Prothomalo:
2025-11-28@15:47:42 GMT

অক্সিজেনের বহুরূপী আচরণ

Published: 10th, October 2025 GMT

পৃথিবীতে প্রাণের বিকাশের জন্য অক্সিজেনের উপস্থিতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অক্সিজেন না থাকলে পৃথিবী প্রাণহীন হয়ে যাবে। তবে অক্সিজেনের অণু একই সঙ্গে আমাদের জীবনধারণের জন্য বন্ধু ও কোষের জন্য ক্ষতিকারক হিসেবে কাজ করে। নতুন এক গবেষণায় বিজ্ঞানীরা সেই প্রক্রিয়া উন্মোচন করেছেন। অক্সিজেন নানাভাবে তার বন্ধুত্বপূর্ণ ও ধ্বংসাত্মক রূপের মধ্যে পরিবর্তন ঘটায়।

বিজ্ঞানীরা একই অক্সিজেন অণুর দুটি ভিন্ন স্পিন অবস্থাকে আলাদা করার জন্য সিঙ্গলেট অক্সিজেন ও ট্রিপলেট অক্সিজেনের কথা জানিয়েছেন। ট্রিপলেট অক্সিজেন শান্ত ও স্থিতিশীল রূপ, যা আমরা শ্বাসপ্রশ্বাসের মাধ্যমে গ্রহণ করি। আর সিঙ্গলেট অক্সিজেন অত্যন্ত প্রতিক্রিয়াশীল ও ক্ষণস্থায়ী রূপ। এটি কোষ ও ব্যাটারির উপাদানের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক হতে পারে। এই সিঙ্গলেট অক্সিজেনের পূর্বসূরি সুপার অক্সাইড। এটি একটি অতিরিক্ত ইলেকট্রনসহ অক্সিজেন। যখন দুটি সুপার অক্সাইড একত্র হয়, তখন ডিসপ্রোপোরশনেশন প্রক্রিয়ায় একটি পার অক্সাইডে ও অন্যটি অক্সিজেন গ্যাসে পরিণত হয়। অস্ট্রিয়ার ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির বিজ্ঞানীরা কোন পরিস্থিতিতে ট্রিপলেট অক্সিজেন প্রভাবশালী থাকবে ও কখন ক্ষতিকারক সিঙ্গলেট অক্সিজেন তৈরি হয়, তা বের করেছেন। এ পরিবর্তনের মূল নিয়ন্ত্রণকারী উপাদান বিক্রিয়ার চালিকা শক্তি। নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, যখন চালিকা শক্তি বাড়তে থাকে, তখন ট্রিপলেট অক্সিজেন তৈরির গতি প্রথমে বাড়ে, তারপর অপ্রত্যাশিতভাবে কমতে শুরু করে। এ গতি কমে যাওয়ার ফলেই সিঙ্গলেট অক্সিজেন দ্রুত তৈরি হয়। উচ্চ চালিকা শক্তিতে বিক্রিয়ার এই বিপরীতধর্মী মন্থরতা মার্কাস তত্ত্বের মাধ্যমে বিশ্লেষণ করা যায়। এই তত্ত্ব অনুসারে, বিক্রিয়ায় ধাক্কা খুব বেশি বেড়ে গেলে বিক্রিয়া ত্বরান্বিত হওয়ার স্বাভাবিক অঞ্চলের পরে একটি ওলটানো অঞ্চলে প্রবেশ করে, যেখানে গতি কম হয়। এ গবেষণা প্রমাণ করে চালিকা শক্তি কমিয়ে বা মাধ্যমের পুনঃসংগঠন শক্তি বাড়িয়ে তুললে নিরাপদ ট্রিপলেট অক্সিজেনের পথ তৈরি করা যায়।

আরও পড়ুনঅক্সিজেন কমে যাবে পৃথিবীতে২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

বিজ্ঞানীদের ধারণা, প্রাণী কোষের পিএইচ অক্সিজেনের ভাগ্য নির্ধারণ করে। এ বিষয়ে বিজ্ঞানী স্টেফ্যান এ ফ্রুনবার্গার বলেন, ‘আমরা এখনো জানি না খারাপ সিঙ্গলেট অক্সিজেন কীভাবে তৈরি হয়। কোষের অভ্যন্তরে পিএইচ বিভিন্ন অংশে ভিন্ন ভিন্ন হয়। লাইসোসোম অ্যাসিডিক আর মাইটোকন্ড্রিয়া সামান্য ক্ষারীয় হয়। পিএইচয়ের এ পরিবর্তন সুপার অক্সাইড বিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণকারী চালিকা শক্তিকে স্থানান্তর করে মাইটোকন্ড্রিয়াতে উচ্চ পিএইচ চালিকা শক্তিকে কম রাখে। সেখানে সিঙ্গলেট অক্সিজেন তৈরি হতে বাধা পায়। বিপরীতে অ্যাসিডিক অঙ্গাণুতে সিঙ্গলেট অক্সিজেন তৈরির সম্ভাবনা বেশি থাকে। পিএইচয়ের ছোট পরিবর্তন বড় প্রভাব ফেলতে পারে।

