ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে (১২ থেকে ১৬ অক্টোবর) সূচকের পতনের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এ সময়ে ডিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন কিছুটা কমলেও সিএসইতে বেড়েছে। তবে বিদায়ী সপ্তাহে উভয় পুঁজিবাজারে বাজার মূলধন কমেছে ৩১ হাজার ৪০৮ কোটি ৬ লাখ টাকা।

শনিবার (১৮ অক্টোবর) ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

তথ্য মতে, সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৬৪.

৩০ পয়েন্ট বা ৩.১১ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ১১৯ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ৬৫.১২ পয়েন্ট বা ৩.২০ শতাংশ কমে ১ হাজার ৯৬৭ পয়েন্টে, ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৪৭.৯৮ পয়েন্ট বা ৪.২৩ শতাংশ কমে ১ হাজার ৮৬ পয়েন্টে এবং ডিএসএমইএক্স সূচক (এসএমই ইনডেক্স) ৭৭.০৮ পয়েন্ট বা ৭.২৫ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬৩ পয়েন্টে।

বিদায়ী সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ১৭ হাজার ১২৬ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহের আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৬ লাখ ৯৯ হাজার ২৮৫ কোটি  টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে ১৭ হাজার ৮৪১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা।

বিদায়ী সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৬১১ কোটি ১১ লাখ টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহের আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৩ হাজার ২৮৫ কোটি ৬৩ কোটি ৩২ লাখ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ৬৭৪ কোটি ৫২ লাখ টাকা।

বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৯৬টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ৫৬টির, দর কমেছে ৩২৬টির ও দর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৪টির। তবে লেনদেন হয়নি ১৭টির।

অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৪৭৮.৮০ পয়েন্ট বা ৩.২০ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৪৬৮ পয়েন্টে। সিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে সিএসই-৩০ সূচক ২.২৮ শতাংশ কমে ১২ হাজার ৬৮১ পয়েন্টে, সিএসসিএক্স সূচক ৩.১৫ শতাংশ কমে ৮ হাজার ৮৯৮ পয়েন্টে, সিএসআই সূচক ৩.৬৬ শতাংশ কমে ৯১৩ পয়েন্টে এবং এসইএসএমইএক্স (এসএমই ইনডেক্স) ১.৯৩ শতাংশ বেড়ে ২ হাজার ২৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

বিদায়ী সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৪ হাজার ২২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহের আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৭ লাখ ১৭ হাজার ৫৮৮ কোটি ৬১ লাখ টাকা। টাকায়। সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে ১৩ হাজার ৫৬৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা।

বিদায়ী সপ্তাহে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন হয়েছে ৬১ কোটি ৩১ লাখ টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহের আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৬৬ কোটি ৬১ লাখ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ৫ কোটি ৩ লাখ টাকা।

বিদায়ী সপ্তাহে সিএসইতে মোট ৩০৩টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে।

কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ৪১টির, দর কমেছে ২৪৪টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৮টির শেয়ার ও ইউনিট দর।

ঢাকা/এনটি/ইভা 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব জ র ম লধন ন কম ছ আর ব দ স এসই ড এসই

এছাড়াও পড়ুন:

‘ডিএসই-বিজিএমইএ পুঁজিবাজারের উন্নতি নিশ্চিত করতে পারে’

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেছেন, “বর্তমানে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের লিস্টেড কোম্পানিগুলোর মধ্যে গার্মেন্টস ও টেক্সটাইলস খাতে ৫৮টি প্রতিষ্ঠান আছে। ২০২৩ সালে বিজিএমইএ-এর সঙ্গে ডিএসইর একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। এ দুটি প্রতিষ্ঠান একসাথে কাজ করে দেশের পুঁজিবাজারের উন্নতি নিশ্চিত করতে পারে।”

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি মাহমুদ হাসান খানের সাথে বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

বিডি থাই ফুডে নতুন ভারপ্রাপ্ত এমডি নিয়োগ

নয় মাসে মুনাফা থেকে লোকসানে এনআরবি ব্যাংক

ডিএসইর উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. শফিকুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, আজ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে ডিএসই পরিচালনা পর্ষদের ৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল, বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি মাহমুদ হাসান খানের সাথে বৈঠক করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিএসইর পরিচালক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, রিচার্ড ডি রোজারিও, মিনহাজ মান্নান ইমন, প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ আসাদুর রহমান, বিজিএমইএর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ইনামুল হক খান, ভাইস প্রেসিডেন্ট (ফাইন্যান্স) মিজানুর রহমানসহ উভয় প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

