে তিনি অংশ নিতেন। রাউজানের সাবেক সংসদ সদস্য গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর সঙ্গে থেকে তিনি রাজনীতি করতেন। কী কারণে এবং কারা তাকে হত্যা করেছে এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। আমরা তার হত্যার সঙ্গে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

এদিকে আবদুল হাকিমকে হত্যাকাণ্ডের একটি সিসিটিভি ফুটেজ হাতে পেয়েছে পুলিশ। তাতে দেখা গেছে, আবদুল হাকিমকে হত্যায় সরাসরি অংশ নিয়েছিল তিনটি মোটরসাইকেলে থাকা মোট ছয় জন মুখোশধারী। তারা সাদা জিপে চালকের আসনের পাশে বসা আবদুল হাকিমকে লক্ষ্য করে গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়। আবদুল হাকিম তখন রাউজানের নিজের খামার থেকে শহরের বাসায় ফিরছিলেন।

তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে রাউজান উপজেলায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক ও চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন।

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাটহাজারী সার্কেল) কাজী মো. তারেক আজিজ জানান, এ ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

ঢাকা/রেজাউল/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আবদ ল হ ক ম ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

বাড়ির সিসিটিভি ক্যামেরায় সাইবার হুমকি বেড়েই চলেছে, সতর্ক থাকতে যা করতে হবে

ইন্টারনেট সংযুক্ত নিরাপত্তা ক্যামেরা বা সিসি (ক্লোজড সার্কিট) ক্যামেরার ব্যবহার দ্রুত বেড়ে চলেছে। বাইরে থাকলেও স্মার্টফোনের মাধ্যমে ঘরের পরিস্থিতি নজরে রাখা যায়, তাই অনেকেই এসব যন্ত্রের ওপর নির্ভরশীল হচ্ছেন। তবে প্রযুক্তির সুবিধার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে নতুন ধরনের ঝুঁকি। হ্যাকাররা শুধু লাইভ ভিডিও দেখার পাশাপাশি আগের রেকর্ডিং, ব্যক্তিগত তথ্য এবং ঘরের নেটওয়ার্কে অনুপ্রবেশ করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যন্ত্র যত স্মার্ট হচ্ছে, সাইবার হামলার ধরনও তত জটিল হচ্ছে। তাই ঝুঁকির ধরন বোঝা এবং আগেভাগে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া এখন নিরাপত্তার অপরিহার্য অংশ।

যেসব হ্যাকিংয়ের ঝুঁকি

নিরাপত্তা ক্যামেরা মূলত দুই ধরনের হ্যাকিংয়ের শিকার হয়। এগুলো হলো লোকাল এবং রিমোট।

লোকাল হ্যাকিং: যখন কেউ ব্যবহারকারীর নেটওয়ার্কের আশপাশে শারীরিকভাবে উপস্থিত থাকে, তখন দুর্বল ওয়াই-ফাই সংকেত, অসতর্কভাবে শেয়ার করা পাসওয়ার্ড বা বিশেষ ধরনের সংকেত ডিভাইস ব্যবহার করে তারা সিস্টেমে ঢোকার চেষ্টা করে।

রিমোট হ্যাকিং: এটি এখন বেশি সাধারণ। ইন্ডিয়ান জার্নাল অব কম্পিউটার সায়েন্সে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, আইপি ক্যামেরা ব্যবহারকারীদের বড় অংশ ন্যূনতম নিরাপত্তা নিয়মও মানেন না। একই পাসওয়ার্ড একাধিক অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ব্যবহার বা ডিফল্ট পাসওয়ার্ড না বদলালে হ্যাকাররা সহজেই সিস্টেমে প্রবেশ করতে পারে। ফলে রিমোট হ্যাকিং এখন ব্যবহারকারীদের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

নিরাপত্তা বাড়াতে করণীয়

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী, কিছু সাধারণ নিরাপত্তাব্যবস্থা নিলে ক্যামেরা হ্যাকিংয়ের ঝুঁকি অনেকটা কমানো সম্ভব।

* বিশ্বস্ত ব্র্যান্ডের যন্ত্র ব্যবহার করা

সস্তা বা নিম্নমানের ক্যামেরায় সাধারণত প্রয়োজনীয় এনক্রিপশন থাকে না। নিয়মিত ফার্মওয়্যার হালনাগাদ পাওয়া যায় এমন ব্র্যান্ডের ক্যামেরা ব্যবহার করা উচিত।

* শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ও নিরাপদ নেটওয়ার্ক

সহজে অনুমান করা যায় এমন পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা উচিত নয়। বড় হাত ও ছোট হাতের অক্ষর, সংখ্যা ও বিশেষ চিহ্ন মিলিয়ে জটিল পাসওয়ার্ড তৈরি করতে হবে। রাউটারে ‘ডব্লিউপিএ টু’ বা উন্নত এনক্রিপশন সক্রিয় রাখতে হবে এবং নিয়মিত পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করতে হবে।

* দূর থেকে ঢোকার জন্য ভিপিএন ব্যবহার

বাইরে থেকে ক্যামেরা দেখার সময় ভার্চ্যুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন) ব্যবহার করা উচিত। এতে ডিভাইস ও ক্যামেরার মধ্যে এনক্রিপ্টেড টানেল তৈরি হয়, যা হ্যাকারদের জন্য ডেটা আটকানো কঠিন করে তোলে।

টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন সক্রিয় করা

ক্যামেরা সিস্টেমে এই সুবিধা থাকলে অবশ্যই ব্যবহার করা উচিত। এতে পাসওয়ার্ড ফাঁস হলেও হ্যাকার সরাসরি ঢুকতে (অ্যাক্সেস) পারবেন না।

হ্যাকিংয়ের লক্ষণ

সতর্কতা থাকা সত্ত্বেও অনুপ্রবেশের আশঙ্কা থাকে। কিছু লক্ষণ দেখলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

অপরিচিত লগইন নোটিফিকেশন: অনেক সিস্টেমে লগইন ইতিহাস দেখা যায়। অচেনা যন্ত্র বা লোকেশন থেকে প্রবেশের চেষ্টা হলে তা সম্ভাব্য হ্যাকিংয়ের কারণ হতে পারে।

ক্যামেরার অস্বাভাবিক নড়াচড়া: ব্যবহারকারীর কোনো নির্দেশ ছাড়া ক্যামেরা ঘোরা বা জুম করলে বুঝতে হবে কেউ সিস্টেমে অননুমোদিতভাবে প্রবেশ করেছে।

অতিরিক্ত শেয়ার করা অনুমতি: পরিবারের সদস্য বা পরিচিতদের জন্য আলাদা অ্যাকাউন্ট তৈরি করা উচিত। একই অ্যাকাউন্ট একাধিকজন ব্যবহার করলে নিরাপত্তাঝুঁকি বাড়ে।

হ্যাকিংয়ের সন্দেহ হলে করণীয়

সন্দেহ হলে প্রথমেই ক্যামেরা বা পুরো সিকিউরিটি সিস্টেমের বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হবে। এতে হ্যাকার সরাসরি অ্যাকসেস হারাবে। এরপর নিরাপত্তা অ্যাকাউন্ট, রাউটার এবং যুক্ত সব ডিভাইসের পাসওয়ার্ড বদলাতে হবে।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

সম্পর্কিত নিবন্ধ