আরও পড়ুনপৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেনের পরিমাণ বেশি কেন০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বৈদ্যুতিক ব্যাটারিতে সিঙ্গলেট অক্সিজেনের প্রভাব দেখা যায়। অক্সিজেন ব্যাটারি চার্জ ও ডিসচার্জের সময় সুপার অক্সাইড ও পার অক্সাইড তৈরি করে। বিভিন্ন ডিভাইসে সিঙ্গলেট অক্সিজেনকে প্যারাসাইটিক বিক্রিয়ার প্রধান উৎস হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এ ধরনের অক্সিজেন ইলেকট্রোলাইট ক্ষয় করে। কিছু ইলেকট্রোলাইট ও লবণের ব্যবহার সিঙ্গলেট অক্সিজেন নির্গমনের সম্ভাবনা বাড়াতে বা কমাতে পারে। অক্সিজেনের বহুরূপী এ আচরণের নিয়ে এ গবেষণা ফলাফল নেচার সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে।

সূত্র: আর্থ ডটকম

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

শিকলে বাধা শান্তর চিকিৎসায় ইউএনওর সহায়তা

কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ছাতিয়ান গ্রামে টাকার অভাবে শিকলবন্দী জীবন কাটছে ১৪ বছর বয়সী শান্তর। জন্মের পর থেকেই মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। পরিবার তাকে চিকিৎসা করানোর চেষ্টা করে। তবে অর্থ সংকটে নিয়মিত চিকিৎসা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে দিন–দিন অস্বাভাবিক আচরণ বাড়তে থাকে। সে কারণে রাতে ঘরে, আর দিনে গাছের সঙ্গে শিকলে বেঁধে রাখতে বাধ্য হন অভিভাবকরা।

গত রবিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে শান্তর বাড়িতে যান নবাগত জেলা প্রশাসক মো. ইকবাল হোসেন। তিনি শিশুটির অবস্থা দেখে চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়ার আশ্বাস দেন।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে শান্তর বাড়িতে প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা করার জন্য নগদ ১৫ হাজার টাকা শান্তর বাবা জসীম উদ্দীনের হাতে তুলে দেন মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাজমুল ইসলাম। 

এসময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার পীযূষ কুমার, সমাজসেবা কর্মকর্তা জামশেদ আলী, মিরপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি মারফত আফ্রিদি।

এ ব্যাপারে শান্তর পিতা জসিম উদ্দিন জানান, ২০১১ সালে জন্ম নেওয়ার পর শান্ত সাড়ে তিন বছর বয়সে নানা অস্বাভাবিক আচরণ ও অখাদ্য খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলে। পরে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে গেলে দীর্ঘ পাঁচ বছর চিকিৎসা চালানোর পরামর্শ দেওয়া হয়।

দারিদ্র্যের কারণে নিয়মিত ওষুধ কিনতে না পেরে চিকিৎসা বন্ধ হয়ে যায়। কিছুটা ভালো হওয়ার পর আবার সমস্যার পুনরাবৃত্তি হলে ২০১৮ সালে ফের চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। সেবারও পাঁচ বছর ধরে ওষুধ চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ আসে। কিন্তু দৈনিক ১০০-২০০ টাকার ওষুধ বাবদ খরচ মেটানো তার পক্ষে সম্ভব হয়নি।

জসিম আরো জানান, করোনাকালে গণমাধ্যমে শান্তর ভিডিও ভাইরাল হলে সেসময়ের পুলিশ সুপার তানভির আরাফাত চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। পরে তিনি বদলি হলে চিকিৎসা থেমে যায়। বর্তমানে প্রতিবন্ধী ভাতার ২ হাজার ৬০০ টাকা তিন মাস পরপর পেলেও তা খাবার, কাপড় ও পরিচর্যায় শেষ হয়ে যায়। 

তিনি বলেন, “গত ২৪ নভেম্বর ডিসি স্যার শান্তকে দেখতে আসেন এবং চিকিৎসার সার্বিক সহযোগিতা দেওয়ার আশ্বাস প্রদান করেন। গতকাল ইউএনও স্যার ১৫ হাজার টাকা প্রদান করলেন এবং শান্তর চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাও সার্বিক সহযোগিতা করবেন বলে জানিয়েছেন।”

মিরপুরের ইউএনও মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, “শান্তকে দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থতার কারণে শিকলে বেঁধে রাখা হয়। বিষয়টি জেলা প্রশাসকের নজরে আসার পর তিনি নিজে গিয়ে শিশুটির খোঁজ খবর নেন। আমরা প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসার জন্য ১৫ হাজার টাকা প্রদান করি। সরকারি সকল সহযোগিতা থেকে শান্তর চিকিৎসার সুব্যবস্থা করা হবে।”

ঢাকা/কাঞ্চন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এক ম্যাচে ১৭ লাল কার্ড!
  • তিন নারী শুটারকে হয়রানির অভিযোগে শুটিং ফেডারেশনের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জিডি
  • শিকলে বাধা শান্তর চিকিৎসায় ইউএনওর সহায়তা
  • নারীরা চলাফেরা, আচরণের ক্ষেত্রে যে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন, তা কল্পনা করা যায় না: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য
  • বিশ্বকাপে নিষিদ্ধ হচ্ছেন না রোনালদো, খেলতে পারবেন পর্তুগালের প্রথম ম্যাচ থেকেই