বৈঠকে ডিএসই চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, “বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান চালিকা শক্তি হিসেবে গার্মেন্টস শিল্প কাজ করছে, যা দেশের ফরেন এক্সচেঞ্জ আর্নিং, কর্মসংস্থান এবং অন্যান্য সহায়ক শিল্পগুলোর উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। দেশের আর্থিক খাতও উল্লেখযোগ্যভাবে গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের ওপর নির্ভরশীল।”

তিনি বলেন, “বর্তমান বোর্ড গত বছরের অক্টোবর মাসে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে আমরা চেষ্টা করছি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে একটি গতিশীল, স্বচ্ছ ও প্রাণবন্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে। আমরা চাই দেশের পুঁজিবাজার শক্তিশালী হয়ে দীর্ঘমেয়াদি মূলধনের উৎস হিসেবে ব্যবসা-বাণিজ্যে অবদান রাখতে পারে। আমরা অভ্যন্তরীণভাবে কর্পোরেট গভর্নেন্স ও ম্যানেজমেন্ট স্ট্রাকচার শক্তিশালী করার দিকে কাজ করছি। পাশাপাশি, রেগুলেটর, সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থা, লিস্টেড ও সম্ভাব্য লিস্টিং-যোগ্য কোম্পানি এবং বিভিন্ন অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ও সহযোগিতা করছি। লিস্টিং প্রক্রিয়া সহজ করা, ডিএসইকে নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান থেকে কাস্টমার সেন্ট্রিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার লক্ষ্যে ডিএসই'র পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ কাজ করছে। আমরা আমাদের কাজের মূল্যায়ন করি, কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করি এবং তা বাস্তবায়ন করছি। যদিও আমরা এখনো কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পৌঁছাতে পারিনি, আপনারা আমাদের সাহায্য, পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান করলে তা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

বৈঠকে বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, “বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের ব্যবসা মূলত ক্রেতার সঙ্গে সম্পর্ক মার্কেটিং ভিত্তিক। বিজিএমই-এর পক্ষ থেকে আমরা সদস্যদের জন্য যে সাপোর্ট দিই, তার মধ্যে অন্যতম হলো—ভালো ক্রেতা এবং ব্যবসায়িক অংশীদার চিহ্নিত করা, যাতে আমরা জানি কার সঙ্গে কাজ করা উচিত এবং কার সঙ্গে নয়। এভাবে, এখন আমাদের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী কেউ সহজে আমাদেরকে এক্সপ্লয়েট করতে পারে না। আমাদের মূল নীতি হলো—যে কোম্পানি ভার্টিকাল বা সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া পরিচালনা করে, তাদেরকে উত্সাহিত করা হবে পাবলিক লিস্টেড হতে।”

ডিএসইর পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, “পুঁজিবাজার দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম। ব্যাংকিং সেক্টরের বাইরে ব্যবসার জন্য বিকল্প তহবিলের উৎস হিসেবে স্টক এক্সচেঞ্জ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। দেশে এখনো আন্তর্জাতিক মানের ভ্যালুয়েশন ও ইনভেস্টমেন্ট কাঠামোর ঘাটতি রয়েছে। বিশেষ করে গার্মেন্টস সেক্টরের রপ্তানি সম্ভাবনা ও পুঁজিবাজারের মধ্যে সুষ্ঠু সংযোগ স্থাপন করা গেলে আমরা বৈশ্বিক পর্যায়ে অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারব।”

ডিএসইর পরিচালক কামরুজ্জামান বলেন, “গার্মেন্টস সেক্টরে বিপুলসংখ্যক মানুষ কর্মরত-যারা দেশের সাধারণ জনগণেরই অংশ। যদি এই সাধারণ জনগণকেই আমরা বিনিয়োগকারীর ভূমিকায় যুক্ত করতে পারি, তাহলে এটি হবে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন। এতে শুধু গার্মেন্টস শিল্প নয়, পুরো দেশের অর্থনীতিই আরও শক্তিশালী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে। আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলো গার্মেন্টস খাতে যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, সেখানে একা চলার নীতি আমাদের জন্য কার্যকর হবে না। সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও সহযোগিতার মাধ্যমেই আমরা টেকসই অগ্রগতি অর্জন করতে পারব।”

ঢাকা/এনটি/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ডিএসইতে সাপ্তাহিক দাম কমার শীর্ষে  ইন্টারন্যাশনাল লিজিং
  • ডিএসইতে সাপ্তাহিক দাম বাড়ার শীর্ষে আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক
  • ডিএসইর পিই রেশিও কমেছে ২.৬৬ শতাংশ
  • ‘ডিএসই-বিজিএমইএ পুঁজিবাজারের উন্নতি নিশ্চিত করতে পারে’
  • পুঁজিবাজারে বড় পতন, কমেছে লেনদেন